পরিবেশ ও বিজ্ঞান - ডিজিটাল সংস্করণ

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

সপ্তম শ্রেণি

AGA Logo

পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ

WEST BENGAL BOARD OF SECONDARY EDUCATION

M Logo

পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ

প্রথম সংস্করণ: ডিসেম্বর, ২০১৩

দ্বিতীয় সংস্করণ: ডিসেম্বর, ২০১৪

তৃতীয় সংস্করণ: ডিসেম্বর, ২০১৫

চতুর্থ সংস্করণ: ডিসেম্বর, ২০১৬

পঞ্চম সংস্করণ: ডিসেম্বর, ২০১৭

প্রকাশক:

অধ্যাপিকা নবনীতা চ্যাটার্জি

সচিব, পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ

77/2 পার্ক স্ট্রিট, কলকাতা-700 016

মুদ্রক:

ওয়েস্ট বেঙ্গল টেক্সটবুক কর্পোরেশন

(পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগ)

কলকাতা-৭০০ ০৫৬

সত্য়মেব জয়তে

ভারতের সংবিধান

প্রস্তাবনা

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম সমাজতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথ গ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে:

  • সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার;
  • চিন্তা, মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে;

আমাদের গণপরিষদে, আজ, 1949 সালের 26 নভেম্বর, এতদ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।

THE CONSTITUTION OF INDIA

PREAMBLE

WE, THE PEOPLE OF INDIA, having solemnly resolved to constitute India into a SOVEREIGN SOCIALIST SECULAR DEMOCRATIC REPUBLIC and to secure to all its citizens: JUSTICE, social, economic and political;

LIBERTY of thought, expression, belief, faith and worship; EQUALITY of status and of opportunity and to promote among them all FRATERNITY assuring the dignity of the individual and the unity and integrity of the Nation;

IN OUR CONSTITUENT ASSEMBLY this twenty-sixth day of November 1949, do HEREBY ADOPT, ENACT AND GIVE TO OURSELVES THIS CONSTITUTION.

Blank page for spacing

ভূমিকা

জাতীয় পাঠক্রমের রূপরেখা ২০০৫ এবং শিক্ষা অধিকার আইন ২০০৯ দলিল দুটিকে গুরুত্ব দিয়ে ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক গঠিত 'বিশেষজ্ঞ কমিটি'-কে বিদ্যালয় স্তরের পাঠক্রম, পাঠ্যসূচি এবং পাঠ্যপুস্তকগুলির সমীক্ষা ও পুনর্বিবেচনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এই কমিটির বিষয়-বিশেষজ্ঞদের আন্তরিক চেষ্টা ও নিরলস পরিশ্রমের ফসল হলো এই বইটি। এই বিজ্ঞান বইটি সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যসূচি অনুযায়ী প্রণয়ন করা হয়েছে ও নামকরণ করা হয়েছে 'পরিবেশ ও বিজ্ঞান'। অতীব সহজ সরল ভাষায় বইটিতে পরিবেশ, ভৌত ও জীবনবিজ্ঞানের বিভিন্ন অভিমুখ আলোচনা করা হয়েছে। বিভিন্ন ছবি, প্রতিকৃতি, চিত্রের নকশা ব্যবহার করে পরিবেশ ও বিজ্ঞানের মৌলিক ধারণার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পরিচয় ঘটানোর চেষ্টা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের যাতে তথ্য ভারাক্রান্ত না হতে হয়, সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখা হয়েছে। লেখা ও ছবিগুলি যাতে শিশুমনে আকর্ষণীয় হয় সেদিকে নজর রেখে উৎকৃষ্ট মানের কাগজ, কালি ও রং ব্যবহার করা হয়েছে। আশা করি পর্যদ প্রণীত 'পরিবেশ ও বিজ্ঞান' বইটি শিক্ষার্থীদের কাছে সমাদৃত হবে ও তাদের শিখন সামর্থ্য বাড়বে। অন্যদিকে সক্রিয়তা-নির্ভর অনুশীলনীর মাধ্যমে তাদের বিজ্ঞান ও পরিবেশ বিষয়ে আগ্রহ বাড়াতে সাহায্য করবে। প্রথিতযশা শিক্ষক - শিক্ষিকা, শিক্ষাপ্রেমী শিক্ষাবিদ, বিষয়-বিশেষজ্ঞ ও অলংকরণের জন্য বিখ্যাত শিল্পীবৃন্দ - যাঁদের ঐকান্তিক চেষ্টায় ও নিরলস পরিশ্রমের ফলে এই সর্বাঙ্গসুন্দর গুরুত্বপূর্ণ বইটির প্রকাশ সম্ভব হয়েছে তাঁদের সকলকে পর্ষদের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। পশ্চিমবঙ্গ সর্বশিক্ষা মিশনের সহায়তায় বইটি ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। এই প্রকল্পকে কার্যকরী করার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষা দপ্তর, পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা অধিকার এবং পশ্চিমবঙ্গ সর্বশিক্ষা মিশন সাহায্য করে পর্ষদকে কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করেছে তা স্বীকার না করলে অন্যায় হবে। আশা করি পর্যদ প্রকাশিত এই 'পরিবেশ ও বিজ্ঞান' বইটি শিক্ষার্থীদের কাছে বিজ্ঞানের বিষয়গুলি আকর্ষণীয় করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং মাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞানচর্চার মান উন্নততর করতে সহায়ক হবে। ছাত্রছাত্রীরা উদবুদ্ধ হবে। এইভাবে সার্থক হবে পর্ষদের সামাজিক দায়বদ্ধতা।

সমস্ত শিক্ষাপ্রেমী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে আমার সনির্বন্ধ অনুরোধ তাঁরা যেন বিনা দ্বিধায় বইটির ত্রুটি-বিচ্যুতি পর্ষদের নজরে আনেন যাতে করে পরবর্তী সংস্করণে সংশোধনের সুযোগ পাওয়া যায়। এতে বইটির মান উন্নত হবে এবং ছাত্রসমাজ উপকৃত হবে। ইংরেজিতে একটি আপ্তবাক্য আছে যে, 'even the best can be bettered'। বইটির উৎকর্ষতা বৃদ্ধির জন্য শিক্ষক সমাজের ও বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তিদের গঠনমূলক মতামত ও সুপরামর্শ সাদরে গৃহীত হবে।

ডিসেম্বর, ২০১৭

পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ

৭৭/২, পার্ক স্ট্রিট

কলকাতা-৭০০০১৬

কল্যাণী ঘোষ

সভাপতি

পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ

Blank page for spacing

প্রাক্কথন

পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১১ সালে বিদ্যালয় শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি 'বিশেষজ্ঞ কমিটি' গঠন করেন। এই বিশেষজ্ঞ কমিটির ওপর দায়িত্ব ছিল বিদ্যালয় স্তরের সমস্ত পাঠক্রম, পাঠ্যসূচি এবং পাঠ্যপুস্তক- এর পর্যালোচনা, পুনর্বিবেচনা এবং পুনর্বিন্যাসের প্রক্রিয়া পরিচালনা করা। সেই কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী নতুন পাঠক্রম, পাঠ্যসূচি এবং পাঠ্যপুস্তক নির্মিত হলো। পুরো প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রেই জাতীয় পাঠক্রমের রূপরেখা ২০০৫ এবং শিক্ষার অধিকার আইন ২০০৯ (RTE Act, 2009) নথিদুটিকে আমরা অনুসরণ করেছি। পাশাপাশি সমগ্র পরিকল্পনার ভিত্তি হিসেবে আমরা গ্রহণ করেছি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিক্ষাদর্শের রূপরেখাকে।

উচ্চ-প্রাথমিক স্তরের বিজ্ঞান বইয়ের নাম 'পরিবেশ ও বিজ্ঞান'। জাতীয় পাঠক্রমের রূপরেখা (২০০৫) অনুযায়ী জীবনবিজ্ঞান, ভৌতবিজ্ঞান ও পরিবেশ সমন্বিত আকারে একটি বইয়ের মাধ্যমে পরিবেশিত হলো। সহজ ভাষায় এবং উপযুক্ত দৃষ্টান্তের সহযোগে বিজ্ঞানের বিভিন্ন বুনিয়াদি ধারণা শিক্ষার্থীদের সামনে আমরা উপস্থাপিত করেছি। প্রতিটি ক্ষেত্রে বিভিন্ন চিত্র সংযোজন করা হয়েছে, যাতে শিক্ষার্থীর কাছে বইটি আকর্ষণীয় এবং প্রাঞ্জল হয়ে ওঠে। বিজ্ঞানগ্রন্থ সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের উক্তি আমরা স্মরণে রেখেছি- 'তাহার ভাষা ও বিষয়বিন্যাস যতদূর সম্ভব সহজ করা উচিত, নতুবা ছাত্রদিগের মানসিক শক্তির অন্যায় এবং নির্দয় অপব্যয় সাধন করা হয়।' (ছাত্রবৃত্তির পাঠ্যপুস্তক)। ষষ্ঠ শ্রেণিতে প্রথম 'বিজ্ঞান' আলাদা বিষয় হিসেবে পাঠ্যপুস্তকে বিন্যস্ত হয়েছে। এই পাঠ্যপুস্তকের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পরিবেশে আর বিজ্ঞানের পারস্পরিক সম্পর্ক সন্ধানে ব্রতী হবে এবং উৎসাহ নিয়ে বিজ্ঞানকে জীবনের সঙ্গে মিলিয়ে পড়বে, এই আমাদের প্রত্যাশা।

নির্বাচিত শিক্ষাবিদ, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং বিষয়-বিশেষজ্ঞবৃন্দ অল্প সময়ের মধ্যে বইটি প্রস্তুত করেছেন। পশ্চিমবঙ্গের মাধ্যমিক শিক্ষার সারস্বত নিয়ামক পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পাঠ্যপুস্তকটিকে অনুমোদন করে আমাদের বাধিত করেছেন। বিভিন্ন সময়ে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষা দপ্তর, পশ্চিমবঙ্গ সর্বশিক্ষা মিশন, পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা অধিকার প্রভূত সহায়তা প্রদান করেছেন। তাঁদের ধন্যবাদ।

পশ্চিমবঙ্গের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ড. পার্থ চ্যাটার্জী প্রয়োজনীয় মতামত এবং পরামর্শ দিয়ে আমাদের বাধিত করেছেন। তাঁকে আমাদের কৃতজ্ঞতা জানাই। বইটির উৎকর্ষবৃদ্ধির জন্য শিক্ষাপ্রেমী মানুষের মতামত, পরামর্শ আমরা সাদরে গ্রহণ করব।

ডিসেম্বর, ২০১৭

নিবেদিতা ভবন

পঞ্চমতল

বিধাননগর, কলকাতা: ৭০০০৯১

অভীক মজুমদার

চেয়ারম্যান

'বিশেষজ্ঞ কমিটি'

বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তর

পশ্চিমবঙ্গ সরকার

বিশেষজ্ঞ কমিটি পরিচালিত পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন পর্ষদ

পুস্তক নির্মাণ ও বিন্যাস

  • অধ্যাপক অভীক মজুমদার (চেয়ারম্যান, বিশেষজ্ঞ কমিটি)
  • অধ্যাপক রথীন্দ্রনাথ দে (সদস্যসচিব, বিশেষজ্ঞ কমিটি)
  • ড.সন্দীপ রায়
  • দেবব্রত মজুমদার
  • পার্থপ্রতিম রায়
  • ড.শ্যামল চক্রবর্তী
  • সুদীপ্ত চৌধুরী
  • রুদ্রনীল ঘোষ
  • নীলাঞ্জন দাস
  • ড.ধীমান বসু
  • বিশ্বজিৎ বিশ্বাস
  • দেবাশিস মন্ডল
  • অধ্যাপক অমূল্যভূষণ গুপ্ত
  • ড. অনির্বাণ রায়

পরামর্শ ও সহায়তা

  • ড. শীলাঞ্জন ভট্টাচার্য
  • ডাঃ সুব্রত গোস্বামী
  • ডাঃ অমিতাভ চক্রবর্তী
  • ডাঃ পৃথ্বীশ কুমার ভৌমিক
  • অধ্যাপক মণীন্দ্রনাথ মজুমদার
  • অধ্যাপক রবীন্দ্রনাথ মজুমদার
  • শিবপ্রসাদ নিয়োগী
  • ডঃ অংশুমান বিশ্বাস

পুস্তক সজ্জা

  • দেবাশিস রায়

প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণ

  • সহায়তা - হিরাব্রত ঘোষ, অনুপম দত্ত, বিপ্লব মন্ডল

সূচিপত্র

বিষয় পৃষ্ঠা
1. ভৌত পরিবেশ
(i) তাপ 1-14
(ii) আলো 15-37
(iii) চুম্বক 38-48
(iv) তড়িৎ 49-62
(v) পরিবেশবান্ধব শক্তি 63-69
2. সময় ও গতি 70-84
3. পরমাণু, অণু ও রাসায়নিক বিক্রিয়া 85-100
4. পরিবেশ গঠনে পদার্থের ভূমিকা 101-144
5. মানুষের খাদ্য 145-181
6. পরিবেশের সজীব উপাদানের গঠনগত বৈচিত্র্য ও কার্যগত প্রক্রিয়া 182-226
7. পরিবেশের সংকট, উদ্ভিদ ও পরিবেশের সংরক্ষণ 227-255
8. পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য 256-307
পাঠ্যসূচি ও নমুনা প্রশ্ন 308-315
শিখন পরামর্শ 316-317

'পরিবেশ ও বিজ্ঞান' বই নিয়ে কিছু কথা

এই বইয়ের নাম কেন 'পরিবেশ ও বিজ্ঞান' সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। আমাদের মনে হয়েছে যে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিশুদের প্রথমে পরিবেশের নানান ঘটনা ও বৈচিত্র্যের প্রতি কৌতূহলী ও অনুসন্ধিৎসু করে তোলা প্রয়োজন। বিজ্ঞানের দিকে শিশুর যাত্রা তার চেনা পৃথিবী থেকে, যেখানে ইন্দ্রিয়গ্রাহ্যতাই সবচেয়ে গুরুত্ব পায়। সেই কারণে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত বইয়ের নাম 'আমাদের পরিবেশ'। পরিবেশ পর্যবেক্ষণ থেকে মানুষ যখন ধীরে ধীরে আরো জানতে চায় তখন সে অনুভব করে যে শুধু পরিবেশ পর্যবেক্ষণই যথেষ্ট নয়। সেকাজে তখন প্রয়োজন বিজ্ঞানের, যে বিজ্ঞান তার জ্ঞানের যাত্রায় আলোকবর্তিকা। এই কারণেই ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে বইয়ের নাম 'পরিবেশ ও বিজ্ঞান'।

আমরা ছাত্রছাত্রীকে বিজ্ঞানের প্রথাগত (Formal) ধারণায় দীক্ষিত করতে চাই, কিন্তু সে যাত্রায় আমরা অনুসরণ করব শিখনের Constructivist ধারণার পথই। আজ সারা বিশ্বে পঠনপাঠনে অনুসৃত এই Constructivist ধারণার মূল কথা হলো শিক্ষার্থীকে তার পরিচিত জগৎ থেকে তার মনোজগতের ধারণাসমূহের সাহায্য নিয়ে ও পরীক্ষানিরীক্ষার মাধ্যমে বিজ্ঞান শিক্ষায় দীক্ষিত করা। সেই কারণে যতদূর সম্ভব নানাভাবে অনুসন্ধানের (Exploration) সাহায্য নেওয়া হয়েছে, বহুসংখ্যক হাতেকলমে পরীক্ষার উল্লেখ করা হয়েছে। এই সবপরীক্ষা অল্প চেষ্টায়, অল্প খরচেই করা সম্ভব। হাতেকলমে পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী বিজ্ঞানের নানান বিষয় আরো ভালোভাবে শিখতে পারবে। যেহেতু বিজ্ঞানের সবকিছুই Intuitive নয়, তাই শিক্ষক/ শিক্ষিকাকে Concept Learning ও Knowledge Construction-এর বৈশিষ্ট্য সম্বন্ধে সচেতন হয়ে ছাত্রছাত্রীদের শিখন পরিচালনা করতে হবে। এই বইটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এটি সমন্বয়ী প্রচেষ্টার (Integrated Approach) ফসল। আমরা মনে করি দুটি প্রচ্ছদের মধ্যে জীববিদ্যা, রসায়ন, পদার্থ বিজ্ঞান ও পরিবেশ অন্তর্ভুক্ত করলেই সমন্বয় সাধন হয়ে যায় না। বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে যথাযথ সম্পর্ক স্থাপন এবং মেলবন্ধনের চেষ্টাই এই বইকে অন্য মাত্রা দেবে বলে আমাদের বিশ্বাস। 'পরিবেশ ও বিজ্ঞান' বইটিতে সহজ ভাষায় জীববিজ্ঞান, রসায়ন ও পদার্থবিদ্যার মেলবন্ধনের চেষ্টা করা হয়েছে, সেই দিক থেকে দেখলে এই বইটি পথিকৃৎ।

বিজ্ঞানে তথ্যানুসন্ধান ও সংগৃহীত তথ্যের যথাযথ লিপিবদ্ধকরণ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আমাদের এই বইয়ের পাঠক ও পাঠিকাদের বহুক্ষেত্রেই Open-ended প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে। এই ধরনের প্রশ্ন / কর্মপত্র ছাত্রছাত্রীদের অনুসন্ধিৎসা বৃদ্ধি ও পাঠ্যবইয়ের বাইরের জগৎ থেকে জ্ঞান আহরণে উৎসাহী করে তুলতে সংযোজিত হয়েছে। এটিও এই বইয়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

বইটি সম্বন্ধে যে-কোনো গঠনমূলক পরামর্শ সাদরে গৃহীত হবে।

ভৌত পরিবেশ

তাপ

ঠাণ্ডা ও গরমের ধারণা

নিচের ছবিগুলো দেখো

Hot water container

উপরের ছবিতে তিনটি বাটির জলের উষ্ণতা ঠান্ডা জল আর অন্য দুটিছে তীব্র মাত্রার গরম জল আছে। আঙুল ডুবিয়ে যদি তিনটি পাত্রের জলের গরম অবস্থার বর্ণনা দিতে চাও তাহলে কীভাবে এই অবস্থার বর্ণনা করবে? উষ্ণতা হয় 'ঠাণ্ডা' অথবা 'গরম' অথবা 'বেশি গরম'?

কিন্তু যদি বিভিন্ন মাত্রার গরম জলের অনেকগুলো পাত্র নেওয়া হয়, একই ধরনের শব্দ দিয়ে তাদের গরম বা ঠান্ডা অবস্থাকে আলাদা করে বোঝানো প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।

অথবা আমরা চাই যে নানারকমের ঠান্ডা-গরম অবস্থার বর্ণনা দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের থাকুক। যখন শব্দ দিয়ে এটা হচ্ছে না, এমন কিছু কি তোমার মনে আসছে যা দিয়ে কি সম্ভব? নানারকমের টাকার হিসাব আমরা সংখ্যা দিয়ে করি। নানারকম ওজন আমরা সংখ্যা দিয়ে বোঝাই, এখানেও কি ওইভাবে সংখ্যা ব্যবহার করা সম্ভব?

বিভিন্ন ঠান্ডা-গরম অবস্থা প্রকাশের জন্যও তাই বিভিন্ন সংখ্যা ব্যবহার করা হয়। এখন প্রশ্ন, কতটা ঠান্ডা বা কতটা গরমের জন্য কোন সংখ্যা, তা ঠিক হবে কীভাবে? চলো নীচের পরীক্ষাটি থেকে এই প্রশ্নের উত্তর আন্দাজ করা যাক।

উষ্ণতা ও তাপ পরিমাপ :

উপকরণঃ

  • 1) ঢাকনাওয়ালা একটি ছোটো কাচের শিশি।
  • 2) কিছুটা রঙিন জল।
  • 3) পেনের সরু খালি রিফিল।
  • 4) এক বাটি গরম জল।

পদ্ধতি : খালি শিশিতে কিছুটা রঙিন জল নাও। জলের পরিমাণ এমন হবে যাতে শিশির মধ্যে বায়ুপূর্ণ স্থানের পরিমাণ বেশি হয়। এই শিশির মুখটা ভালো করে আটকাও। শিশির ছিপিতে দুটি পেনের দু-মুখ খোলা ফাঁকা সরু রিফিলের নলটা চোঙাকার মতো একটা ফুটো করো। ওই ফুটো দিয়ে ওই ফাঁকা রিফিল ঢোকাও। মুখে মাথার স্ট্রম বোলের আর রিফিলের জোরের মুখে লাগাও।

শিশিটাকে কিছুক্ষন বাটির গরম জলে এমন ভাবে ডুবিয়ে রাখো যাতে শিশির বায়ুপূর্ণ স্থানের

বেশিভাগটা জলের তলায় থাকে। কী দেখলে? রিফিলের নল দিয়ে রঙিন জল কি কিছুটা উপরে উঠল? জল যতটা উঠল সেখানে নলের গায়ে একটা দাগ দাও।

এবার বাটির জলটা আরও একটু বেশি গরম করে পরীক্ষাটি আবার করো। দেখত এবার রঙিন জল রিফিলের নল দিয়ে বেশি উষ্ণতায় উঠল কিনা। জল যতদূর উঠল সেখানে নলের গায়ে আবার দাগ দাও।

তোমার জ্যামিতি বাক্সের স্কেল দিয়ে সহজেই তুমি দাগ অবধি রঙিন জলের উষ্ণতা মাপতে পারো। যার ফলে তুমি দুটি আলাদা সংখ্যা পাবে যা দেখেই মনে বোঝায়। নিশ্চয়ই বুঝতে পারছ এই দূরক্ম দেখবার জন্য দুটি আলাদা সংখ্যা পাওয়ার কারণ কী। বাটির জল দু-বার দু-রকম গরম ছিল। তাই রঙিন জল দু-বার দু-রকম উষ্ণতায় উঠেছে। আমরা দুরকম গরমের জন্য দুটি আলাদা সংখ্যা পেয়েছি।

এইভাবে বিভিন্ন গরম-ঠান্ডা অবস্থার জন্য সংখ্যা ঠিক করতে অপর একটি রাশি (যেমন- এক্ষেত্রে দেখা) সাহায্য নেওয়া হয়।

তোমরা বাড়িতে সুস্থ মাপার জন্য থার্মোমিটার দেখেছ। এর কাজ হলো থার্মোমিটারের মধ্যে সূচের পারস্পরিক দূরত্ব দেখে বাধ্য। তবে থার্মোমিটারের গায়ে কোথা সংখ্যাটি কিছু দেখাবার মাপ নয়। পারদস্তম্ভ দেখবে বাড়ে তা হল সম্পর্ক রেখে থার্মোমিটারের গায়ের সংখ্যাগুলি ঠিক করা হয়েছে। গরম বা ঠান্ডা অবস্থা প্রকাশের জন্য এভাবে যে সংখ্যা পাওয়া যায় তাকে আমরা বাল উষ্ণতার পরিমাপ। উষ্ণতা মাপার জন্য থার্মোমিটার তৈরি করা হয়। বিভিন্নরকম গরমের সংক্ষেপণে পারদস্তম্ভ যখন বিভিন্ন উষ্ণতায় ওঠে তখন তা বিভিন্ন উষ্ণতা বোঝায়।

নীচের ছবিদুটি লক্ষ্য করো।

Thermometer setup 1

ছবি : 1

Thermometer setup 2

ছবি : 2

দুটি থার্মোমিটার একই রকম। দুটি ছবিতেই থার্মোমিটার দুটি একই তরলের মধ্যে বোঝানো আছে।

  • 1) ১ নং ছবিতে থার্মোমিটার পারদস্তম্ভের উষ্ণতা সঠিকতাকে দেখানো হয়েছে? যুক্তি দিয়ে লেখো।
  • 2) ২ নং ছবিতে থার্মোমিটার দুটির পারদস্তম্ভের সঠিকতাকে দেখানো আছে? তোমার উত্তরের সম্পর্কে যুক্তি দাও।

ভৌত পরিবেশ

Figure A

দুটি আলাদা পাত্রে তরল নেওয়া হলো। পাশের ছবিতে থার্মোমিটারের পারদস্তম্ভের উচ্চতা দেখে বলো কোন পাত্রের তরলের উষ্ণতা বেশি - 'ক' না 'খ'?

পাশের ছবিতে ছবিতে শুধু একই গঠনের থার্মোমিটার 'ক' ও 'খ' দেখানো হয়েছে। দুটি থার্মোমিটারেই পারদস্তম্ভ একটি পাত্রে রাখা বরফের মধ্যে ডোবানো আছে। এই অবস্থায় থার্মোমিটার দুটির পারদস্তম্ভ যে উষ্ণতায় উঠেছে সেখানে দাগ কাটা হয়েছে। ছবিতে ওই দুটি দাগের পাশে নিচের ইছাজ মতে দুটি আলাদা সংখ্যা বসাও।

Figure B
Figure C

পাশের ছবিতে পাত্রের জলটা ফুটছে। ফুটন্ত জলের একটি উপরে উপরিভাগ থার্মোমিটার দুটির পারদস্তম্ভে রাসাদের পারদস্তম্ভের উষ্ণতা বাড়তে বাড়তে একসময় স্থির হয়। থার্মোমিটারের যে উষ্ণতা পারদস্তম্ভ উপরে দেখাল একটা দাগ দেওয়া হয়। এই দাগটা ওই থার্মোমিটারের পারদস্তম্ভে উষ্ণতা চিহ্নিত করিয়েছি। ছবিতে 'গ' ও 'ঘ' থার্মোমিটারে দুটি দাগ দেওয়া আছে। তার পাশে নিজের ইছাতে মতো দুটি আলাদা সংখ্যা ফেলো, দেখখো দুটি আগের ছবিতে বরফে বোঝানো থার্মোমিটারের গায়ে দেখা সংখ্যা দুটির চাইতে বেশি।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

নীচে সঠিক স্থানে তোমার ভাষা সংখ্যাগুলো লেখো।

পারদস্তম্ভ যেখানে উঠেছে ক-থার্মোমিটার খ-থার্মোমিটার
গরম বাষ্পে পার (U)
বরফে ডোবানোর পর (L)
U – L (বিয়োগফল)
দুটি দাগের মধ্যবর্তী অঞ্চলকে কত ভাগে ভাগ করলে একটি ভাগকে এক ডিগ্রি বলা হয়?

পাশের ছবিটি ভালো করে দেখো –

'ক' ও 'খ' দুটি থার্মোমিটারই একরকম। একই জিনিস দিয়ে তৈরি। একটি পাত্রে বরফ ও বরফ-পাওয়া জল একসঙ্গে আছে। জল ও বরফের এই মিশ্রণের মধ্যে দুটি থার্মোমিটারের পারদস্তম্ভ ছবির মতো করে ডোবানো হলো।

Thermometer 1

Thermometer 2

32°

নীচের সারণিটি ভালো করে দেখো ও পারদস্তম্ভ যে উচ্চতায় উঠেছে তার পাশে লেখা সংখ্যা দুটি লক্ষ্য করো।

সারণি - 1

পারদ স্তম্ভের উচ্চতা ক ও খ-তে একই
পারদস্তম্ভ যে উচ্চতায় রয়েছে সেখানে সংখ্যা দিয়ে প্রকাশিত গরমের মাত্রা (L) 32°
Thermometer 3

100°

Thermometer 4

212°

পাশের চিত্রে 'ক' ও 'খ' দুটি থার্মোমিটারই একরকম। দুটি থার্মোমিটারেই কুঁড়কে একটি পাত্রে রাখা ফুটন্ত জলের ও ওপরের বাষ্পে রাখা হলো। পারদস্তম্ভ যেখানে উঠল সেখানে সংখ্যা লিখে গরমের মাত্রা বোঝানো হয়েছে।

ভৌত পরিবেশ

নীচের সারণিটি দেখো ও সংখ্যাদুটি লক্ষ্য করো।

সারণি - 2

পারদ স্তম্ভের উচ্চতা ক ও খ-তে একই
সংখ্যা দিয়ে প্রকাশিত বেশি গরমের মাত্রা (U) 100° 212°

সারণি - 1 ও সারণি - 2 মিলিয়ে লেখো :-

বরফ জলে ডোবানোর পর লেখা সংখ্যা (L)
ফুটন্ত জলের উপরে রাখার পর লেখা সংখ্যা (U)
U–L
দুটি দাগের মধ্যবর্তী অঞ্চলকে কত ভাগে ভাগ করলে একটি ভাগকে এক ডিগ্রি বলা হবে?

উপরে নেওয়া 'ক' থার্মোমিটারকে যেভাবে সংখ্যা লিখে ভাগ করা হয়েছে তাকে সেলসিয়াস স্কেল, আর 'খ' থার্মোমিটারকে যেভাবে ভাগ করা হয়েছে তাকে ফারেনহাইট স্কেল। সেলসিয়াসকে C ও ফারেনহাইটকে F দিয়ে দেখানো হয়।

সেলসিয়াস

Celsius scale

ফারেনহাইট

Fahrenheit scale

0°C

Celsius 0C

32°F

Fahrenheit 32F

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

100°

Celsius scale

212°

Fahrenheit scale

32°

দেখা দিয়ে বোঝানো সেলসিয়াস ও ফারেনহাইট থার্মোমিটারের স্কেলের ছবি পাশে দেওয়া হলো।

ধরা যাক, একটি নির্দিষ্ট বস্তুর উষ্ণতা সেলসিয়াস স্কেলে 'C' ও ফারেনহাইট স্কেলে 'F' পর্যন্ত দেখাচ্ছে।

সেলসিয়াস স্কেলে 0°C থেকে C-এর দূরত্ব এবং ফারেনহাইট স্কেলে 32°F থেকে F-এর দূরত্ব সমান।

এবার বলতো, 0° থেকে C-এর মধ্যে কতগুলি ঘর আছে, এবং 32° থেকে F-এর মধ্যে কতগুলি ঘর আছে?

আগেও দেখেছি সেলসিয়াস স্কেলের 100 ঘর সবসময় ফারেনহাইট স্কেলের 180 ঘরের সমান।

তাহলে সেলসিয়াস স্কেলের C সংখ্যক ঘর সবসময় ফারেনহাইট স্কেলের $ \frac{180 \times C}{100} $ সংখ্যক ঘরের সমান।

অতএব, সেলসিয়াস স্কেলের C সংখ্যক ঘর সবসময় ফারেনহাইট স্কেলের $ \frac{180 \times C}{100} $ ঘরের সমান।

তাহলে লেখা যায়,

$ \frac{C}{100} = \frac{F-32}{180} $

$ \frac{C}{5} = \frac{F-32}{9} $

আবার, $ \frac{9C}{5} = F-32 $ হলে

$ বা, C = \frac{5}{9}(F-32) $

এবার 40°C কত ডিগ্রি ফারেনহাইটের সমান তা কষে বের করো।

উষ্ণতার পরিবর্তন ও তাপের ধারণা :

শীতকালে ঠান্ডা জলের সঙ্গে গরম জল মিশিয়ে আমরা অনেকেই স্নান করি। এসো দেখি তা থেকে আমরা কি নতুন বিষয় শিখতে পারি।

ভৌত পরিবেশ

নীচের ছবিদুটি লক্ষ্য করো।

Bucket with water

বালতিতে 15°C উষ্ণতা জল

Basin with water

গামলাতে 97°C উষ্ণতা জল

এবার বলো, বালতির জল ও গামলার জল মিশিয়ে দিলে কী হবে?

ঠিক উত্তরের পাশে '✓' দাও

মেশানো জল গামলার জলের চাইতে কম গরম

মেশানো জল বালতির জলের চাইতে বেশি গরম

তুমি দেখতে পেলে যে দুটি আলাদা উষ্ণতার বস্তু সংস্পর্শে এলে একটার উষ্ণতা বাড়ে ও অন্যটির উষ্ণতা কমে। এখন প্রশ্ন এটা কেন হয়?

যে বস্তুটির উষ্ণতা বাড়ল ভাবা যেতে পারে যে সে বাড়তি কিছু পেল। একইভাবে যার উষ্ণতা কমল সে কিছু হারাল।

দুটি ভিন্ন উষ্ণতার বস্তু পরস্পরের সংস্পর্শে এলে যা হারায় বা যা বাড়তির থাকেই তা আমরা বলি তাপ (Heat)।

তাহলে যখন কোনো বস্তুর উষ্ণতা বাড়েও না কমেও না, স্থির থাকে অর্থাৎ বস্তুটি কিছু বাড়তিও পায়ও না হারায়ও না তখন তাপের কথা ভাবার প্রয়োজন পড়ে না। ওপরের পরীক্ষায় গরম ও ঠান্ডা জলের উষ্ণতার পরিবর্তন ঘটলেও জল তরলই ছিল, তার অবস্থার কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। কিন্তু পরে আমরা দেখবো যে কোনো পদার্থের যখন অবস্থার পরিবর্তন ঘটে (পদার্থটি কঠিন থেকে তরল হয়, বা তরল থেকে বাষ্প হয়, বা বাষ্প থেকে তরল হয় ইত্যাদি) তখন তাপ গ্রহণ বা বর্জন সত্ত্বেও ওই পদার্থটির উষ্ণতার কোনো পরিবর্তন হয় না।

গৃহীত বা বর্জিত তাপের পরিমাপ

দুটি বুনসু একই রকম পাত্রে নেওয়া হলো। পারদটিতে ঘরের উষ্ণতা (প্রায় 25°C) সমান পরিমাণে জল নেওয়া হলো। একই বাটির দিয়ে পাত্র দুটির জলকে গরম করা হলো। ধরো, প্রথম পাত্রের জলকে 50°C পর্যন্ত উষ্ণতা করা হলো। এবং দ্বিতীয় পাত্রকে 75°C পর্যন্ত উষ্ণতা করা হলো। (শূন্যস্থান পূরণ এবং উপযুক্ত স্থানে '✓' দাও)।

Heating apparatus 1

50°C

Heating apparatus 2

75°C

দ্বিতীয় পাত্রের জলের উষ্ণতা বাড়ানো হলো? ____ °C।

কোন পাত্রের জলকে উষ্ণও করতে বেশি তাপ দিতে হয়েছে বলে তোমার মনে হয়?

এখন 50°C ও 75°C উষ্ণতার জল সহ পাত্র দুটোকে ঘরের উষ্ণতায় (25°C) রেখে দেওয়া হলো।

তাহলে এই দুই পাত্রের জলই আলাদা আলাদা তাপ হারিয়েছে কোনো না কোনো সময়ে ঘরের উষ্ণতায় আসবে। অর্থাৎ প্রথম পাত্রের জলের উষ্ণতা কমবে (50-25)°C=25°C আর দ্বিতীয় পাত্রের জলের উষ্ণতা কমবে (75-25)°C=50°C।

এবার বুঝব তো কোন পাত্র বেশি তাপ হারিয়েছে?

তাহলে বলা যায়-

নির্দিষ্ট ভরের কোনো বস্তু বাইরে থেকে কতটা তাপ নিয়েছে বা কতটা তাপ ওই বস্তু থেকে বাহিরে বেরিয়ে গেছে সেটা নির্ভর করে ওই বস্তুর উষ্ণতা আগের থেকে কতটা বাড়ল বা কমল তার উপর। উষ্ণতা বৃদ্ধির পরিমাণ যদি দ্বিগুণ হয় তবে বস্তুর নেওয়া তাপের পরিমাণও দ্বিগুণ হবে। একটি বস্তুর উষ্ণতা 10°C থেকে 20°C করতে যতটা তাপ দরকার 20°C থেকে 40°C করতে তার দ্বিগুণ তাপ দরকার।

ভৌত পরিবেশ

বস্তু বাহিরে থেকে কতটা তাপ নেয় বা বাহিরে কতটা তাপ দেয় তার সঙ্গে বস্তুর উষ্ণতা বৃদ্ধি বা উষ্ণতা হ্রাসের সরল সম্পর্ক রয়েছে।

একটি পাত্রে একগ্লাস জল নেওয়া হলো। জলের উষ্ণতা 25°C। একটি বার্নার দিয়ে এই জলকে 50°C পর্যন্ত উষ্ণও করা হলো। এবং ওই পাত্র খালি করে তাতে কুড়ি গ্লাস জল নেওয়া হলো। জলের উষ্ণতা এবারেও 25°C। ওই বার্নার দিয়ে এই জলের উষ্ণতা বাড়িয়ে আবার 50°C করা হলো।

Glass with water

25°C উষ্ণতায় জল

Heating water 1

50°C

Heating water 2

50°C

এবার বলো তো কোন ক্ষেত্রে জল 25°C থেকে 50°C অবধি উষ্ণও হতে বেশি তাপ নেবে? এক গ্লাস জল না কুড়ি গ্লাস জল?

যে বস্তুর উষ্ণতা বাড়াতে এক-বাটি জলের যত তাপ লাগে, এক বালতি জলের তার চেয়ে অনেক বেশি তাপ লাগে — এটা নিশ্চয়ই তোমরা বাড়িতে লক্ষ করেছ।

তাই বলা যায় উপাদান একই থাকলে উষ্ণতা একই পরিমাপ বাড়াতে বেশি ভরের বস্তুর বেশি তাপ দরকার।

উষ্ণতা নির্দিষ্ট পরিমাণ বাড়া বা কমানোর জন্য কোনো বস্তু কতটা তাপ নেবে বা হারাবে, সেটা ওই বস্তুটার ভরের সঙ্গে সরল সম্পর্কে থাকবে।

এবার দুধও এবং একই রকম দুটি পাত্রে নেওয়া হলো। একটা পাত্রে এক বাটি দুধ আর অন্যে একই ভরের জল নেওয়া হলো। এরা যাক দুধ ও জল উভয়েই একই উষ্ণতায় (25°C) আছে।

এবার একই ধরনের দুটি বার্নার দিয়ে দুধ ও জল আলাদা করে একই সময় ধরেও উষ্ণও করা হলো।

Milk

25°C

Water

25°C

Heated milk

55°C

Heated water

53°C

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

দেখা যায়, একই সময়ে উষ্ণও করা সত্ত্বেও দুই তরলের উষ্ণতা আলাদা আলাদা হয়, দুধের উষ্ণতা জলের চেয়ে বেশি হয়।

যেহেতু একই সময় ধরে গরম করা হয়েছে, তাহলে ধরে নেওয়া যায় ওই তরলকে একই পরিমাণ তাপ দেওয়া হয়েছে।

একক্ষেত্রে সমান ভরের দুটি আলাদা পদার্থকে সমপরিমাণ তাপ দেওয়া হলেও উষ্ণতা বৃদ্ধি সমান হয়নি। এ থেকে বলা যেতে পারে উষ্ণতা বৃদ্ধি বা হ্রাসের জন্য একটি বস্তু কতটা তাপ গ্রহণ বা বর্জন করবে তা বস্তুটি কোন পদার্থ দিয়ে তৈরি তার উপর নির্ভর করে।

তাহলে নিচের তালিকাটি পূরণ করো-

কোনো বস্তুর উষ্ণতা বৃদ্ধি বা হ্রাসের জন্য বাইরে থেকে কতটা তাপ নেবে বা হারাবে তা যে যে বিষয়গুলোর ওপর নির্ভর করে সেগুলো হলো

তাপের পরিমাপ করার জন্য SI পদ্ধতিতে যে একক ব্যবহার করা হয় তা হলো জুল। এছাড়াও অন্য একটি এককও তাপ পরিমাপের জন্য প্রচলিত। সেটি হলো ক্যালোরি। ক্যালোরি কিন্তু SI একক নয়।

তাপ প্রয়োগে পদার্থের অবস্থার পরিবর্তন

এসো একটা পরীক্ষা করা যাক।

Experiment 1 Experiment 2 Experiment 3 Experiment 4

ঘরের উষ্ণতায় (ধরো 25°C) একটি গ্লাস নাও। এবার গ্লাসের মধ্যে একটা বড়ো মাপের (গ্লাসের মধ্যে রাখা যায় এমন) বরফের টুকরো নাও। যদি একটি থার্মোমিটার দিয়ে তুমি বরফটার উষ্ণতা মাপতে তাহলে তুমি থার্মোমিটারে এই পাঠ 0°C পেতে।

ভৌত পরিবেশ

এই অবস্থায় কিছুক্ষণ রেখে দাও এবং কী ঘটছে তা লক্ষ্য করো। দেখতে পাচ্ছ বরফটা গলছে আর জলে পরিণত হচ্ছে।

এবার আবার থার্মোমিটার দিয়ে বরফটার উষ্ণতা পরিমাপ করো। দেখা গেল এবারও বরফের উষ্ণতা 0°C, অর্থাৎ বরফের উষ্ণতার কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না।

এবার গ্লাসটার গায়ে হাত দিয়ে দেখো।

দেখবে গ্লাসটা অনেকটা ঠান্ডা হয়ে গেছে। যদি তুমি থার্মোমিটার দিয়ে গ্লাসটার উষ্ণতা মাপতে, তবে দেখবে গ্লাসের উষ্ণতা 25°C-র চেয়ে অনেক কমে গেছে।

নীচের সারণিটি পূরণ করো

পরীক্ষা শুরুর আগে পরীক্ষা চলাকালীন অবস্থায়
উষ্ণতা বাড়ছে/কমছে/একই রয়েছে
বরফের উষ্ণতা = 0°C
গ্লাসের উষ্ণতা = 25°C

এভাবেই বারবার বরফ আর গ্লাসের উষ্ণতা মাপতে থাকলে, তুমি দেখতে পাবে, পুরো বরফটা গলে জলে পরিণত না হওয়া পর্যন্ত বরফের উষ্ণতার কোনো পরিবর্তন ঘটছে না। কিন্তু গ্লাসে বরফ নেওয়ার পর থেকেই গ্লাসের উষ্ণতা কমতে থাকবে।

তাহলে গ্লাস নিশ্চয়ই তাপ হারিয়েছে। তবে সেই তাপ গেল কোথায়?

তাহলে কী বরফের এই জলে পরিণত হওয়া আর গ্লাসের তাপ হারানোর মধ্যে কোনো সম্পর্ক আছে? আসলে গ্লাস কিছু তাপ হারিয়েছে। আর সেই তাপ গ্রহণ করেছে বরফ। আর তাতেই বরফ গলে জলে পরিণত হয়েছে। কিন্তু বরফের গ্রহণ করা এই তাপ বরফের উষ্ণতার কোনো পরিবর্তন ঘটায়নি। তাই এই তাপকে লীন তাপ বলে।

যে-কোনো পদার্থই তার এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় বদলে যাওয়ার সময়ে বাইরে থেকে কিছু লীন তাপ সংগ্রহ করে অথবা হারায়। কিন্তু এই তাপ ওই পদার্থের উষ্ণতার কোনো পরিবর্তন ঘটায় না।

এক্ষেত্রে 0°C উষ্ণতার বরফ লীন তাপ সংগ্রহ করে 0°C উষ্ণতার জলে পরিণত হয়েছে।

এইভাবে পদার্থের কঠিন অবস্থা থেকে তরল অবস্থায় পরিণত হওয়ার ঘটনাকে 'গলন' বলে। আর এই পরিবর্তনের সময় পদার্থ যে তাপ গ্রহণ করে তাকে গলনের লীন তাপ বলে।

যেমন বরফ গলনের লীন তাপ 80 ক্যালোরি / গ্রাম। অর্থাৎ 0°C উষ্ণতার 1 গ্রাম বিশুদ্ধ বরফ ওই উষ্ণতার 1 গ্রাম বিশুদ্ধ জলে পরিণত হতে বাইরে থেকে 80 ক্যালোরি তাপ গ্রহণ করে।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

এবার জেনে নেওয়া যাক, পদার্থের অবস্থার পরিবর্তন কত রকমের হয়। নীচের তালিকাটি ভালো করে লক্ষ্য করো:

তাপ গ্রহণ

কঠিন অবস্থা
তরল অবস্থা
বাষ্প অবস্থা

তাপ বর্জন

কঠিন অবস্থা
তরল অবস্থা
বাষ্প অবস্থা

এবার নীচের সারণিটি পূরণ করো—

পদার্থ কোন অবস্থা থেকে কোন অবস্থায় বদলাচ্ছে অবস্থার পরিবর্তনের নাম লীন তাপ গ্রহণ/বর্জন লীন তাপের নাম
কঠিন থেকে তরল গলন গলনের লীন তাপ
তরল থেকে কঠিন কঠিনীভবন বর্জন
তরল থেকে বাষ্প বাষ্পীভবন গ্রহণ
বাষ্প থেকে তরল ঘনীভবন

একক ভরের কোনো পদার্থের উষ্ণতার পরিবর্তন না ঘটিয়ে যদি শুধু অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হয়, তখন ওই পদার্থ বাইরে থেকে যে পরিমাণ তাপ গ্রহণ বা বর্জন করে, সেই পরিমাণ তাপকেই ওই পদার্থের ওই অবস্থার পরিবর্তনের লীন তাপ বলে।

'ক' এবং 'খ' তালিকা দুটো ভালোভাবে লক্ষ্য করো। জল তার বিভিন্ন অবস্থা পরিবর্তনের জন্য বাইরে থেকে কতটা লীন তাপ গ্রহণ বা বর্জন করে তা এই তালিকা থেকে জানতে পারবে।

গলন

+80 ক্যালোরি তাপ

1 গ্রাম বরফ
1 গ্রাম জল

0°C

-80 ক্যালোরি তাপ

কঠিনীভবন

ক তালিকা

ভৌত পরিবেশ

+537 ক্যালোরি তাপ

বাষ্পীভবন

1 গ্রাম জল
1 গ্রাম বাষ্প

100°C

-537 ক্যালোরি তাপ

ঘনীভবন

খ তালিকা

হাতে স্পিরিট বা ইথার ঢাললে যে জায়গায় ঠান্ডা অনুভূত হয়। আসলে, স্পিরিট বা ইথার উদ্বায়ী পদার্থ (এই ধরনের পদার্থের খুব তাড়াতাড়ি বাষ্পীভবন হয়)। বাষ্পীভবনের জন্য দরকার লীন তাপ।

স্পিরিট এই লীন তাপ কোথা থেকে নেবে? স্পিরিট তখন আশপাশের পরিবেশ ও হাত থেকেই সেই লীন তাপ সংগ্রহ করে। ফলে হাতের ওই অংশ তখন তাপ হারায়। তখন পাশাপাশি অঞ্চলের তুলনায় ওই অংশের উষ্ণতা কমে যায়। ফলে ওই অংশে ঠান্ডা অনুভূত হয়।

মাটির কলসির জল ঠান্ডা থাকে। আসলে, মাটির কলসির গায়ে অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্র থাকে। ওই ছিদ্রগুলো দিয়ে সামান্য পরিমাণ জল কলসির বাইরে বেরিয়ে আসে। তখন তার বাষ্পীভবন ঘটে। ফলে দরকার হয় লীন তাপের। ওই বেরিয়ে আসা জল তখন কলসি এবং কলসির জল যেখানে রাখা আছে সেখান থেকে প্রয়োজনীয় লীন তাপ সংগ্রহ করে। ফলে কলসি ও কলসির জল তাপ হারিয়ে ঠান্ডা হয়ে পড়ে।

এখন দেখো তো তুমি নীচের ঘটনাগুলোর ব্যাখ্যা করতে পারো কিনা।

স্নান করে ওঠার পর পাখা চালালে তার নীচে ঠান্ডা বোধ হয়।

জল দিয়ে ঘর মোছার পর মেঝে ঠান্ডা হয়।

গরমকালে ঘরের জানালা-দরজা খোলা রেখে ভেজা পরদা টাঙানো হলে ঘর বেশ ঠান্ডা থাকে।

জীবনের শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াও তাপের ভূমিকা

Lizard Penguin Polar Bear

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

জীবের আকৃতি, প্রকৃতি ও জীবনযাত্রার তারতম্যের পিছনে তাপ ও উষ্ণতার প্রভাব আছে। শীতপ্রধান অঞ্চলের প্রাণী গ্রীষ্মপ্রধান এলাকার ইতর প্রাণী তুলনায় বেশি মোমেশ – কুকুর)। গরমের দিনে মানুষের গা থেকে দরদর করে ঘাম পড়ে। কুকুরের জিভ থেকে লালা পড়ে। সবই দেহকে ঠান্ডা রাখার জন্য। আবার মেরু ভাল্লুকের দেহে ঘন লোম বা পেঙ্গুইনদের গা জড়জড়ি করে থাকা সবই শরীরকে গরম রাখার জন্য। খুব গরমে চারাগাছ শুকিয়ে যায়। আবার গরম বারিতে টিকটিকি, সাপের মতো ঠান্ডা রক্তের প্রাণীরা রোদ পোহায়। এসব ঘটনা তাপের সঙ্গেই ঘটে।

Lizard in sun

কোনো জীব কতটা তাপ দেহের ভেতরে তৈরি করতে পারে এবং বাইরের পরিবেশের সঙ্গে ওই জীবের কতটা পরিমাণ তাপের আদান-প্রদান হয়, তার ভিত্তিতে বিভিন্ন জীবের তাপের তারতম্য হয়।

দেহের তাপমাত্রা বা উষ্ণতা বেড়ে গেলে দেখি মানুষ কী কী করে –

  • 1. বাড়িয়ে দেয়। 2. .................... হার বেড়ে যায়।
  • 3. .................... ব্যাস বেড়ে যায়। 4. .................... পরিমাপ করা যায়।
  • 5. .................... অনীহা ও কুঁড়েমী দেখা যায়।

নীচের শব্দভান্ডার থেকে ওপরের শূন্যস্থানগুলি পূরণ করো।

শব্দভান্ডার: শ্বাসক্রিয়া, খাদ্যগ্রহণ,ঘাম বেরোনো, স্বভেজ, রক্তনালী।

আর দেহের তাপমাত্রা বা উষ্ণতা কমে গেলে মানুষের শরীরে কী কী ঘটে তা নীচের শব্দভান্ডারের সাহায্যে লেখো।

শব্দভান্ডার: কাঁপুনী, খাদ্যগ্রহণ, ঘাম বেরোনো, লোম।

  • 1. ..................... 2. ..................... 3. ..................... 4. .....................

বাবলা, আমবটুল, শশনি ও রাধাচুরায় মতো কিছু গাছের পাতা দিনের বেলায় একটা নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় খুলে যায়। আবার রাত হলে মুড়ে যায়। আবার বহু ফুলের পাপড়িও পরিবেশের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে মুড়ে যায়।

তোমার চারদিকের জীবজগতের ওপর তাপের প্রভাবের কয়েকটি ঘটনা নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করো ও নীচে শেখে লেখো।

ভৌত পরিবেশ

আলো

প্রাকৃতিক জীবনে আলো সম্পর্কিত ঘটনা ও আলোর সরলরৈখিক গতি

  • জানালা থেকে একটু উজ্জ্বল রোদে ঘরের মধ্যে তুমি পড়ছো। এমন সময় তোমার জানালার পাশে এসে দাঁড়ালেন। ব্যাস, উজ্জ্বল রোদের বদলে একটা ছায়া এসে হাজির। এখন সব আবছা আবছা হয়ে গেল।
  • অনুরূপ দুপুরবেলা বিলোপাতে বেড়ায়না বলছিলি। তখনয় দেখেছিলাম জলে ঢেউ-এর খেলা। কিন্তু হঠাৎই দেখ যেন আলোয় বাঁধিয়ে উঠেছিল। তখন ঢেউগুলো চকচকে লাগছিল।
  • আয়নায় খালি বালতিটা যখন জল দিয়ে ভরছি কারণ তখন হঠাৎই বালতিটার উপর থেকে দেখে ও অবাক হয়ে গেল। বালতিটা পাতলাটা যেন নিচে কমে গেছে।
  • সূর্যটা একদিন দুপুরবেলা বিছানায় ছিল। ঘুম আসছিল না। হঠাৎই দেখতে পেল ডেস্কটপের দিয়ে সূর্যের আলোটা দিরের দেওয়ালে পড়ে কতগুলো গোল গোল আলোর চাকতি তৈরি করেছে। কিন্তু ওইরকম গোল গোল আকৃতি কেন?
  • পুকুরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় প্রভুত্ব প্রতিদিন দেখে পুকুরের গাছের আর পুকুর পাড়ের গাছগুলোর কেমন সুন্দর ছবি পড়ে। পুকুরটা ঠিক যেন একটা আয়না।
  • আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে তুমি ভাব ও যখন ডান হাত তোছ তখন আয়নায় ওর ছবিটা একই রকমভাবে তার বাঁ-হাতও নাড়ে।
  • একটা সোজা লাঠিকে লম্বভাবে মাটিতে রেখেছিলি ছায়া মুখবতী হয়। প্রতিদিন ওটার রোদ পড়ে। সময় প্রতিদিন ওর ছায়া বাড়া বা কমানো অথবা কোনোও হয়তো হয় কখনও ও বাড়ে। কিন্তু মুখবতী অবস্থা দেখে দেখলে, সূর্য যখন মাথার ঠিক উপরে, তখন লাঠির ছায়া কোনো ছায়াই পড়ে না।
  • অনুরূপা একদিন জলভরতি বালতির মধ্যে একটি লাঠি ডুবিয়ে দেখে যে লাঠিটা যেন বাঁকা। কিন্তু তাই না লাঠিটাকে জলের উপরে তুলে অমনি ওটা আবার সোজা হয়ে গেল।

এরকম কত ঘটনাই আমরা দেখি প্রতিদিন আমাদের চারপাশে। এসেই আলোর খেলা। আলো সম্পর্কে জানলে, এসব ঘটনা কেন ঘটে তা বোঝা যায়। আমরা এমন সেটই করব – জানব আলোর নানা কথা।

দিনেরবেলা আমরা ঘরের ভিতর সব কিছু দেখতে পাই – খাট, আলমারি, চেয়ার, টেবিল সব কিছু। আর যখন রাত্রি নেমে আসে, ঘরের ভিতরের আলো নিভে যায়, চাঁদের আলো বা রাস্তার আলো জানালা দিয়ে ঘরে ঢুকতে পারে না, তখন আমরা ঘরের ভিতরের কোনো জিনিসই দেখতে পাই না। আন্দাজও ঠাওর করে চলতে হয়। অথচ যদি একটা জোনাকি পোকা কোনোভাবে ঘরে ঢুকে পড়ে সেটাকে দেখতে আমাদের কোনো অসুবিধা হয় না।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

এবার ভেবে বলো তো, জোনাকি পোকাটাকে তুমি দেখতে পেলে কেন?

অন্য জিনিসগুলোকে দিনেরবেলায় দেখতে পেলেও রাত্রিবেলায় অন্ধকারে দেখতে পাওনি কেন? রাত্রিবেলায়ও যদি তুমি ওই জিনিসগুলো দেখতে চাও, তাহলে তোমার কী চাই?

তাহলে দেখা গেল কিছু কিছু বস্তু যাদের নিজস্ব আলো আছে অর্থাৎ ওই বস্তুগুলো থেকে নিজস্ব আলো নির্গত হয়। এই বস্তুগুলোকে স্বপ্রভ বস্তু বা 'আলোর উৎস' বলে। যেমন – সূর্য, তারা, জোনাকি ইত্যাদি।

আবার যে বস্তুগুলোর নিজস্ব আলো নেই সেই বস্তুগুলোকে 'অপ্রভ বস্তু' বলে। যেমন – ইট, কাঠ, পাথর ইত্যাদি।

নীচের সারণিটি পূরণ করো। ঠিক স্থানে '✓' দাও।

বস্তু স্বপ্রভ অপ্রভ
কেরোসিন লম্ফ
পেন
জামার বোতাম
মোমবাতি (জ্বলন্ত)
জোনাকি
ছাতা
তারা
চশমা
সূর্য
চাঁদ

আলোর উৎস যদি আকারে খুব ছোটো হয়, আমরা অনেক সময় তাকে বিন্দু-উৎস বলি। একটি টর্চের আলোর সামনে কালো কার্ডবোর্ড রেখে ওই বোর্ডের গায়ে সিপ দিয়ে একটি ছিদ্র করা হলো। এই ছিদ্র দিয়ে যখন টর্চের আলো বেরিয়ে আসছে তখন ছিদ্রটিকে বিন্দু আলোকউৎস বলে ভাবা যেতে পারে। তবে একথা ভুলবে না যে জ্যামিতিতে আমরা বিন্দু বলতে যা বুঝি সেরকম অনেক বিন্দু মিলেলে আসলে এইসব বিন্দু উৎসগুলো তৈরি।

স্মৃতির বিস্তার করলে ওই কার্ডবোর্ডের ছিদ্র বিশেষ আদর্শ বিন্দু-উৎস নয়।

Light source diagram

ভৌত পরিবেশ

স্বপ্রভ বস্তু থেকে যেমন আলো উৎপন্ন হয়, তেমনি অপ্রভ বস্তুও আলোর উৎস হিসেবে আচরণ করতে পারে।

কোনো চিলনেয় বাগান ও প্রকৃতি থেকে অপ্রভ বস্তু হিসেবে চিত্র তুলে ধরো। যেমন চিলনেয় বা মেলার কাছে তোমার হাত রাখলে। সঙ্গে সঙ্গে তোমার হাতের তালুর আকৃতি একটা অন্ধকার জায়গা গঠিত হলো। তোমার হাতের তুলনায় আকৃতিটা একটু বড়ো।

Light source and shadow

কাচের জানালা বন্ধ করে রাখলে বাইরের রোদ তার মধ্য দিয়ে ঢোকে। কিন্তু কাচের জানালা তো তা হয় না। আলো সবরকম পদার্থের মধ্য দিয়ে যেতে পারে না।

দেখবে গ্লাসের জলের মধ্য দিয়ে কি আলো যেতে পারে? তুমি কি জল ভরতি পাত্রের অন্যদেশ থেকে দেখতে পাও?

Window image

বায়ু, স্বচ্ছ কাচ, জল ইত্যাদি বস্তুগুলোকে স্বচ্ছ বস্তু বা 'স্বচ্ছ মাধ্যম' বলে। এদেররর বস্তুর মধ্যে দিয়ে আলো সহজেই যাতায়াত করতে পারে। আবার, কাঠ, দেয়াল, লোহা ইত্যাদি যেসব বস্তুর মধ্যে দিয়ে আলো একেবারেই চলাচল করতে পারে না, তাদের 'অস্বচ্ছ বস্তু' বা 'অস্বচ্ছ মাধ্যম' বলে।

জানালা বন্ধ রয়েছে। জানালার মধ্য কাথা লাগানো। জানালার বাইরে যে বোন দাঁড়িয়ে আছে। আবছা একটা মূর্তি। ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। জানালা বন্ধ অবস্থায় যখন বৃষ্টি চলে ধরে আসে, তখন হালকা, ফিকে হওয়া রোদ আসে। আসলে ছায়া কাচ, কুয়াশা, তৈলিপ পেপার ইত্যাদি বস্তুর মধ্য দিয়ে আলো যাতায়াত করতে পারলেও, ভালোভাবে পারে না। তাই এই সমস্ত বস্তু বা মাধ্যমকে বলে ইষৎ স্বচ্ছ বস্তু বা 'ইষৎ স্বচ্ছ মাধ্যম'।

দরকারি কথা

কোনো মাধ্যম ছাড়াও আলো চলাচল করতে পারে। সূর্য ও পৃথিবীর মধ্যে এক বিরাট অংশে কোনো মাধ্যম থাকে না। তবু প্রতিদিন সূর্য থেকে আলো পৃথিবীতে এসে পৌঁছায়।

আলোর সরলরৈখিক গতি

একরকম ১

একটা সরু ও সোজা দু-মুখ খোলা পাইপ নাও।

এবার এক চোখ বন্ধ করে পাইপটার মধ্য দিয়ে একটা জ্বলন্ত মোমবাতিকে দেখাকে চেষ্টা করো।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

এবার একটা বাঁকা পাইপ নাও। পাইপটার মধ্য দিয়ে আগের মতো করেই শিখাটাকে দেখবার চেষ্টা করো।

Candle experiment 1 Candle experiment 2

বাঁকানো পাইপের মধ্য দিয়ে মোমবাতির শিখাটাকে আর দেখতে পাচ্ছ কি? কেন এমন হলো ভাবো।

কোনো বস্তুকে দেখতে হলে ওই বস্তু থেকে আলো এসে আমাদের চোখে পড়তে হবে। তবেই সেই বস্তুকে দেখা সম্ভব।

প্রথম ক্ষেত্রে সেটই হয়েছে।

তাহলে, দ্বিতীয় ক্ষেত্রে কি মোমবাতির শিখা থেকে আসা আলো তোমার চোখ অবধি পৌঁছায়নি?

কেন পৌঁছাল না? আলো কি আর আশারপাশে দেখা যায়? সেতোই বা কি পেল?

প্রথম ও দ্বিতীয় ক্ষেত্রে আলোর যাতায়াতের মধ্যে পার্থক্য দেখাও।

পাইপটা সোজা থাকায় আলো প্রথম ক্ষেত্রে শিখা থেকে চোখে পৌঁছাতে পেরেছে, দ্বিতীয় ক্ষেত্রে পাইপটা ছিল বাঁকা। আর তাই দ্বিতীয় ক্ষেত্রে আলো চোখে এসে পৌঁছাতে পারেনি।

তাহলে বলা যায়ঃ

আলো সরলরেখায় চলাচল করে। এটা আলোর একটা ধর্ম।

আলোর আচার-আচরণকে বুঝতে আমরা জ্যামিতির চিত্রের সাহায্য নিই। আলোর যাত্রাপথকে ওই চিত্রে তীর চিহ্ন যুক্ত সরলরেখায় সাহায্যে বোঝানো হয়।

আলোর চলার পথকে দিক যুক্ত যে কাল্পনিক সরলরেখা দিয়ে বোঝানো হয়, তাকে 'আলোক রশ্মি' (Ray of light) বলে। একটি আলোকরশ্মি বলে বাস্তবে কিছু নেই।

একসঙ্গে অসংখ্য আলোক রশ্মিকে, 'আলোক রশ্মিগুচ্ছ' (Beam of light) বলে।

আলোক রশ্মিগুচ্ছ তিন ধরনের হয়।

Parallel rays

সমান্তরাল আলোক রশ্মিগুচ্ছ

Diverging rays

অপসারী আলোক রশ্মিগুচ্ছ

Converging rays

অভিসারী আলোক রশ্মিগুচ্ছ

ভৌত পরিবেশ

প্রচ্ছায়া ও উপচ্ছায়া

সংখ্যা নেমে এসেছে। তোমার ঘরে উইন্ডলাইটেড (অশ্রুভরা আলোর অন্য কোনো উৎস) জ্বলছে। তুমি লাইফটার ঠিক উল্টো দিকে দেয়ালের কাছে তোমার হাত রাখলে। সঙ্গে সঙ্গে তোমার হাতের তালুর আকৃতি একটা অন্ধকার জায়গা গঠিত হলো। তোমার হাতের তুলনায় আকৃতিটা একটু বড়ো।

Hand image 1

উপচ্ছায়া

Hand image 2

প্রচ্ছায়া

ভালোভাবে লক্ষ্য করে দেখলে দেখা যায়, ওই অন্ধকার আকৃতির মাঝখানে আর বেশ গাঢ়। আর ওই গাঢ় অন্ধকার অংশকে ঘিরে রয়েছে একটা আবছা অন্ধকার অংশ।

ওই গাঢ় অন্ধকার অংশটি হলো ছায়া বা প্রচ্ছায়া। আর প্রচ্ছায়াকে ঘিরে থাকা আবছা অন্ধকার অংশটা হলো উপচ্ছায়া

Shadow image 3

তুমি হাত যত দেয়ালের কাছে নিচ্ছ, দেখবে ছায়া তত ছোটো হচ্ছে। আর উপচ্ছায়া ও কমছে। যখন হাত দেয়ালের খুব কাছে, তখন উপচ্ছায়া একেবারে নেই। শুধুই প্রচ্ছায়া।

আবার হাত যত দেয়াল থেকে দূরে সরিয়ে নিচ্ছ, তুমি দেখবে ছায়ার আকার ক্রমশ ছোটো হচ্ছে আর উপচ্ছায়া ক্রমেই বড়ো হচ্ছে।

Hand image 4 Candle shadow

এবার টিউটবলাইটটা নিভিয়ে দাও। বস্তুকে বলে একটা ছোটো মোমবাতি জ্বালিয়ে তোমার হাতের পেছনে সরত (ছবিতে দেখো)।

(একটা কালো পিচবোর্ডের মাঝে সেবক দিয়ে ফুটো করে মোমবাতির আলো ওই ফুটো দিয়ে পাঠাতে পারলে পরীক্ষাটা আরো ভালো হবে।)

কী দেখতে পেলে? দেখলে শুধুই তোমার হাতের ছায়া। উপচ্ছায়া অনুপস্থিত।

তাহলে দেখা যাচ্ছে, আলোক উৎস বড়ো হলে প্রচ্ছায়া আর উপচ্ছায়া দুটোই গঠিত হয়। আবার উৎস যদি বিন্দু উৎস বা ছোটো উৎস হয় তখন উপচ্ছায়া গঠিত হয় না। শুধুই ছায়া গঠিত হয়।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

এবার হাতকে মোমবাতির কাছে নিয়ে যাও। কী দেখতে পাচ্ছ? ছায়া ক্রমশ বড়ো হতে থাকছে। হাত আবার আগের স্থানে নিয়ে এসো।

Shadow 1 Shadow 2

এবার, হাতকে দেয়ালের কাছে নিয়ে যেতে থাকো। কী দেখছ? ছায়া ক্রমশ ছোটো হচ্ছে। দেয়ালে স্পর্শ করার ঠিক আগের মুহূর্তে ছায়ার দৈর্ঘ্য ও হাতের দৈর্ঘ্য সমান হয়ে গেল।

Shadow 3 Shadow 4

এবার মোমবাতিটা হাতের কাছ থেকে দূরে সরাতে থাকো। কী দেখতে পেলে? ছায়া ক্রমেই ছোটো হতে থাকছে। মোমবাতিকে আবার আগের স্থানে নিয়ে এসো।

Shadow 5 Shadow 6

ভৌত পরিবেশ

এখন, মোমবাতিটাকে হাতের কাছে আনতে থাকো। কী লক্ষ্য করছ? ছায়া ক্রমশ বড়ো হচ্ছে।

Shadow 1 Shadow 2

পরীক্ষাটা এবার মাঝখানটায় করো। মোমবাতিটাকে টেবিলের কিনারায় বসাও। ওর সামনে হাতটা ধরো। এবার বস্তুকে বলা একটা বড়ো কাসেলডার উল্টোটপিট করে তোমার হাতের পিছনে একটু দূরে সরাতো। সঙ্গে সঙ্গে ওই কাসেলডারের ওপরে তোমার হাতের ছায়া গঠিত হবে। (চিত্র -1)

Figure -1 Figure -2

চিত্র -1 চিত্র -2

এবার, কাসেলডারটা হাতের কাছ থেকে দূরে সরাতো থাকো। কী দেখছ? ছায়াটা ক্রমশ বড়ো হচ্ছে। (চিত্র -2) কাসেলডারের আগের স্থানে নিয়ে এসো।

Figure -3

চিত্র -3

এখন কাসেলডারটা হাতের দিকে এগিয়ে আনতে থাকো। এবার দেখতে পাবে ছায়া ক্রমশ ছোটো হচ্ছে। (চিত্র -3) কাসেলডারের হাতকে স্পর্শ করার ঠিক আগের মুহূর্তে ছায়ার দৈর্ঘ্য ও ছায়ার দৈর্ঘ্য সমান হয়ে যাবে। (চিত্র -4)

Figure -4

চিত্র -4

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

তোমরা জেনেছ আলো সরলরেখায় গমন করে। তাই আলোর চলার পথে কোনো অস্বচ্ছ বস্তু থাকলে, আলো বাধা পায়। আর সামনে এগোতে পারে না। কিন্তু বাধা না পাওয়া। আলো সরলরেখা ধরে সামনে এগিয়ে যায়। ফলে বস্তুর পেছনে কোনো পথ থাকলে তাতে বস্তুটার আকৃতিবিশিষ্ট অন্ধকার অংশ গঠিত হয়।

তাহলে দেখা গেল আলো সরলরেখায় গমন করে বলেই বস্তুর 'ছায়া' বা 'প্রচ্ছায়া' গঠিত হয়।

বিন্দু আলোক উৎস এর ক্ষেত্রে গঠিত হয় উপচ্ছায়া। এক্ষেত্রেও আলোর সরলরৈখিক গতি দায়ী। আসলে, উপচ্ছায়া অংশে আলোক উৎস থেকে কিছু অংশই আলো প্রবেশ করার সুযোগ পায়। তাই সেখানে অন্ধকার গাঢ় হতে পারে না।

Shadow formation diagram

ছবিতে দেখো AB অস্বচ্ছ বস্তু। P -বিন্দু উৎস থেকে আসা আলোকরশ্মিগুচ্ছ AB-র ধার থেয়ে PAA'ও PBB' পথে পর্যন্ত গিয়ে পড়েছে। APB ফাংশন আকৃতির আলোক কোনো আলোকরশ্মি পর্দায় পৌঁছোতে পারেনি। কারণ তারা AB - অস্বচ্ছ বস্তুতে বাধা পড়েছে। বাকি আলোক রশ্মিগুচ্ছ পর্দায় পৌঁছোতে কোনো বাধা পায়নি। ফলে তারা পর্দাকে আলোকিত করে রেখেছে। ফলে পর্দায় যে অংশ (A'B') কোনো আলো পেল না তা অন্ধকার হয়ে গেছে। এই অংশটা হলো বস্তুর ছায়া বা প্রচ্ছায়া

এবার সকা একটা বিন্দু আলোক উৎস নেওয়া যাক।

Penumbra formation diagram

PQ বিস্তৃত আলোক উৎস। এই আলোক উৎসকে অসংখ্য বিন্দু আলোক উৎসের সমষ্টি ধরা যেতে পারে।

P বিন্দু থেকে আসা APB ফাংশন আকৃতির আলোর কোনো আলোকরশ্মি কোনো অংশই পর্দায় পৌঁছোতে পারেনি। কারণ তারা AB অস্বচ্ছ বস্তুতে বাধা পেয়েছে। তাই GF অংশ ছায়া সৃষ্টি হয়েছে। আবার একইরকম ভাবে Q বিন্দু থেকে আসা AQB ফাংশন আকৃতির অংশের আলোকরশ্মিগুচ্ছ কোনো অংশই পর্দায় পৌঁছোতে পারেনি। কারণ AB -তে তারা বাধা পায়। ফলে EH অংশে অন্ধকার গঠিত হয়েছে।

ভৌত পরিবেশ

কিন্তু GH অংশে PQ আলোক উৎস থেকে আসা কোনো আলোক রশ্মিই পৌঁছোতে পারেনি। তাই ওই অংশে গাঢ় ছায়া তৈরি হয়েছে। আবার GE অংশে, আলোক উৎসের নীচের দিক থেকে কোনো আলোই পর্দায় পৌঁছোতে পারেনি। কিন্তু ওপরের অংশ থেকে আলো পৌঁছোতে পেরেছে। তাই GE অংশের অন্ধকার গাঢ় হতে পারেনি। একই ঘটনা ঘটে FH অংশে। আলো, আলোক উৎসের ওপরের অংশ থেকে কোনো আলো এসে পর্দায় পৌঁছোতে পারেনি। কিন্তু নীচের অংশ থেকে আলো ওই অংশে আসতে পেরেছে। ফলে FH অংশও গাঢ় অন্ধকার হতে পারেনি।

তাই GE ও FH অংশে গঠিত হয়েছে উপচ্ছায়া। আর GH অংশে গঠিত হয়েছে প্রচ্ছায়া বা ছায়া

সুচিছিদ্র ক্যামেরা

হাতেকলমে ১

ঘরের দেয়ালের কাছে একটা টেবিল নাও। ওই টেবিলের উপর একটা জ্বলন্ত মোমবাতি বসাও। একটা কার্ডবোর্ড নাও। একটা সরু পেপারবুক দিয়ে বোর্ডটার মাঝখানে একটা ছিদ্র করো।। ঘর অন্ধকার করে দাও, মোমবাতির শিখা ও দেয়ালের মাঝে কার্ডবোর্ডটাকে ধরো। খেয়াল রাখো যেন কার্ডবোর্ডের ছিদ্রটা ও মোমবাতির শিখা একই উচ্চতায় থাকে।

এবার সামনের দেয়ালটা লক্ষ্য করো।

কী দেখতে পাচ্ছ?

দেয়ালে উল্টানো মোমবাতির ছবি কী করে গঠিত হলো?

মোমবাতির শিখা থেকে চারদিকে আলো ছড়াচ্ছে। কিন্তু সব আলোকরশ্মি কার্ডবোর্ডের ছিদ্রটি দিয়ে যাচ্ছে না। P-ছিদ্রের অর্থ দিকে মোমবাতির শিখার নীচের দিকের A বিন্দু থেকে আসা আলোকরশ্মি AA' পথে দেয়ালের উপর A' বিন্দুতে পৌঁছায়। একইভাবে শিখার ওপরের দিকের B বিন্দু থেকে আসা আলোকরশ্মি BB' পথে দেয়ালের উপর B' বিন্দুতে পৌঁছায়। একইভাবে শিখার অন্যান্য বিন্দু থেকে আসা একটি করে রশ্মি ছিদ্র P-দিয়ে গিয়ে দেয়ালে পৌঁছায়। ফলে দেয়ালের উপর AB শিখার উল্টানো প্রতিচ্ছবি B'A' পাওয়া যায়। আলো সরলরেখায় চলাচল করে বলেই এটা হয়।

Pinhole camera diagram

জুতোর বাক্সের মতো বড়ো একটা বাক্স নাও। ছবিতে যেমন দেখানো হয়েছে তেমনভাবে বাক্সটার একদিকে দেয়ালে সুচ বা সরু পেরেক দিয়ে একটি ছোটো ফুটো করো। বাক্সের ঠিক উল্টো দিকের দেয়ালটা কেটে বাদ দিয়ে

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

সেখানে ট্রেসিং পেপার বা ঘষা কাচ দিয়ে একটি দেয়াল বানাও। এবার অন্ধকার ঘরে বাক্সের দেয়ালের ওই ফুটোর কাছে একটি মোমবাতির শিখা রাখো। দেখত উল্টোদিকের ট্রেসিং পেপার বা ঘষা কাচের দেয়ালে মোমবাতির শিখার উল্টানো প্রতিকৃতি দেখতে পাও কিনা। এই বাক্সটিই হলো তোমার সুচিছিদ্র ক্যামেরা।

আগের পরীক্ষায় নেওয়া ছিদ্রসহ কার্ডবোর্ড ও দেয়াল মিলে একসঙ্গে এই ক্যামেরা তৈরি হয়েছিল। আগের পরীক্ষায় তুমি মোমবাতি, কার্ডবোর্ড সরিয়ে ভালোভাবে লক্ষ্য করো। শিখাকে ছিদ্র থেকে যত সরাবে প্রতিকৃতি তত ছোটো হবে।

Changing flame distance

শিখাকে ছিদ্রের যত আনবে, প্রতিকৃতি তত বড়ো হবে।

Hole and screen distance

শিখা ও ছিদ্রের দূরত্ব অপরিবর্তিত রেখে, ছিদ্র থেকে পর্দার দূরত্ব (অর্থাৎ ক্যামেরার দৈর্ঘ্য) যত বাড়ানো হবে প্রতিকৃতি তত বড়ো হবে।

Reduced screen distance

যদি ছিদ্র ও পর্দার দূরত্ব কমে, তবে প্রতিকৃতি ছোটো হয়ে যাবে।

Larger hole

ছিদ্রকে বড়ো করে দেখো তো প্রতিকৃতির কিছু পরিবর্তন হয় কিনা?

আসলে, ছিদ্র বড়ো হলে তা অসংখ্য ছোটো ছোটো ছিদ্রের সমষ্টিরূপে কাজ করে। প্রতিটি সূক্ষ্ম ছিদ্র একেকটি আলাদা আলাদা স্পষ্ট প্রতিকৃতি তৈরি করে। ফলে সমস্ত প্রতিকৃতি মিলেমিশে একটা অস্পষ্ট প্রতিকৃতি তৈরি হয়।

ভৌত পরিবেশ

স্বাভাবিকভাবে ছিদ্র যত ছোটো হবে, প্রতিকৃতি তত সূক্ষ্ম হবে।

সুচিছিদ্র ক্যামেরায় বস্তুর প্রতিকৃতি গঠিত হলেও, তা মোটেই প্রতিবিম্ব নয়। এই ক্যামেরায় ফিল্ম লাগিয়ে ছবিও তুলতে অনেক সময় লাগে, কারণ অনেকক্ষণ আলোককে ভিতরে প্রবেশ করতে হয়।

তোমরা নিশ্চয়ই খেয়াল করেছ, বড়ো গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে সূর্যের আলো প্রবেশ করে মাটিতে গোল গোল অসংখ্য আলোর পটি তৈরি করে। ওগুলো আসলে সূর্যের প্রতিকৃতি বা ছবি।

কোন ক্যামেরায় সূর্যের এই গুলি উৎস বলো তো?

জানালা বা ভেন্টিলেটরের ফাঁক দিয়ে সূর্যের আলো প্রবেশ করে ঘরের মেঝেতে বা দেয়ালে ওইরকম গোল গোল সূর্যের প্রতিকৃতি তৈরি করে।

এখানে ক্যামেরা কোনটি বলো তো?

একটা লাঠিকে লম্বভাবে মাটিতে পুঁতে দাঁড় করিয়ে রাখো।

সারাদিন লাঠির ছায়াটি লক্ষ্য রাখো। এবং নীচের প্রশ্ন দুটোর উত্তর দাও।

Stick shadow

লাঠির ছায়া দেখা–

  • কখন সবচেয়ে ছোটো?
  • কখন সবচেয়ে বড়ো?

অন্ধকার ঘরে টেবিলের উপর একটা মোমবাতি জ্বালিয়ে রাখো।

বাটির সামনে একটা থালা কীভাবে দেয়ালটা নীচের আকৃতির ছায়া পাবে?

  • 1) সম্পূর্ণ বস্তুর
  • 2) লম্বাটে গোল
  • 3) একটা সবু বৃত্তের মতো।

অন্ধকার ঘরে, একটা টর্চ বা মোমবাতি জ্বালাও। এবার তার সামনে তোমার দু-হাতের তালু ও আঙুল নানাভাবে ধরো। এখন সামনের দেয়ালে তার ছায়াটি লক্ষ্য করো।

Hand and shadow

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

আলোর প্রতিফলন

হাতেকলমে 3

একটা ছোটো আয়না নাও। তোমার ঘরের ভিতর প্রবেশ করা উজ্জ্বল রোদের মধ্যে আয়নাটাকে ধরো।

এবার আয়নাটাকে খুব ধীরে ধীরে সামান্য একটু এদিক-ওদিক করে ঘোরাও।

দেয়ালে কী দেখতে পাচ্ছ? ওই দেয়ালটা আলো এল কোত্থেকে?

আয়নাটা সামান্য নাড়ালে দেয়ালের ওই আলোও নড়ে ওঠে কেন?

তাহলে কি সূর্যের আলো ওই আয়নাতে পড়ে ফিরে গিয়ে দেয়ালে পৌঁছেছে?

আয়নাতে পড়ে আলোর যে ফিরে আসা, এই ঘটনাকে বলে আলোর প্রতিফলন (Reflection of light)।

চলো একটা পরীক্ষা করা যাক:

একটা সাদা কাগজে একটা সরলরেখাংশ XY নাও (ছবিতে দেখো)। এখন ওই রেখাংশে একটা চাঁদা বসিয়ে 0° থেকে 180° পর্যন্ত চিহ্নিত করো এবং 60° কোণাটা থাকো। (ছবি দেখো)।

Comb Reflection setup

কাগজের উপর চীকা সরলরেখা বরাবর একটি ছোটো আয়না পাড় করো। এমন একটি আয়না নিতে হবে যার চারদিকে কোনো ফ্রেম নেই।

এবার, চিরুনিটি কাগজের উপর এমনভাবে দোও করাও যাতে দাঁতগুলোর মাঝখানে ফাঁকা (না ঢাকা) জায়গায় কোনো একটি কোণ (ধরি 60°) সাপের উপর থাকে (ছবি দেখো)।

এবার ঘর অন্ধকার করে একটা টর্চ জ্বালাও ও টর্চের আলো চিরুনি ও ফাঁকা জায়গায় ফেলো। খেয়াল রাখো যাতে আলোর একটা রেখা চিরুনির ওপাশে আয়নার উপর এমন জায়গায় পড়ে, যেখনে 90° চিহ্নিত রেখাটি আয়নাকে ছুঁয়েছে।

Light path diagram

খেয়াল করে দেখো 60° (বা অন্য কোনো কোণ) ঘরে আয়নায় পড়া আলো আয়না থেকে প্রতিফলিত হয়ে উল্টো দিকের 60° (বা অন্য কোনো কোণ) চিহ্নিত দাপের ওপর দিয়ে যাচ্ছে।

টেবিলে পাতা কাগজটা যদি উপুড়টি থাকে তাহলে আলোর রেখা কাগজের উপরে ভালোভাবে দেখা যাবে না। তাই সতর্ক থাকবে, যেন টেবিলে পাতা কাগজের ওপর ঢেউ খেলানো না থাকে।

এবার কাগজ উপর থেকে সব কিছু সরিয়ে দাও। একটা স্কেল দিয়ে আলোর আসার ও যাওয়ার পথ সরলরেখাংশ দিয়ে চিহ্নিত করো।

Reflection law diagram

যে পথ ধরে আলো আয়নায় এসে পড়েছে তাকে 'আপতিত আলোক রশ্মি' (Incident Ray) বলে (AB)।

আয়নাতে পড়ে আলো যে পথ ধরে ফিরে যায় তাকে 'প্রতিফলিত আলোক রশ্মি' (Reflected Ray) বলে (BC)।

আয়নার উপর যে বিন্দুতে আপতিত আলো এসে পড়েছে তাকে আপতন বিন্দু (Point of incidence) বলে (B)।

আয়নার তলখান দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে (XY) বা প্রতিফলক (Reflector) বোঝানোছে।

প্রতিফলকের উপর আপতন বিন্দুতে আঁকা লম্বকে (BD) 'অভিলম্ব' (Normal) বলে।

অভিলম্ব ও আপতিত রশ্মির মাঝের কোণকে 'আপতন কোণ' (Angle of incidence, ∠ABD = ∠i) বলে। (এক্ষেত্রে ∠i = 30°)

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

অভিলম্ব ও প্রতিফলিত রশ্মির মাঝের কোণকে 'প্রতিফলন কোণ' (Angle of reflection, ∠CBD = ∠r) বলে।

এবার ভালো করে দেখো তো আপতন ও প্রতিফলন কোণের মান, কোনটা কত?

উঃ: আপতন কোণ = 30°

প্রতিফলন কোণ = _______° [শূন্যস্থান পূরণ করো]

তাহলে বলা যায় আপতন কোণ ও প্রতিফলন কোণের মান সমান হয়।—এই প্রতিফলনের একটি নিয়ম।

এই পরীক্ষায় নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছ যে কাগজের উপরেই আপতিত ও প্রতিফলিত আলোর রেখা অবস্থান করছে। কাগজে ঢেউ খেলানো থাকলে বা কোথাও উঁচু-নীচু থাকলে রেখাগুলি কাগজে ভালোভাবে পড়ত না।

তাহলে বলা যায়, আপতিত রশ্মি, প্রতিফলিত রশ্মি ও প্রতিফলকের উপর আপতন বিন্দুতে আঁকা অভিলম্ব একই সমতলে থাকে। এটাও প্রতিফলনের অন্য একটি নিয়ম।

যখন মসৃণ তলে আলোর প্রতিফলন ঘটে তখন সেই প্রতিফলন হলো নিয়মিত প্রতিফলন (Regular Reflection of Light)। যেমন- আয়নায় প্রতিফলন, চকচকে স্টিলের মসৃণ বাটিতে প্রতিফলন।

সমতল দর্পণে নিয়মিত প্রতিফলনের সময় আপতিত আলোকরশ্মিগুচ্ছ একটি বিশেষ ধরনের হলে প্রতিফলনের পরেও সেই রশ্মিগুচ্ছ ও বিশেষ ধরনের হয় যেমন, সমান্তরাল বা অভিসারী বা অপসারী।

ধরো, তুমি সমান্তরাল রশ্মিগুচ্ছ পাঠালে। প্রতিফলনের পর তা আয়না থেকে অপসারী হতেই ফিরবে যদি আয়নাটি সমতল হয়। কিন্তু যদি আয়নাটি তল বক্র হয় তাহলে অবশ্যই প্রতিফলিত রশ্মিগুচ্ছ অপসারী না হয়ে সমান্তরাল বা অভিসারীও হতে পারে। প্রতিফলিত রশ্মিগুচ্ছের ধরন কেমন হবে তা নির্ভর করে আয়নাটির বক্রতা কেমন তার ওপর।

যখন অমসৃণ তলে আলোর প্রতিফলন ঘটে তখন সেই প্রতিফলনকে বিচ্ছুরিত প্রতিফলন (Diffused Reflection of light) বলে। যেমন - গাছপালা, মাটি, ঘরের দেয়াল, সিনেমার পর্দা ইত্যাদির উপর আলোর প্রতিফলন।

Regular reflection

নিয়মিত প্রতিফলন

কোনো মসৃণ তলে প্রতিফলন সাধারণ ভাবে নিয়মিত প্রতিফলন। যেমন সমতল বা বৃত্তীয় আয়নায় প্রতিফলন

ভৌত পরিবেশ

Diffused reflection

বিচ্ছুরিত প্রতিফলন

এই প্রতিফলনে আপতিত রশ্মিগুচ্ছ সমান্তরাল হলেও প্রতিফলনের পর তারা আর সমান্তরাল থাকে না। বিক্ষিপ্তভাবে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।

তবে যেই ক্ষেত্রেই আলোক রশ্মি প্রতিফলনের দুটি সূত্রই মেনে চলে।

নিয়মিত ও বিচ্ছুরিত প্রতিফলনের কয়েকটি উদাহরণ খাতায় লিখে ফেলো।

আলোর প্রতিসরণ

হাতেকলমে 4

একটা কাচের গ্লাসে কিছুটা জল নাও। ওপর থেকে জলের যে তল দেখছো তা বায়ু ও জলকে আলাদা করেছে। জলের এই তল হলো বায়ু ও জলের বিভেদ তল। এবার ওই গ্লাসের মধ্যে ধীরে ধীরে গ্লাইজ্যা অংস নীল কেরোসিন তেল নাও।

এবার গ্লাসের পাশ থেকে জলের ভিতর দিয়ে ও ওপরের দিক দিয়ে তাকাও। কী দেখতে পাচ্ছ?

যে নীলরঙের গোল তলটা দেখতে পাচ্ছ সেটা 'কেরোসিন ও জলের বিভেদতল'।

জল যেখানে শেষ হয়েছে আর কেরোসিন যেখান থেকে শুধু শুরু হয়েছে অর্থাৎ দুই আলাদা ঘনত্বের মাধ্যমের সংযোগস্থলে যে তল, তাকেই ওই মাধ্যম দুটোর 'বিভেদতল' বলে।

Water glass

বায়ু ও জলের বিভেদতল

Kerosene water

কেরোসিন ও জলের বিভেদতল

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

হাতেকলমে 5

নীচের পরীক্ষাটি তোমরা দেখবে, নিজে হাতে করবে না। তোমাদের শিক্ষক বা শিক্ষিকা ক্লাসে দেখাবেন।

উপকরণ : একটি কাচের ব্লক বা বুনবুনটেক্স নিরেট পেপারওয়েট বা কাচের ব্লক, একটা লেজার টর্চ, সাদা একটা পর্দা।

Light refraction experiment

তোমাদের শিক্ষক/শিক্ষিকা লেজার টর্চটি জ্বালিয়ে দেয়ালের দিকে ধরলেন। ফলে দেয়ালে একটা আলোক বিন্দু তৈরি হলো। কিন্তু টর্চটি মাস্টারমশাই বা দিদিমণির হাতে থাকায় আলোক বিন্দুটা নড়ছে। তাই টেবিলের ওপর টর্চটি রাখা হলো। এবার টর্চটা স্থির হলো। তাই আলোর বিন্দুও স্থির হলো। যেখানে বিন্দুটাকে 'A' দিয়ে চিহ্নিত করা হলো। এরপর কাচের ব্লক বা পেপারওয়েটটা ওই আলোর পথে ধরলে। আলো এবার কাচের মধ্যে দিয়ে দেয়ালে পড়েছে। এবার দেয়ালের দিকে তাকিয়ে দেখত আলোর বিন্দুটা কেবলাস 'A' - চিহ্নিত জায়গাতেই পড়ল, না সরে গেল?

আলোক বিন্দুটা সরে গেল কেন? ভাবো।

তাহলে কি আলো তার গতিপথ পরিবর্তন করল? কেন করল?

ভাবো।

এবার কাচের ব্লক বা পেপারওয়েটটি সরিয়ে দাও।

এবার কী দেখলে? আলোক বিন্দু কি আবার আগের অবস্থানে ফিরে গেল?

তাহলে কি ওই কাচের ব্লক বা পেপারওয়েটটিই এজন্য দায়ী?

আলোক রশ্মি কোনো মাধ্যম দিয়ে যেতে যেতে যদি অন্য কোনো আলাদা মাধ্যমে প্রবেশ করে, তখন ওই মাধ্যম দুটির বিভেদতল থেকে আলোর গতিপথের পরিবর্তন ঘটে। এই ঘটনাকে আলোর প্রতিসরণ বলে।

ভৌত পরিবেশ

Medium 1 and 2

চিত্র - 1

Medium 1 and 2

চিত্র - 2

আলোর প্রতিসরণ

OB - প্রতিসৃত রশ্মি, ∠AOC -আপতন কোণ (i), ∠DOB -প্রতিসরণ কোণ (r), EOF -মাধ্যমদ্বয়ের বিভেদতল, COD -অভিলম্ব।

চিত্র 1-এ আলোক রশ্মি মাধ্যম 1 -থেকে মাধ্যম 2-তে প্রবেশ করেছে ও অভিলম্ব থেকে দূরে সরে গেছে। যে মাধ্যমে প্রবেশ করলে আলোক রশ্মি অভিলম্ব থেকে দূরে সরে যায় সেই মাধ্যমটিকে আলোর ক্ষেত্রে লঘুতর মাধ্যম বলা হয়। এখানে মাধ্যম 2, মাধ্যম 1-এর চেয়ে লঘুতর।

চিত্র 2-এ আলোক রশ্মি মাধ্যম 2-তে প্রবেশ করার পর অভিলম্বের দিকে সরে গেছে। যে মাধ্যমে প্রবেশ করলে আলোক রশ্মি অভিলম্বের দিকে সরে যায় সেই মাধ্যমকে আলোর ক্ষেত্রে ঘনতর মাধ্যম বলা হয়।

এক্ষেত্রে মাধ্যম 2, মাধ্যম 1-এর চেয়ে ঘনতর।

ধরা যাক, আলোক রশ্মিগুচ্ছ কোনো মাধ্যম দিয়ে চলতে চলতে দ্বিতীয় কোনো ভিন্ন ঘনত্বের মাধ্যমে যাতায়াত করছে। দেখা যায় ওই আলোক রশ্মিগুচ্ছের কিছু অংশ মাধ্যমদ্বয়ের বিভেদতল থেকে পুনরায় প্রথম মাধ্যমে ফিরে আসে। এই ঘটনাটিই আলোর প্রতিফলন

আলোক রশ্মিগুচ্ছের বাকি অংশ দ্বিতীয় মাধ্যমে প্রবেশের পর আগেকার যাত্রাপথ থেকে সরে যায় ও নতুন সরলরেখা বরাবর চলে। এই ঘটনাকে বলে আলোর প্রতিসরণ

Reflection and refraction

লঘুতর মাধ্যম

ঘনতর মাধ্যম

প্রতিফলন

প্রতিসরণ

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

প্রতিবিম্ব

হাতেকলমে 6

একটা আয়নার সামনে একটু কোণ (ছিদ্রির মতো) একটা টর্চ ধরো।

এবার টর্চটা জ্বালাও।

কী দেখলে?

Mirror image setup

আয়নায় টর্চের আলোর প্রতিফলন ঘটে আলো যে দিকে বেরিয়ে এল, তোমার চোখকে সেদিকে নিয়ে যাও।

এবার ওই দিক থেকে আয়নার মধ্যে তাকাও। কী দেখতে পাচ্ছ?

তোমার কি মনে হচ্ছে আলোটা আয়নার ভিতরে থাকা টর্চ থেকে আসছে?

Image 1

সত্যিই কি আলো আয়নার ভিতরে থাকা টর্চ থেকে আসছে?

সত্যিই কি আয়নার ভিতরে কোনো টর্চ আছে?

আয়নার ভিতরে যে টর্চটা তুমি দেখেছ, সেটা আসলে তোমার হাতে থাকা (আয়নার বাইরে) টর্চের প্রতিবিম্ব। এই ঘটনাটি ঘটেছে আলোর প্রতিফলন ধর্মের জন্য।

যে-কোনো চকচকে তলের উপর বস্তু থেকে আসা আলোকরশ্মি প্রতিফলনের ফলে এমনই প্রতিবিম্ব গঠিত হয়। বস্তুটি চকচকে তলটির যে দিকে থাকে, বস্তুর প্রতিবিম্ব ঠিক তার উল্টোদিকে তৈরি হয়।

আলোক রশ্মির চিত্র এই প্রতিবিম্ব তৈরি হওয়ার ঘটনাকে ব্যাখ্যা করা হয়। P - বস্তু, P' - প্রতিবিম্ব, MM'– আয়না।

Image formation

যে -কোনো চকচকে তল – সানগ্লাসের কাচ, চকচকে পালিশ করা টেবিল, পুকুরের জল, জানালার গাড় রবের চকচকে কাচ ইত্যাদির মধ্যে এমন প্রতিবিম্ব গঠিত হওয়া সম্ভব।

হাতেকলমে 7

তুমি একটা বড়ো আয়নার সামনে দাঁড়াও। আয়নায় গঠিত হওয়া তোমার প্রতিবিম্বের দিকে লক্ষ্য করো।

ভৌত পরিবেশ

তোমার আর তোমার প্রতিবিম্বের উষ্ণতা কি এক?

এবার একটা পেন হাতে নিয়ে আয়নাটার উপর শুইয়ে দিয়ে, আঙুল দিয়ে চেপে ধরো।

এবার দেখত তোমার আঙুলে চাপা পেন (আয়নার বাইরে) আর আয়নার ভিতরকার পেনের প্রতিবিম্ব সমান মাপের কিনা?

Pen and image

আয়নায় গঠিত 'প্রতিবিম্ব' ও 'বস্তুর মাপ' (Size) সমান।

এবার একটি আয়নার সামনে তুমি তুমি মেপে মেপে 'চার পা' পিছিয়ে দাঁড়াও।

এবার এক পা এক পা করে আয়নার দিকে এগোতে থাকো, আর তোমার প্রতিবিম্বের দিকে লক্ষ্য রাখো।

প্রতিবিম্ব কি তোমার সঙ্গে সঙ্গে এক পা এক পা করে তোমার দিকে এগোচ্ছে?

তুমি আয়না পর্যন্ত পৌছাতে যত দূরত্ব অতিক্রম করলে তোমার প্রতিবিম্বও কী আয়না পৌছাতে তত দূরত্বে অতিক্রম করল?

তাহলে বলা যায়, 'বস্তু থেকে আয়না ও আয়না থেকে প্রতিবিম্বের দূরত্ব সমান'।

Image distance Image lateral inversion

তোমার ডান হাতটা দিয়ে আয়নাটাকে স্পর্শ করো।

--প্রতিবিম্ব কোন হাত দিয়ে আয়নাটাকে স্পর্শ করল?

তোমার বাঁ-পা-টা একটু ওঠাও।

তোমার প্রতিবিম্বের কোন পা উঠল?

তবে বলা যায় আয়নায় বস্তুর প্রতিবিম্বের পার্শ্ব পরিবর্তন হয়। অর্থাৎ ডান দিকটা বাঁ দিক ও বাঁ দিকটা ডান দিক মনে হয়। কিন্তু উপরটা উপর দিকে এবং নীচেরটা নীচের দিকেই থাকে। অর্থাৎ আয়নায় গঠিত প্রতিবিম্ব সমশীর্ষ

আয়নায় প্রতিফলনের ফলে এ থেকে Z পর্যন্ত কোন কোন অক্ষরের প্রতিবিম্বের পার্শ্বপরিবর্তন হয় তা ভেবে লেখো।

Ambulance

AMBULANCE কথাটি অ্যাম্বুলেন্সে উলটো লিখে থাকে কেন? দলে আলোচনা করে উত্তর খাতায় লেখো।

হাতেকলমে ৪

একটা কাচের গ্লাসের মধ্যে একটা পেন বা সোজা কাঠি রাখো।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

এবার গ্লাসটাতে কিছুটা জল ঢালো।

পেন বা কাঠিটার কোনো অংশে কি কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করছ?

পরিবর্তন হলো কোন অংশে?

Pen in water Stick in water

পেন বা কাঠিটার নীচের অংশ থেকে পেন বা কাঠিটা কি বাঁকা লাগছে কেন?

পেন বা কাঠিটাকে জল থেকে তুলে দেখতো তো পেন বা কাঠিটা সত্যিই বেঁকেছে কিনা?

আসলে যখন জল ভরা পাত্রেই বেঁকেছ তুমি দেখতে পাচ্ছো, এবং জল ঢালাটাই এর কারণ।

আসলে জল ঢালার পর গ্লাসের ভিতরে দুটি মাধ্যম থাকে। (1) জল (ঘনতর মাধ্যম) ও (2) বায়ু (লঘুতর মাধ্যম)

পেন বা কাঠিটার জলের তলার অংশ থেকে আলো যখন জল (ঘনতর মাধ্যম) পেরিয়ে বায়ুতে (লঘুতর মাধ্যম) পৌঁছায় তখন মাধ্যম দুটির বিভেদতল থেকে আলো বেঁকে গিয়ে তোমার চোখে এসে পড়ে। তোমার চোখ তখন আসল পেন বা কাঠিটার নিমিত্তিত অর্থ নয়, পেন বা কাঠিটার নিমিত্তিত অংশের প্রতিচ্ছবিটি দেখে। প্রতিসরণের জন্যও প্রতিবিম্ব তৈরি হয়।

হাতেকলমে 9

একটা খালি বালতি নাও। একটা পেন্সিল দিয়ে বালতির ভেতরের দেওয়ালে উপরের দিক একটা দাগ দাও (ছবি দেখো)। এবার একটা সোজা লাঠি দিয়ে বালতির তলা থেকে ওই পেন্সিলের দাগ অবধি মেপে লাঠির গায়েও একই উচ্চতায় পেন্সিলের দাগ দাও। এরপর লাঠিটা তুলে নাও।

এবার বালতিতে ওই দাগ অবধি জল ঢালো। বালতির উপর থেকে তাকাও।

Bucket pencil experiment

কী দেখলে? বালতিটার তল কিছুটা উপরে উঠে এসেছে বলে মনে হচ্ছে কি? বালতিটা কম গভীর লাগছে?

এবার জল থাকা অবস্থায় লাঠিটা দিয়ে বালতির দাগের উচ্চতা আবার মাপো।

কী দেখলে? লাঠিটা দাগের সঙ্গে বালতির দাগ মিলে যাচ্ছে। তবে বালতির তল কি সত্যি সত্যি উপরে উঠে আসেনি?

আসলে প্রতিসরণের জন্য এই ঘটনাটা ঘটেছে। বালতির তলদেশ থেকে আসা আলোকরশ্মিগুচ্ছ যখনই জল (ঘনতর মাধ্যম) পেরিয়ে বায়ুতে (লঘুতর মাধ্যম) প্রবেশ করে, সেইসময় মাধ্যমদ্বয়ের বিভেদতল থেকে আলোক রশ্মিগুচ্ছ অভিলম্ব থেকে দূরে সরে যায়। ফলে বেঁকে যাওয়া প্রতিসৃত রশ্মিগুচ্ছ যখন তোমার চোখে এসে পড়ে তখন তুমি ওই তলের প্রতিচ্ছবিকে দেখো, যেখানে তলদেশের কিছুটা উপরায় অবস্থান করছে বলে মনে হয়। তাই তোমার মনে হয়েছে তলটা উপরে উঠে এসেছে।

ভৌত পরিবেশ

বর্ণালী

হাতেকলমে 10

জানালার ফাঁক দিয়ে তোমার ক্লাসরুমের মেঝেতে, যেখানে কড়া রোদ পড়েছে, সেখানে একটা সাদা কাগজ বিছিয়ে দাও। এরপর প্রিজম দিয়ে ওই আলোর সাদা কাগজটার কাজাকাজো ধরো।

কী দেখতে পাচ্ছ?

Spectrum diagram

এবার রং কোথা থেকে এল? ভালো করে দেখছো কি কি রং তুমি ওই রঙিন আলোর মধ্যে দেখতে পাচ্ছ।

সূর্যের আলো আসলে অনেক আলাদা রং-এর আলোর সমষ্টি। এধরনের আলোকে যৌগিক আলো বলে। সূর্যের আলো কাচের প্রিজমের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় এই বিভিন্ন রং-এর আলো আলাদা হয়ে যায়। আমরা ওই রংগুলোর মধ্যে চোখে দেখে মোটামুটিভাবে সাতটা রং-এর আলো আলাদা করে পাই। এই সাতটা আলো হওয়া আলোর পটিকে একসঙ্গে বলে 'বর্ণালী'। আর যৌগিক আলো থেকে বিভিন্ন রং-এর আলোকরশ্মির আলাদা হয়ে যাওয়ার ঘটনাকে বিচ্ছুরণ বলে। 1666 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটন বিচ্ছুরণ আবিষ্কার করেন। সূর্যের আলোর মধ্যে থাকা এই সাতটা রং-এর আলো গুলো হলো–

  • 1) বেগুনি (Violet)
  • 2) নীল (Indigo)
  • 3) আসমানি (Blue)
  • 4) সবুজ (Green)
  • 5) হলুদ (Yellow)
  • 6) কমলা (Orange)
  • 7) লাল (Red)

কিন্তু এই বিচ্ছুরণ পদ্ধতিতে বর্ণালীর সাতটা রং-এর আলোর পটিকে পরিষ্কারভাবে দেখতে পাবে না। তার কারণ হলো আলোর পটিগুলো একটার উপর আর একটা এগে পড়তে পারে। ফলে মাঝের রংগুলো ভালোভাবে দেখা যায় না।

তুমি আকাশে কসমত রং দেখছ?

আকাশের রংধনু আসলে সূর্যের সাদা আলোর বিচ্ছুরণের প্রাকৃতিক ঘটনা মাত্র।

রংধনু সাধারণত বৃষ্টির পর বিকেলে আকাশে দেখতে পাওয়া যায়। আকাশে ভাসমান জলকণা থাকে। ওই জলকণার মধ্য দিয়ে সূর্যের আলো যাওয়ার সময় বিচ্ছুরণের ফলে আকাশে যে সাতটা আলোর পটি গঠিত হয় সেটাই রংধনু।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

আলোর ক্ষতিকারক প্রভাব

অতিবেগুনি রশ্মি : সূর্য থেকে যে আলো এসে পৃথিবীতে পড়ে তা সমস্ত আমরা চোখে দেখতে পাই না, অদৃশ্য আলোও কিছু আছে। চোখে দেখতে না পেলেও অদৃশ্য আলো যা আছে বিজ্ঞানীরা তাকে তার অনেক প্রভাব আছে। অদৃশ্য আলোর একটা অংশ হলো অতিবেগুনি আলো, ইংরেজিও আল্ট্রাভায়োলেট (ultraviolet light)। এর শক্তি দৃশ্যমান আলোর চেয়ে অনেক বেশি। তাই জীবন্ত কোষের পক্ষে অতিবেগুনি আলো অত্যন্ত ক্ষতিকারক। সরাসরি চোখে পড়লে চোখের ভেতর ক্ষতি হয়, চোখের মধ্যে যে আলোক সংবেদী স্তর (বা রেটিনা) আছে তা ছাড়াও ত্বকের কোষ এবং জনন কোষেও অতিবেগুনি রশ্মি পড়লে চামড়ার ক্যানসারও হতে পারে। তাহলে জীবজগৎ সূর্যলোকের অতিবেগুনি রশ্মির হাত থেকে বাঁচবে কী? পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের উপরিভাগে ওজোন গ্যাসের স্তর আছে। এই ওজোন স্তর সূর্যরশ্মির অতিবেগুনি রশ্মিকে আসতে বাধা দেয়। তা না হলে আমাদের খুবই বিপদ হত।

ওজোন স্তর আছে বলে নিশ্চিত হওয়ার দিন আর নেই। মানুষের কর্মকা-ও এমন সব গ্যাসীয় পদার্থ ওজোন স্তরে পৌঁছাচ্ছে যা ওজোন স্তরকে ভেঙে দেয়, বা ওর ছিদ্র হয়েছে বাবা। এর ফলে ধীরে ধীরে ওজোন স্তর নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমাদের চামড়ার মেলানিন বলে একরকমের রঞ্জক পদার্থ তৈরি হয়। চামড়ায় অতিবেগুনি রশ্মি এসে পড়লে তাকে শুষে নিয়ে মেলানিন আমাদের চামড়ার নীচের কোষগুলিকে বাঁচিয়ে দেয়। মেলানিন বেশি থাকলে চামড়া বাদামি বা কালো হয়ে যায়। লক্ষ্য করে দেখো, আফ্রিকা পৃথিবীর নিরক্ষীয় অঞ্চলে, তাই সেখানে সূর্য রশ্মি খুব প্রখর। সেখানকার কালো মানুষদের চামড়ার মেলানিনের পরিমাণও তাই অনেক বেশি। বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশের সাদা চামড়ার মানুষেরা কিন্তু মেলানিন অনেক পরিমাণে কম। তাই সাদা চামড়ার মানুষদের অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি। অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে কোষের খুব দরকারি ডি.এন.এ ও প্রোটিন (DNA) ক্ষতি হয়। ওজোন স্তর ক্রমশ ক্ষয় পাওয়ার ফলে পৃথিবীতে চামড়ার ক্যানসারের আক্রান্তের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়ছে।

এক্স রশ্মি : তোমরা নিশ্চয়ই জানো যে ভাঙা হাড়, বা দাঁতে কিছু গেমর চিহ্ন হলে ডাক্তারবাবু 'এক্স-রে' করিয়ে আসতে বলেন। এক্স-রশ্মি (X-Ray) কী? এও মনে রাখো বা আলো। এবং একরকমের অদৃশ্য আলো। এক্স-রশ্মি চামড়া আর মাংস ভেদ করে যেতে পারে। এক্স-রশ্মি হাড়ের মধ্যে দিয়ে যেতে পারে না তাই হাড়ের কোনখানটা ভেঙেছে বা ফাট আছে তা ছবি তুলে বোঝা যায়। এক্স-রশ্মি কিন্তু দীর্ঘ ব্যবহারে ক্যানসার সৃষ্টি করে। এই কারণেই এক্স-রশ্মি ব্যবহারের সময় খুব সতর্ক থাকতে হয়। এসব কর্মী এক্স-রশ্মি চালনা করেন উপযুক্ত সাবধানতা না নিলে তাঁদের ক্যানসার হতে দেখা যায়।

জীবের শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়ায় আলোর ভূমিকা

ট্রাকুন ওঠানের পাশে মাটির নিচে কয়েকটি বীজ ফেলেছিল।

দিন কয়েক পর লক্ষ্য করল বীজ থেকে একটা ছোটো চারা বেরিয়েছে।

তার ক্রমশ এই চারাটা আঁটানো অন্ধকার জায়গায় গেছে আলোকের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে (ছবিতে লক্ষ্য করো আলো বামদিক থেকে আসছে আর গাছ সেদিকে বেঁকে যাচ্ছে)।

ভৌত পরিবেশ

আলোর সাহায্যে খাদ্য তৈরি করা সম্ভব নয়। অন্ধকারে উদ্ভিদ বেঁচে থাকতে পারে না। ইঁটের নীচে বেশ কয়েকদিন চাপা পড়লে ঘাসফুলগুলোর রং পরিবর্তন হয়। বেশিরভাগ চাপা পড়ে থাকলেও থাকে না। উদ্ভিদের সবুজ অংশগুলো আলোকশক্তি শোষণ করে থাকে ও রাসায়নিক শক্তিতে পরিণত করে। তারপর এই খাদ্য পাওঁয়া বাকিকে কাজে লাগিয়ে উদ্ভিদের নানা অংশে জাগা লাগে।

কেমন এই সাড়া এও দেখা যাক।

বিভিন্ন দেশে শীত ও গরমকালে দিনের দৈর্ঘ্যের পার্থক্য ঘটে। এজন্য গরমকাল আর শীতকালে ভিন্ন ভিন্ন ফুল ফোটে।

গরমকালে ফোটে এমন কয়েকটি ফুলের নাম লেখো।

শীতকালে ফোটে এমন কয়েকটি ফুলের নাম লেখো।

টুকরো কথা

গম, ভুট্টা, পালার ও মুগলাতে দিনের দৈর্ঘ্য 12 ঘণ্টার বেশি হলে ফুল ফোটে। আবার চন্দ্রমল্লিকা, ডালিয়া, আলু ও আলুগাছে দিনের দৈর্ঘ্য 12 ঘণ্টার কম হলে তবে ফুল ফোটে। আর টমেটো, সূর্যমুখী গাছে ফুল ফোটা দিনের দৈর্ঘ্যের কম-বেশি হওয়ার নির্ভরশীল।

তোমার জানা দুটি গাছের নাম লেখো যাদের ফুল ফোটার জন্য –

12 ঘণ্টার বেশি আলোর প্রয়োজন হয়।

12 ঘণ্টার কম আলোর প্রয়োজন হয়।

প্রাণীজগতেও আলোর নানা প্রভাব দেখা যায়। আলো কম পেলে সামান মাছের বাচ্চারা মরে যায়। সূর্যের আলো পেলে টিকটিকি, সাপ ও আহত প্রাণী (যেমন, জলকণা, বায়ু) শীতঘুমে চলে যায়। ডানদিকের নীচের ছবিতে এক ধরনের কাঁক যে নিজের পুরনো দেহকে শুকিয়ে ফেলছে সোনা। গৃহশ্বরাণী অনেক প্রানীকে আলোতে আনলে তাদের রাতুন পদার্থ তৈরি হতে শুরু হয়। সূর্য যখন মেঘের আড়ালে ঢাকা পড়ে তখন প্রাণিদের চলাফেরা বন্ধ হয়ে যায়।

Crab

কোনো কোনো প্রাণী খোলস ছাড়ে বা চামড়ার নিউট্রাল ফ্ল্যাট হওয়াও প্রাকৃতও আলোর প্রভাবে ঘটে। পরিযায়ী পাখিদের খুব শীতের জায়গায় অপেক্ষাকৃত গরম জায়গায় উড়ে যাওয়া সূর্যের আলোর তীব্রতার উপর নির্ভর করে। জোনাকির মতো অনেক প্রাণী আবার আলো তৈরি করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে।

এবার শিক্ষক/শিক্ষিকারা সহজে বা বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করে নীচের প্রশ্নগুলি উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করো। (মাছ, পিঁপড়ে, পাখি, আরশোলা, ব্যাঙ, কাঁকড়া বা তোমার পরিচিত প্রাণী)।

আলোর প্রভাবে জীবের চলাফেরা।

আলোর প্রভাবে জীবের ডিম পাড়া।

আলোর প্রভাবে জীবের চোখের রং পরিবর্তন হওয়া।

আলোর প্রভাবে জীবের চামড়ার রং বদলে যাওয়া।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

চুম্বক

চুম্বকের বিভিন্ন ধর্ম

হাতেকলমে-1

উপকরণঃ একটা ইরেজার, একটা লোহার পেরেক, একটা প্লাস্টিকের স্কেল, একটা কাঠ পেন্সিল, একটা পেন্সিল কম্পাস, একটা এক টাকার কয়েন, একটা গাছের পাতা, একটা স্টেইনলেস স্টিলের চামচ, একটা ব্লেড, একটা কাচের গ্লাস ও একটা চুম্বক।

Compass Coin Scale Glass
Magnet experiment setup

একটা কাঠের টেবিলের উপরে সবকটা উপকরণ রাখো। শুধু দণ্ড চুম্বক : দণ্ড চুম্বক হলো একটা চুম্বকটা তোমার হাতে নাও। এবার দণ্ড চুম্বকটাকে টেবিলের উপর রাখা আয়তাকার চর্মিক ইম্পোস্টের দও। প্রতিটি জিনিসের কাছে নিয়ে যাও।

এই চুম্বক এক প্রকার কৃত্রিম চুম্বক।

খেয়াল করো, চুম্বকটা কোন কোন জিনিসকে আকর্ষণ করছে। আর কোন কোন জিনিসকে আকর্ষণ করছে না। এরপর নীচের সারণিটাকে পূরণ করো।

নাম উপযুক্ত স্থানে '✓' চিহ্ন দাও জিনিসগুলো যে উপাদানে তৈরি সেই উপাদানের নাম
চুম্বক আকর্ষণ করছে চুম্বক আকর্ষণ করছে না
ইরেজার
লোহার পেরেক
প্লাস্টিক স্কেল
কাঠ পেন্সিল
পেন্সিল কম্পাস
টাকার কয়েন
গাছের পাতা
স্টিল চামচ
ব্লেড
কাচের গ্লাস

ভৌত পরিবেশ

চুম্বক যে পদার্থকে আকর্ষণ করে তাদের 'চুম্বক পদার্থ' বলে। এদের বিশেষ উপায়ে চুম্বকে পরিণত করা যায়।

যেমন: লোহা, নিকেল, কোবাল্ট, কোনো কোনো ধরণের ইস্পাত ইত্যাদি।

যে যে পদার্থকে চুম্বক আকর্ষণ করতে পারে না তাদের 'অচুম্বক পদার্থ' বলে।

যেমন: প্লাস্টিক, রবার, কাঠ, কাগজ ইত্যাদি।

একটা গল্প আছে। প্রায় 2500 বছর আগে মাগনাস (Magnes) নামে এক মেষপালক পাহাড়ের কোলে এক তৃণভূমিতে মেষ পালন করছিল। হঠাৎ তার পায়ের জুতোর একটা টান অনুভব করল। আসলে জুতোর হিল লোহার পেরেক। পেরেকটাকে একটা পাথর আকর্ষণ করার ফলেই ঘটনাটা ঘটেছিল। পরে জানা গেল, পাথরটা সব লোহাকেই আকর্ষণ করার ক্ষমতা রাখে।

মাগনেসিয়া নাম অঞ্চলে এরকম প্রচুর পাথরের সন্ধান পাওয়া যায়। চুম্বকের ইংরেজি নাম ম্যাগনেট (Magnet) হওয়ার এটাই কারণ। এই পাথরের নাম হলো 'ম্যাগনেটাইট'। এই প্রাকৃতিক চুম্বক বলে।

তাহলে জানা গেল, চুম্বক দু'রকমের।

চুম্বক

প্রাকৃতিক চুম্বক বা ম্যাগনেটাইট

এই চুম্বক প্রকৃতিতে পাওয়া যায় বলে একে প্রাকৃতিক চুম্বক বলে। এই চুম্বক সহজে বাজারে কিনতে পাবে না। যেসব জায়গায় এই খনিজ দ্রব্যের খনি আছে সেখানেই শুধু এই পাথর পাওয়া সম্ভব।

কৃত্রিম চুম্বক

চুম্বক পদার্থকে বিশেষ উপায়ে চুম্বকে পরিণত করে এই চুম্বক তৈরি করা হয়।

হাতেকলমে 2

একটা দণ্ড চুম্বক নাও। লোহার পেরেক দিয়ে উত্তর-দক্ষিণ বরাবর একটা সরলরেখা আঁকো। এবার ওই রেখাংশের উপর ভাগে N ও দক্ষিণ ভাগে S লেখো।

এবার ছবির মতো করে SN রেখা বরাবর দণ্ড চুম্বকটাকে সুতো দিয়ে ঝুলিয়ে দাও। কাছাকাছি অন্য কোনো চুম্বক বা তড়িৎ প্রবাহিত হচ্ছে এমন বস্তু যেন না থাকে।

এবার চুম্বকটাকে একটু নাড়িয়ে ছেড়ে দাও। অবশেষে চুম্বক যখন সামানাবস্থায় এল-

Suspended magnet

তুমি কী দেখতে পেলে?

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

চুম্বকটা কি উত্তর-দক্ষিণ মুখ করে রয়েছে?

চুম্বকটাকে আবার একটু নাড়িয়ে দাও। এবার সামানাবস্থায় এসো।

এবার কী দেখতে পাচ্ছ?

প্রতিবারই কি চুম্বকটা উত্তর-দক্ষিণ মুখ করে স্থির হয়ে থাকছে?

তাহলে জানা গেল, চুম্বককে স্বাধীনভাবে ঝুলতে পারলেই এমনভাবে ঝুলিয়ে দিলে তা সর্বদা 'উত্তর-দক্ষিণ' মুখ করে থাকে।

এবার এই চুম্বকটাকে একটা থার্মোকলের টুকরো বসাও এবং থার্মোকলের টুকরোটি একটা প্লাস্টিকের জলভরা বাটিতে ভাসিয়ে দাও। জল স্থির হলে এবং চুম্বকসহ থার্মোকল সাম্য অবস্থায় এল, চুম্বক কোন দিক মুখ করে দাঁড়িয়ে রয়েছে লক্ষ্য করো।

এবার চুম্বকসহ থার্মোকলকে হাত করে ঘুরিয়ে দিয়ে ছেড়ে দাও। সাম্য অবস্থায় এলে লক্ষ্য করো চুম্বকটা কোন দিক মুখ করে আছে।

স্বাধীনভাবে ভাসমান বা ঝুলন্ত চুম্বকের এই উত্তর-দক্ষিণ মুখ করে থাকার ধর্মকে চুম্বকের দিক-নির্দেশক ধর্ম বলে।

চুম্বক সংক্রান্ত নানা পরীক্ষানিরীক্ষা করার জন্য এমন ধরনের খুব দরকারি চুম্বক পাওয়া যায়। এদেরকে 'চুম্বক শলাকা' বলে। চুম্বক শলাকা হলো আসলে একটা ছোটো চুম্বক দণ্ড ইম্পোতে পঠ। দু-প্রান্ত গুলোই এই চুম্বক একটা দণ্ডের উপর সুস্থ অবস্থায় রাখা হয়। কোনো ক্ষেত্রে তা ছোটো কাচের বাক্সের মধ্যে রাখা থাকে। এই চুম্বক নানান মাপেও পাওয়া যায়।

Magnetic needle 1 Magnetic needle 2 Magnetic needle 3

হাতেকলমে 3

একটা লম্বা দণ্ড চুম্বক, কিছুটা লোহাচূর, একটা সাদা কাগজ নাও।

কাচের টেবিলের উপর সাদা কাগজটা পাটো। এবার লোহাচূরগুলো সাদা কাগজের উপর রাখো।

এখন চুম্বকটার সারা গায়ে লোহাচূরগুলো মাখাতে চেষ্টা করো।

ভৌত পরিবেশ

এবার নীচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।

  • লোহাচূরগুলো কী চুম্বকের সব জায়গায় সমানভাবে আটকাচ্ছে?
  • চুম্বকের কোন জায়গায় লোহাচূর সবচেয়ে বেশি আটকাচ্ছে?
  • চুম্বকের কোন জায়গায় লোহাচূর সবচাইতে কম আটকাচ্ছে?
Magnet attraction

উপরের পর্যবেক্ষণ থেকে চুম্বকের আকর্ষণ ক্ষমতা কোথায় সবচেয়ে বেশি বলে তোমার মনে হয়?

চুম্বকের কোন জায়গায় আকর্ষণ ক্ষমতা সবচেয়ে কম বলে তোমার মনে হয়?

জেনে রাখা দরকার

চুম্বকের দুই প্রান্তে বা দুই অঞ্চলে চুম্বকের আকর্ষণ ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি, সেই দুই অঞ্চলকে চুম্বকের 'মেরু' বলে। এই মেরু দুটিকে বিন্দু হিসেবে ভাবা যেতে পারে।

চুম্বকের ঠিক মাঝখানে চুম্বকের আকর্ষণ ক্ষমতা প্রায় নেই বললেই চলে। এই অঞ্চলকে চুম্বকের উদসীন অঞ্চল বলে।

হাতেকলমে 4

একটা দণ্ড চুম্বক, দুটো চুম্বক শলাকা, একটা পেনসিল ও একটা সাদা কাগজ নাও। সাদা কাগজটি একটা টেবিলের উপর আটকাও। এবার দণ্ড চুম্বকটা কাগজের উপর রাখো। এরপর দণ্ড চুম্বকের N-মেরুর দুই পাশ বরাবর ছবির মতো করে চুম্বক শলাকা দুটি রাখো।

Magnetic field

এখন পেনসিল দিয়ে দণ্ড চুম্বকটার ধার ঘেঁষে দাগ কাটো। তারপর চুম্বক শলাকা দুটির দুই প্রান্তবিন্দুর পেন্সিল দিয়ে সাদা কাগজটার বিন্দু একে চিহ্নিত করো। বিন্দুগুলিকে A,B ও C,D নাম দাও।

এবার BA ও DC যুক্ত করে বাড়িয়ে দাও। ওই সরল রেখাংশ দুটো যে বিন্দুতে (N) ছেদ করল, সেই বিন্দুটি জ্যামিতিক ভাবে দণ্ড চুম্বকের উত্তর মেরুর অবস্থান।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

একরকম তুমি চুম্বকের দক্ষিণ মেরুর অবস্থান নির্ণয় করো। চুম্বকের মেরুবিন্দু দুটি আসলে চুম্বকের দুই প্রান্তদেশের কাছাকাছি চুম্বকের ভেতরে অবস্থান করে।

Magnetic length

চুম্বকের এই দুই মেরুদ্বয়ী দূরত্বকে চুম্বক দৈর্ঘ্য বলে। এই দৈর্ঘ্য চুম্বকের জ্যামিতিক দৈর্ঘ্যের 0.86 গুণ।

অর্থাৎ, চুম্বক দৈর্ঘ্য = চুম্বকের জ্যামিতিক দৈর্ঘ্য $\times$ 0.86।

অবশেষে ঝুলন্ত বা ভাসমান অবস্থায় চুম্বকের যে মেরু মোটামুটি উত্তর দিক মুখ করে থাকে তাকে উত্তর সন্ধানী মেরু বা উত্তর মেরু (N) বলে। আর যে মেরু মোটামুটি দক্ষিণ দিক মুখ করে থাকে তাকে দক্ষিণ সন্ধানী মেরু বা দক্ষিণ মেরু (S) বলে।

চুম্বকের উত্তর ও দক্ষিণ মেরু যোগ করলে যে সরলরেখাংশ (NS) পাওয়া যায় তাকে চুম্বক অক্ষ বলে।

একটি চুম্বকের চারধারে যে স্থান জুড়ে ওই চুম্বকের আকর্ষণ বা বিকর্ষণ ধর্ম কাজ করে তাকে ওই চুম্বকের চুম্বক ক্ষেত্র বলে।

হাতেকলমে 5

ছবির মতো করে বা অন্য কোনোভাবে সুতো দিয়ে একটা দণ্ড চুম্বক ঝুলিয়ে দাও। খেয়াল রাখো যেন আশেপাশে কোনো চৌম্বক পদার্থ বা চুম্বক না থাকে।

Suspended magnet Magnet repulsion

চুম্বকটাকে সাম্য অবস্থায় আসতে দাও। এবার অন্য একটা দণ্ড চুম্বকের উত্তর মেরু (N) ঝুলন্ত চুম্বকের উত্তর মেরু (N)-এর কাছে নিয়ে যাও।

কী দেখতে পেলে?

ঝুলন্ত চুম্বকের উত্তর মেরু সরে গেল কেন?

ভৌত পরিবেশ

তাহলে কি ঝুলন্ত চুম্বকের উত্তর মেরুর উপর কেউ 'বল' প্রয়োগ করেছে?

এই বল কোথা থেকে এল?

কাছাকাছি দ্বিতীয় চুম্বকের উত্তর মেরু ছাড়া আর তো কিছু ছিল না। তবে কি দ্বিতীয় চুম্বকের উত্তর মেরুই এই বল করেছে?

তাহলে বোঝা গেল, একটা চুম্বকের উত্তর মেরু অপর চুম্বকের উত্তর মেরুকে বিকর্ষণ করে।

এবার সাম্য অবস্থায় চুম্বকের দক্ষিণ মেরু (S) কাছে হাতের চুম্বকের দক্ষিণ (S) মেরুটাকে ধরো।

এক্ষেত্রে কী দেখতে পেলে? এ থেকে তুমি কী সিদ্ধান্তে আসতে পারো?

অতএব বোঝা গেল চুম্বকের সমমেরু পরস্পরকে বিকর্ষণ করে। অর্থাৎ, S-মেরু, S-মেরুকে এবং N-মেরু, N-মেরুকে বিকর্ষণ করে।

Magnet attraction

এবার ঝুলন্ত চুম্বকের N মেরুর কাছে, দ্বিতীয় চুম্বকের S-মেরু নিয়ে যাও।

কী দেখতে পাচ্ছ?

ঝুলন্ত চুম্বকের S মেরু তোমার হাতের চুম্বকের N মেরুর কাছে এল কেন?

এই দুই বিপরীত মেরু (N ও S) মধ্যে কোনো বিকর্ষণ বল কাজ করছে কি? (আকর্ষণ বল না বিকর্ষণ বল?)

এবার হাতের দণ্ড চুম্বকের N মেরু সাম্য অবস্থায় ঝুলন্ত দণ্ড চুম্বকের S মেরুর ধারে ধরো।

এখন কী দেখতে পেলে?

এবারও কি সরলরূপ দুই বিপরীত মেরু (N ও S) পরস্পরকে আকর্ষণ করল?

অতএব জানা গেল চুম্বকের বিপরীত মেরু (N ও S) পরস্পরকে আকর্ষণ করে

Attraction repulsion

ঝুলন্ত চুম্বকটার কাছে অন্য চুম্বকের বিপরীত মেরু নিয়ে আসায় আকর্ষণ হয়। যদি কোনো একটি লোহার দণ্ড বা স্টিলের দণ্ড আনা হতো তাহলে আকর্ষণ হতো। তাহলে আকর্ষণ হচ্ছে দেখে কি জোর দিয়ে বলা যাবে যে দ্বিতীয় বস্তুটিও চুম্বক?

এবার দেখব যদি বিকর্ষণ হতো তাহলে দ্বিতীয় বস্তুটি কি তুমি কী বলতে? চুম্বক, না লোহা বা স্টিলের দণ্ড?

কোনো বস্তু চুম্বক কিনা তা জানতে আকর্ষণ, না বিকর্ষণ কোনটি বেশি নির্ভরযোগ্য বলে তোমার মনে হয়?

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

হাতেকলমে 6

একটা শক্তিশালী দণ্ড চুম্বক, একটা লোহার দণ্ড, কয়েকটা ছোটো লোহার পেরেক আর একটা চুম্বক শলাকা নাও।

একটা লোহার পেরেক আর একটা লোহার পেরেক স্পর্শ করো।

কী দেখলে?

Induction experiment Induction 1

ওই পেরেক কি অন্য পেরেককে আকর্ষণ করল?

এবার মেথির মতো করে একটা লোহার পেরেক স্পর্শ করে দাও। এবার N-মেরু, ধরো 'N'-এর নিচে একটা লোহার পেরেক স্পর্শ করে দাও। পেরেকটা দণ্ড চুম্বকের সঙ্গে আটকে যাবে।

এখন আর একটা লোহার পেরেকটা তলায় স্পর্শ করে দাও।

এবার কী দেখতে পাচ্ছ?

দ্বিতীয় পেরেকটা প্রথম পেরেকটার তলায় স্পর্শ করছে? কেন পড়ছে না?

তবে কী প্রথম পেরেকটা দ্বিতীয় পেরেকটাকে আকর্ষণ করছে? কেন?

এভাবে আর কয়েকটা পেরেক দিয়ে দেখো তো একটা চেইন তৈরি করতে পারো কিনা।

এবার খুব সাবধানে অন্য হাত দিয়ে প্রথম পেরেকটাকে ধরো (সাবধানে, যাতে নাড়ালে পেরেকগুলোর চেন থেকে পেরেক আসে না পড়ে)। এখন আস্তে করে দণ্ড চুম্বকটাকে সরিয়ে নাও।

এখন কী দেখতে পাচ্ছ?

পেরেকগুলো সব খসে পড়ে গেল কেন?

তোমরা জানো, চুম্বক লোহাকে আকর্ষণ করে। লোহা লোহাকে আকর্ষণ করে না। তাই প্রথম ক্ষেত্রে, একটা লোহার পেরেক আর একটা লোহার পেরেককে আকর্ষণ করেনি।

দ্বিতীয় ক্ষেত্রে, প্রথম লোহার পেরেক দ্বিতীয়টাকে আকর্ষণ করে। কিন্তু সেক্ষেত্রে প্রথম পেরেকটাকে দণ্ড চুম্বক আকর্ষণ করে রেখেছিল। দণ্ড চুম্বক সরিয়ে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পেরেকটার আকর্ষণ ক্ষমতাও চলে যায়। নিশ্চয়ই দণ্ড চুম্বকের জন্যই প্রথম পেরেকটা দ্বিতীয় পেরেককে আকর্ষণ করার ক্ষমতা অর্জন করেছিল।

আসলে, দণ্ড চুম্বকের প্রভাবে প্রথম পেরেকটা সাময়িকভাবে চুম্বকে পরিণত হয়। এই ঘটনাকে 'চুম্বক আবেশ' বলে।

এভাবে 'আবেশের' ফলে চুম্বকে পরিণত হওয়া প্রথম পেরেকটা স্বভাবিক দ্বিতীয় পেরেকটাকে চুম্বকের আবিষ্টত হয়, তার প্রভাবে তৃতীয় পেরেক চুম্বকে পরিণত হয়। এভাবেই পেরেকদের চেনটা তৈরি হয়েছিল।

এই পরীক্ষা থেকে আমরা আরও জানতে পারলাম যে, চুম্বক যখন কোনো চৌম্বক পদার্থকে আকর্ষণ করে, তার আগে ওই চৌম্বক পদার্থকে আবেশিত করে চুম্বকে পরিণত করে। তাই বলা যায়, 'আকর্ষণের পূর্বে আবেশ হয়'।

ভৌত পরিবেশ

হাতেকলমে 7

একটা দণ্ড চুম্বক নাও। এবার একে মাঝখান দিয়ে উত্তর মেরু আর একপ্রান্তে দক্ষিণ মেরু।

এবার, চুম্বকটাকে মাঝখান থেকে দুই টুকরো করো।

দেখত চুম্বকের উত্তর ও দক্ষিণ মেরুকে আলাদা করা গেল কিনা?

Broken magnet

একটা চুম্বক শলাকা দিয়ে পরীক্ষা করে দেখো, টুকরোগুলোর প্রত্যেকটা দুই প্রান্তে বিপরীত মেরু (N ও S) সৃষ্টি হয়েছে।

এবার ওই দুই টুকরোর প্রত্যেকটা দুই টুকরো করে দেখো, N ও S মেরুকে আলাদা করা যায় কিনা।

প্রতি টুকরো আলাদা করে চুম্বক শলাকা দিয়ে পরীক্ষা করে দেখো, আবার ওই টুকরোতে N ও S মেরু সৃষ্টি হয়ে গেছে।

তাহলে বোঝা গেল, আলাদাভাবে শুধু একটা চুম্বক মেরু অস্তিত্ব সম্ভব নয়।

এক দণ্ডে চুম্বকের বিভিন্ন ধর্ম

  • চুম্বকের আকর্ষণ ধর্ম।
  • দিক নির্দেশক ধর্ম।
  • সমমেরু পরস্পরকে বিকর্ষণ ও বিপরীতমেরু পরস্পরকে আকর্ষণ করে।
  • আবেশ ধর্ম।
  • আগে আবেশ পরে আকর্ষণ হয়।
  • চুম্বকের সর্বদা দুটি বিপরীত মেরু থাকে।
  • একক মেরুর অস্তিত্ব নেই।

পৃথিবী নিজেই কি একটি চুম্বক?

একটি ঝুলন্ত দণ্ড চুম্বক উত্তর-দক্ষিণ মুখ করে আছে। পকেটে অন্য একটি চুম্বক নিয়ে তোমার বন্ধু যদি ওই ঝুলন্ত চুম্বকটির সামনে দিয়ে যায় তাহলে কী হবে?

ঝুলন্ত চুম্বকটি কি উত্তর-দক্ষিণ মুখ করে আছে?

তাহলে ভেবে দেখাতো কিসের প্রভাবে একটি ঝুলন্ত চুম্বক তার গ্যাসের দিক পরিবর্তন করে?

এবার ভাবো, যখন আশেপাশে কোনো চুম্বক নেই তখন ঝুলন্ত চুম্বক কেন এমনভাবে না থেকে শুধু উত্তর-দক্ষিণ মুখ করে থাকে কেন? তাহলে কি এর জন্য অন্য কোনো চুম্বক আছে যা এইভাবে যে-কোনো ঝুলন্ত চুম্বককে যেমন তেমনভাবে থাকতে দিত না?– পৃথিবীই বলা সেই চুম্বক।

পৃথিবী যে নিজেই একটি চুম্বক তার সম্পর্কে অনেক প্রমাণ আছে।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

Geomagnetism

একটা লোহার দণ্ডকে বহুদিন ধরে পৃথিবীর উত্তর-দক্ষিণ দিক বরাবর রেখে দিলে দেখা যায় ওই দণ্ডের মধ্যে ক্ষীণ চুম্বকত্ব সৃষ্টি হয়েছে। দণ্ডটির উত্তরমুখী প্রান্তে 'উত্তর মেরু' আর দক্ষিণমুখী প্রান্তে 'দক্ষিণ মেরু' সৃষ্টি হয়।

ভাবো তো, কোনো চুম্বককে ঝুলে আছে দিলে তা কেন? উত্তর-দক্ষিণ মুখ করে দাঁড়িয়ে থাকে কেন?

আমরা জানি চুম্বকের বিপরীত মেরু পরস্পরকে আকর্ষণ করে। এবার দেখত, পৃথিবীর ভৌগোলিক উত্তর মেতে কি কোনো চুম্বক মেরু আছে? একইরকম পৃথিবীর ভৌগোলিক দক্ষিণ মেতেও কি কোনো চুম্বক মেরু আছে?

আসলে, চুম্বকের উত্তর মেরু যে প্রান্তকে নির্দেশ করে তা হলো উত্তর সন্ধানী মেরু। আর অপরটি 'দক্ষিণ সন্ধানী মেরু'। সংক্ষিপ্ত করার জন্য এদের আমরা সাধারণভাবে 'উত্তর মেরু ও দক্ষিণ মেরু' বলি।

তড়িৎ-চুম্বক

একটা লোহার দণ্ড, একটা লম্বা তার (প্লাস্টিকের আস্তরণ দেওয়া) আমার তার, একটা সুইচ, একটা শক্তিশালী ব্যাটারি আর একটা চুম্বক শলাকা নাও। লোহার উপর অগ্নিত তার তাড়িয়ে নাও। আর দুই প্রান্ত ব্যাটারি র ধারক ও ধনাত্মক প্রান্তে সুসাহ হিসেবে মতো করে যোগ করো। শলাকাটিকে তার জড়ানো লোহার দণ্ডের সামনে এনে সুইচ অন করো। দেখবা তো?

Electromagnet

শলাকার কাছাকাছি থাকা প্রান্তটি কি ধরনের মেরু সৃষ্টি হয়েছে?

ব্যাটারির সঙ্গে সূত্র তারের প্রান্তটাকে উল্টে দাও। এবার সুইচ অন করে আবার দেখতো, শলাকাটার কোন মেরু দণ্ডটির কাছে দ্বারা আকর্ষিত বা বিকর্ষিত হচ্ছে। চুম্বক শলাকার বিক্ষেপ ঘটল কেন?

চুম্বক শলাকাকে কি আকর্ষণ বা বিকর্ষণ করল? এবার সুইচ অফ করে তড়িৎ প্রবাহ বন্ধ করে দাও। চুম্বক শলাকা আবার স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরে এল কেন?

তাহলে কি তারের মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহের ফলে লোহার দণ্ড চুম্বকে পরিণত হয়েছিল?

এই ধরনের চুম্বককে তড়িৎ-চুম্বক বলে।

ভৌত পরিবেশ

চুম্বক ও তড়িৎ-চুম্বকের ব্যবহার

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে চুম্বকের নানা ব্যবহার আছে। তার কয়েকটি নীচে দেওয়া হলো।

Compass

নৌক্যাম্পাস

সমুদ্রবক্ষে দিক নির্দেশের জন্য নাবিকরা 'নৌক্যাম্পাস' ব্যবহার করেন। এতে একটি সুক্ষ্মায়িত কাঁচের উপর একটি সুক্ষ্মায়িত কাঁচের উপর চুম্বক শলাকা বোঝানো থাকে।

অডিও বা ভিডিও ক্যাসেটের মধ্যে যে প্লাস্টিকের টেপ থাকে তার উপর চুম্বকীয় পদার্থের আস্তরণ থাকে।

Audio cassette

অডিও ক্যাসেট

A.T.M (AUTOMATED TELLER MACHINE) কার্ডে ও ক্রেডিট কার্ডে চুম্বকীয় স্ট্রিপ (Magnetic strip) -এর ব্যবহার হয়।

কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক (Hard disk) প্লাস্টিকের চাকতির উপর চুম্বকীয় পদার্থের প্রলেপ বা আস্তরণ থাকে।

Computer hard disk

কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক

বিভিন্ন খেলনাতেও চুম্বকের ব্যবহার দেখা যায়।

টর্চের ভিতর থেকে লোহার মুখ পূর্ণ বার করতে ভারীরা এক বিশেষ তড়িৎ চুম্বক ব্যবহার করেন।

লাউড স্পিকারে চুম্বকের ব্যবহার হয়।

সাইকেলের ডায়নামোতে চুম্বকের ব্যবহার হয়।

ইলেক্ট্রিক মিটারে চুম্বক ব্যবহৃত হয়।

ফ্রিজের দরজায় চুম্বক ব্যবহৃত হয়।

ইলেকট্রিক কলিডোর তড়িৎ চুম্বক ব্যবহৃত হয়।

ইলেকট্রিক মোটরে তড়িৎ চুম্বক ব্যবহৃত হয়।

Calling bell

কলিংবেল

চুম্বক ব্যবহৃত হয়েছে এমন কোনো বস্তু কোনোভাবে যেন খুব উষ্ণও না হয়। তাপের প্রভাবে চুম্বকের চুম্বকত্ব বিনষ্ট হতে পারে। দুটি ATM কার্ড বা ক্রেডিট কার্ডের যেদিকে চুম্বক স্ট্রিপ আছে সেই দিক মুখোমুখি একসঙ্গে যেন না থাকে।

লাউড স্পিকার, টি.ভি, রেডিও, কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক ইত্যাদির কাছে যেন কোনো শক্তিশালী চুম্বক না থাকে।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

জীবের শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়ায় চৌম্বক ক্ষেত্রের ভূমিকা

জীবজগতে ঘরে রেখেছে যে পৃথিবী সে নিজেই একটা বিশাল চুম্বক। কোনো কোনো জীবের উপর চৌম্বক শক্তির প্রভাব বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন। অনেক জীবের ক্ষেত্রে এখনও এর প্রভাব আমাদের অজানা থেকে গেছে।

Earth's magnetic field lines

ভূচুম্বকের বলরেখা

ভূচুম্বকের সরলরেখা উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু পর্যন্ত বিস্তৃত।

আমরা পরিযায়ী পাখিদের কথা জানি। পরিযায়ী কিছু কচ্ছপও আছে। তারা পৃথিবীর চৌম্বক বলরেখা অনুসরণ করে আমি বাসভূমি থেকে শীতের পাড়ি দেয় এমন কিছু নির্দিষ্ট অঞ্চলে যেখানে গরম তুলনামূলকভাবে বেশি। আবার শীতের শেষে ওইজাগানে ফিরে আসে।

মহাবিশ্ব থেকে এক ধরনের রশ্মি – মহাজাগতিক রশ্মি

(cosmic ray) ক্রমাগত পৃথিবীর দিক থেকে আসে। এদের অধিকাংশই হলো তড়িৎচুম্বক রশ্মি। ভূ-চৌম্বক ক্ষেত্রের সঙ্গে এদের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ঘটে। ফলে মেরু অঞ্চল দিয়ে দুটি বিকিরণ বলয় (ভ্যান-আলেন বিকিরণ বলয়) তৈরি হয় এবং উৎপন্ন হয় মেরু জ্যোতি বা অরোরা। এই জ্যোতিও এই অঞ্চলের জীবজগতের কাজে লাগে।

মেরুজ্যোতি

কী করে একটি প্রাণী সরাসরি এই চৌম্বক ক্ষেত্র চিনতে পারে?

Pigeon brain

পায়রার খুলি ও মস্তিষ্কের মাঝে একটা ছোটো কালো গঠন আছে। এর মধ্যে ম্যাগনেটাইট নামে এক ধরনের চৌম্বকীয় বস্তু আছে। ধরে নেওয়া পায়রারা মেঘলা অন্ধকার দিনে কোনো পরিচিত চিহ্ন না পেলেও চৌম্বকীয় ক্ষেত্র দিয়ে তাদের গন্তব্যে যায়। কিছুকিছু দিক ও দিক থেকে তাদের তাড়া আসে। মগজের ব্যাপার হলো, ওদের মাথায় এক টুকরো লোহা লাগিয়ে দিলে চলার দিক পরিবর্তিত হয়। কোনো কোনো শামুক, মোমবাতির মধ্যেও

ভৌত পরিবেশ

তড়িৎ প্রবাহ

তড়িৎ-এর সাহায্যে চলে এমন কয়েকটি জিনিসের নাম লেখো।

ধরো, রাত্রিবেলায় লোডশেডিং হয়েছে, অথবা অন্য কোনো কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়েছে,

এসব ক্ষেত্রে বৈদ্যুতিক আলো পেত মানুষ কী কী ব্যবহার করে?

তোমরা সবাই টর্চ দেখেছ। অন্ধকারে টর্চের আলোয় আমরা পথ চলি। টর্চের ভিতরে কী কী কখনও দেখেছ?

Battery 1 Battery 2

ব্যাটারি ব্যাটারি

টর্চের ভিতর তোমরা যাকে ব্যাটারি বলো জানো তা হলো Dry cell বা নির্জন কোষ। চলতি কথায় একে বুতুল কোষ (cell) -ই বলে। একাধিক সেল-এর সমবয়ে তৈরি হয় ব্যাটারি

'সেল' ছাড়া টর্চ চলে না। আবার 'সেল' যুক্ত করলেই টর্চ জ্বালালে জ্বলে। তাহলে, টর্চের বৈদ্যুতিক বালবের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির যোগান দেয় 'সেল'।

জেনে রাখা দরকার

টর্চের সেলের ভিতরে থাকে রাসায়নিক পদার্থ। এই রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহারের ফলে রাসায়নিক শক্তি বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপ বদল করে। এই সেলকে বলে 'প্রাথমিক সেল' বা 'ডিসপোজেবল সেল'।

একটা সেল নাও। খুব ভালো করে সেলটাকে লক্ষ্য করো। এবার দেখো '+' চিহ্ন কোথায় আছে?

যে প্রান্তে '+' চিহ্ন আছে তার উল্টো প্রান্তে কী চিহ্ন আছে?

এবার দেখো সেলের কোন প্রান্তে একটা ধাতুর টপি রয়েছে? '+' চিহ্ন দেওয়াও আছে, না '-' চিহ্ন যুক্ত প্রান্তে?

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

দেখো তো সেলটির ওপর প্রান্তে কী আছে?

Cell

ধাতব টপি

ধাতব চাকতি

Bulb

ফিলামেন্ট

প্রান্ত- ১

প্রান্ত- ২

দেখা গেল, একটা 'সেলের' দুটি প্রান্ত।

  • 'ধাতব টপি' প্রান্ত বা '+' চিহ্নিত প্রান্ত।
  • 'ধাতব চাকতি' প্রান্ত বা '-' চিহ্নিত প্রান্ত।

জেনে রাখা ভালো

বাজারে আরও অনেক রকমের সেল আছে।

ইলেকট্রনিক ঘড়িঘড়িতে যে 'সেল' থাকে তা দেখতে অনেকটা বোতামের মতো। একে বোতাম সেল (Button Cell) বলে।

শক্তির শক্তিশালী ব্যাটারিতে থাকে ছ'টা বা তার বেশি সেল। এই ধরনের সেলকে 'সেকেন্ডারি সেল' বলে।

বাড়ির বডডের সাহায্যে টর্চ বালবটাকে বার করো। ভালো করে লক্ষ্য করো।

টর্চের সুইচ অন করলে বালবের ভিতরে যে আলোক জ্বলে ওঠে তাকে ফিলামেন্ট। ফিলামেন্টটা, দুটো মোটা যাবর আবর মধ্যে থাকে। ওই দুইটার একটি সেলের ধনাত্মক প্রান্তে (+ চিহ্নিত প্রান্তে) এবং অপরটি সেলের ঋণাত্মক প্রান্তে (- চিহ্নিত প্রান্তে) যুক্ত থাকে।

হাতেকলমে 1

একটা টর্চের বাল্ব, এক বা একাধিক সেল, বিভিন্ন রঙের পাঁচটা প্লাস্টিক আবরণে আবৃত পরিবাহী তার, ব্ল্যাক টেপ ও রাবার ব্যান্ড (গাঁটার) জোগাড় করো।

প্রতিটি তারের দু-প্রান্তে খানিকটা প্লাস্টিক আবরণ (প্লাস্টিক কোটিং) ছাড়িয়ে নিয়ে ধাতব অংশ বার করে রাখো।

সেলের দু-প্রান্তে একটা করে তার যুক্ত করো।

বালবটার দু-প্রান্তে একটা করে তার যুক্ত করো।

এবার পরের পৃষ্ঠায় ছবিতে, যেভাবে দেখানো হয়েছে, সেইরকম বিভিন্নভাবে তারগুলো যুক্ত করো। দেখো কোন ক্ষেত্রে আলো জ্বলছে। (ছবির নিচে দেওয়া লেখা থেকে উত্তরটা বেছে নাও)

ভৌত পরিবেশ

Circuit A

আলো জ্বলছে/আলো জ্বলছে না

Circuit B

আলো জ্বলছে/আলো জ্বলছে না

Circuit C

আলো জ্বলছে/আলো জ্বলছে না

Circuit D

আলো জ্বলছে/আলো জ্বলছে না

Circuit E

আলো জ্বলছে/আলো জ্বলছে না

Circuit F

আলো জ্বলছে/আলো জ্বলছে না

হাতেকলমে 2

এবার দুটো সেল পাশাপাশি বসিয়ে নিয়ে বালবটা জ্বালাও।

কী দেখলে?

বালবটার আলো আরও বেশি জোরালো হলো কি?

বোঝা গেল যে একটার বদলে দুটো সেল পাশাপাশি বসালে তড়িৎশক্তির পরিমাণ বাড়ে।

'হাতেকলমে 1' -এর পরীক্ষায় দুটি ক্ষেত্রে আলো জ্বলেছে (B ও F)।

Cell and bulb

এই দুই ক্ষেত্রেই বালবের দুই প্রান্তের সঙ্গে সেলের দুই প্রান্ত যুক্ত করা হয়েছে। এই ব্যবস্থাকে বলা হয় সার্কিট বা বর্তনী

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

বর্তনী আঁকার জন্য কয়েকটি প্রতীক নীচের সারণিতে দেওয়া হলো।

সেল বড়োব্যাটারি (+) প্রান্ত বোঝায় ছোটোটা (-) প্রান্ত বোঝায়
Cell symbol $ \vdash \mid $
Battery symbol $ \vdash \mid \vdash \mid $ x
Switch symbol 1 $ \text{---} \angle \text{---} $ সুইচ 'অফ' অবস্থা
Switch symbol 2 $ \text{---} \text{---} $ সুইচ 'অন' অবস্থা
Wire symbol $ \text{---} $ x
Bulb symbol $ \text{〇} $ x

হাতেকলমে 3

ছবির মতো করে একটা বর্তনী তৈরি করো।

বালবটা কি জ্বলছে?

যদি বালবটা জ্বলে তবে বর্তনী ঠিক আছে।

এবার একটা স্কেচ পেন নাও। সেলের '+' প্রান্ত থেকে তার বরাবর স্কেচ পেন দিয়ে বালব অবধি দাগ দাও।

Circuit diagram

সেল থেকে তড়িৎ তোমার পেন্সির দাগ বরাবর তারের মধ্যে দিয়ে বালবের এক প্রান্তে পৌঁছায়।

বালবটা যেহেতু জ্বলছে, তাই তড়িৎ বালবের ভিতরের তার আর ফিলামেন্ট হয়ে বালবের অপর প্রান্তে এসে পৌঁছায়।

এবার বালবের অপর প্রান্ত থেকে শুরু করে তার বরাবর সেলের '-' প্রান্ত অবধি স্কেচ পেন দিয়ে দাগ দাও।

ভৌত পরিবেশ

এবার প্রতীকের সাহায্যে বর্তনীটি পাশে আঁকা হলো। ভালোভাবে বর্তনীটি লক্ষ্য করো।

Circuit symbol

আগের পৃষ্ঠার সারণিতে দেওয়া প্রতীকের সাহায্যে কীভাবে পাশের বর্তনীটি আঁকা হয়েছে তা নিশ্চয়ই বুঝেছ।

এবার নীচের ৬টি দিকের ছবি দেখে তার বর্তনীটি ডানদিকে আঁকো।

Circuit 1

নীচের ছবিগুলি খুঁটিয়ে দেখো ও ছবির সঙ্গে যুক্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও।

Circuit 1

আলো কি জ্বলবে? ......

Circuit 2

আলো কি জ্বলবে? ......

Circuit 3

আলো কি জ্বলবে? ......

Circuit 4

আলো কি জ্বলবে? ......

Circuit 5

আলো কি জ্বলবে? ......

Circuit 6

আলো কি জ্বলবে? ......

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

বর্তনী কোথাও ছিদ্র হয়ে গেলে, তার মধ্যে দিয়ে তড়িৎ চলাচলে বাধা পড়ে। তখন বর্তনী কাজ করে না।

তখন ওই বর্তনীকে মুক্ত বর্তনী বলে। আর যদি বর্তনী কোথাও ছিদ্র হয় না তবে এই বর্তনীকে বদ্ধ বর্তনী বলে।

হাতেকলমে 4

একটা থার্মোকলের টুকরো বা কাঠের টুকরো, একটা সেফটিপিন, আর দুটো বোর্ড পিন নাও। নীচের ছবির মতো ব্যবস্থা করো।

Board pin 1 Board pin 2

দুটি পিনের দূরত্ব এমন হবে, যাতে দ্বিতীয় পিনে গাঁথা সেফটিপিনকে ঘুরিয়ে প্রথম পিন স্পর্শ করা যায়।

ব্যাস, তুমি বানিয়ে ফেলেছ একটি সুইচ

Switch making

একটা বাল্ব, তিনটি তার, আর একটা সেল নাও। এবার পাশের বর্তনীটা তৈরি করো।

সেফটিপিনটা ছবিবে যেমন দেখানো আছে তেমনভাবে রয়েছে।

বালবটা কি জ্বলবে?

এবার সেফটিপিনটা ঘুরিয়ে প্রথম পিন স্পর্শ করাও।

বালবটা কি জ্বলবে?

তোমার বাড়িতে যে সব ইলেকট্রিকের সরঞ্জামের মধ্যে সুইচ আছে তার মধ্যে প্রায় সব সুইচই এই নীতিতে কাজ করে।

হাতেকলমে 5

একটা সেল, একটা টর্চের বাল্ব, আর তিনটি তার নাও। তারগুলোর দুই প্রান্তে প্লাস্টিক ছাড়িয়ে ধাতব তার বার করে রাখো।

এবার পরের পৃষ্ঠার ছবির মতো করে তার, সেল ও বাল্ব লাগাও। ব্যাস, তৈরি হলো তোমার বর্তনী পরীক্ষক বা টেস্টার

ভৌত পরিবেশ

এখন, একটা কাচের ও একটা প্লাস্টিকের স্কেল, একটা লোহার পেরেক, একটা সুতির কাগজের টুকরো, একটা স্টিলের চামচ, একটা চাবি, একটা কাগজের টুকরো, চিনে মাটির কাপ নাও।

Tester

এবার তোমার তৈরি টেস্টারটা নাও। উপরের প্রতিটি জিনিসের দু-প্রান্তে তোমার টেস্টারের A ও B প্রান্ত স্পর্শ করো। লক্ষ্য করো, কোন ক্ষেত্রে বালবটা জ্বলছে।

যে যে ক্ষেত্রে বালব জ্বলছে, সেই বস্তুগুলোর মধ্য দিয়ে নিশ্চয়ই তড়িৎ প্রবাহিত হচ্ছে।

এই বস্তুগুলোকে বলে তড়িৎ সুপরিবাহী

যেসব ক্ষেত্রে বালব জ্বলছে না, সেই বস্তুগুলোর মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হতে পারে না। তাই এদের তড়িৎ-এর 'কুপরিবাহী' বা অন্তারক বলে।

বস্তুর নাম আলো জ্বলছে বা জ্বলছে না এর মধ্যে দিয়ে তড়িৎ যেতে পারে বা পারে না তড়িৎ সুপরিবাহী বা কুপরিবাহী
কাচের স্কেল
প্লাস্টিকের স্কেল
লোহার পেরেক
সুতির কাপড়
স্টিলের চামচ
চাবি
কাগজের টুকরো
চিনেমাটির কাপ

উপরের সারণিটি পূরণ করো।

তোমার টেস্টারটা তো বায়ুর মধ্যে আছে। তাহলে টেস্টারের 'A' ও 'B' প্রান্ত বায়ুকে স্পর্শ করেই রয়েছে, তাই না? কিন্তু বাল্ব তো জ্বলছে না।

তাহলে বায়ু কি সুপরিবাহী না কুপরিবাহী?

এক্ষেত্রে বর্তনীটি কি বন্ধ না মুক্ত?

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

ভেবে বলো তো।

ইলেকট্রিকের তার প্লাস্টিকের ভেতর ঢাকা থাকে কেন? বর্তনী তৈরির সময় ওই প্লাস্টিকের আবরণ ছাড়িয়ে নিতে হয় কেন?

ইলেকট্রিক প্লাগেন্না চিনামাটি বা প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয় কেন?

বৈদ্যুতিক মিস্ত্রিরা যখন চালু লাইন করেন তখন তারা আসবাবপত্রের উপর দাঁড়িয়ে কাজ করেন কেন?

মনে রেখো, প্লাস্টিক, চিনামাটি, কাঠ প্রভৃতি তড়িৎ-এর কুপরিবাহী।

তড়িৎ প্রবাহের ফল

হাতেকলমে 6

একটা চুম্বক শলাকা নাও। চুম্বক শলাকাকে উত্তর-দক্ষিণ মুখ করে সাম্য অবস্থায় আসতে দাও। এবার একটা শক্তিশালী ব্যাটারি, দু-টুকরো (একটা ছোটো ও একটা বড়ো) প্লাস্টিকের তার যাদের দু-প্রান্তে প্লাস্টিক ছাড়িয়ে ধাতব তারের কিছু অংশ বার করা আছে ও একটা সুইচ নাও। ছবির মতো করে বর্তনীটা তৈরি করো।

Magnetic deflection

এবার, বড়ো তারটার দু-প্রান্ত হাত দিয়ে, চুম্বকশলাকার দুই সুতোর বরাবর শলাকাটার সামান্য একটা ওপরে টান টান করে ধরো। এবার বন্ধুকে বলো সুইচ অন করতে।

সুইচ অন করার সঙ্গে সঙ্গে, চুম্বকটার বিক্ষেপ হলো কেন?

কাছাকাছি তো কোনো চুম্বক নেই। তাহলে ওই চুম্বককে বল প্রয়োগ করল কে?

ভালো করে দেখতো তো চুম্বকটা এখন কি আর উত্তর-দক্ষিণ মুখ করে আছে?

এবার সুইচ অফ করে দাও।

কী দেখতে পেলে?

চুম্বকটার আবার বিক্ষেপ হলো। আর সাম্যাবস্থায় এসে উত্তর-দক্ষিণ মুখ করে দাঁড়াল।

তাহলে এই পরীক্ষা আমাদের বুঝাতে সাহায্যে করছে তারের মধ্য দিয়ে তড়িৎ পাঠালে চুম্বকের

ভৌত পরিবেশ

ওপর তার প্রভাব পড়ে।

তোমরা দেখেছ, একটা চুম্বক শলাকার কাছে একটা দণ্ড চুম্বক নিয়ে এলে, শলাকাটির বিক্ষেপ হয়, কারণ শলাকাটির উপর একটি চৌম্বক বল ক্রিয়া করে।

তাহলে ওপরের পরীক্ষায় চুম্বক শলাকাটার বিক্ষেপের জন্য যে চৌম্বক বল দায়ী তা এল কোথা থেকে? তড়িৎপ্রবাহের ফলে যে চৌম্বক বলের সৃষ্টি হয় ওপরের পরীক্ষায় তার প্রমাণ। কারণ সুইচ অফ করার পর ওই বলের আর অস্তিত্ব থাকে না।

হাতেকলমে 7

একটা সেল, একটা বড়ো লোহার পেরেক, কয়েকটা ছোটো পেরেক, তোমার তৈরি একটা সুইচ ও চারটে তার নাও। ছবির মতো করে সার্কিট তৈরি করো।

সুইচ 'অন' করো।

এবার বড়ো পেরেকটার কাছে ছোটো পেরেকগুলো ধরো।

কী দেখলে বলো?

Electromagnet 2

ছোটো পেরেকগুলোকে বড়ো পেরেকটা আকর্ষণ করছে কেন?

এবার সুইচ 'অফ' করো।

এবার বড়ো পেরেকটা কি আর ছোটো পেরেকগুলোকে আকর্ষণ করছে?

সুইচ 'অন' করলে বড়ো পেরেকটা ছোটো পেরেকগুলোকে আকর্ষণ করছে।

আবার অফ করলে তার আকর্ষণ ক্ষমতা চলে যাচ্ছে।

তবে কি তড়িৎ প্রবাহই এই পেরেকটাকে চুম্বকে পরিণত করেছে?

কোনো চৌম্বক পদার্থের (লোহা, নিকেল, কোবাল্ট ইত্যাদি) উপর তার জড়িয়ে ওই তারের মধ্য দিয়ে তড়িৎ পাঠালে ওই চৌম্বক পদার্থ চুম্বকে পরিণত হয়। এধরনের চুম্বককে তড়িৎ চুম্বক বলে। তড়িৎ প্রবাহ বন্ধ করলে তা আর চুম্বক থাকে না।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

হাতেকলমে 8

হাতেকলমে 7-এর বর্তনীর (সার্কিটের) সুইচ 'অন' করো। দেখো সবচেয়ে বেশি কটা ছোটো পেরেককে বড়ো পেরেকটা আকর্ষণ করতে পারছে।

ছোটো পেরেকটার সংখ্যা = ..................টি।

এবার বড়ো পেরেকটার উপর তারের পাক সংখ্যা বাড়িয়ে দাও। সুইচ অন করো।

এবার দেখো বড়ো পেরেক সবচেয়ে বেশি কটা ছোটো পেরেককে আকর্ষণ করতে পারছে?

ছোটো পেরেকটার সংখ্যা = ....................টি।

প্রথমবারের চেয়ে দ্বিতীয়বারের ছোটো পেরেকটা সংখ্যা বাড়ল কেন?

Coil turns 1 Coil turns 2

দ্বিতীয়বারে তড়িৎ চুম্বকের আকর্ষণ ক্ষমতা বাড়ল কেন?

তারের পাক সংখ্যা বাড়লে তড়িৎ চুম্বকের শক্তি বাড়ে।

হাতেকলমে 9

এবার তারের পাক সংখ্যা একই রেখে সেল সংখ্যা বাড়িয়ে পরীক্ষাটা করো। এবার দেখো আগের চেয়ে তড়িৎ চুম্বকটা (বড়ো পেরেক) আরও বেশি সংখ্যা ছোটো পেরেককে আকর্ষণ করছে কী?

তাহলে দেখা গেল সেল সংখ্যা বাড়লে অর্থাৎ তড়িৎ এর পরিমাণ বাড়লে তড়িৎ চুম্বকের শক্তি বাড়ে।

Increasing cell count

জেনে রাখা ভালো

আজকাল তড়িৎ চুম্বকের ব্যবহার খুব বেড়ে গেছে। কয়েকটি উদাহরণ জেনে রাখো।

  • ইলেকট্রিক কলিং বেলে তড়িৎ চুম্বকের ব্যবহার হয়।
  • লাউড স্পিকার তৈরি করতে তড়িৎ চুম্বক ব্যবহৃত হয়।

ভৌত পরিবেশ

  • ইলেকট্রিক ক্রেনে তড়িৎ চুম্বক ব্যবহৃত হয়, তা তুলতে ব্যবহার হয় এক বিশেষ যন্ত্রের। সেই যন্ত্র তৈরিতে তড়িৎ চুম্বক ব্যবহৃত হয়।
  • মোটর তৈরিতে তড়িৎ চুম্বক ব্যবহৃত হয়।
  • টেলিফোনে তড়িৎ চুম্বক ব্যবহৃত হয়।

তড়িৎ প্রবাহের ফলে আলো উৎপন্ন হয়

হাতেকলমে 10

একটা LED (Light Emitting Diode), একটা সেল, কয়েকটি দু-মুখ ছাড়ানো তার ও তোমার তৈরি একটা সুইচ নাও।

(Light Emitting Diode)

নীচের ছবির মতো বর্তনী তৈরি করো।

LED circuit

LED

এমন এক ইলেকট্রনিক বস্তু যা সামান্য তড়িৎতেই আলো দেয়। এতে কোনো ফিলামেন্ট থাকে না। এর ধনাত্মক প্রান্তটা ছোটো। একটা LED ক্ষুদ্র হলেও নষ্ট হয় না। বাজারে নানান রং-এর আলো নিসঃসারণকারী LED কিনতে পাওয়া যায়।

এবার সুইচটা অন করো।

কী দেখতে পেলে?

LED -তে উৎপন্ন এই আলোক শক্তির উৎস কী?

এবার সুইচটা অফ করো।

কী দেখলে?

LED -তে এবার আলো জ্বলল না কেন?

তাহলে দেখা যাচ্ছে LED -এর মধ্যে দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হলে, আলো জ্বলে। তড়িৎ প্রবাহ না থাকলে আলো জ্বলে না।

তাহলে কী তড়িৎ প্রবাহই LED -তে উৎপন্ন আলোর কারণ?

LED -এর মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহ হওয়ার সময় তড়িৎ শক্তি আলোক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়েছে। তাই সুইচ অন করলে LED -এর মধ্যে তড়িৎ প্রবাহ ঘটার ফলে LED জ্বলে ওঠে।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

হাতেকলমে 11

এখন 'হাতেকলমে-10' -এর বদলে দুটো সেল নিয়ে নীচের ছবির মতো করে সার্কিট তৈরি করো। সুইচ 'অন' করো।

'হাতেকলমে-10' -এর চেয়ে এবার LED -এর আলো কি বেশি জোরালো?

ভেবে বলো তো, হাতেকলমে-10 -এর সার্কিটের সঙ্গে এবারের সার্কিটের পার্থক্য কোথায়? তাহলে কি সেলের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য আলোর জোর বেড়েছে? সেলের সংখ্যা বাড়লে সার্কিটের কিসের পরিমাণ বাড়ে?

LED 2 cell circuit

তাহলে, LED -তে আলো জোরালো হওয়ার কারণ হলো ........................। [উপযুক্ত শব্দ বসাও]

তড়িৎ প্রবাহ বাড়লে আলোর জোরও বাড়ে।

তড়িৎ প্রবাহের ফলে তাপ উৎপন্ন হয়

হাতেকলমে 12

একটা নাইক্রোম তার (যে-কোনো ইলেকট্রিকের দোকানে পাওয়া যায়), দু-প্রান্ত ছাড়ানো কয়েকটা প্লাস্টিক তার, দুটো সেল, তোমার তৈরি একটি সুইচ, দুটো পেরেক ও একটা কাঠের ছোটো টুকরো নাও।

এবার ছবির মতো করে সার্কিট তৈরি করো। সুইচ 'অন' করার আগে নাইক্রোম তারটার উষ্ণতা হাত দিয়ে ছুঁয়ে অনুভব করো। এবার, সুইচ 'অন' করো। এ অবস্থায় 10-11 সেকেন্ড রেখে দাও। আবার স্পর্শ করে দেখো। দ্বিতীয়বারে নাইক্রোম তারের উষ্ণতা বেশি হলো কেন?

প্রথম ক্ষেত্রে নাইক্রোম তারের মধ্যে কি কি তড়িৎ চলাচল করেছিল?

দ্বিতীয় ক্ষেত্রে নাইক্রোম তারের মধ্যে কি তড়িৎ চলাচল করেছিল?

তাহলে তড়িৎ চলাচলের জন্যই কি নাইক্রোম তারের উষ্ণতা বেড়ে গিয়েছিল?

Nichrome heat

অতএব জানা গেল পরিবাহীর মধ্যে দিয়ে তড়িৎ চলাচল করলে পরিবাহীতে তাপ উৎপন্ন হয়।

আগের পরীক্ষাতে (হাতেকলমে 11) বাল্বটি কিছুক্ষণ জ্বালার পর হাতে হাত দিয়ে স্পর্শ করলে দেখবে বাল্বটি গরম হয়ে গেছে। এক্ষেত্রেও বাল্বের ফিলামেন্টের মধ্য দিয়ে তড়িৎ চলাচল করার ফলেই এই তাপ উৎপন্ন হয়েছে।

জেনে রাখা ভালো

তড়িৎ প্রবাহের তাপীয় ফলের কয়েকটি প্রয়োগ জেনে রাখো।

  • 1. ইলেকট্রিক ইস্ত্রি: এতে 'নাইক্রোম তার' অংশের উপর জড়ানো থাকে। এর মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হলে নাইক্রোম তার গরম ওঠে।

ভৌত পরিবেশ

2. ইলেকট্রিক বাল্ব: বালবের ফিলামেন্ট তৈরি হয় টাংস্টেন ধাতু দিয়ে। ফিলামেন্টে তড়িৎ চলাচল হলেই তার মধ্যে উৎপন্ন হয় তাপ। এই তাপ শক্তি আলোক শক্তিতে বদলে গেলে উৎপন্ন হয় আলো।

3. ফিউজ তার: যে-কোনো বৈদ্যুতিক সার্কিটের নিরাপত্তার জন্য ফিউজ তার ব্যবহার হয়। এই ফিউজের মধ্যে দিয়েও তড়িৎ ও এই সার্কিটে প্রবেশ করে। ফিউজ তার খুব কম উষ্ণতায় গলে যায়। ফলে কোনো কারণে খুব বেশি পরিমাণ তড়িৎ এসে পড়লে ফিউজ তার খুব উষ্ণও হয়ে ওঠে এবং গলে যায়। ফলে বর্তনী ছিন্ন হয়ে তড়িৎ প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। তাই সার্কিটের কোনো ক্ষতি হয় না। ফিউজ তার আবার পালটে দেওয়া যায়।

Iron

ইস্ত্রি ভেতরে নাইক্রোম তার

Bulb filament

টাংস্টেন ফিলামেন্ট

Fuse

ফিউজ

আলো থেকে তড়িৎ প্রবাহ উৎপাদন

বলতে পারো ক্যালকুলেটর কেন শক্তিতে চলে? আর এই শক্তি ক্যালকুলেটরে কোথা থেকে পায়?

Cell Battery Calculator

এবার ভেবে বলো, এমন ক্যালকুলেটরের কথা, যাকে চালু রাখতে 'সেল' বা 'ব্যাটারি' পাল্টাতে হয় না।

সোলার ক্যালকুলেটর

Solar Calculator

সোলার ক্যালকুলেটর হলো এক বিশেষ ধরনের ইলেকট্রনিক যন্ত্র। এই যন্ত্রও চলে তড়িৎ শক্তি দিয়ে। এই তড়িৎ শক্তির উৎস কিন্তু বাজারে যে সেল বা ব্যাটারি পাওয়া যায় সেটা নয়।

তাহলে ওই তড়িৎ আসে কোথা থেকে?

আসলে, সোলার ক্যালকুলেটরের তড়িৎ যোগান দেয় সোলার প্যানেল। কতগুলো সোলার সেল দিয়ে এই প্যানেল তৈরি হয়। সূর্যের আলো ওই প্যানেলের উপর পড়লে ওই আলোক শক্তি তড়িৎ শক্তিতে বদলে যায়।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

সৌর শক্তিতে চলে এমন আর কোনো উদাহরণ কি তোমার জানা আছে?

সোলার কুকার, সোলার টেবিল ফ্যান, সোলার টিউবলাইট, সোলার স্ট্রিট লাইট ইত্যাদি সবই চলে সৌর শক্তিতে।

Solar panel

সোলার প্যানেলের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা খুব কম। তবুও এখনও যেসব গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি সেখানে সৌরশক্তিই একমাত্র ভরসা।

জীবের শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়ায় তড়িৎ শক্তির প্রভাব

তড়িৎ শক্তি ও জীববিজ্ঞানের সম্পর্কও বেশ গভীর। তোমরা জানো যে ইলেকট্রিকের খোলা তারে হাত দিলে আমাদের দেহের মধ্যে দিয়ে বিদ্যুৎ চলে যায়। আমরা বলি 'শক' পেয়েছে। সমস্ত জীবের দেহের তরলে তড়িৎযুক্ত নানান ধরনের পরমাণু আর পরমাণু জোট থাকে। এইসব তড়িৎযুক্ত কণার উপস্থিতির জন্য জীবদেহের তরল তড়িৎ পরিবাহী হয়।

জেলিফিশ, ইলেকট্রিক ইল (eel) মাছের কথা কী তোমরা শুনেছ? এদের দেহে বিদ্যুৎ উৎপন্ন ব্যবস্থা আছে। এরা খাদ্যও খায় তা ও তড়িৎ তৈরি করতে পারে। এই বিদ্যুৎ শতর্ক হতে দেয় আর দূরে সরিয়ে রাখে।

হৃৎপিণ্ডের পেশিতে তড়িৎ উদ্দীপনা তৈরির জন্য এক বিশেষ ধরনের উপাদান থাকে। এদের তৈরি তড়িৎ উদ্দীপনা হৃৎস্পন্দন তৈরি করে। যা সারা দেহের বিদ্যুৎ তরঙ্গের আকারে ছড়িয়ে পড়ে।

Jellyfish Eel

স্নায়ু মণ্ডলে তড়িৎ: মস্তিষ্কের সমস্ত স্নায়ুকোষ নিয়ে গঠিত। স্নায়ুকোষের মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য তড়িৎ উদ্দীপনার সাহায্যে পরিবাহিত হয়। ফলে পেশির সংকোচন-প্রসারণ সম্ভব হয়। আমরা চলাফেরাও নানা কাজ করতে পারি। জীবনের উদ্দেশ্য সাদা সে।

1930-এর দশকে একজন স্ক্রুয়েড বলে একরকম অমৃদ্যজীবী প্রাণীর স্নায়ুকোষ নিয়ে গবেষণা করছিলেন। পরীক্ষা করতে গিয়ে তারা দেখলেন যে স্নায়ুকোষের ভিতরে ও বাইরে তড়িৎবাহী কণার সংখ্যা ও প্রকৃতিতে পার্থক্য আছে। তড়িৎবাহী কণা পরিমাণও এই পার্থক্য জানার জন্যই

স্নায়ুকোষ বিদ্যুৎ পরিবহন করতে পারে। এত প্রাণীর থাকতে স্ক্রুয়েড কেন? মানুষের স্নায়ুকোষ খুব সরু তাই তা দিয়ে পরীক্ষা করা সম্ভব নয়। স্ক্রুয়েডের স্নায়ুকোষের ব্যাস মানুষের স্নায়ুকোষের ব্যাসের প্রায় 25 গুণ। তাই তা নিয়ে পরীক্ষা করা সহজ।

Squid

ভৌত পরিবেশ

পরিবেশবান্ধব শক্তির ব্যবহার

বিভিন্ন ধরনের শক্তি, তাদের উৎস ও রোজকার জীবনে তাদের ব্যবহার হয়। এই ফিউজের মোটামুটি স্পষ্ট ধারণা এতক্ষণ হয়ে গেছে।

আমাদের জীবনধারণে অনেকটাই বহু প্রচলিত শক্তি-নির্ভর।

Uses of heat energy

তুমি তাপশক্তির আরো কয়েকটি ব্যবহার নীচের ফাঁকা ঘরে লেখো—

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

Uses of electrical energy

তড়িৎ শক্তির অন্য কোনো ব্যবহার তোমার জানা থাকলে উপরের ফাঁকা জায়গায় তা লেখো। নীচে আমাদের পরিচিত জীবাশ্ম জ্বালানির অন্য কোনো ব্যবহার জানা থাকলে ফাঁকা জায়গায় তা লেখো।

Uses of fossil fuels

ভৌত পরিবেশ

এভাবে আরো অনেক উদাহরণ তোমরা নিজেরাই নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে নিতে পারো। এই ধরনের প্রচলিত শক্তি চাহিদা কি বছরের পর বছর একইরকম থাকবে?

মোটেই না। উপরন্তু দিনদিন তার চাহিদা বেড়েই চলেছে। তার একটা কারণ হলো জনসংখ্যা, আর অন্যান্য কারণ হলো নগরায়ন এবং যন্ত্র-নির্ভর সভ্যতা।

জনসংখ্যার সঙ্গে কোন কোন বিষয় সরাসরি যুক্ত?

Population growth

এই প্রতিটি চাহিদা পূরণের জন্যই চাই শক্তি। আর শক্তির প্রধান প্রাকৃতিক উৎস হিসাবে আমরা কী কেড়ে নিয়েছি?

মাটির তলায় থাকা জ্বালানি ভান্ডারকে। যেগুলি সবই জীবাশ্ম জ্বালানি। এই জীবাশ্ম জ্বালানি পুড়িয়ে তৈরি করে বিদ্যুৎ। আমাদের রাজ্যে বা দেশের মধ্যেও মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সিংহভাগ কয়লা পুড়িয়ে উৎপন্ন তাপবিদ্যুৎ।

ভেবে দেখো 100-150 বছর আগে লোকসংখ্যাই বা কত ছিল? তাহলে পরিবেশ, বিদ্যুতের ব্যবহার, যন্ত্রের ব্যবহার কত কম ছিল! আর এখন?

Old village life

পুরোনো দিনের গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রা

Modern city life

বর্তমানে শহরের মানুষের জীবনযাত্রা

কিন্তু মাটির তলার এই প্রাকৃতিক সম্পদ (জীবাশ্ম জ্বালানি), তার যোগান কি অফুরন্ত?

কস্মিনকালে নয়। এই কয়লা বা জ্বালানি তেল তৈরি হতে কত কোটি বছর লেগেছে বলো তো?

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

যতদিন সময় লেগেছে এই সম্পদ তৈরি হতে, তার থেকে কম সময়ে মানুষ খরচ করে ফেলছে তার অধিকাংশ। এভাবেই একদিন শেষ হয়ে যাবে মাটির তলার কয়লা বা খনিজ তেলের ভান্ডার।

Coal formation steps

তাপ, চাপ ও দীর্ঘ সময়

কয়লা তৈরির বিভিন্ন ধাপ

জানো কি, মাটিতে ড্রিল করে প্রথম পেট্রোলিয়াম উৎপাদন শুরু হয় আমেরিকা মহাদেশে, 1859 সালে।

এই জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার যত বাড়ছে, পরিবেশে বেড়েছে তার পিছনে পদার্থগুলোর বহুমুখী ক্ষতিকারক প্রভাবও। এই ধরনের জ্বালানির অতিরিক্ত ব্যবহারে পরিবেশে যে যে ক্ষতিগুলো হতে পারে, তা কয়েকটি নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে লেখো।

তাহলে এর থেকে বাঁচতে গেলে আমরা কী করব? এখন যেসব প্রচলিত শক্তি ব্যবহার করছি, তার ব্যবহার কি কমবে? তাহলে আমাদের নীচেকার কাজগুলো চলবে কীভাবে?

  • বাড়িতে আলো জ্বালাতে হবে, পাখা, টেলিভিশন, ফ্রিজ ইত্যাদি চালাতে হবে।
  • জ্বালানি-নির্ভর পরিবহন ব্যবস্থা চালু রাখতে হবে।
  • যন্ত্রচালিত খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা রাখতে হবে।

বহু ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে যে সেখানে বিভিন্ন শক্তি লাগে। তবে কি কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাবে?

তাহলে এখনকার শিল্পগুলোর কী হবে?

সেজন্য আমাদের অন্য শক্তির উৎস সন্ধান করতে হবে, যেগুলি অপেক্ষাকৃত কম ক্ষতি করবে আমাদের। এগুলিই হলো পরিবেশবান্ধব শক্তি

কী কী হতে পারে এই ধরনের শক্তির উৎস? এসো দেখা যাক।

সৌরশক্তি

আমরা প্রচলিত শক্তির উৎস হিসাবে যে জীবাশ্ম জ্বালানি ও বাপকয়লায় ব্যবহার করছি, তা উৎপন্ন হয় কী থেকে?

তোমরা তো জানো সবুজ উদ্ভিদ নিজের খাদ্য তৈরি করে। এই কাজে তারা কোন প্রাকৃতিক শক্তি কাজে লাগায়? — সৌরশক্তি।

প্রাণীরাও বেশিরভাগই খাদ্যের জন্য উদ্ভিদের ওপরেই নির্ভরশীল। অর্থাৎ প্রাণীরাও পরোক্ষভাবে কোন প্রাকৃতিক শক্তির ওপর নির্ভরশীল? সৌরশক্তি।

এর থেকে কী বোঝা যাচ্ছে?

উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহে কোন শক্তি পরিবর্তিত হয়ে আবদ্ধ থাকছে? সৌরশক্তি।

উদ্ভিদ বা প্রাণীর মৃত্যুর পর তাদের দেহাবশেষ কোটি কোটি বছর মাটির তলার তাপ ও চাপে থাকতে পরিবর্তিত হতে কয়লা বা পেট্রোলিয়াম উৎপন্ন হবে।

ভৌত পরিবেশ

তাহলে কয়লা বা জ্বালানি কেন শক্তি পরিবর্তিত হয়ে আবদ্ধ হচ্ছে? সৌরশক্তি।

আমরা পরোক্ষভাবে এই সৌরশক্তি উপর প্রভাবও নির্ভর না কি সৌরশক্তি উপর নির্ভর করতে পারি না?

এই চিত্রা থেকেই বহু বছর ধরে সোরকোষের। দিনের বেলায় যে সূর্যের আলো পৃথিবীতে অবিরাম এসে পৌঁছায়, তাকে কাজে লাগিয়েই এই সৌরকোষ বিদ্যুৎ তৈরি হয়। এরপর সৌর প্যানেলের সঙ্গে যুক্ত ব্যাটারিতে বিদ্যুৎ সঞ্চয় করা যায়। রাতের বেলা বা কম সূর্যের আলোতেও তা ব্যবহার করা যায়।

নীচের ছবিগুলো লক্ষ্য করো। দেখো তো নানারকম ক্ষেত্রে সৌরশক্তির ব্যবহার করা হয়।

Solar light

সোলার লাইট

Solar cap

সোলার ক্যাপ

Solar cooker

সোলার কুকার

Solar bike

সোলার বাইক

Solar water heater

সোলার ওয়াটার হিটার

Solar signal

সোলার সিগনাল

Solar mobile charger

সোলার মোবাইল চার্জার

বিদেশে দীঘদিন ধরেই ব্যবহার হয়ে আসছে সৌরশক্তি। এখন আমাদের রাজ্যেও বিভিন্ন জায়গাতেও ব্যাপক ভাবে শুরু হয়েছে তার ব্যবহার। তুমি তোমার এরকম ব্যবহার দেখেছ কি? নীচের উলেখ করো:

কোন জায়গায় সৌরশক্তির ব্যবহার হচ্ছে?

কী কাজে ব্যবহার হচ্ছে?

আশা করা যায়, আগামী দিনে সৌরশক্তির আরও ব্যাপক ব্যবহার আমরা দেখতে পাব।

কিন্তু সৌর প্যানেল থেকে আবার পরিবেশের কোনো ক্ষতি হচ্ছে না তো?

অটোবটে না কার্ণ এমনিতেই এইসব প্যানেল 10-15 বছর ঠিক থাকে। এছাড়াও এই প্যানেলের পুনর্বিকরণ করে আবার ব্যবহারযোগ্য করে তোলা যায়। এর সোরকোষ তৈরি করতে শুরুতে কিছু প্রচলিত শক্তি ব্যবহার করতে হয়।

Solar car

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

বায়ুশক্তি

আমাদের পরিচিত আরো একটা পরিবেশবান্ধব শক্তির উৎস প্রায় অব্যবহৃত রয়ে গেছে। তাহলে বায়ু প্রবাহের শক্তি।

বায়ুপ্রবাহের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বড়ো মাপের বিদ্যুৎ শক্তি তৈরি করা সম্ভব।

আমাদের রাজ্যের কন্যাকলিতে গেলে দেখতে পাবে—বড়ো বড়ো বায়ুচক্র (Wind mill) কীভাবে এই কাজে সাহায্য করে।

Windmill

বায়ুপ্রবাহের শক্তি ব্যবহার করলে কী কী সুবিধা হতে পারে আমাদের?

  • 1. বায়ুর কোনো অভাব নেই।
  • 2. একবার বায়ুচক্র বসালে দীর্ঘদিন চলবে।
  • 3. যেসমস্ত জায়গায় দূষর থেকে তার সংযোগ করে বিদ্যুৎ আনা সম্ভব নয়, সেখানে বায়ুশক্তির উপর নির্ভর করা যেতে পারে।

আমাদের রাজ্যের অন্য কোনো জায়গায় অথবা ভিনরাজ্যের কোনো জায়গায় বায়ুচক্র দেখে জায়গাটার নাম লেখো : ..............................................................

জানার চেষ্টা করো বায়ু শক্তি থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ কোন কাজে ব্যবহার হচ্ছে।

জৈবশক্তি

অন্য একটা প্রচলিত কিছু পরিবেশবান্ধব শক্তি-উৎস কী হতে পারে?

জৈব বর্জ্য বা জৈব উৎপাদ (উদ্ভিজ্জ বা প্রাণীজ) পাওয়া জিনিস থেকে উৎপন্ন জৈব গ্যাস।

ধরো, তোমার এলাকার কাছের ছোটো বা বড়ো মাপের পশুশালা আছে। অথবা কুরাণীর পোল্ট্রি আছে। ওগুলোয় মাস ফেলা হলে তা পরিবেশে একটা সমস্যা তৈরি করতে পারে। কীভাবে তা কাজে লাগানো যায়?

এই সমস্ত পশুপাখি-পালন বা বর্জ্য পচে তার থেকে যে গ্যাস উৎপন্ন হয়, তা লাগানো যেতে পারে। কী কী কাজে?

একটু ভেবে, রেখার চেষ্টা করো (প্রয়োজনে শিক্ষক/শিক্ষিকার সাহায্য নাও)।

Biogas plant

এভাবেই পৌরসভার পশুপাখি জৈব বর্জ্য বা কুড়িপানার মতো আবর্জনা কাজে লাগানো যাবে কিনা, তা আলোচনা করো। এগুলো কীভাবে কাজে লাগানো যাবে।

এই কয়েকটি পরিবেশবান্ধব শক্তি ছাড়াও আরো কয়েকটি প্রচলিত শক্তির বিকল্প ব্যবহার পরিবেশগত করছানো

ভৌত পরিবেশ

বিজ্ঞানীরা। সেগুলো কী?

ভূজোয়ার শক্তি, প্রকৃতি ও জীবনের যাপনাপদ ইত্যাদি।

এরপরও প্রকৃতির পরিবেশবান্ধব হতে গেলে আমাদের আরও একটু সতর্ক হতে হবে। কী কী বিষয়ে আমাদের নজর দিতে হবে?

যথাসম্ভব শক্তির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

এখনকার মতো যদি কয়লা বা খনিজ তেলের জ্বালানির ব্যবহার চলতে থাকে, তবে হয়তো আরো 40 থেকে 50 বছর চলতে পারবে অবশিষ্ট জ্বালানি দিয়ে। কিন্তু তারপর কী হবে? তাই শক্তির অপব্যবহার কমাতে হবে।

উপযুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা বা খনিজ তেল থেকে অন্যান্য কম দূষক জ্বালানি তৈরি করা যেতে পারে। এভাবে কয়লা বা খনিজ তেলের প্রাকৃতিক সম্পদ অসংযত ভাবে ব্যবহার কমবে।

অন্য আরো একটা জ্বালানি কী হতে পারে বলো তো? ..............................................................

মাটির তলায় বা পাহাড়ের ফাটলে আবহ জ্বালানি গ্যাসের উৎস থেকে যে গ্যাস আমাদের অজ্ঞাতই নই হয়ে যাচ্ছে, তা কাজে লাগাতে সচেষ্ট হতে হবে।

আমাদের মতো নদীমূলক দেশে গভীর নলকূপের জল সেচের কাজে বা পানীয় জলের হিসেসে ব্যবহার না করে, এই সমস্ত কাজে নদীর জল ব্যবহার করলে মাটির তল থেকে জল তোলার জন্য ব্যবহৃত প্রচলিত শক্তির অনেকটাই বাঁচানো যায়।

যেখানে সুবিধা আছে সেখানে জলপথে পরিবহনের নতুন নৌকা ব্যবহার বাড়ানোর কথা ভেও যেতে পারে। সাইকেলের সস্তা ব্যবহার – যার মধ্যে কোন জ্বালানি লাগে না, এরকম পরিবহনে আরো বেশি ব্যবহার করা যেতে পারে। আমাদের প্রতিবেশী দেশ চিনে সাইকেলের ব্যবহার চোখে পড়ার মতো। তার জন্য রাস্তা সাইকেল ব্যবহার আলাদা পথ নির্দিষ্ট আছে।

আন্দাজমতো অতিরিক্ত পরিমাণ শক্তি ব্যবহার না করে, মানব কল্যাণের ব্যবহার কথা প্রয়োজন।

অপ্রচলিত পরিবেশবান্ধব শক্তি ছাড়াও কয়েকটি প্রচলিত শক্তির বিকল্প ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

সময় ও গতি

গতির ধারণা

নীচের বর্ণনাগুলো থেকে উপযুক্ত উত্তর বেছে নিয়ে সারণিটি পূরণ করো।

  • 1. সরলরৈখিক গতি
  • 2. বৃত্তাকার পথে গতি
  • 3. ঘূর্ণন গতি
  • 4. দোলন ও সরলরৈখিক গতির মিশ্রণ
  • 5. বক্রপথে গতি।
বিভিন্ন ধরনের গতির উদাহরণ কেমনভাবে গতিশীল
(1) ঝুলারির ধার বরাবর পেনসিল দিয়ে সোজা কাগজের সময় পেনসিলের শিষের অগ্রভাগের গতি। সরলরৈখিক গতি
(2) ঘড়ির কাঁটার অগ্রভাগের গতি।
(3) ছাদ থেকে সামনের দিকে ছুঁড়ে দেওয়া পাথরের গতি
(4) নাগরদোলার গতি
(5) এক জায়গায় দাঁড়িয়ে পাক থেকে থাকা লাট্টুর গতি
(6) ঘড়ির পেণ্ডুলামের গতি
(7) সোজা রাস্তা বরাবর চলন্ত গাড়ির গতি
(8) সরলরেখা বরাবর চলন্ত সাইকেলের চাকার গতি
(9) ফুটবলার গতি
(10) পেণ্ডুতিক পাথরের গতি

পাশে যে পাতার চিত্রটি আছে একটি পিঁপড়ে তার ধার বরাবর A থেকে B -তে যাচ্ছে। খাতায় তার গতিপথের চিত্র অঙ্কন করো।

Ant path on leaf

পিঁপড়ে যদি পাতার কিনারা ধরে না গিয়ে পাতার শিরা বরাবর A থেকে B -তে যেত তাহলে তার গতিপথের চিত্র কেমন হতো তা খাতায় আঁকো।

তোমার আঁকা চিত্র থেকে নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর খোঁজঃ

প্রথমে A থেকে B -তে যাওয়ার সময় পিঁপড়ের গতিপথের অভিমুখ কি সবসময় একই দিকে ছিল?

দ্বিতীয়বার তার গতির অভিমুখ কি সবসময় একই দিকে ছিল?

এইরকম আরও কয়েকটি উদাহরণ ভাবার চেষ্টা করো যেখানে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় গতিপথ পাওয়া যায়। প্রত্যেকটি উদাহরণের কথা খাতায় লেখো ও তার গতিপথের চিত্র আঁকবার চেষ্টা করো।

সময় ও গতি

আলোর পিনপ্লেয়ার পিঁপড়েটা প্রথমে যে পথে পাতার কিনারা বরাবর A থেকে B -তে পৌঁছাল তার সময় দেখা হলো পিঁপড়েটার প্রকৃত অতিক্রান্ত দূরত্ব। এক্ষেত্রে পিঁপড়েটি যদিও AB সরলরেখা ধরে যায়নি, তবু AB সরলরেখার দৈর্ঘ্য এই যাত্রায় একটি সঠিকতার ধারণা দেয়। A থেকে B এর দিকে AB সরলরেখার এই মাপকে বরণ বলে। এক্ষেত্রে অতিক্রান্ত দূরত্ব ও বরণের মাপ আলাদা।

দ্বিতীয় ক্ষেত্রে A থেকে নির্দিষ্ট দিকে মুখ করে সরাসরি B -তে যাওয়ার যে পথ, তার দৈর্ঘ্য এবং ওই নির্দিষ্ট দিক এক্ষেত্রে উল্লেখ করলে তাকে দলা বলা হয়। এক্ষেত্রে অতিক্রান্ত দূরত্ব আর বরণের মাপ একই, কারণ পিঁপড়েটি সত্যি সত্যি AB সরলরেখা ধরেই গিয়েছিল।

অতএব দেখলে যে, কোনো গতির সময় আসল যাত্রাপথের দৈর্ঘ্য এবং সরলরেখ দৈর্ঘ্য আলাদা হতে পারে বা একই হতে পারে। এই দুয়ের মধ্যে সরল সরলরেখা বরাবর ওই একটি নির্দিষ্ট দিক উল্লেখ করে গঠিত বরণ দেওয়া যায়। যেমন A থেকে B -তে যাবার সময় যাত্রাপথ যখন পাতার ধার বরাবর, তখন পিঁপড়েটি আঁকাবাঁকা রাস্তা ধরে যাচ্ছে, ফলে এক এক সময় এক এক দিকে যাওয়ার প্রবণতা থাকছে। ফলে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সরলরেখাংশ একে সরল বুঝতে হচ্ছে। যেমন A থেকে P -তে বাঁকা পথে যাবার সময় AP সরলরেখাংশ একে সরল বুঝতে হবে। P থেকে Q -তে বাঁকা পথে যাবার সময় PQ সরলরেখাংশ একে সরল বুঝতে হবে।

Ant path 2

ফাঁকে, A থেকে যাত্রা শুরুর সময় পিঁপড়েটির যাবার প্রবণতা P -এর দিকে, আবার P বিন্দু দিয়ে যাবার সময় যাবার প্রবণতা Q -এর দিকে ....... ইত্যাদি। অনুভব, আঁকাবাঁকা যাত্রাপথে, চলার দিক ঠিক কোনটি তা হয়তো ওই মুহুর্তে বলা যায়, কিন্তু যে অবধি দিক কোন দিকে যাওয়া হলো তা যাত্রাপথে খেজ কিছুটি না জানালে বলা যায় না। সেয় বিন্দুটি জানা হয়ে গেলে তখন বলা যায় যে, A থেকে B -এর দিকে যাওয়া হয়েছে। বোঝা গেল তো, সরল জানা থাকলে তবেই তার অভিমুখ বলা যায়, অন্যথায় না।

ছবিতে যেমন দাগ দেওয়া আছে সেইরকমভাবে A থেকে B -তে যাওয়া হলে সরল AB এর তা A থেকে B -এর দিকে, তেমনি A থেকে P -তে যাওয়া হলে সরল AP এবং তা A থেকে P -এর দিকে।

এইভাবে P থেকে Q -তে যাবার সময়, সরল PQ এর তা P থেকে Q -এর দিকে ইত্যাদি।

তাহলে, কোনো একটি বস্তু যদি একটি বিন্দু M থেকে অন্য একটি বিন্দু N পর্যন্ত আঁকাবাঁকা পথে যাত্রা করে। আমরা বস্তুটির যাত্রাপথের সূচকের দৈর্ঘ্যের হিসাব করতে পারি। একটি হলো আঁকাবাঁকা পথটির মোট দৈর্ঘ্য, আর অন্যটি হলো MN সরলরেখাংশের দৈর্ঘ্য, যদিও বস্তুটি MN সরলরেখা ধরে সত্যি সত্যি যাত্রা করেনি। এই MN সরলরেখাংশের দৈর্ঘ্য হলো বস্তুর বরণের মাপ।

Distance displacement

দূরত্ব, বেগ, ত্বরণ

যে-কোনো দূরত্ব অতিক্রম করতে একটি সময় লাগে। যদি ধরে সেই সময় মাপাও যায়। কিন্তু এখন প্রশ্ন, দূরত্ব

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

Ant path 3

বলতে আমরা কি বুঝব? A থেকে P -তে যাবার সময় পাতার ধার ধরে গেলে বাঁকা রাস্তার পরিমাপ, না কি, A থেকে P পর্যন্ত সরলরেখাংশ এবং ওই সরলরেখা বরাবর অতিক্রান্ত দূরত্বের পরিমাপ? এইভাবেই A থেকে B-তে যাওয়ার সময় পাতার ধার বরাবর আঁকাবাঁকা পথটির পরিমাপ, না কি AB সরণরেখার পরিমাপ? — আমরা যদি বস্তুর পথটির প্রকৃত দৈর্ঘ্য মাপছি তাহলে সেই দূরতকে আমরা বলি প্রকৃত অতিক্রান্ত দূরত্ব এবং যদি সরলরেখাংশ বরাবর দৈর্ঘ্য মাপছি তাকে বলি সরণ। এবার যদি সরণের সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃত অতিক্রান্ত দূরত্ব কীভাবে বদলাচ্ছে হিসাব করতে চাই, তবে কী করতে পারি – সময়ের সঙ্গে প্রকৃত অতিক্রান্ত দূরত্ব কীভাবে বদলাচ্ছে এবং সরণ কীভাবে বদলাচ্ছে ছুটি হিসাব কিন্তু এক না-ও হতে পারে।

একটি উদাহরণ

যাত্রাপথের মাপ প্রকৃত দূরত্ব (সেমি) সরণ (সেমি) যেতে সময় লেগেছে
A থেকে P = 5AP = 25 সেকেন্ড
A থেকে Q = 10AQ = 310 সেকেন্ড
A থেকে R = 15AR = 415 সেকেন্ড

এখন যদি কেউ জানতে চায় যে প্রতি সেকেন্ডে পিঁপড়েটা কতটা দূরত্ব অতিক্রম করেছে, তাহলে সুনির্দিষ্ট উত্তর হতে পারে – অতিক্রান্ত দূরত্বকে প্রকৃত দূরত্ব, আর সরণকে তার সরলরেখা মাপলে তার উত্তর আলাদা হবে, যদিও একই পিঁপড়ের একই গতি নিয়ে হিসাব হচ্ছে।

5 সেকেন্ডে পিঁপড়ের প্রকৃত অতিক্রান্ত দূরত্ব 5 সেমি

অতএব 1 সেকেন্ডে পিঁপড়েটির প্রকৃত অতিক্রান্ত দূরত্ব = $\frac{5 \text{ সেমি}}{5 \text{ সেকেন্ড}} = 1 \text{ সেমি}$

একই সঙ্গে বলা যায়, 5 সেকেন্ডে পিঁপড়ের সরণ 2 সেমি

অতএব 1 সেকেন্ডে পিঁপড়েটির সরণ = $\frac{2 \text{ সেমি}}{5 \text{ সেকেন্ড}} = 0.4 \text{ সেমি}$

প্রথম হিসেবটিকে বল গতি এবং দ্বিতীয়টি হলো গতিবেগ। 'গতি' বলার কারণ এই যে, আমরা কোনো নির্দিষ্ট মুহূর্তে এই হিসেবকে করছি না। সময়ের একটি ব্যবধানে এই হিসেবকে করছি। এই 5 সেকেন্ডের মধ্যে পিঁপড়েটি 1 সেকেন্ডে পিঁপড়েটি কি সমান দূরত্ব গেছে? না কি প্রথম 1 সেকেন্ডে যতটা গেছে, পরের 1 সেকেন্ডে তার চাইতে বেশি গেছে, তারপর 1 সেকেন্ডে একটি কম গেছে ....... রকম বিভিন্ন। 1 সেকেন্ডে আলাদা আলাদা দূরত্ব গেছে? আমরা যে হিসেবে উপরপ কক্ষ থেকে কিছু হিসাব তো কিছু বেরিয়েছে- প্রতি 1 সেকেন্ডে সরণ হয়েছে 0.4 সেমি এবং সেই ওই 5 সেকেন্ডের চেষ্ঠাবর সব। 1 সেকেন্ডের জন্য একই। প্রকৃত দূরত্বের বেলাতেও তাই। প্রতি 1 সেকেন্ডে 1 সেমি করে। এই যে আমরা একটা সার্বিক হিসেব পেলাম, ভেতরের আসল ঘটনাটি জানতে পারলাম না, সেগুলো এই হিসেব গুলো ঠিক।

সময় ও গতি

কোনো গতিশীল বস্তু এক সেকেন্ডে কতটা দূরত্ব অতিক্রম করল (তা সে প্রকৃত অতিক্রান্ত দূরত্বই হোক বা সরণই হোক) তা থেকে বস্তুটি কত দ্রুত চলছে তার হিসাব পাওয়া যায়।

ট্রেন বা বাসে চড়ার সময় তুমি নিশ্চয়ই খেয়াল করেছ যে, যখন চলে হবার পর ট্রেন বা বাসের গতি ক্রমশ বাড়তে থাকে অর্থাৎ, বেগ বেশি জোর চলতে থাকে। ওই সময় ট্রেন বা বাসের বেগ আগে যা ছিল পরে তার চাইতে বেশি হয়। ঠিক তেমনি যখন স্টেশনে বা বাস স্টপে থামার দরকার হয় তখন গাড়ির গতি ক্রমশ কমতে থাকে। এক সেকেন্ডে আগে যতটা দূরত্ব অতিক্রম করছিল পরে তার চাইতে কম দূরত্ব অতিক্রম করে। অর্থাৎ আগে যা বেগ ছিল পরে সেই বেগ কমে যায়।

বেগ বাড়তে অথবা কমতে থাকার সময় এক সেকেন্ডে বেগ কতটা বাড়ল বা কতটা কমল তার পরিমাণকে বলে ত্বরণ (Acceleration)। তুমি একটা সাইকেলে চড়ে এক সেকেন্ডে 5 মিটার বেগ চলছিলে। হঠাৎ আকাশে মেঘ দেখে তুমি বুঝাতে পারলে বৃষ্টি আসছে। বৃষ্টি নামার আগে বাড়াতে পৌছাতে হলে বেগ বাড়াতে হবে। অবশেষে বেগ বাড়িয়ে 1 সেকেন্ডে 8 মিটার করলে। এই বেগ বাড়াতে সময় লাগল 3 সেকেন্ড।

তাহলে, প্রথমে তোমার বেগ ছিল প্রতি সেকেন্ডে 5 মিটার অর্থাৎ, 5 মি/সেকেন্ড

3 সেকেন্ড পর তোমার বেগ হলো প্রতি সেকেন্ডে 8 মিটার অর্থাৎ 8 মি/সেকেন্ড।

3 সেকেন্ডে বেগের পরিবর্তন = (পরের বেগ) – (আগের বেগ) = (8 মি/সেকেন্ড) - (5 মি/সেকেন্ড) = 3 মি/সেকেন্ড

অতএব, 1 সেকেন্ডে বেগের পরিবর্তন = $\frac{3 \text{ মি/সেকেন্ড}}{3} = 1 \text{ মি/সেকেন্ড}$

∴ এক্ষেত্রে তোমার ত্বরণ = 1 মি/সেকেন্ড2

যখন তুমি বাড়ির অনেকটা কাছাকাছি পৌঁছে গেলে তখন সাইকেলের ব্রেক কষে সাইকেলের বেগ কমতে থাকল। এইভাবে 2 সেকেন্ড পর সাইকেল নিয়ে তুমি বাড়ির কাছে এসে দাঁড়িয়ে পড়লে।

অর্থাৎ এখন তোমার সাইকেলের বেগ হলো শূন্য (zero)।

এক্ষেত্রে প্রথমে তোমার বেগ ছিল 8 মি/সেকেন্ড।

2 সেকেন্ড পর তোমার বেগ হলো 0 মি/সেকেন্ড।

2 সেকেন্ডে বেগের পরিবর্তন = (পরের বেগ) – (আগের বেগ)

= 0 মি/সেকেন্ড – 8 মি/সেকেন্ড

= -8 মি/সেকেন্ড

অতএব, 1 সেকেন্ডে বেগের পরিবর্তন = $\frac{-8 \text{ মি/সেকেন্ড}}{2}$

= -4 মি/সেকেন্ড

∴ এক্ষেত্রে বেগের পরিবর্তন হার = -4 মি/সেকেন্ড2

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

এক্ষেত্রে ত্বরণ ঋণাত্মক। একে ঋণাত্মক ত্বরণ বা মন্দন (Retardation) বলে।

এই যে আমরা ত্বরণ হিসাব করলাম, এটা কিন্তু গড় হিসাব। একটি সময়ের ব্যবধানে করা সামগ্রিক হিসাব, নির্দিষ্ট কোনো মুহূর্তের হিসাব নয়।

বলের ধারণা ও নিউটনের গতিসূত্রের ধারণা, বলের পরিমাপ

একটি রাবারর বলেকে সমান মেঝের উপর দিয়ে গড়িয়ে দাও। এবার ফিতে বা স্কেল দিয়ে মেপে দেখব বলটা কতদূর গেল।

এখন ঘাস আছে এমন মাঠের উপর দিয়ে ওই বলটাকে একই জোরে গড়িয়ে দাও। এবারও মেপে দেখো বলটা কতদূর গেল।

Ball 1 Ball 2
Ball 3 Ball 4

মেঝের উপর দিয়ে বলটা যতদূর গেল, ঘাসের উপর দিয়ে ততটা যেতে পারল না কেন?

বলটা (Ball) দুই ক্ষেত্রেই একই সময় থেমে গিয়েছিল। তাহলে কি বলটা গড়ার সময় বাধা পেয়েছিল? বলটা চলতে বাধা পেয়েছিল বলাই কি প্রেমে গেল?

কোন ক্ষেত্রে বলটা (Ball) বেশি বাধা পেয়েছিল?

ভেবে বলো তো বল (Ball) যদি কোনো বাধা না পেত তবে কী হতো?

সময় ও গতি

হাতেকলমে 1

টেবিলের উপর একটা বাঁধানো বই রাখো।

এবার বইটাকে বাঁ হাত দিয়ে পাশ থেকে ডানদিকে ঠেলো।

বইটা কোন দিকে সরে গেল?

এবার একইরকমভাবে বইটাকে ডান হাত দিয়ে উল্টোদিকে ঠেলো।

এবার বইটা কোন দিকে সরল?

Force application 1 Force application 2

এবার, দু-হাত দিয়ে বইটার দু-পাশ থেকে পরস্পর উল্টো দিকে ঠেলো। এমনভাবে ঠেলো যাতে বইটা দিশে সরা না যায়।

ভেবে দেখো বইটা কোনদিকে না সরে যাওয়ার কারণ কী?

যদি ছোটো একদিনের বল, অন্য দিকে ঠেলার চেয়ে বেশি জোরালো হতো, তবে কী হতো? এররকম ঠেলা বা ধাক্কা-কে আমরা বলি বল (force)।

Force application 3

তাহলে দেখা গেল, কোনো বস্তুর উপর পরস্পর বিপরীত দিক থেকে সমানতার বল (force) প্রয়োগ করলে, বস্তুটার উপর 'সার্বিক বল' শূন্য হয়ে যায়।

রসুনার পাতার টেবিলকে পাতে বসিয়ে এবং বিজ্ঞান বইটা ও যদি কোনোদিন না সরায় এবং অন্য কেউও যদি তা না করে তবে ওর বিজ্ঞান বইটা ঠিকভাবে ও এই অবস্থায় থাকবে?

ভেবে দেখো, রসুনার প্রশ্নের জবাব দিতে পারো কিনা।

টেবিলের উপরে রাখা তোমার বিজ্ঞান বইটা তুমি সরাতে চাইলে তোমাকে কী করতে হবে?

বল প্রয়োগে বস্তুর গতি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ইংরেজ বিজ্ঞানী স্যার আইজ্যাক নিউটন তিনটি সূত্র বানিয়েছিলেন। চলো ওই সূত্রগুলো নিয়ে আলোচনা করি।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

স্যার আইজ্যাক নিউটন

1642 খ্রিস্টাব্দে 25 ডিসেম্বর ইংল্যান্ডের উলস্হর্প গ্রামে বহুবি পরিভাষা জনম। 1665 খ্রিস্টাব্দে মাত্র 22 বছর বয়সে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পদে যোগদান করেন।

তাঁর গতিসূত্র, মহাকর্ষসূত্র, সূর্যরশ্মির বর্ণালী, আলোর কলিকাতত্ত্ব, দ্বিপদ উপপাদ্য, ক্যালকুলাস বিজ্ঞান ও গণিতে জগতে নতুন দিগন্ত খুলে দেন। তিনি 1672 খ্রিস্টাব্দে থেকে টানা 25 বছর রয়াল সোসাইটির সভাপতি পদ অলংকৃত করেন। 1727 খ্রিস্টাব্দে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর লেখা বিশ্বখ্যাত গ্রন্থ 'প্রিন্সিপিয়া'।

Isaac Newton

নিউটনের প্রথম গতিসূত্রের ধারণা :

কোনো বস্তুর ওপর যদি বাইরে থেকে বল প্রয়োগ না করা হয়, তাহলে—

  • (i) স্থির বস্তু চিরকাল স্থিরই থেকে যাবে,
  • (ii) আর গতিশীল বস্তু আগে থেকেই যে দিকে যে বেগে চলছিল সেদিকে সেই বেগে চিরকাল চলতে থাকবে।

তাহলে দেখা গেল যে,

বাইরে থেকে বল প্রয়োগ না করা হলে, কোনো স্থির বস্তু হয় চিরকাল স্থির, বা সমবেগে সরলরেখা বরাবর গতিশীল কোনো বস্তু চিরকালও একই গতিতে সরলরেখা ধরে চলতে থাকে। স্থির থাকা বা একই বেগে চলতে থাকার এই ধর্মকে বস্তুর জড়তা। স্থির থাকার ধর্মকে স্থিতিজড়তা। আর সমবেগে গতিশীল থাকার ধর্মকে গতিজড়তা বলা হয়। এ জড়তাকে যে প্রয়োগ করলে এই অবস্থা থেকে সরলতা দেওয়া যায় তাকে বল

আমাদের প্রতিদিনের জীবনে জড়তা

  • (1) স্থির বাস হঠাৎ চলতে আরম্ভ করলে কোনো কিছু না দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রী পিছন দিকে হেলে পড়ে না কোনো কিছু স্থির থাকা যাত্রীরেরও ওই একরকম অনুভূতি হয়। যে মেঘা বাসে যাত্রীও থেমে থাকে। আর সব কিছু যখন স্থির তখন স্থির অবস্থায় রয়েছে। বাস হঠাৎ চলতে শুরু করল, ফলে বাসের স্থির অবস্থা পালটে গেল। বাসের সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীরের পা চলতে শুরু করল কিন্তু শরীর বা বাসের মেকের সংস্পর্শে আছে। কিন্তু যাত্রীরের বাকি শরীর স্থির থাকতে তাই। অতএব পায়ের সঙ্গে সঙ্গে এগোলো না। যাত্রীরা তাই পিছনের দিকে হেলে পড়ল।
Inertia example

সময় ও গতি

  • (2) তোমরা নিশ্চয়ই লক্ষ করেছ কাক (বা অন্য কোনো পাখি) উড়তে উড়তে ডানা ঝাপটানো বন্ধ করে দিয়েও দিব্যি ডানা মেলে বাতাসে ভাসতে ভাসতে অনেকটা এগিয়ে যায়—

ডানা ঝাপটানো বন্ধ করেছে কাকটা কি করে উড়তে উড়তে ততটা এগিয়ে গেল বলো তো?

Flying crow

পাখিটা যখন উড়ছে তখন সে গতিশীল, ফলে পাখি উড়তে উড়তে ডানা ঝাপটানো বন্ধ করে দিলেও তার গতি শরীরের গতিজড়তার জন্য এখনও সমবেগে বজায় রাখতে চেষ্টা করে, ফলে পাখিটা শুধু ডানা (না ঝাপটিয়েও) অনেকটা দূর এগিয়ে যেতে পারে।

হাতেকলমে 2

তোমার টেবিলের ফাঁকা ড্রয়ারটির বেশিরভাগ অংশটা খোলো। এবার একটা পেন্সিল পামের ছাবির মতো করে রাখো।

Drawer experiment

পেন্সিলটাকে দেখা যায় এমনভাবে রেখে ড্রয়ারটা একটু জোরে বন্ধ করো।

কী দেখতে পেলে?

বন্ধ করার সময় পেন্সিলটা কোন দিকে গড়াচ্ছে?

খোলার সময় পেন্সিলটা কোন দিকে গড়াচ্ছে?

কেন এমন হলো?

হাতেকলমে 3

একটি খাতার পাতা যত বড়ো হয় তত বড়ো কাগজ নাও। ছবির মতো করে কাগজটা টেবিলের উপর রাখো। এবার ওই কাগজের উপরে তোমার পেন্সিলটা রাখো। এখন ওই কাগজের একটা প্রান্ত ধরে কাগজটাকে এক ঝটকা এমনভাবে টানতো যাতে পেন্সিল বাটিটা যেখানে ছিল সেখানেই থাকে এবং নড়চড় না যায়।

Pencil paper 1 Pencil paper 2

ভেবে বলো তো এরকম হলো কেন? নিউটনের প্রথম সূত্রে তোমরা জড়তা ধর্মের কথা জেনেছ। ওই সূত্র ব্যবহার করে এই ঘটনা কেন ঘটল বলতে পারো কি?

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

ভালোভাবে চিন্তা করে দেখো তো নীচের ঘটনাগুলোতে জড়তা (গতিজড়তা বা স্থিতিজড়তা) খুঁজে পাও কিনা?

বিষয়গুলো নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করো।

  • কূলো দিয়ে চাল ঝাড়া (চাল থেকে ধুলো সরান হয়)।
Auto-rickshaw Bicycle Shaking coat

চলন্ত অটোরিক্সা হঠাৎ ব্রেক কষে থেমে গেলে, যাত্রীরা সামনের দিকে (অটোরিক্সার গতির দিক) থেকে পড়ে।

সাইকেল চালাতে চালাতে পা চালানো থামিয়ে দিলেও সাইকেল সজোরে থেমে যায় না, না কি চালিয়েও বেশ খানিকটা এগিয়ে যায়।

কোটের ধুলো ঝাড়তে কোটকে ঝাড়া দেওয়া হয়।

সুলিমাশা কোটের উপর লাঠি দিয়ে আঘাত করলে (খুব জোরে নয়) ধুলো কোট থেকে আলাদা হয়ে পড়ে।

  • স্পোর্টসের মাঠে লং জাম্প দেওয়ার সময়, প্রতিযোগী অনেকটা দূর দৌড়ে আসে।

দেয়ালের গায়ে ডাস্টার ঝাড়া হয়।

নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্রের ধারণা :

নিউটনের প্রথম গতিসূত্র থেকে আমরা জেনেছি, বাইরে থেকে 'বল' প্রয়োগ করা হলে একটি বস্তুর বেগ বদলাবে।

নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্র অনুসরণ করে বলা যায়, (i) একটি নির্দিষ্ট ভরের বস্তুর ওপর প্রয়োগ করা বল যত বাড়ানো হবে, 1 সেকেন্ডে বস্তুটার বেগের পরিবর্তন (অর্থাৎ ত্বরণ) তত বাড়বে। প্রযুক্ত বলের পরিমাণ দ্বিগুণ হলে, উৎপন্ন ত্বরণও দ্বিগুণ হবে। অর্থাৎ বলত্বরণ-এর মধ্যে সরল সম্পর্ক রয়েছে।

(ii) বল প্রয়োগের অভিমুখ যে দিকে, উৎপন্ন ত্বরণের অভিমুখ সেই দিকে। অর্থাৎ প্রযুক্ত বলের দিকেই বস্তুর বেগ বৃদ্ধি পায়।

নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্র অনুসরণ করে প্রযুক্ত বলের মান নির্ধারণের সমীকরণ :

প্রযুক্ত বল = বস্তুর ভর × এক সেকেন্ডে বস্তুর বেগের পরিবর্তন

= বস্তুর ভর × বস্তুতে উৎপন্ন ত্বরণ (যেহেতু, 1 সেকেন্ডে বেগের পরিবর্তন = ত্বরণ)

F=ma [F-বল, m-ভর, a- ত্বরণ]

SI পদ্ধতিতে বলের (Force) একক 1 নিউটন। 1 নিউটন = 1kg $\times$ 1 মিটার/সেকেন্ড2

নিউটনের তৃতীয় গতিসূত্রের ধারণা :

রেশমা দিদিমণির সঙ্গে গিয়েছিল কলকাতায়। বাড়িতে ফেরার পথে রেশমা যখন সোরবার ছাদে দিয়ে নৌকা থেকে নামল তখন রেশমা অবাক হয়ে গেল – 'কী আশ্চর্য, নৌকাটা জলে পিছিয়ে যাচ্ছে কেন?'

দিদিমণি বললেন, ভালো করে ভেবে দেখো, নৌকাটা তো আর এমনি এমনি সরে যায়নি।

Boat Reshma

রেশমা বলল, নিশ্চয়ই কেউ না কেউ নৌকাটাকে পিছনদিকে ঠেলে দিয়েছে। তবে কে ঠেলল? আমিই তো সব শেষে নামলাম।

তবে তুমিই বল প্রয়োগ করেছ। কারণ তুমি আর নৌকা ছাদা সেখানে জুটিয়ু কেউ ছিল না।

আমি তো লাফ দিয়ে নেমেছিলাম! ও! বুঝতে পেরেছি আমি লাফ দিয়ে নামার সময় নৌকাটাকে তো পিছনদিকে ঠেলেছিলাম।

ঠিক ধরেছ, ওই ঠেলাটা নৌকাটাকে পিছনদিকে সরিয়ে দিয়েছে।

তাহলে আমি কীভাবে সামনে দিকে নামতে পারলাম? আমাকে তো কেউ সামনে দিকে ঠেলে দেয়নি!

দিদিমণি হেসে বললেন, তোমার প্রশ্নেই তোমার উত্তর লুকিয়ে আছে।

আমার প্রশ্নে কী উত্তর লুকিয়ে আছে দিদি, আর একটু পরিষ্কার করে বলবেন।

তারে মাকে তোমাকে ঠেলেছে।

আমার পিছন নৌকা ছাড়া আর তো কেউ ছিল না। তাহলে কি নৌকাটাই আমাকে ঠেলল।

একদম ঠিক। ওই নৌকা, তোমার দেওয়া বলের ঠিক উল্টো দিকে, সমান জোরে, তোমার পায়ে বলপ্রয়োগ করেছে। আর ওই বল তোমাকে সামনের দিকে ঠেলে দিয়েছে।

ভারি মজার ব্যাপার তো। তাহলে আমি যেখানে বল প্রয়োগ করি না কেন, সেও আমায় সমান জোরে আমার দেওয়া বলের উল্টোদিকে বল প্রয়োগ করবে?

স্যার আইজ্যাক নিউটন তার তৃতীয় গতিসূত্রে সে কথাই তো বলেছেন।

কী রকম?

নিউটন বলেছেন – 'প্রত্যেক ক্রিয়ারই সমান ও বিপরীতমুখী একটা প্রতিক্রিয়া বল আছে'

তাহলে দিদি আমার আর নৌকার মধ্যে কোনটা 'ক্রিয়া' আর কোনটা 'প্রতিক্রিয়া'?

আসলে ক্রিয়া আর প্রতিক্রিয়া এভাবে আলাদা করে চিহ্নিত করা যায় না। কারণ 'ক্রিয়া' আর 'প্রতিক্রিয়া'

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

সবসময় একসঙ্গেই ঘটে। একটা আগে আর একটা পরে, এভাবে নয়। তাই যে-কোনো একটা 'ক্রিয়া', অন্যটা হবে তার 'প্রতিক্রিয়া'।

তাহলে দিদি এই 'ক্রিয়া' আর 'প্রতিক্রিয়া' আলাদা আলাদা বস্তুর উপর কাজ করে, তাই না।

ঠিক ধরেছ, তোমার বল প্রয়োগ হয়েছে নৌকার ওপর, আর নৌকার বল প্রয়োগ হয়েছে তোমার পায়ের উপর।

নীচের ঘটনাগুলোতে নিউটনের তৃতীয় সূত্র কীভাবে কাজ করছে বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করে বোঝার চেষ্টা করো।

  • 1. আমরা যখন হাঁটি
  • 2. জলে মাছ সাঁতার কাটে।

শক্তি ও কার্য

তুমি অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকলে, তোমার কাজ করার সামর্থ্য কমে যায়।

এরপর যখন তুমি খাবার খাও তখন আবার কাজ করার 'সামর্থ্য' ফিরে পাও কি?

খাবার থেকে আমরা নিশ্চয়ই এমন কিছু পাই যা আমাদের 'কাজ করার সামর্থ্য' জোগায়। খাবার থেকে আমরা পাই শক্তি। কাজ করার সামর্থ্য হলো শক্তি

  • 1) মোটামটি ভারী 10টা বই আর 10টা খাতা জোগাড় করো। তোমার স্কুলের ব্যাগের মধ্যে 10টা বই আর 10টা খাতা ভরো। এবার ব্যাগটা মেঝে থেকে চেয়ারের উপর তোলো। তারপর ব্যাগটা মেঝে থেকে আলমারীর উপর তোলো।
Energy example 1

এখন বলো (I) পৃথিবীর টানের (মানে ব্যাগের ওজনের) উল্টোদিকে ব্যাগটাকে ওঠাতে তুমি শিক্ষকের কাছ থেকে কী তোমাকে সমান 'বল' প্রয়োগ করতে হয়েছে?

  • (II) কোন ক্ষেত্রে তোমাকে বেশি 'পরিশ্রম' করতে হয়েছে?
  • 2) তুমি তোমার ওই স্কুল ব্যাগে আবার 10টা বই 10টা খাতা নাও। এবার ব্যাগটা মেঝে থেকে টেবিলে তোলো। এবার ব্যাগ থেকে 10টা খাতা ও 5টা বই নামিয়ে রাখো। তারপর আবার মেঝে থেকে ব্যাগটা টেবিলে তোলো।
Energy example 2

এখন বলো (I) ব্যাগের ওজনের উল্টোদিকে কোন ক্ষেত্রে তোমাকে বেশি 'বল' প্রয়োগ করতে হয়েছে?

সময় ও গতি

(II) কোন ক্ষেত্রে তোমাকে বেশি 'পরিশ্রম' করতে হলো?

1 নং পরীক্ষায় দেখা গেল একই ওজনের বস্তুকে যত বেশি উষ্ণতাতে তোলা যায় তত বেশি পরিশ্রম করতে হয়। যদিও দুই ক্ষেত্রেই সমান বল প্রয়োগ করতে হয়েছে।

Lifting books 1 Lifting books 2

2 নং পরীক্ষা থেকে দেখা গেল বিভিন্ন ওজনের বস্তুকে একই উচ্চতায় তোলার সময় যে বস্তু বেশি ভারী তার জন্য তো বেশি বল লাগে ও পরিশ্রমও বেশি করতে হয়।

1 ও 2 নং পরীক্ষা দুটির অভিজ্ঞতা থেকে তুমি নিশ্চয়ই বুঝেছ যে সাধারণত যে কাজে 'পরিশ্রম বেশি' সে কাজের জন্য শক্তিও বেশি খরচ করতে হয়।

Lifting books 3

যেখানে 'শক্তি বেশি' খরচ হয়েছে তা সেখানে কাজের পরিমাণও বেশি হয়।

তাহলে দেখা গেল যে ক্ষেত্রে বেশি উষ্ণতাতে বস্তুকে তোলা হচ্ছে, সে ক্ষেত্রে কাজের পরিমাণও বেশি হচ্ছে (1 নং পরীক্ষা)।

আবার যেখানে 'বেশি বল' প্রয়োগ করা হচ্ছে, সেখানেও 'কাজের পরিমাণ' হচ্ছে (পরীক্ষা নং 2)

তাহলে ভেবে দেখাতো কাজের পরিমাণ কোন কোন বিষয়ের উপর নির্ভর করে?

পদার্থবিজ্ঞানে কাজের পরিমাণ নির্ণয় করার জন্য নীচের সম্পর্কটি ব্যবহার করা হয় –

কাজের পরিমাণ = (প্রযুক্ত বল) $\times$ (প্রযুক্ত বলের প্রভাবে বস্তুর সরণের পরিমাণ)

W = F $\times$ d

W = কাজ

F = বল

d = সরণ

SI পদ্ধতিতে কাজ মাপার একক

এক নিউটন বল প্রয়োগ করে যদি একটি বস্তুকে বল প্রয়োগের দিকে এক মিটার সরানো হয় তবে এক জুল পরিমাণ কাজ করা হয়। এক জুল হলো কাজের পরিমাপের SI একক।

1 জুল = 1 নিউটন $\times$ 1 মিটার

আরো কিছু পরীক্ষা :

উপকরণ: দুটি দুই কিলোগ্রামের আর একটা এক কিলোগ্রামের বাটখারা, দুটো সমান উচ্চতার টেবিল।

1) তুমি আর তোমার বন্ধু মোধোতে রাখা একটি করে 2 কিলোগ্রামের বাটখারা নিয়ে একই টেবিলের উপর

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

তুলে রাখলে।—তাহলে তুমি আর তোমার বন্ধু সমান পরিমাণ কাজ করলে।

Lifting weight 1 Lifting weight 2

2) এবার মেঝোতে একটা 2kg আর একটা 1kg-র বাটখারা রাখো। এখন, তুমি 2kg -র বাটখারাটি নিয়ে টেবিলের উপর তুলে রাখলে। আর তোমার বন্ধু 1kg -র বাটখারাটি টেবিলের উপর তুলে রাখল — তাহলে তুমি, তোমার বন্ধুর কাজের 2 গুণ কাজ করেছ।

3) একটা টেবিলের উপর আর একটা সম উচ্চতার টেবিল বা সম উচ্চতার টুল উঠিয়ে রাখো। মেঝের উপর দুটো 2kg -র বাটখারা আছে।

এবার তুমি মেঝে থেকে একটা বাটখারা নিয়ে নীচের টেবিলে তুলে রাখো।

Lifting weight 3

তোমার বন্ধু অন্য বাটখারাটি নিয়ে উপরের টেবিলের উপর রাখল।

—স্বভাবতই এখানে তোমার বন্ধু তোমার কাজের 2 গুণ কাজ করেছে।

4) একটা পিংটা নিয়ে দু-দিক থেকে টান দাও।

কী দেখতে পেলে?

পিংটা কি সামগ্রিকভাবে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় গেল অর্থাৎ স্থান পরিবর্তন করল? না কি পিংটা শুন্য বায়ুর পরিবর্তিত হলো?

এক্ষেত্রে বল প্রয়োগের ফলে কাজ হলো কি?

Spring stretched

বল প্রয়োগের ফলে কোনো বস্তুর সামগ্রিকভাবে স্থান পরিবর্তন না হলেও যদি বস্তুর আকার বা আয়তনের পরিবর্তন হয় তাহলেও বলা হয় বল কাজ করেছে

5) ছবির মতো করে একটা পিংটা নাও, সেটির মুখে একটি বেলুন ছবির মতো আটকাও। এবার পিংটার হাতলটি ভেতর দিক ঠেলো।

কী দেখতে পেলে?

বেলুন লাগানো সময় পিংটা কি এক জায়গা- থেকে অন্য জায়গায় সরে গেল?

বেলুনটা কেন?

তোমার বল কিসের ওপরে প্রযুক্ত হলো?

তোমার প্রযুক্ত বলের দ্বারা কি কোনো হলো?

সময় ও গতি

এক্ষেত্রে দেখা গেল বল প্রয়োগের ফলে বস্তুর সামগ্রিকভাবে স্থান পরিবর্তন করল না কিন্তু তোমার প্রযুক্ত বল পিংটার ভিতরে বায়ুর চাপ সৃষ্টি করায় বায়ু সংকুচিত হয়ে পিংটার মুখ দিয়ে বেলুনের ভেতর প্রবেশ করে। ছোটো ছোটো সরণের ফলে বেলুনের আকৃতিগত পরিবর্তন ঘটেছে। ফলে বেলুন ফুলে উঠেছে। এই ঘটনাতে বল প্রয়োগের ফলে কাজ হয়েছে।

পিং -এর ক্ষেত্রে পিং -এর সামগ্রিক সরণ না হলেও তার ভিতরকার ছোটো ছোটো অংশের স্থান পরিবর্তনের ফলে কাজ হয়েছে (W=F$\times$d), যা পিংটার আকৃতিগত পরিবর্তন ঘটিয়েছে।

6) একটা কিসের বুকের উপর জোরে শ্বাস নাও।

কিন্তু অনুভব করতে পারবে।

তোমার বুক কি উষ্ণও নামছে মনে হচ্ছে?

এই ঘটনার জন্য 'বল' কে প্রয়োগ করছ? কোথায় প্রয়োগ করছ?

এই বলের প্রভাবে কোনো কাজ হচ্ছে কি?

Breathing in

বুক ও পেশি দিয়ে তৈরি একটা থালা আছে, যার ভেতরে থাকে ফুসফুস। নিশ্বাস প্রশ্বাসের সময় বিভিন্ন পেশির সংকোচন প্রসারণের ফলে ফুসফুসের সংকোচন-প্রসারণ হয়।

এখানে ফুসফুসের আকার ও আয়তনের পরিবর্তন হয়।

এখানে পেশির বলের দ্বারা কাজ হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে ফুসফুসের সামগ্রিকভাবে স্থান পরিবর্তন অর্থাৎ সরণ না — কিন্তু 'কাজ' হয় থাকে।

Lungs

যদি ভালোভাবে খেয়াল করো তাহলে বুঝতে পারবে যে, পেশির বল কিন্তু শেষ পর্যন্ত ক্রিয়াহীন হয়। ফুসফুসের ভিতরের বায়ুর উপর। ফলে বায়ু শরীরের বাইরে বেরিয়ে আসে এবং ভেতরে প্রবেশ করে এবং এভাবে 'শ্বাস' সংঘটিত হয়।

কিন্তু এক্ষেত্রে কিছু আমাদের চোখে পড়ে না বলে আমরা তা বুঝতে পারি না।

7) তুমি একটা দেয়ালকে অনেকক্ষণ ধরে ঠেলো।

তোমার দেওয়া বলের অভিমুখে দেয়ালের কি কোনো সরণ হয়েছে?

দেয়ালের আকার বা আয়তনের কি কোনো পরিবর্তন হয়েছে?

তুমি কি ক্লান্ত হচ্ছ?

ঠেলার সময় তোমার হৃৎস্পন্দন কি বেড়ে গিয়েছ?

ঠেলার সময় কি তোমার নিশ্বাস-প্রশ্বাসের হার বেড়ে গিয়েছছিল?

তোমার শরীরের কোনো অংশ কি গরম হয়ে গিয়েছিল?

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

শরীরের ক্লান্ত, হৃৎস্পন্দনের হার বৃদ্ধি, শ্বাস-প্রশ্বাসের হার বৃদ্ধি, গা গরম ইত্যাদি বুঝাতে সাহায্য করে যে শরীরের ভেতর শক্তি খরচ হয়েছে।

আবার যেহেতু কাজ করার সামর্থ্যই শক্তি বলে সেও শক্তি যখন ব্যবহার করা হয়েছে তখন অবশ্যই কাজ হয়েছে।

এবার একটা চক দিয়ে দেয়ালের একটা অংশে ভালো করে ঘষো যাতে ওই জায়গাটা সাদা হয়ে যায়।

এখন ওই সাদা অংশে দেয়ালটাকে ঠেলো।

  • দেয়ালের ওই স্থানটা (যেখানে বল প্রয়োগ করেছিলে) কি ভেতরে ঢুকে গেল?
  • দেয়ালের ওই স্থানের ভেতর গুলোর কিছু অংশ কি উঠে গেছে? কোথায় উঠে গেছে?
  • এবার তোমার হাতটা ভালো করে দেখো তো সেখা (তালুতে) চকের দাগ লেগেছে কিনা?
  • তুমি যখন দেয়ালটাকে ঠেলছিলে তখন কি তোমার হাতের তালুর মাঝেস্পী কিছুটা চাপটে দিয়েছিল?

এবার ভেবে বলো তো দেয়ালটা যদি রাবারের তৈরি হতো, তবে তোমার স্থানটা কি ভেতরে ঢুকে যেত?

Pushing wall

দেয়ালে বল প্রয়োগ করার সময় তোমার হাতের তালুর মাসে পেশির আকারের পরিবর্তন হয়, তেমনই দেয়ালের ওই স্থানেও (তাপ দেওয়া স্থানে) আকৃতিগত কিছু পরিবর্তন হয়। কিন্তু এই পরিবর্তন এত সামান্য যে তা আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না। সে কারণেই চকের গুঁড়ো ব্যবহার করে আমরা দেখাবো চেষ্টা করেছি যে বল প্রয়োগে সরণ সম্ভব হয়। তাই তোমার হাতে চকের দাগ দেয়াল থেকে উঠে এসেছিল।

দেয়ালে বল প্রয়োগ করার জন্য পেশিকোষে দরকার হয় পড়ে অতিরিক্ত শক্তি। কোষে শোষণ কার্য বেড়ে যায়, ফলে খাদ্য ও অক্সিজেনের চাহিদাও বেড়ে যায়। এর ফলে বেড়ে যায় হৃৎস্পন্দন, বেড়ে যায় রক্তচাপ, বেড়ে যায় নিশ্বাস-প্রশ্বাসের হার। পেশিকোষের দরকার শক্তি কিন্তু সেখানে অক্সিজেনের যোগান প্রয়োজনের তুলনায় কম। শক্তির চাহিদা মেটাতে কোষে শোষণ শুরু হয় এক বিশেষ ধরনের শসন। অল্পকালেই পেশিকোষে জমতে থাকে ল্যাকটিক অ্যাসিড। আর পেশিকোষে এই ল্যাকটিক অ্যাসিড উৎপন্ন হলে পেশিতে ব্যথা অনুভূত জাগে। শ্বাসনের হার বেড়ে যাওয়ার জন্য তাপ শক্তিও বেশি পরিমাণে উৎপন্ন হয়। এই আমাদের শরীরের তাপ।

কিন্তু এইসব কি আমাদের চোখে পড়ে? ওই ওব কাজ আমরা দেখতে পাই না, ঠিক যেমন পিংটার ভিতরে কাজ, ফুসফুসের ভিতরের কাজ আমাদের চোখে ধরা পড়ে না।

পরমাণু, অণু ও রাসায়নিক বিক্রিয়া

চিহ্ন, সংকেত ও যোজ্যতা

ষষ্ঠ শ্রেণিতে আমরা কিছু মৌলিক পদার্থের নাম ও চিহ্ন কথা জেনেছি। মৌলের চিহ্ন দিয়েই মৌলের সংকেত নাম বোঝায়। এখন তোমরা তার উপর ভিত্তি করে নীচের সারণিতে দেওয়া মৌলগুলোর নাম থেকে চিহ্ন লেখার চেষ্টা করো। প্রয়োজনে শিক্ষক/শিক্ষিকার সাহায্য নাও।

সারণি - 1

মৌলের নাম নামের বানান চিহ্ন
অ্যালুমিনিয়ামAluminum..........
নিকেলNickel..........
আর্সেনিকArsenic..........
সিলিকনSilicon..........
জিঙ্কZinc..........
বোরনBoron..........

সারণি - 2

মৌলের নাম ইংরোজি নাম ল্যাটিন নাম নামের বানান চিহ্ন
টিনTinস্ট্যানামStannum..........
পারদMercuryহাইড্রাজিরাHydrargyrumHg
সিসাLeadপ্লম্বামPlumbum..........

এবার আবার এমন কিছু মৌলিক পদার্থের নাম ও চিহ্ন শিখব, যেখানে বিখ্যাত বিজ্ঞানীদের নাম, মৌলগুলোর আবিষ্কারের স্থান বা যে বিজ্ঞানী আবিষ্কার করেছেন তাঁর দেশের নাম অথবা বিশেষ কিছু গ্রহের নামে তাদের দেওয়া হয়েছে।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

শব্দভান্ডার থেকে শব্দ নিয়ে তুমি নীচের তিনটি সারণি পূরণ করো।

সারণি - 1

মৌলের নাম নামের বানান বিখ্যাত বিজ্ঞানী নাম চিহ্ন
কিউরিয়ামCurium....................
আইনস্টাইনিয়ামEinsteinium....................

সারণি - 2

মৌলের নাম নামের বানান স্থানের নাম চিহ্ন
আমেরিসিয়ামAmericium....................
পোলোনিয়ামPolonium....................

সারণি - 3

মৌলের নাম নামের বানান গ্রহের নাম চিহ্ন
ইউরেনিয়ামUranium....................
নেপচুনিয়ামNeptunium....................
প্লুটোনিয়মPlutonium....................

শব্দভান্ডার: Pu, America, Po, Uranus, Am, Madame Curie, Pluto, Es, No, Neptune, Albert Einstein, Np, U, Poland.

মৌলের পরমাণু জুড়ে মৌল অণু বা যৌগ অণু তৈরি হয়। তাহলে এসো আমরা দেখি, পরমাণু কীভাবে তৈরি।

পাশের ছবিতে হাইড্রোজেন, হিলিয়াম ও লিথিয়াম পরমাণুর গঠন যেমন তা দেখানো হয়েছে।

Hydrogen atom Helium atom Lithium atom

পরমাণুর এই ছবির মধ্যে কত রকমের কণা তোমরা দেখতে পাচ্ছ?

পরমাণু, অণু ও রাসায়নিক বিক্রিয়া

—তিনরকমের অতিসূক্ষ্ম কণা পরমাণুতে থাকতে পারে। পরমাণুর মধ্যে এই তিনরকমের কণার অস্তিত্ব নিঃসন্দেহে প্রমাণিত হয়েছে।

  • দিয়ে দেখানো কণাগুলো প্রোটন, এগুলো ধনাত্মক তড়িৎ আধানযুক্ত বা ধনাত্মক চার্জযুক্ত কণা।
  • দিয়ে দেখানো কণাগুলো ইলেকট্রন। এগুলো ঋণাত্মক তড়িৎ আধানযুক্ত বা ঋণাত্মক চার্জযুক্ত কণা।
  • দিয়ে দেখানো কণাগুলো নিউট্রন। এদের কোনো তড়িৎ নেই।

একটি প্রোটন ও একটি ইলেকট্রনের তড়িৎের পরিমাণ সমান। একটি ধনাত্মক ও একটি ঋণাত্মক চার্জ একসঙ্গে থাকলে তড়িৎবিহীন বা নিস্তড়িৎ অবস্থায় থাকে।

ছবিতে আরো লক্ষ্য করো, প্রোটন আর নিউট্রনগুলো পরমাণুর কেন্দ্র একটা ছোটো জায়গায় জোট বেঁধে আছে। এই জায়গাটা হলো পরমাণুর কেন্দ্রক বা নিউক্লিয়াস। ইলেকট্রনগুলো নিউক্লিয়াসকে ঘিরে বিভিন্ন পথে ঘোরাচ্ছে। যে পথগুলোতে ইলেকট্রনগুলো নিউক্লিয়াসের চারদিকে ঘোরছে তাদের কক্ষপথ বলে।

সাধারণ অবস্থায় সব মৌলের পরমাণুতে প্রোটন ও ইলেকট্রন সংখ্যা সমান হয়। তাই মৌলের পরমাণু নিস্তড়িৎ। কোনো পরমাণুর প্রোটন সংখ্যাকে তার পরমাণু ক্রমাঙ্ক বা তার পারমাণবিক সংখ্যা বলে।

একটি ইলেকট্রনের ভর প্রোটন বা নিউট্রনের ভরের প্রায় 2000 ভাগের এক ভাগ। তাই নিউক্লিয়াসের প্রোটন ও নিউট্রনের মোট ভরই মোটামুটিভাবে কোনো পরমাণুর ভর — একথা বলা যেতে পারে। পরমাণুর নিউক্লিয়াসে থাকা প্রোটন ও নিউট্রনের মোট সংখ্যাই এই পরমাণুর ভরসংখ্যা

এবার তোমরা আগের পাতায় হিলিয়াম পরমাণুর গঠনের ছবি থেকে নীচের সারণি পূরণ করো।

হিলিয়াম পরমাণুর কণার সংখ্যা

কণা সংখ্যা পরমাণু ক্রমাঙ্ক বা ভরসংখ্যা প্রোটন ইলেকট্রন নিউট্রন

এবার এসো আমরা আরো কয়েকটি পরিচিত মৌলের পরমাণুর গঠনের ছবি দেখি: ছবিতে 6 মানে 6টি প্রোটন, 6 মানে 6টি নিউট্রন এইভাবে বুঝাতে হবে।

Carbon atom

কার্বন

Sodium atom

সোডিয়াম

Chlorine atom

ক্লোরিন

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

আগের পাতার ছবিগুলো থেকে নীচের সারণিটি পূরণ করো।

মৌলের নাম প্রোটন সংখ্যা ইলেকট্রন সংখ্যা নিউট্রন সংখ্যা পারমাণবিক ক্রমাঙ্ক ভর সংখ্যা
কার্বন
সোডিয়াম
ক্লোরিন

মৌলের পরমাণু থেকে এক বা একের বেশি ইলেকট্রন বেরিয়ে গেলে প্রোটন সংখ্যা থেকে ইলেকট্রন সংখ্যা কম হয়ে যায়। তখন ধনাত্মক (Positive) আধানযুক্ত আয়ন বা ক্যাটায়ন উৎপন্ন হয়। পরমাণু এক বা একের বেশি ইলেকট্রন নিলে কী হবে?

—তখন প্রোটন সংখ্যা থেকে ইলেকট্রন সংখ্যা বেশি হয়ে যাবে এবং ঋণাত্মক (Negative) আধানযুক্ত আয়ন তৈরি হবে। একে অ্যানায়ন বলা হয়।

সাধারণ ধাতু ও অধাতু জুড়ে মৌল হওয়ার সময় ধাতুর পরমাণুগুলো ইলেকট্রন ছাড়ে আর অধাতুর পরমাণুগুলো ইলেকট্রন গ্রহণ করে।

Ion formation 1

যেমন – সোডিয়াম পরমাণু একটা ইলেকট্রন ছেড়ে দিলে যে ক্যাটায়ন তৈরি হবে তাকে Na+ দ্বারা প্রকাশ করা হয়। তেমনি ক্যালসিয়াম পরমাণু দুটি ইলেকট্রন ছেড়ে দিয়ে Ca2+ ক্যাটায়ন তৈরি করবে।

আবার ক্লোরিন পরমাণু একটা ইলেকট্রন নিয়ে নিলে যে অ্যানায়ন উৎপন্ন হবে তাকে Cl- দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

Ion formation 2

একে ক্লোরাইড আয়ন বলে।

তোমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে নীচের সারণি পূরণ করো। প্রয়োজনে শিক্ষক বা শিক্ষিকার সাহায্য নাও।

কোন মৌলের পরমাণু মৌলের চিহ্ন কটি ইলেকট্রন নিল বা ছেড়ে দিল তৈরি হওয়া ক্যাটায়ন বা অ্যানায়নের চিহ্ন ও নাম
পটাশিয়ামK1 টি ইলেকট্রন ছাড়লK+ (পটাশিয়াম)
ম্যাগনেসিয়াম..........2 টি ইলেকট্রন ছাড়ল..........
জিঙ্ক..........2 টি ইলেকট্রন ছাড়ল..........
লিড..........2 টি ইলেকট্রন ছাড়ল..........
অ্যালুমিনিয়াম..........3 টি ইলেকট্রন ছাড়ল..........
ফ্লুওরিনF1 টি ইলেকট্রন নিলF- (ফ্লুওরাইড)
অক্সিজেনO2 টি ইলেকট্রন নিল(অক্সাইড)
সালফারS2 টি ইলেকট্রন নিল(সালফাইড)
ব্রোমিনBr1 টি ইলেকট্রন নিল(ব্রোমাইড)

পরমাণু, অণু ও রাসায়নিক বিক্রিয়া

আমরা একাকিত্বে মৌলের পরমাণু যুক্ত হয়ে যৌগ গঠন করে। কখনো কখনো একই মৌলের এক বা একাধিক পরমাণু অথবা বিভিন্ন মৌলের পরমাণু জৈবচৌম্বক অবস্থায় আয়নভাবে অবস্থান করে। তখন সাধারণভাবে তাদের মূলক বলা হয়। জৈবচৌম্বক অবস্থাতেই ওই মূলকগুলো রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে। মূলকের আধানের পরিমাণই প্রথমিকভাবে তাদের যোজ্যতা বলা ধরা যেতে পারে। পরে আমরা অন্য পদ্ধতিতে মূলকগুলোর যোজ্যতা কীভাবে নির্ণয় করা যায় তা জানব।

তোমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে নীচের সারণিটি পূরণ করো।

মূলকের নাম সংকেত তার আধান বা চার্জ যোজ্যতা
নাইট্রেটNO3--11
সালফেটSO42--22
কার্বনেটCO32--22
অ্যামোনিয়ামNH4++11
নাইট্রাইটNO2--11
ফসফেটPO43--33
হাইড্রোক্সাইডOH--11

এবার আমরা অন্য পদ্ধতিতে মূলকগুলোর যোজ্যতা কীভাবে জানা যায় তা দেখব। আমরা জানি যে দুটো মৌলের পরস্পর যুক্ত হওয়ার ক্ষমতাকে ওই মৌলের যোজন ক্ষমতা বলা হয়।

নীচের সারণিতে একক যোজ্যতাবিশিষ্ট ধাতু সোডিয়াম বা পটাশিয়ামের সঙ্গেও বিভিন্ন মূলক যুক্ত হয়েছে এমন কয়েকটি মৌলের সংকেত ও তাদের মধ্যে উপস্থিত মূলকের সংকেত দেওয়া হলো। সংকেত থেকে সোডিয়াম বা পটাশিয়ামের পরমাণু থেকে যোজ্যতা লেখো:

মৌলের সংকেত তার মধ্যে উপস্থিত অ্যানায়নের নাম ও সংকেত অ্যানায়নের যোজ্যতা
Na2Sসালফাইড (S2-)2
NaHCO3বাইকার্বনেট (HCO3-)1
NaCNসায়ানাইড (CN-)1
NaOHহাইড্রক্সাইড (OH-)1
NaFফ্লুওরাইড (F-)1
NaBrব্রোমাইড (Br-)1
NaNO2নাইট্রাইট (NO2-)1
Na2SO4সালফেট (SO42-)2
KMnO4পারম্যাঙ্গানেট (MnO4-)1
K2Cr2O7ডাইক্রোমেট (Cr2O72-)2
NaAlO2অ্যালুমিনেট (AlO2-)1
Na2ZnO2জিঙ্কেট (ZnO22-)2
NaHSO4বাইসালফেট (HSO4-)1

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

ষষ্ঠ শ্রেণিতে হাইড্রোজেনের যোজ্যতা 1। হাইড্রোজেনের বিভিন্ন যৌগ থেকে তোমরা জেনেছ যে অক্সিজেনের যোজ্যতা 2, ক্লোরিনের যোজ্যতা 1।

এবার আমরা ক্লোরিনের বিভিন্ন যৌগ থেকে ধাতু ও অধাতুর পরিবর্তনশীল যোজ্যতা নির্ণয় করব।

নীচের সারণিতে বিভিন্ন মৌলের সঙ্গে যুক্ত ক্লোরিন পরমাণুর সংখ্যা হলো ওই মৌলের যোজ্যতা।

মৌলের নাম সংকেত সঙ্গে যুক্ত ধাতু ক্লোরিন পরমাণু সংখ্যা ধাতুর যোজ্যতা
সোডিয়াম ক্লোরাইডNaClNa11
পটাশিয়াম ক্লোরাইডKClK1..........
ক্যালসিয়াম ক্লোরাইডCaCl2Ca22
ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইডMgCl2Mg2..........
ফেরাস ক্লোরাইডFeCl2Fe2..........
ফেরিক ক্লোরাইডFeCl3Fe33
জিঙ্ক ক্লোরাইডZnCl2Zn2..........
কুপরাস ক্লোরাইডCuClCu1..........
কুপরিক ক্লোরাইডCuCl2Cu2..........
সিলভার ক্লোরাইডAgClAg1..........
লেড ক্লোরাইডPbCl2Pb2..........

উপরের সারণির যৌগগুলো লক্ষ্য করলে তোমরা দেখবে আয়রন, কপার প্রভৃতি মৌলের একাধিক যোজ্যতা রয়েছে। এসেন্স মৌলগুলো যোজ্যতা পরিবর্তন করে একই মৌলের বিভিন্ন সংখ্যক পরমাণুর সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন যৌগ তৈরি করতে পারে। এইরকম যোজ্যতাকে মৌলের পরিবর্তনশীল যোজ্যতা বলে। সারণিটি ভালো করে লক্ষ্য করে দেখবে যে সব মৌলে যোজ্যতা কম সেই যোগের নামের শেষে 'আস' যুক্ত হয়েছে আর যে মৌলে ওই মৌলেরই যোজ্যতা অপেক্ষাকৃত বেশি তাদের নামের শেষে 'ইক' যুক্ত হয়েছে। যেমন ধরো ফেরাস ও ফেরিক মৌলে আয়রনের যোজ্যতা 2 ও 3।

সংকেত লেখার কৌশল

বিভিন্ন মৌল কিংবা মূলকের যোজ্যতাকে ব্যবহার করে কীভাবে মৌলের সংকেত লেখা যায় তা দেখা যাক।

ধরা যাক, A ও B দুটি মৌল বা মূলক যুক্ত হয়ে যৌগ গঠন করে। A মৌলের বা মূলকের যোজ্যতা m এবং B মৌলের বা মূলকের যোজ্যতা n হলে A এবং B দ্বারা গঠিত মৌলের সংকেত হবে AnBm। A মৌলের বা মূলকের যোজ্যতা যত সে সংখ্যক (m) কে B মৌলের বা মূলকের ডানদিকে একটি এবং B মৌলের বা মূলকের যোজ্যতা যত সে সংখ্যক (n)-কে A মৌলের বা মূলকের ডানদিকে লিখে প্রকাশ করলে সেটি হবে A ও B মৌল বা মূলক দ্বারা তৈরি যৌগের সংকেত।

পরমাণু, অণু ও রাসায়নিক বিক্রিয়া

যেমন: (i) অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইডএর সংকেত লিখতে হবে। Al-এর যোজ্যতা 3 ও O-এর যোজ্যতা 2। সংকেত তৈরির সময় চার্জের + বা – দেখা হয়না।

মৌলের চিহ্ন

Al

মৌলের মধ্যে তার চার্জ

+3

-

-2

O

তাহলে অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইডের সংকেত এইরকমভাবে লেখা হবে: Al2O3

(ii) অ্যালুমিনিয়াম সালফেটের সংকেত লেখার পদ্ধতি নীচে দেওয়া হলো।

NH4+ মূলকের যোজ্যতা 1 ও SO42- মূলকের যোজ্যতা 2।

মূলকের সংকেত

NH4+

চার্জ

+1

-

-2

SO42-

অতএব অ্যামোনিয়াম সালফেটের সংকেত (NH4)2SO4

(iii) মিথেনএর সংকেত লেখার পদ্ধতি নীচে দেওয়া হলো:

কার্বনএর (C) যোজ্যতা 4 এবং হাইড্রোজেনএর যোজ্যতা 1।

মৌলের চিহ্ন

C

মৌলের মধ্যে তার যোজ্যতা

4

-

1

H

তাহলে মিথেনের সংকেত C1H4। এক্ষেত্রে মনে রাখা দরকার C-এর নীচে 1 লেখার দরকার হয় না। তাই মিথেনের সংকেত CH4

(iv) হাইড্রোজেন সালফাইডের সংকেত লেখার পদ্ধতি:

হাইড্রোজেন (H) যোজ্যতা 1 এবং সালফারএর যোজ্যতা 2।

মৌলের চিহ্ন

H

মৌলের মধ্যে তার যোজ্যতা

1

-

2

S

অতএব হাইড্রোজেন সালফাইডের সংকেত H2S।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

নীচে কতকগুলো মৌলের চিহ্ন ও যোজ্যতা দেওয়া আছে। আগের পৃষ্ঠার পদ্ধতি ব্যবহার করে যৌগগুলোর সংকেত লেখো। প্রয়োজনে শিক্ষক/শিক্ষিকার সাহায্য নাও।

যৌগের নাম যৌগে উপস্থিত একটি মৌলের চিহ্ন যৌগের যোজ্যতা যৌগে উপস্থিত অন্য মৌলের চিহ্ন যৌগের যোজ্যতা যৌগের সংকেত
কার্বন টেট্রা-ক্লোরাইডC4Cl1
ফসফরাস পেন্টাক্লোরাইডP5Cl1
অ্যামোনিয়াN3H1
সালফার টেট্রা ফ্লুওরাইডS4F1

তোমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করো এবং মৌল ও মূলকের যোজ্যতা ব্যবহার করে নীচের সারণি পূরণ করো। প্রয়োজনে শিক্ষক/শিক্ষিকার সাহায্য নাও।

যৌগের নাম যৌগে উপস্থিত ধাতব আয়ন ধাতব মৌলের যোজ্যতা যৌগে উপস্থিত অ্যানায়ন বা মূলক অ্যানায়ান বা মূলকের যোজ্যতা যৌগের সংকেত
সোডিয়াম ফ্লুওরাইডNa+1F-1..........
লেড ক্লোরাইডPb2+2Cl-1..........
অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রক্সাইডAl3+3OH-1..........
সোডিয়াম বাইকার্বনেটNa+1HCO3-1..........
ক্যালসিয়াম বাইকার্বনেটCa2+2HCO3-1..........
জিঙ্ক নাইট্রেটZn2+2NO3-1..........
সোডিয়াম ফসফেটNa+1PO43-3..........

এই উপায়ে জিঙ্ক অক্সাইড, ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড, জিঙ্ক সালফাইড বা ক্যালসিয়াম কার্বনেটের সংকেত লিখবে কী করে?

মৌলের চিহ্ন

Zn

মৌলের মধ্যে তার চার্জ

+2

-

-2

O

এভাবে জিঙ্ক অক্সাইডের সংকেত Zn2O2, কিন্তু ক্যাটায়ন ও অ্যানায়ন উভয়ের চার্জের পরিমাণ 2 থাকার তা বাদ দিয়ে যৌগের সরলীকৃত সংকেত ZnO রূপে লেখা হয়। এই উপায়ে বাকি তিনটি যৌগের সংকেত লেখো।

পরমাণু, অণু ও রাসায়নিক বিক্রিয়া

এবার একটা অন্য পদ্ধতি লক্ষ্য করো যা থেকেও তুমি যৌগের সংকেত নিজেই লিখতে পারবে। এটা একটা খেলার মতো। খেলার নিয়ম হলো এমন সংখ্যক ক্যাটায়ন ও অ্যানায়ন নিতে হবে যাতে তৈরি মৌলের মোট চার্জ শূন্য হয়। এর মানে হলো তুমি যতগুলো ক্যাটায়ন নেবে তাদের মোট পজিটিভ চার্জ অ্যানায়নের মোট নেগেটিভ চার্জের সমান হতে হবে।

এবার নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে নীচের সারণি পূরণ করো।

যৌগের নাম যৌগে উপস্থিত ক্যাটায়ন যৌগে উপস্থিত অ্যানায়ন মোট চার্জ শূন্য হলো কী ভাবে যৌগের সংকেত
সোডিয়াম ক্লোরাইড Na+ Cl- প্রত্যেক Na+-এর 1টি (+) চার্জের জন্য 1টি (-) চার্জের দরকার +1-1=0 NaCl
সোডিয়াম সালফেট Na+ SO42- SO42- এর চার্জ যেহেতু -2 তাই দুটি Na+ ক্যাটায়ন দরকার +2-2=0 Na2SO4
ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইড Mg2+ Cl- প্রত্যেক Mg2+ এর জন্য 2টি Cl- দরকার
ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড Ca2+ Cl-
জিঙ্ক অক্সাইড Zn2+ O2- ZnO
অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড Al3+ O2- 2টি Al3+-এর মোট চার্জ যেহেতু +6 তাই 3টি O2--এর মোট চার্জ -6 প্রয়োজন Al2O3
ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড Mg2+ O2-
ফেরিক অক্সাইড Fe3+ O2- Fe2O3
সোডিয়াম সালফাইড Na+ S2- Na2S
পটাশিয়াম ফ্লুওরাইড K+ F-

রাসায়নিক বিক্রিয়া ও রাসায়নিক সমীকরণ

করে দেখো: 1: একটা গ্লাসে জল নিয়ে তার মধ্যে কয়েকটা মিউরিয়েটিক অ্যাসিড (বাথরুম পরিষ্কার করার জন্য এই অ্যাসিড ব্যবহার করা হয়) মেশাও। তার মধ্যে এক চিমটে কাপড় কাচার সোডা যোগ করো। (শিক্ষক/শিক্ষিকার উপস্থিতিতে কাজ করো)

2: ওপরের মতো একইরকম অ্যাসিড দ্রবণ তৈরি করে তার মধ্যে কয়েকটি নতুন পেরেক (দস্তার প্রলেপ দেওয়া) ফেলে দাও। (এক্ষেত্রে পেরেকদের জিঙ্কের টুকরো ব্যবহার করলে আরো ভালো ফল পাবে)

3: একটা গ্লাসে জল নিয়ে ছোটো এক টুকরো পাথরে চুন তার মধ্যে সাবধানে ফেলে দাও। কী দেখতে পেলে নীচে দেখো।

কোন ক্ষেত্রে কী করলে কী দেখলে
করে দেখো 1
করে দেখো 2
করে দেখো 3

কেন এমন হলো বলো তো?

প্রথম ক্ষেত্রে: কাপড় কাচার সোডা (সোডিয়াম কার্বনেট, Na2CO3), লঘু মিউরিয়েটিক অ্যাসিডের (হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড, HCl) সঙ্গে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন করেছে।

দ্বিতীয় ক্ষেত্রে: লোহার পেরেক ওপরে দেওয়া কথার সঙ্গে লঘু হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড (মিউরিয়েটিক অ্যাসিড) বিক্রিয়া করে হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন করেছে।

তৃতীয় ক্ষেত্রে: পাথরে চুন জলের সংস্পর্শে এসে সম্পূর্ণ নতুন পদার্থে পরিণত হলো। এই নতুন পদার্থটার ধর্ম, চুনের ধর্ম থেকে একেবারেই আলাদা। লক্ষ্য করো জল গরম হয়ে গেছে।

একরকম ঘটনাকে রাসায়নিক পরিবর্তন বা রাসায়নিক বিক্রিয়া বলে থাকি। পাথরে চুন জলে দিলে দেখতে পাবে গ্লাসটা বেশ কিছুটা গরম হয়ে গেছে। অর্থাৎ, রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে তাপ উৎপন্ন হয়েছে।

রাসায়নিক বিক্রিয়ায় তাপ যেমন উৎপন্ন হতে পারে তেমনি রাসায়নিক বিক্রিয়া দেখা যায় যেখানে বিক্রিয়ার তাপমাত্রা কমে গেছে। অর্থাৎ, তাপের শোষণ ঘটেছে। পাথরে চুন জলে দিলে একটা সাদা পদার্থ উৎপন্ন হয়। এর রাসায়নিক নাম ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইড।

এই বিক্রিয়ায় পাথরের চুন ও জল অংশ নিচেছে। তাই এদের বিক্রিয়ক পদার্থ বলা হয়। আর বিক্রিয়ার ফলে ক্যালসিয়াম উৎপন্ন হয়েছে। তাই একে বিক্রিয়াজাত পদার্থ বলা হয়।

পরমাণু, অণু ও রাসায়নিক বিক্রিয়া

তোমরা নীচের সারণিতে পাথরে চুন বা ক্যালসিয়াম অক্সাইড, জল ও ক্যালসিয়ামের সংকেত লেখো।

কেমন পদার্থ যৌগের নাম মৌলের সংকেত
বিক্রিয়কপাথরে চুন বা ক্যালসিয়াম অক্সাইড
জল
বিক্রিয়াজাতক্যালসিয়াম হাইড্রক্সাইড

পাথরে চুন জলের বিক্রিয়ায় ক্যালসিয়াম উৎপন্ন হয়। লক্ষ্য করে দেখো কতটা জায়গা লাগা কথাটি বোঝায়। আমরা যদি বিক্রিয়ক ও বিক্রিয়াজাত পদার্থের সংকেত ব্যবহার করে রাসায়নিক বিক্রিয়াকে সংক্ষেপে প্রকাশ করি, তখন তাকে রাসায়নিক সমীকরণ বলে। রাসায়নিক সমীকরণ লেখার সময় একের বেশি বিক্রিয়াজাত পদার্থ থাকলে তাদের সংকেতের মাঝখানে (+) চিহ্ন দিয়ে পরপর লেখা হয়। আবার একের বেশি বিক্রিয়াজাত পদার্থ থাকলে তাদের সংকেতের মাঝখানে (+) চিহ্ন দিয়ে লেখা হয়। এভাবে বোঝা যায় যে বিক্রিয়াগুলো একসঙ্গে বিক্রিয়া করেছে এবং বিক্রিয়াজাত পদার্থগুলো একসঙ্গে তৈরি হয়েছে। তাহলে পাথরে চুনএর সঙ্গে জলের বিক্রিয়ার রাসায়নিক সমীকরণ হবে:

CaO + H2O $\rightarrow$ Ca(OH)2

আবার চূনাপাথর (ক্যালসিয়াম কার্বনেট)-কে তাপ দিলে পোড়া চুন (ক্যালসিয়াম অক্সাইড) ও কার্বন ডাইঅক্সাইড উৎপন্ন হয়: CaCO3 $\xrightarrow{\text{তাপ}}$ CaO + CO2

এই বিক্রিয়ার বিক্রিয়ক ও বিক্রিয়াজাত পদার্থগুলোর নাম ও সংকেত নীচের সারণিতে লেখো। তারপর সমীকরণকে সাহায্যে বিক্রিয়াকে প্রকাশ করো।

বিক্রিয়ক পদার্থের নাম বিক্রিয়কের সংকেত বিক্রিয়াজাত পদার্থের নাম বিক্রিয়াজাত পদার্থের সংকেত

বিক্রিয়ার সমীকরণ হবে: ..............................................................

সমীকরণের সমতাবিধান করা

হাইড্রোজেন (H2) ও অক্সিজেন (O2) মিলিত হয়ে জল (H2O) উৎপন্ন করে।

বিক্রিয়াটিকে সমীকরণের আকারে কীভাবে লেখা যায়?

H2 + O2 $\rightarrow$ H2O

লক্ষ্য করে দেখো সমীকরণের বা দিক ও ডান দিকে H পরমাণুর সংখ্যা দুটি করে। কিন্তু O পরমাণুর সংখ্যা বা দিকে দুটি হলে ডানদিকে O পরমাণু সংখ্যা একটি। অর্থাৎ O পরমাণুর সংখ্যা দু-দিকে আলাদা।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়ার সমীকরণ লেখার সময় একটা বিষয় নজর দেওয়া প্রয়োজন। প্রাথমিকভাবে বিক্রিয়ক ও বিক্রিয়াজাত পদার্থের সংকেত দিয়ে বিক্রিয়ার সমীকরণ প্রকাশ করার পর প্রত্যেক মৌলের পরমাণুর সংখ্যা সমীকরণের বাম ও ডান দিকে সমান হলো কিনা তা দেখতে হবে। যদি সমানও কোনো মৌলের পরমাণুর সংখ্যা সমান না হয়, তাহলে কী করতে হবে?

সমীকরণের মধ্যে লেখা বিক্রিয়ক বা বিক্রিয়াজাত পদার্থের সংকেতের আগে উপযুক্ত সংখ্যা বসিয়ে দু-দিকে প্রত্যেক মৌলের পরমাণুর সংখ্যা সমান করতে হবে। এই পদ্ধতিকেই বলে সমীকরণের সমতাবিধান (Balance) করা।

তাহলে তৈরি বিক্রিয়ার সমীকরণকে সমতাবিধান করলে কী পাওয়া যাবে?

সমতাবিধান করে সমীকরণ হবে—

2H2 + O2 = 2H2O

(1) মারকিউরিক অক্সাইডকে (HgO) উষ্ণও করলে পারদ (Hg) এবং অক্সিজেন (O2) উৎপন্ন হয়।

HgO $\rightarrow$ Hg + O2

এই বিক্রিয়ায় দেখা যাচ্ছে যে, ডান দিকে অক্সিজেন পরমাণু আছে 2টি। তাহলে বাঁদিকে যদি 2HgO লিখি? তখন আবার বা দিকে Hg পরমাণু সংখ্যা 2 হয়ে যায়। তাই ডান দিকে Hg-এর সামনে 2 লিখতে হবে।

2HgO = 2Hg + O2 এটা সমাযুক্ত সমীকরণ। কোনো রাসায়নিক সমীকরণে মৌল বা যৌগের সংকেতের আগে 2 বা 3 লেখা হলে তার মানে কী দাঁড়ায়? তার মানে হলো সেই মৌলের পরমাণু সংখ্যা বা যৌগে উপস্থিত সব মৌলের পরমাণু সংখ্যাই 2 বা 3 গুণ হয়ে গেল।

(2) আবার নাইট্রোজেন ও হাইড্রোজেন বিক্রিয়া করে অ্যামোনিয়া গঠন করে। ঋণাত্মক বিক্রিয়ক মৌল ও বিক্রিয়াজাত যৌগের সংকেতের সাহায্যে লিখলে নীচের মতো করে লেখা যায়।

N2 + H2 $\rightarrow$ NH3

ভালো করে লক্ষ্য করে দেখো, বাঁ দিকে দুটি করে N ও H পরমাণু আর ডান দিকে একটি N পরমাণু ও 3টি হাইড্রোজেন পরমাণু আছে। আমরা জানি, 2 ও 3-এর ল.সা.গু. হলো 6। তাহলে বাঁ দিকে H2-এর আগে 3 আর ডান দিকে NH3-এর আগে 2 লিখলে দেখো তো।

N2 + 3H2 = 2NH3

2টি N পরমাণু 3$\times$2 = 6 টি H পরমাণু 2N পরমাণু

+ 6 টি H পরমাণু

পরমাণু, অণু ও রাসায়নিক বিক্রিয়া

তোমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে নীচের ফাঁকা জায়গাগুলো ঠিকমতো সংখ্যা বসিয়ে রাসায়নিক সমীকরণগুলোর সমতাবিধান করো।

বিক্রিয়ক বিক্রিয়াজাত পদার্থ
(i) C + O2= ........CO
(ii) Fe2O3 + C= ........Fe + CO
(iii) Na2CO3 + ......HCl= ........NaCl + CO2 + H2O
(iv) 2Pb(NO3)2= ........PbO + ........NO2 + O2
(v) ........AgNO3 + H2S= Ag2S + ........HNO3
(vi) P4 + ........I2= ........PI3
(vii) CH4 + ......O2= CO2 + ........H2O
(viii) ........KClO3= ........KCl + ........O2
(ix) ........KI + Cl2= ........KCl + I2
(x) ........NaOH + H2SO4= Na2SO4 + ........H2O

রাসায়নিক বিক্রিয়ার প্রকারভেদ

যে সমস্ত রাসায়নিক বিক্রিয়ার উদাহরণ আমরা ওপরে দেখতে পেলাম তারা সব কি একই ধরনের?

সব বিক্রিয়া যে একই ধরনের নয়, তা বিক্রিয়ার সমীকরণগুলো লক্ষ্য করলে কিছুটা বুঝতে পারবে। কোনো বিক্রিয়া ক্ষেত্রে বিক্রিয়ক পদার্থ কমের থেকে বেশি। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিক্রিয়ক পদার্থ একইরকম ব্যাপার। তাই রাসায়নিক বিক্রিয়া নানাধরনের।

তোমরা দেখেছ যে, অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন মিলিত হয়ে জল উৎপন্ন করে।

2H2 + O2 = 2H2O

নাইট্রোজেনএর সঙ্গে হাইড্রোজেন বিক্রিয়া করে অ্যামোনিয়া তৈরি হয়।

N2 + 3H2 = 2NH3

এই দুটো বিক্রিয়াতে বিক্রিয়ক পদার্থগুলো মৌলিক পদার্থ। আর বিক্রিয়াজাত পদার্থগুলো হলো ওই সমস্ত মৌলের সংযোগে উৎপন্ন যৌগ। ওইরকম বিক্রিয়াকে প্রত্যক্ষ সংযোগ বিক্রিয়া বলে।

পরের পৃষ্ঠায় কিছু প্রত্যক্ষ সংযোগ বিক্রিয়ার বিক্রিয়ক মৌলের নাম দেওয়া হয়েছে। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বিক্রিয়াজাত যৌগগুলোর নাম ও সংকেত এবং বিক্রিয়াগুলোর সমতাবিধান লেখো। (প্রয়োজনে শিক্ষক/শিক্ষিকার সাহায্য নাও)।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

বিক্রিয়ক মৌল বিক্রিয়াজাত যৌগের নাম ও সংকেত সমিত সমীকরণ
ম্যাগনেসিয়াম ও অক্সিজেন
হাইড্রোজেন ও ক্লোরিন

কোনো কোনো বিক্রিয়ায় একটা যৌগ ভেঙে গিয়ে একাধিক পদার্থ (মৌল বা যৌগ) উৎপন্ন হয়।

চুনপাথর (CaCO3)-কে উষ্ণও করলে পোড়া চুন (CaO) এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO2) উৎপন্ন হয়। এটা তোমরা আগেই জেনেছ। আবার সামান্য অ্যাসিড মেশানো জলের মধ্য দিয়ে তড়িৎ চালনা করলে জল ভেঙে গিয়ে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন গ্যাস উৎপন্ন করে। এই দুটো বিক্রিয়ার সমীকরণ হলো:

CaCO3 $\rightarrow$ CaO + CO2

2H2O $\rightarrow$ 2H2 + O2

উপরের দুটি বিক্রিয়াতে আমরা কী দেখতে পাচ্ছি?

তাপ বা তড়িৎের প্রভাবে একটা যৌগ ভেঙে একাধিক পদার্থে পরিণত হয়েছে। এরকম বিক্রিয়াকে বিয়োজন বিক্রিয়া বলে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আলোর প্রভাবেও বিয়োজন বিক্রিয়া ঘটতে পারে।

নীচের কয়েকটি বিয়োজন বিক্রিয়ার বিক্রিয়ক ও কোনো একটা বিক্রিয়াজাত পদার্থের সংকেত দেওয়া আছে। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বিক্রিয়াজাত পদার্থের সংকেত লেখো। [প্রয়োজনে শিক্ষক/শিক্ষিকার সাহায্য নাও]

বিক্রিয়ক পদার্থ বিক্রিয়াজাত পদার্থ
2KClO3 $\rightarrow$.......... + 3O2
2HgO $\rightarrow$.......... + O2
2H2O2 $\rightarrow$.......... + O2

করে দেখো: একটা পাত্রে সামান্য জল ও উষ্ণওতে মিলিয়ে টুতের দ্রবণ তৈরি করো। এই দ্রবণের মধ্যে একটা পরিমাণ লোহা চূর ডুবিয়ে কিছুক্ষন রেখে দাও। কী করলে ও কী দেখলে তা লিখে লেখো।

Metal displacement

পরমাণু, অণু ও রাসায়নিক বিক্রিয়া

এখানে কী ঘটল?

টুতের (কপার সালফেট, CuSO4) দ্রবণ থেকে কিছুটা গ্রাম লোহা চূরির গায়ে বাদামি আস্তরণ তৈরি করল। তাহলে টুতের দ্রবণ থেকে যখন তামা জমা হলো, তার সঙ্গে সঙ্গে আর কী হলো?

লোহার ছুটি (কপারা কিছুটা লোহা ওই দ্রবণের মধ্যে গুলে পেলন; যদিও তা পরিমাণে এত কম যে চোখে দেখা যাবে না)। এই বিক্রিয়াটাকে সমীকরণের আকারে লিখলে কী লেখা যাবে? আমরা শিখব:

Fe + CuSO4 $\rightarrow$ FeSO4 + Cu

আবার ক্যউটিং দ্রবণ থেকে কপার কলোরিন সালফেটে রং-এর তামা (কপার) ঝিড়িয়ে পড়বে।

Zn + CuCl2 $\rightarrow$ ZnCl2 + Cu

এরকম বিক্রিয়া, যেখানে একটা মৌল অন্য মৌলের যৌগ থেকে সরিয়ে সেই জায়গা নেয়, তাকে প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া বলে।

করে দেখো: একটা পাত্রে কিছু জলের মধ্যে খাবার লবণ মিশিয়ে খাবার লবণের খুব পাতলা একটা দ্রবণ তৈরি করো। এই দ্রবণের মধ্যে কেইটা সিলভার নাইট্রেট দ্রবণ মেশাও। কী করলে ও কী দেখলে তা লেখো।

কী করলে কী দেখলে

এখানে কী ঘটল?

সোডিয়াম ক্লোরাইড (NaCl) ও সিলভার নাইট্রেট (AgNO3) বিক্রিয়া করে সাদা রঙের যে যৌগটা ঝিড়িয়ে পড়বে তা হলো সিলভার ক্লোরাইড (AgCl)।

NaCl + AgNO3 $\rightarrow$ AgCl + NaNO3

—উপরের সমীকরণটি লক্ষ্য করো। বিক্রিয়াতে যদি দেখা যায়:

কোন যৌগগুলো কোন আয়ন (বা মূলক) আলাদা হয়েছে কোন আয়ন (বা মূলক) যুক্ত হয়েছে
সোডিয়াম ক্লোরাইডCl-NO3-
সিলভার নাইট্রেটNO3-Cl-

তাহলে এই বিক্রিয়াতে দুটি বিক্রিয়ক পদার্থের মধ্যে উপস্থিত আয়ন (বা মূলক) (Cl- ও NO3-) বিনিময় ঘটে বিক্রিয়াজাত পদার্থগুলো উৎপন্ন হয়েছে। তাই এটা দ্বি-বিনিময় বিক্রিয়া

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

আবার ফেরাস সালফেটের দ্রবণে বেডিয়াম ক্লোরাইড যোগ করলে সাদা রং-এর বেডিয়াম ঝিড়িয়ে পড়ে। আর ফেরাস ক্লোরাইড দ্রবণ উৎপন্ন হয়। বিক্রিয়ার সমীকরণ হলো:

FeSO4 + BaCl2 $\rightarrow$ FeCl2 + BaSO4

নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে কীভাবে এই বিক্রিয়াটাকে আগের বিক্রিয়াটির মধ্যে ব্যাখ্যা করা যায় তা নীচের সারণিতে লেখো।

কোন যৌগগুলো কোন আয়ন (বা মূলক) আলাদা হয়েছে কোন আয়ন (বা মূলক) যুক্ত হয়েছে

নীচের সারণিতে দেওয়া বিক্রিয়াগুলোর সমীকরণ দেখে বিক্রিয়াগুলো কেমন ধরনের তা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে লেখো।

বিক্রিয়ার সমীকরণ কেমন ধরনের বিক্রিয়া
C + O2 $\rightarrow$ CO2
Zn + CuSO4 $\rightarrow$ ZnSO4 + Cu
CaCl2 + Na2SO4 $\rightarrow$ CaSO4 + 2NaCl
2Ag2O $\xrightarrow{\text{তাপ}}$ 4Ag + O2
PCl5 $\rightarrow$ PCl3 + Cl2
Fe + S $\xrightarrow{\text{তাপ}}$ FeS
2AgBr $\xrightarrow{\text{সূর্যালোক}}$ 2Ag + Br2
2H2O2 $\rightarrow$ 2H2O + O2
2FeSO4 $\xrightarrow{\text{তাপ}}$ Fe2O3 + SO2 + SO3
2Pb(NO3)2 $\xrightarrow{\text{তাপ}}$ 2PbO + 4NO2 + O2
Na2CO3 + Pb(NO3)2 $\rightarrow$ PbCO3 + 2NaNO3
HgCl2 + Cu $\rightarrow$ CuCl2 + Hg
Fe2O3 + 2Al $\rightarrow$ Al2O3 + 2Fe

পরিবেশ গঠনে পদার্থের ভূমিকা

জীবদেহে গঠন অজৈব ও জৈব পদার্থের ভূমিকা

উপরের জায়গায় তোমার জানা দুটি মৌলের নাম লেখো যাদের চারটি হলো অধাতু ও দুটি হলো ধাতু। প্রায় 72টি মৌল দিয়ে পৃথিবীর বেশিরভাগ জিনিস তৈরি হয়েছে। জীবদেহে কিন্তু 72টি মৌলের প্রতিটি পাওয়া যায় না। মাত্র 16টি মৌল নানান মৌলের আকারে জীবদেহে থাকে। পৃথিবী পৃষ্ঠ আর মানবদেহের মূল উপাদানই কী তফাত তা বুঝতে নীচের তালিকাটি দেখো। এখানে প্রতি 100 গ্রাম ওজনে কোন কোন মৌল কত গ্রাম করে আছে তা দেখানো হয়েছে।

মানব দেহের মৌলের ওজানুপাতিক শতাংশ পৃথিবী পৃষ্ঠে মৌলের ওজানুপাতিক শতাংশ
অক্সিজেন: 61.42অক্সিজেন: 46.6
কার্বন: 22.85কার্বন: <1
নাইট্রোজেন: 2.57অ্যালুমিনিয়াম: 8.1
হাইড্রোজেন: 9.99আয়রন: 5
ক্যালসিয়াম: 1.43ক্যালসিয়াম: 3.6
ফসফরাস: 1.11সিলিকন: 27.7
সোডিয়াম: 0.14সোডিয়াম: 2.8
পটাশিয়াম: 0.14পটাশিয়াম: 2.6

তালিকা থেকে তুমি এমন তিনটি অধাতব মৌলের নাম লেখো যাদের পরিমাণ পৃথিবী পৃষ্ঠের চেয়ে মানবদেহে বেশি।

  • (1) ....................
  • (2) ....................
  • (3) ....................

আরো দেখতে পাচ্ছ যে মানবদেহের ওজনের প্রায় 97 শতাংশ হলো চারটি মৌলের মিলিত ভর। এরা কী কী বলতে পারো? (1) .................... (2) .................... (3) .................... (4) ....................

শুধু মানবদেহে নয়; ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, সপুষ্পক উদ্ভিদ ও বিভিন্ন প্রাণীদের দেহের উপাদান নিয়ে পরীক্ষা করলে সেখানেও এই চারটি মৌলের (C, H, O এবং N) প্রাধান্য দেখা যায়। এই চারটি মৌল দিয়ে নানা ধরনের জৈব যৌগ তৈরি হয় যা পৃথিবী পৃষ্ঠে পাওয়া যায় না। সেখানে আবার নানা অজৈব যৌগ (প্রাকৃতিক পদার্থ) পাওয়া যায়।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

একটি সবুজ পাতাওয়ালা গাছটার কথাই ধরো — সে বাতাস থেকে নেয় কার্বন ডাইঅক্সাইড, মাটি থেকে নেয় জল আর কিছু খনিজ লবণ। এরাইবাই অজৈব যৌগ। জৈব যৌগ আর সূর্যের আলোর শক্তি কাজে লাগিয়ে গাছ তৈরি করে মুকো। এটি একরকমের জৈব যৌগ যা পৃথিবী পৃষ্ঠে মৌলের কোনো পাওয়া যায় না। এই নতুন যৌগ তৈরি করার ক্ষমতা — এ হলো জীবের ধর্ম। শুধু মুকোয়াজ নয়, নানাগাছে আরও অনেক জৈব যৌগ তৈরি করতে পারে। তার অনেকটাই আমাদের ওষুধ। কোনোটা গুনছি, কোনোটা পোকা ভাড়ায়। আবার কোনোটা বা রং। এই নানারকমের জৈব যৌগ তৈরি ফলেই জীব আর অজুগ্যতার তফাত হতে দিয়েছে।

জীবদেহের নানা যৌগ

জীবদেহ গঠনের একটি গুরুত্বপূর্ণ যৌগ হলো জল। মানুষের দেহে এই জলের পরিমাণ প্রায় 70 শতাংশ। এই জলের প্রায় চার ভাগের তিন ভাগ কোষের মধ্যে থাকে। বাকি জল কোষের বাইরে আর রক্তে থাকে।

স্ত্রীদের তুলনায় পুরুষদের দেহে প্রায় 10 শতাংশ জল বেশি থাকে।

ওজনের শতাংশের বিচারে বয়স্কদের তুলনায় শিশুদের দেহে জলের পরিমাণ বেশি থাকে।

ওজনের শতাংশের বিচারে রোগা কোষের চেয়ে মোটা কোষের তুলনায় জল বেশি থাকে।

জীবদেহে ফ্যাক্টর পরিমাণ বেশি থাকলে শতাংশ পরিমাপ কম যায়।

প্রাণধারণ করার জন্য অক্সিজেনের পর গুরুত্বপূর্ণ হলো জল। কয়েকদিন জলপান না করলে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। কার্বোহাইড্রেট, লিপিডস্ ও প্রোটিন হজম হওয়ার পর তাদের সারাংশ জলের মাধ্যমেই সাপাদেহে ছড়িয়ে পড়ে। আবার দেহ উষ্ণতা ধ্রুবিত পদার্থ জলের মাধ্যমেই দেহ থেকে বেরিয়ে যায়। এক্ষেত্রে জল দ্রাবক পদার্থ পালন করে। এছাড়াও জল দেহের নানা রাসায়নিক ক্রিয়ায় (খাদ্যসংগ্রহ, পরিপাক, শক্তি উৎপাদন ইত্যাদি) অংশগ্রহণ করে।

Aquatic animal

শামুক, ঝিনুকের দেহের বাইরে খুব শক্ত খোলস থাকে। এটি ক্যালসিয়াম কার্বনেট দিয়ে গঠিত হয়। জিবের দেহীত ক্যালসিয়াম আয়ন ও কার্বন ডাইঅক্সাইড কাজে লাগিয়ে শামুক, ঝিনুকরা এই যৌগটি তৈরি করে। আবার জলের মধ্যে চলে যাওয়া অবয়বের জন্য উদ্ভিদ ও প্রাণীরা বেঁচে থাকে। জলের মধ্য দিয়ে চলাচল করতে পারে বা জলজ উদ্ভিদরা খাদ্য তৈরি করতে পারে। এরকম তিনটি উদ্ভিদের নাম লেখো।

  • (1) ....................
  • (2) ....................
  • (3) ....................

জীবদেহ গঠনে অপর গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো নানা ধাতব আয়ন

টুকরো কথা

এই কথাগুলোর মানে কী? কথাগুলো কী সত্যি?

  • "ছোটো মাছ খাওয়া ভালো, ওতে ক্যালসিয়াম আছে।"
  • "ডাক্তারবাবু মা-কে ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট দিতে দিয়েছেন।"
  • "মোটা খেলে শরীর আয়ন পায়।"

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

তুমি যদি একটা ধানের বীজ পুঁতে দাও, কয়েকদিন পরে কী দেখতে পাবে? ........................!

ধানের বীজ থেকে চারা বেরোনোর জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি আসে শস্য থেকে। এজন্য একে অন্ত্যস্থ খাদ্য বলা হয়। লিসিডেরা জলে গোলেনা। কক্ষে লিপিড ওতে তাপশক্তি উৎপন্ন হয়। আর চামড়ার লিসিডের লিসিডের মোটা স্তর থাকলে শীতের হাত থেকে রক্ষা পায়। এরকম দুটি প্রাণীর নাম করো যাদের চামড়ার নীচে পুরু লিপিডের স্তর দেখা যায় – ........................ ও ........................।

প্রোটিন হলো এমন একটি যৌগ যা প্রায়ই প্রাণীদের গঠন ও তার বিভিন্ন কাজের কথা ভাবাই যায় না। ইতিমধ্যেই তোমরা মানব দেহের কোথায় কোথায় প্রোটিন আছে তা ধরো জেনেছ (চুল, নখ, চামড়া, পেশি, রক্ত)। বিশেষ বিশেষ প্রোটিনই আমাদের রোগ জীবাণু হাত থেকে বাঁচায়। আবার রক্তের লোহিত কণিকায় হিমোগ্লোবিন প্রোটিন দেহের সব জায়গায় অক্সিজেন পৌঁছে দেয়। বিভিন্ন উৎসেচক (এনজাইম) আমাদের দেহের নানান বিক্রিয়া (খাদ্যসংগ্রহ, খাদ্যের পাচন, জীবাণু মেরে ফেলা, শক্তি উৎপাদন) ভাড়ায়ও ঘটতে সাহায্য করে।

কোনো উদ্ভিদ বা প্রাণীর বাহকরা কেমন দেখতে হয় তা ঠিক করে নিউক্লিক অ্যাসিড। আবার কোন জীবের কেমন আচরণ হবে তাও ঠিক করে দেয় এই নিউক্লিক অ্যাসিড। এরকম তোমার জানা কয়েকটি বিশেষ প্রাণী বা উদ্ভিদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো যা অন্য উদ্ভিদ বা প্রাণীতে দেখা যায় না।

  • (1) মানষোন্তঃ অরণ্যে জন্মানো উদ্ভিদ : ............................................................................
  • (2) রাতের বেলায় শিকার করতে বেরোনো প্রাণী : ............................................................
  • (3) শুকনো আর গরম অঞ্চলে বেড়ে ওঠা উদ্ভিদ : ............................................................

পরিবেশ গঠনে পদার্থের ভূমিকা

সাধারণ অভিজ্ঞতা থেকে আম্লিক ও ক্ষারীয় দ্রব্য শনাক্তকরণ

জীবনধারণের জন্য উদ্ভিদ ও প্রাণীর খাদ্যের প্রয়োজন, এটা আমরা জানি। আমরা এটাও জানি যে সবুজ উদ্ভিদ তার নিজের খাদ্য নিজেই তৈরি করে। আর বিভিন্ন রূপে সেই খাদ্য চক্রাকারে ভূপৃষ্টের থেকে মাসব্যাপী প্রাণীতে ছড়িয়ে পড়ে। তোমরা ভেবে বলো তো উদ্ভিদের কোন কোন অংশ সাধারণত আমরা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করি?

উদ্ভিদ দেহের অংশ কোন গাছের অংশ
মাটির তলার মূলবিট, গাজর, মুলো
মাটির তলার বা উপরের কাণ্ড
ফল

তোমরা যেসব ফল খেয়েছ বা সবজি হিসেবে যে সমস্ত গাছের ফল আমরা খাই তাদের স্বাদ কি একরকম? নিজেদের আগের অভিজ্ঞতা থেকে বলাবলি করে লেখো —

পরিচিত ফলের নাম

পরিচিত ফলের নাম তাদের স্বাদ
পাতিলেবু
পাকা আম
আনারস

অম্লের ধারণা

তাহলে দেখা গেল যে, সব ফলের স্বাদ একরকম নয়—কোনো ফল মিষ্টি, কোনোটা টক মেশানো মিষ্টি স্বাদের, আবার কোনোটা শুধুই টক। তোমরাই তাহলে ভাবো, মিষ্টি ফলের থেকে অন্য ফলগুলো স্বাদে আলাদা হলো কেন? অন্য ফলগুলোয় নিশ্চয়ই এমন কিছু আছে যার জন্য তাদের স্বাদ টক।

নমুনা দ্রব্যটির স্বাদ নমুনাটি কী মনে হয়

শিক্ষক/শিক্ষিকার সাহায্যে তিনটি ছোটো কাচের গ্লাসে কিছুটা চিনের দ্রব্য, গ্লসের দ্রবণ ও ভিনিগার দ্রবণ তৈরি করো। দ্রবণ ঝিনুকের স্বাদ নিয়ে তাদের চেনার চেষ্টা করো।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

দেখা যাচ্ছে যে ফল ছাড়াও এমন অনেক জিনিস আছে যাদের স্বাদ টক। যেমন – টকে যাওয়া দুধ, ভিনিগার, দই।

আমরা এর থেকে কি বুঝতে পারছি যে ওপরের জানা টক স্বাদের জিনিসগুলোয় এমন একটা সাধারণ (Common) জিনিস মিশে আছে যেটা ওদের টক স্বাদের জন্য দায়ী? সেই জিনিসটাকে আমরা অ্যাসিড (Acid) বলি।

অ্যাসিড কথাটা কোথা থেকে এসেছে? ল্যাটিন শব্দ Acidus থেকে, যার অর্থ টক বা অম্ল।

দলগত কাজ - চলো আমরা স্কুলের চারপাশে বা বাড়ির চারপাশে কী কী টক স্বাদের ফলের গাছ দেখা যায়, তার একটা তালিকা বানাই:

...................... গাছ,...................... গাছ।

আমরা জেনে নিই পরিচিত কিছু জিনিসের মধ্যে কী কী অ্যাসিড আছে (প্রয়োজনে শিক্ষক/শিক্ষিকার সাহায্য নাও):

আপেলম্যালিক অ্যাসিড
পাতিলেবুসাইট্রিক অ্যাসিড ও অ্যাসকরবিক অ্যাসিড
কমলালেবুসাইট্রিক অ্যাসিড ও অ্যাসকরবিক অ্যাসিড
তেঁতুলটারটারিক অ্যাসিড
টমেটোঅক্স্যালিক অ্যাসিড
চাঅক্স্যালিক অ্যাসিড
দই
ভিনিগার
সোডাওয়াটার
মিউরিয়েটিক অ্যাসিড
Apple Lemon Curd

উদ্ভিদ দেহে যে শুধু অ্যাসিড থাকে তা না। এমন অনেক অ্যাসিড আছে যা বিভিন্ন প্রাণী বা মানুষের দেহেও পাওয়া যায়। একটা ছোটো লাল পিঁপড়ে কামড়ালে যে সেই জায়গাটা জ্বালা করে। তোমরা লক্ষ্য করবে থাকবে লেবুর রস যেমন সিমেটেরিয়া মেখেও লালা সৃষ্টি করে, তেমনি বড়ো পিঁপড়ে মরে গেলেও তার দেহ থেকে বেরোনো রাসও লাল সিমেটেরিয়া মেখেও প্রায় একইরকম জ্বালা তৈরি করে।

এরকম ঘটে যাবে যে আমাদের জামাকাপড় কোনো দোষে কোনো দাগ তোলার জন্য এবং লেবুর রস (বা যেকোনো অ্যাসিড) ব্যবহার করা হয়। দৈনন্দিন জীবনে অ্যাসিড ব্যবহারের আরও অনেক উদাহরণ পাওয়া যায়।

পরিবেশ গঠনে পদার্থের ভূমিকা

আমাদের নানা কাজে অ্যাসিড লাগে। এরকম কোনো ক্ষেত্রে অ্যাসিডের ব্যবহার তোমাদের জন্য আছে কি? আলোচনা করে লেখো।

কী জিনিস কোন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত

একটা ছোটো কাচের গ্লাসে এক চামচ ভিনিগার নিয়ে আধা গ্লাস জলে মেশাও অথবা পাতিলেবুর রস নাও। তার মধ্যে এক চিমটে খাবার সোডা মেশাও। প্রয়োজনে শিক্ষক/শিক্ষিকার সাহায্য নাও।

—এবার লক্ষ্য করো কিন্তু ঘটছে কিনা?

কী করা হলো কী দেখা গেল
Vinegar soda Lemon soda

এটা কেন হলো বলো তো? এর কারণ হলো লেবুর রস বা ভিনিগারে যে অ্যাসিড আছে, সেটা খাবার সোডার সঙ্গে বিক্রিয়া করেছে।

ক্ষারকের ধারণা

অন্য একটা ছোটো কাচের গ্লাসে পানীয় জলের মধ্যে শিক্ষক/শিক্ষিকার সহায়তায় ছাত্রছাত্রীরা খাবার সোডার দ্রবণ তৈরি করো। এবার তোমরা আখের তেল দেওয়া ভিনিগার দ্রবণ (যা লেবুর তেল দেওয়া রস), কিছুটা চুনজল ও এখন তৈরি হওয়া প্রবণতার স্বাদ নাও। তোমাদের অনুভূতির কথা লেখো।

কীসের দ্রবণ তার স্বাদ
ভিনিগার দ্রবণ
খাবার সোডার দ্রবণ
চুনের জল

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

তোমরা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছ যে এই তিনটে দ্রবণ স্বাদে ভিন্ন। তাহলে বোঝা গেল যে প্রথম দুটো একইরকম নয়। তবে কি ভিনিগার যে অ্যাসিড সেটা আমরা আগেই জেনেছি। তাহলে অন্য জিনিসগুলো কী?

তোমার বাড়ির কাছে গিয়ে দোকানে গিয়ে জানার ও দেখবার চেষ্টা করো দোকানদাররা কাকু কীভাবে চুন তৈরি করেন। লক্ষ্য করলে দেখতে পাবে বেশ খানিকটা জলের মধ্যে পাথরে চুন দিয়ে কেমনভাবে জলটা উৎপন্ন করে ফুটতে থাকে। একই সঙ্গে কেমন শোষ -শো করে আওয়াজ হয়। এই চুন জল কিন্তু দোকানের কাকু সহজে সহজাই ব্যবহার করেন না। বেশ কয়েকদিন রাখার পর তবে তিনি তা ব্যবহার করতে পারেন।

খেয়াল রাখো - ভিনিগার - যেমন চুন জল বরাবর করবে তখন অনেক আসে থাকে। যেখানে চুন মিশলে মিশে দ্রবণ তৈরি করে তার ওপর থেকে সাবধানে কিছুটা জল নিলে হবে। চুন জল কেন কোনোভাবে চোখে বা মুখে না পড়ে।

তোমরা লক্ষ্য করে থাকবে যে আমরা বা ফলগুলো গাছের পাতায় বীজ থেকে অন্য গাছের চারা জন্মাবে না। তার কারণ কী বলো তো?

গাজর - এই গাজরগুলো পাতায় অ্যাসিড থাকে। পাতা চিবোলেও টক স্বাদ পায়। ফলে মাটিতে পড়া পাতা থেকে নীচের মাটির অংশ বেড়ে যায়। তখন মাটির উপর অজৈব জমা মাটিতে চুন মেশানো হয়। তোমরা এও জানো যে পুকুরে মাছ চাষ করার সময় ওদের অজৈব জমা জলের মধ্যে চুন মেশানো হয়।

এই ধরনের পদার্থ অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়া করে তাদের আমরা ক্ষারক (Base)। যেসমস্ত ক্ষারক জলে দ্রবীভূত হয় তাদের বলা হয় অ্যালকালি। লঘু ক্ষারীয় দ্রবণের স্বাদ কড়া ধরনের ও গাত্রে ঘষালে পিচ্ছিল অনুভূতি হয়। সাবান ক্ষারক কিন্তু সব ক্ষারক নয়। মনে রেখো গাঢ় ক্ষারীয় দ্রবণ চামড়া ও চোখের পক্ষে ক্ষতিকারক।

চুনের অথবা অন্য কোনো ক্ষারকের ব্যবহার জানা থাকলে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করে লেখো:

জিনিসের নাম তার ব্যবহার

আমাদের শরীরেও অনেকরকম অ্যাসিড আছে তা কি তোমরা জানো?

আমাদের শরীরের বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় বা গাম্বজমূলক কাজে নানাধরনের অ্যাসিড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমন – বাজারে যে মিউরিয়েটিক অ্যাসিড পাওয়া যায়, সেটির প্রধান উপাদান আমাদের পাকস্থলীতে খাবার হজম করার সাহায্যে তৈরি হয়। তার নাম কী বলো তো? – হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড

তাহলে আমাদের শরীরের পাকস্থলীতো অ্যাসিড আছে, আবার সেটা আমাদের জানা যে অয়নাশক বা অ্যাসিডটাসি জাতীয় জিনিসটা খাওয়া হলো, সেটি হলো ক্ষারক।

সব জিনিসের তো স্বাদ গ্রহণ করা যায় না, সেটি শারীরবিজ্ঞানসম্মত নয়। তাহলে কীভাবে আমরা অ্যাসিড চিনতে ও বুঝতে পারো? চলো দেখা যাক।

পরিবেশ গঠনে পদার্থের ভূমিকা

নির্দেশক ধারণা

তোমাদের বাড়ির বা ফুলের আশপাশ থেকে কয়েকটি লাল জবা ফুল আনো। তারপর জবাফুলের পাপড়িগুলো ছিঁড়ে ও ছেঁটো ছোটো গ্লাসে রেখে তার মধ্যে সামান্য ঈষদুষ্ণ জল ঢালো। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলে যে দ্রবণ উৎপন্ন হবে সেটা আমাদের অ্যাসিড-ক্ষার চিনতে সাহায্য করতে পারে। দেখা যাক।

Hibiscus experiment

তোমরা দুটা আলাদা কাচের গ্লাসে জবাফুলের পাপড়ির রস নিয়ে, একটা মধ্যে কিছুটা ভিনিগার আর অন্যটা কিছুটা চুনজল যোগ করে তোমাদের পার্থক্য লেখো। (অন্য কিছুও নেওয়া যেতে পারে।)

কী মেশানো হলো আগে কী হলো পরে কী হলো

ভিনিগার হলো অ্যাসিড, সেটা জবাফুলের পাপড়ির রসের রংকে.................... থেকে .................... করল। আবার চুনজল হলো ক্ষারক, সেটা আবার জবাফুলের পাপড়ির রসকে .................... রং থেকে .................... করল। এখানে জবাফুলের পাপড়ির রসের কাজটি কী হলো? সেটি অ্যাসিড ও ক্ষারক চিনতে সাহায্য করল। তাই এটি নির্দেশক। জবা পাপড়ির রস এখানে নির্দেশক হিসাবে কাজ করে।

চলো একটা নতুন কৌশলে ছবি অক্ষর চেষ্টা করি। তোমরা হলুদগুঁড়ো সামান্য জলে মিশিয়ে একুট্রা ফিল্টার কাগজ মিশিয়ে মিশ্রণের প্রলেপ দাও। কাগজটা রোদে শুকিয়ে নাও। একটা কাঠির মাথায় তুলো পাকিয়ে একটা তুলি তৈরি করে খাবার সোডার বা চুনের জল বা সাবান জলে ডুবিয়ে ওই কাগজটার ওপর একটা মনের মতো ছবি আঁকো তো!

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

Turmeric powder

হলুদ গুঁড়ো

Soap water

সাবান জল

তোমাদের জানা এমন কোনো জিনিস আছে, যাদের রং অ্যাসিড বা ক্ষারকে পাল্টা যায়? এরকম কোনো বিষয় জানা থাকলে নিচে লেখো।

কী জিনিস তার নিজের রং অ্যাসিডে কী রং ক্ষারকে কী রং
হলুদের জল
বিটের রস
কালোজামএর রস

তোমার বন্ধুকে একটা গোপন নির্দেশ পাঠাও? একটু সাহায্য করা! খাবার সোডা কিছুটা জলের মধ্যে মেশাও ও আগের মতো একটা তুলি তৈরি করে একটা সাদা কাগজে ফেনাটা ব্যবহার করো। রোদে শুকিয়ে নিতে কি হবে বলতো? — সাদা কাগজ সাদা হয়ে যাবে। যে পত্রে তাকে অংশ। একটা কথা অংশ থেকে এই শিখিয়ে রাখো যে একটা বিট টুকরো কেটে কাগজের লেখার উপর নিয়ে তবে পাবে।

এছাড়াও অনেক জৈব পদার্থ নির্দেশক হিসাবে ব্যবহার করা যায়।

অ্যাসিড-ক্ষার বিক্রিয়া

করে দেখো: আমরা আগেই দেখেছি যে জবাফুলের পাপড়ি রস অ্যাসিড বা ক্ষারক মেশালে তার রং-এর পরিবর্তন হয়। নির্দেশকের এই ধর্মটি কাজে লাগিয়ে নীচের পরীক্ষাটি করে দেখো।

একটা কাচের ছোটো গ্লাস (বা বোতলে) আগের পাতার জবা পাপড়ির পরীক্ষার মতো ভিনিগার দ্রবণ নাও। আর তার মধ্যে আগের তৈরি জবা পাপড়ির কিছুটা দ্রবণ ঢালো। প্রথমে রংটা কেমন হলো? ........................।

এরপর এই মিশ্রণে ধীরে ধীরে ফেঁটা ফেঁটা করে খাবার সোডার দ্রবণ (বা চুন জল) যোগ করতে থাকো। কাপড়দাহ দিয়ে যখন ফেঁটা ফেঁটা করে, সেই জায়গাটা ভালো করে লক্ষ্য করো। ধীরে ধীরে দ্রবণের রং-এর কী পরিবর্তন ঘটছে তা লেখো:

একরকমভাবে খাবার সোডার দ্রবণ (বা চুন জল) যোগ করার ফলে একসময় গোলাপি রং যে মুহূর্তে সবচেয়ে মসৃণ হলো, তখন কী হলো বলো তো?

ঠিক তখনই গ্লাসের ভিনিগার দ্রবণের সঙ্গে খাবার সোডার দ্রবণের বিক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে, দ্রবণে ক্ষারক ধর্ম প্রকাশ পেতে শুরু করল।

পরিবেশ গঠনে পদার্থের ভূমিকা

এরপর ওই সবুজ দ্রবণে আরও কয়েক ফেঁটা খাবার সোডার দ্রবণ মেশাও দ্রবণের রং-এর কী পরিবর্তন হলো?

এবার কিছুটা ভিনিগার দ্রবণ তার মধ্যে মেশাও। একেবারে প্রথম অবস্থায় জবা পাপড়ির দ্রবণ মেশানো দ্রবণের সঙ্গে কোনো মিল পেলে?

উপরে জবা পাপড়ির রং পালটে যাওয়া থেকে কী বোঝা গেল?

ঠিক যে সময় জবাফুলের পাপড়ি দ্রবণ মেশানো ভিনিগার দ্রবণে অন্তত এক ফেঁটা খাবার সোডার দ্রবণ (বা চুন জল) বেশি মেশানো হলো তখনই দ্রবণের রং গোলাপি থেকে সবুজ হলো। তাহলে খাবার সোডার দ্রবণ মেশানোর ফলে ভিনিগার দ্রবণের ধর্ম কি একই থাকল?

ভিনিগার দ্রবণে যত বেশি খাবার সোডা দ্রবণ মিশতে থাকে, ভিনিগারের সঙ্গে খাবার সোডা বিক্রিয়া করে ভিনিগার দ্রবণের অ্যাসিড ধর্ম তত কমে যায়। যে বিক্রিয়া ফলে এক্ষেত্রে ভিনিগারের অ্যাসিড ধর্ম আর থাকল না তাকেই আমরা সাধারণভাবে প্রশমন বিক্রিয়া বলি।

  • উপরের প্রশমন বিক্রিয়াটি বিট রস বা কালোজামএর রসের সাহায্যে নিজেরা করে দেখো।

করে দেখো : কতকগুলো নির্দেশক (যেমন—লিটমাস, ফেনলফথ্যালিন বা মিথাইল অরেঞ্জ) নিয়ে তাদের মধ্যে বিভিন্ন দ্রবণের রং-এর কেমন পরিবর্তন হয়, সেটা শেষে নীচের সারণিতে লেখো।

দ্রবীয় দ্রবণ নীল লিটমাসএর রং লাল লিটমাসএর রং ফেনলফথ্যালিনএর রং
সাবান/পুঁড়ো ডিটারজেন্ট জল
লেবুর রস

রোজকার জীবনে তোমাদের বাড়ির চারপাশে এমন কোনো প্রশমন বিক্রিয়ার উদাহরণ জানা থাকলে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করে লেখো:

কী কাজে প্রয়োগ হয় কী মেশানো হয় কেন মেশানো হয়
পুকুরের জলে
মাটিতে

বায়ুতে দহন কার্বন ডাইঅক্সাইড, সালফার ডাইঅক্সাইড, নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইডএর মতো নানা গ্যাস মিশে যায়। অনেকদিন পরে বৃষ্টি হলে ওই গ্যাসগুলো বৃষ্টির জলের মধ্যে মিশে বৃষ্টির সঙ্গে পড়ে। তখন পরীক্ষা করে দেখতো তো বৃষ্টির জলের মতো আম্লিক না ক্ষারীয় কোন ধর্ম দেখা যায়।

অ্যাসিড-ক্ষার দ্রবণের তাদের পরিমাণ সম্বন্ধে ধারণা

নির্দেশক ব্যবহার করে অ্যাসিড বা ক্ষারক কীভাবে চেনা যায় সেটা আমরা দেখেছি। কিন্তু সব অ্যাসিড দ্রবণ কী একই পরিমাণে আম্লিক? তা যে নয়, এসো সেটা আমরা বোঝার চেষ্টা করি।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

কর্মপত্র

  • (a) জীবদেহ বা জৈব উৎস থেকে পাওয়া যায় এরকম তিনটি অ্যাসিডের নাম লেখো—
    1. (1) ....................
    2. (2) ....................
    3. (3) ....................
  • জৈব উৎস থেকে পাওয়া এইধরনের অ্যাসিডগুলো তাহলে কী ধরনের অ্যাসিড?

    — জৈব অ্যাসিড।

  • (b) জৈব উৎস নয় এমন উৎস থেকে পাওয়া অ্যাসিডগুলোকে তাহলে কী ধরনের অ্যাসিড বলা হবে?

    ....................

  • এদের অপর নাম খনিজ অ্যাসিড। এরকম অ্যাসিডের উদাহরণ কী কী হতে পারে?
    1. (1) ....................
    2. (2) ....................
  • জলের মধ্যে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড যার সংকেত HCl, তা দিলে কী হয়?
  • জলীয় দ্রবণের মধ্যে অ্যাসিডটা আয়নিত হয়?
  • HCl $\rightarrow$ H+ + Cl-

    অ্যাসিড ভেঙে তৈরি হওয়া হাইড্রোজেন আয়ন (H+) জল অণুর সঙ্গে জুড়ে গিয়ে জলীয় দ্রবণে H3O+ রূপে থাকে, যাকে হাইড্রোনিয়াম আয়ন বলে।

    H+ + H2O $\rightarrow$ H3O+

    তাহলে জলীয় দ্রবণে HCl-এর বিয়োজন বিক্রিয়াটি কীভাবে লেখা যাবে?

    HCl + H2O $\rightarrow$ H3O+ + Cl-

  • (C) জলীয় দ্রবণে HCl ভেঙে গিয়ে কী কী উৎপন্ন করছে?
  • এখন প্রশ্ন হলো, আরও কী কী মৌল হাইড্রোনিয়াম অ্যাসিডের (HCl) বা অন্য কোনো অ্যাসিডের অ্যাসিডের মধ্যে জলের জন্য কী কী দরকার?

    অন্য কয়েকটি অ্যাসিডের সংকেত ও সেগুলো জলীয় দ্রবণে কীভাবে আয়নিত হয় তা দেখলে বিষয়টা স্পষ্ট হয় কিনা দেখো।

    অ্যাসিডের নাম ও সংকেত জলীয় দ্রবণে কীভাবে ভাঙতে পারে
    ফরমিক অ্যাসিড (HCOOH)HCOOH $\rightarrow$ HCOO- + ....................
    নাইট্রিক অ্যাসিড (HNO3)HNO3 $\rightarrow$ .................... + ....................
    সালফিউরিক অ্যাসিড (H2SO4)H2SO4 $\rightarrow$ .................... + SO42-

    বিভিন্ন অ্যাসিড অণুগুলির ভাঙনের বিক্রিয়ার সমীকরণ দেখে বলতে পারো কোন আয়ন সব অ্যাসিড থেকে তৈরি হয়?

পরিবেশ গঠনে পদার্থের ভূমিকা

এইটাই তাহলে এই পদার্থগুলোর জলের ধর্ম দায়ী। যে সমস্ত যৌগ জলীয় দ্রবণে হাইড্রোক্সাইড আয়ন (OH-) (প্রকৃতপক্ষে হাইড্রোনিয়াম আয়ন, H3O+) তৈরি করে তাদের অ্যালকালি বলা হয়।

জলীয় যেমন জলীয় দ্রবণে ভেঙে গিয়ে H+ (প্রকৃতপক্ষে H3O+) উৎপন্ন করে, চুন বা অন্য কিছু যৌগ জলীয় দ্রবণে হাইড্রোক্সাইড আয়ন (OH-) উৎপন্ন করে। চুনজলের মধ্যে ক্যালসিয়াম বিয়োজন বিক্রিয়াটি কীভাবে লেখা যাবে: Ca(OH)2 $\rightarrow$ Ca2+ + 2OH-

জলীয় দ্রবণে এই সমস্ত যৌগগুলি হাইড্রোক্সাইড আয়নকে অ্যাসিডের হাইড্রোজেন আয়ন (H+) সঙ্গে যুক্ত করে জল উৎপন্ন করে। এই যৌগগুলোই ক্ষার বলা হয়। অ্যাসিড-ক্ষার প্রশমন বিক্রিয়ায় জল উৎপন্ন হয়।

অ্যাসিডের হাইড্রোজেন আয়ন (H+) + ক্ষারের হাইড্রোক্সাইড আয়ন (OH-) $\rightarrow$ জল (H2O)

কোনো নির্দেশকই জল অ্যাসিড বা ক্ষার কোনো ধর্মই দেখায় না। তাই জলকে প্রাথমিকত প্রশম প্রকৃতির দ্রবণ থেকে যায়।

আমরা তাহলে অ্যাসিড-ক্ষার ধর্মের তুলনা করে লিখতে পারি :

অ্যাসিডের ধর্ম ক্ষারের ধর্ম
(1) সাধারণভাবে অ্যাসিডের স্বাদ ..............।(1) সাধারণভাবে ক্ষারের স্বাদ ..............।
(2) অ্যাসিড জলে মেশানো .............. লিটমাসকে .............. করে।(2) ক্ষার জলে মেশানো .............. লিটমাসকে .............. করে।
(3) অ্যাসিড জলীয় দ্রবণে H+ উৎপন্ন করে।(3) ক্ষার জলীয় দ্রবণে .............. উৎপন্ন করে।

কোন দ্রবণ কতটা আম্লিক বা কতটা ক্ষারীয় তা মাপা হয় pH রাশির সাহায্যে। 0 থেকে 14 পর্যন্ত বিস্তৃত একটি স্কেল এই কাজে ব্যবহৃত হয়।

pH – এর ক্ষেত্রে কেমন?

pH scale

25°C উষ্ণতা দ্রবণ প্রশম দ্রবণ (যেমন-জলের) pH 7 বলা হয়। যে দ্রবণের pH 7-এর থেকে কম (শূন্য পর্যন্ত) সেটি আম্লিক প্রকৃতির। আর যে দ্রবণের pH 7 -এর চেয়ে বেশি (14 পর্যন্ত) সেটি ক্ষারীয়

জেনে রাখো : সহজে pH মাপার জন্য লিটমাস কাগজের মতো pH-কাগজ পাওয়া যায়। pH-কাগজ তৈরিতে একাধিক নির্দেশক দ্রবণ ব্যবহৃত হয়। একাধিক নির্দেশক থাকলে বিভিন্ন pH-এ কাগজের রং ভিন্ন হয়। অন্য জটিল পরীক্ষায় সহজে pH মাপা সম্ভব। এক্ষেত্রে তোমরা জানতে পারবে।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

নীচের দ্রবণগুলোর pH 7, না 7-এর কম, না 7-এর বেশি – কীরকম হতে পারে? pH কাগজের সাহায্যে পরীক্ষা করে লেখো:

কী দ্রবণ pH -এর মান 7 এর ওপরে না নীচে দ্রবণের প্রকৃতি (আম্লিক/ক্ষারীয়/প্রশম)
ভিনিগারের জলীয় দ্রবণ
সাবান জল
খাদা লবণের জলীয় দ্রবণ
খাবার সোডার জলীয় দ্রবণ
পাতিলেবুর রস

এসো দেখি তোমার পরিচিত আর কোন কোন উপাদানের pH কীরকম।

  • 1. তোমার কাছাকাছি বাজারে বা তোমার পরিচিত নানা রসালো বা অন্য খাদ্য সংগ্রহ করো (টমেটো, আম, আঙুর, তরমুজ, কমলালেবু, মাছ, ডিমের সাদা অংশ ইত্যাদি)। এদের pH-এর মান কত হতে পারে তা পরীক্ষা করে দেখো আর আগের সারণির মতো একটা সারণি বানাও। বিভিন্ন ফলের সংস্পর্শে pH পেপারএর রং পরিবর্তন থেকে সেই ফলের pH-এর সম্ভাব্য মান নির্ণয় করো।
  • 2. তোমার পরিবেশে জলীয় দ্রবণে উৎপাদিত চিত্রিত করো (পুকুর/নদী/বড়প/নদী/খাল/বিল/টাপ ওয়াব/বৃষ্টির জল ইত্যাদি)। এদের জলের প্রকৃতি বিভিন্ন নির্দেশক ব্যবহার করে জানার চেষ্টা করো। দেখতো তো বছরের বিভিন্ন সময় এদের pH-এর মান বাড়ে বা কমে কিনা। বোঝার চেষ্টা করো পরিবেশের জল কোন কোন উপাদান মিশলে pH-এর মান হেরফের হয় তা দেখো।
  • 3. তোমার আশপাশে কি সব ফসলের চাষ ভালো হয়? সব ফসলের একইরকম ভালো হয়? তোমার আশপাশে চাপজমিন সংগ্রহ করো। (চাষের জমি থেকে ভালো নমুনা নিচে জলজ দ্রবণ তৈরি করো। দ্রবণের এক অংশে নির্দেশক যোগ করে দেখো কোন পরিবর্তন হয়। প্রয়োজনে pH পেপারএর সাহায্য নিতে পারো)। দেখতো সব জমির মাটির একইরকম কিনা। প্রয়োজনে লিটমাস কাগজ, pH পেপারএর সাহায্য নাও।
pH paper colors

বিভিন্ন pH-এ pH কাগজের রং কেমন হতে পারে তার একটা নমুনা ওপরে দেওয়া হলো।

মানবদেহে অম্ল-ক্ষারের ভারসাম্য

তোমরা আগেই অ্যাসিডের এবং ক্ষারের কিছু জিনিস তুমি চিনেছ। দেখো তো কোনটা তুমি চিনতে পারো কি না বা যাদের যার মধ্যে কোনো অ্যাসিড মিশে আছে। নীচের তালিকায় আম্লিক জিনিসগুলোর ওপর চিহ্ন দিয়ে দাও:

মিউরিয়েটিক অ্যাসিড (বাথরুম পরিষ্কার করার অ্যাসিড), সাবান, লেবুর রস, খাবার জল, দই, ঘোল, ল্যাকটিক অ্যাসিড (যা দিয়ে ছানা কাটানো হয়), চুনজল, বড়ো বাজারের জল।

চিনবে কীভাবে? যেগুলোকে অ্যাসিড বলে জেনেছ, সেগুলো কীভাবে চিনেছ?

তাদের মধ্যে কোনো মিল আছে?

মনে রেখো, সব অ্যাসিড মুখে নেওয়া উচিত নয়, দেহের কোনো জায়গায় বা কাপড়ে লাগানো উচিত নয়। অ্যাসিডের প্রভাবে শরীরে ঘা হতে পারে, কাপড় ফুটো হয়ে যেতে পারে।

তবে আর কি উপায়ে অ্যাসিড চেনা যায়? এসো দেখি:

তোমাদের লাগবে ব-টিউনিটি করে লাল লিটমাস কাগজ আর নীল লিটমাস কাগজ, আর যে জিনিসগুলোকে অ্যাসিড বলে চিনতে চাও, তার সামান্য অংশ।

সহজে যোগাড় করতে পারো : লেবুর রস, দই, চুনজল, সাবান জল, খাবার জল।

এবার লিটমাস কাগজগুলোকে ছোটো টুকরোয় ছিঁড়ে প্রতিটি দ্রবণে একবার এক টুকরো নীল লিটমাস কাগজ আর একবার এক টুকরো লাল লিটমাস কাগজ ডোবাও। নীচের ছকে দেখো তো লিটমাস কাগজের রঙের কী পরিবর্তন হলো? (এক টুকরো লিটমাস কাগজ মাত্র একবারই ব্যবহার করবে)।

ক্রম জিনিসটির নাম নীল লিটমাসের রং কী হলো লাল লিটমাসের রং কী হলো
1.
2.
3.

তাহলে অ্যাসিড চেনার উপায় কী জানলাম লেখো।

মনে রেখো এটা অ্যাসিডের ধর্ম

তোমরা তো ক্ষারের নামও নিশ্চয়ই জানো। দেখো তো নীচের অ্যাসিডের কতগুলো ক্ষারীয় পদার্থকে চিনতে পারো – লেবুর জল, সাবান জল, খাবার জল, চুনের জল, খাবার সোডা মেশানো জল, দই, চুনজল।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

ফারপুলোকে বা কী পরীক্ষা করে চিনবে?

তাদের মধ্যে মিল কোথায়?

অ্যাসিডের মতো ক্ষারীয় পদার্থ মুখে দেওয়া, গায়ে ফেলা বা কাপড়ে ফেলা অনুচিত।

এক চিনতে গেলেও তোমার লাগবে লাল আর নীল লিটমাস কাগজ, আর যে জিনিস পরীক্ষা করতে চাও তার একটু করে অংশ:

সাবান জল, চুনের জল, সোডার জল ইত্যাদি।

এবার প্রতিটি জিনিসে একবার করে লাল লিটমাস কাগজ আর নীল লিটমাস ডুবিয়ে তোলো। লিটমাস কাগজের রং কী পরিবর্তন হলো, নীচের ছকে লেখো।

ক্রম জিনিসের নাম লাল লিটমাসের রং কী হলো নীল লিটমাসের রং কী হলো
1
2
3
4
5
6
7

তাহলে ক্ষারীয় পদার্থ চেনার উপায় কী জানলাম?

মনে রেখো এটা ক্ষারের ধর্ম

মনে রেখো, দেহের কোথাও অ্যাসিড বা ক্ষারীয় পদার্থ লাগলে, বিশেষ করে চোখে বা নাকে গেলে, সেই জায়গাটা অনেকটা পরিষ্কার জল দিয়ে বারবার ধোয়া দরকার। লগাড়ে চোখে বা নাকে সাবান দেবে না। তারপর পরিষ্কার কাপড় বা তুলো দিয়ে জায়গা করে দেবে। তৎক্ষণাৎ ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবে। কেউ অ্যাসিড বা ক্ষার খেয়ে ফেললে কোনোরকম দেরি না করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। দেয়াল চুনকামানের সময় কাচ দেবে না। সকলকে সতর্ক করবে যে ক্ষার চোখে পড়লে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।

পরিবেশ গঠনে পদার্থের ভূমিকা

এবার তাহলে কয়েকটি জিনিস নিজেরা চেনার চেষ্টা করে দেখো:

তোমাদের লাগবে কয়েকটি লাল আর নীল লিটমাস কাগজ, আর চেনার জন্য কিছু নমুনা। তারপর প্রতিটি নমুনাতে আগে যেমন করেছো, তেমনভাবে লাল আর নীল লিটমাস কাগজ নিয়ে পরীক্ষা করে নীচের তালিকাটা লেখো।

ক্রম নমুনা লাল লিটমাসে কী হলো নীল লিটমাসে কী হলো
1লেবুর শরবত
2খাবার জল
3সাজা পান
4কাটা কাঁচা আলুর টুকরো
5কাটা টমাটো

কোন নমুনাগুলোকে অ্যাসিড বলে চিনতে পারলে?

................................................................

কোন নমুনাগুলোকে ক্ষারীয় বলে চিনতে পারলে?

................................................................

এবার বলো তো নীল বা লাল লিটমাসের উপর অ্যাসিড বা ক্ষারক যে ক্রিয়া করে, উপরের নমুনাগুলো মধ্যে কোনগুলি নির্দেশকের রঙের পরিবর্তন দেখায় না?

................................................................

লিটমাসের ওপর তাদের ক্রিয়া কীরকম?

  • (a) লাল লিটমাস কাগজে ................................................................
  • (b) নীল লিটমাস কাগজে ................................................................

এরা হলো প্রশম পদার্থ। এরা জলে দ্রবীভূত হলে হাইড্রোনিয়াম আয়ন (H3O+) দেয় না, আবার ক্ষারও প্রশমিত করে না।

তাহলে এসো অ্যাসিড, ক্ষারক আর প্রশম পদার্থের তুলনা করি :

বৈশিষ্ট্য অ্যাসিড প্রশম পদার্থ ক্ষারক
নীল লিটমাসের উপর ক্রিয়া
লাল লিটমাসের উপর ক্রিয়া

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

আমাদের দেহের সব কাজ ঠিকঠাক চলে অ্যাসিড-ক্ষারের নির্দিষ্ট মাত্রা বজায় রাখা দরকার। আমাদের দেহের বিভিন্ন তরলের অম্ল-ক্ষার মাত্রা (pH) বিষয়ক কিছু বেশি কোনটি কেমন?

তরলের নাম pH -এর মান প্রকৃতি (আম্লিক/ক্ষারীয়/প্রশম)
1. লালারস6.02 — 7.05
2. পাকস্থলীর রস0.9 — 1.05
3. পিত্তরস8.0 — 8.60
4. রক্ত7.35 — 7.45
5. মূত্র4.0 — 8.0

মানবদেহে একটি নির্দিষ্ট অ্যাসিড-ক্ষার ভারসাম্য বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। দেহের নানা অঙ্গ (যেমন অন্ত্রে, হৃদপিণ্ডই) ক্ষতিকর হয় ও তাড়াতাড়ি পার্থক্য চলে আসতে পারে। মানবদেহের প্রত্যেক কেশে ভালোভাবে কাজ করে যখন এটি প্রশমিত ক্ষারীয় (pH 7-8) মাধ্যমে থাকে। নানা কারণে রোগ করানো উদ্বেগজনিতাবে খুঁজে পায়। এখন দেখেছ যেখানে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম বা ম্যাগনেসিয়াম খুঁজে পায়। সেখান থেকে বুক রক্তের মাধ্যমে তাকে টেনে নেয়। এই প্রক্রিয়া যখন চুল, ত্বক কিংবা নখ থেকে শুরু হয়। তারপর রক্ত এবং শেষপর্যন্ত হৃদপিণ্ডে পৌঁছায়।

মানবদেহে অ্যাসিড-ক্ষার ভারসাম্য প্রধানত দুটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে।

  • 1. নিশ্বাস প্রক্রিয়া। কার্বন ডাইঅক্সাইড কতটা বেলায় বেরোয়।
  • 2. দেহ থেকে চলাচল করা রাসায়নিক বিক্রিয়ায় পরিবর্তনের ওপর।

ফুসফুসের মাধ্যমে অতিরিক্ত কার্বন ডাইঅক্সাইড দেহ থেকে বেরিয়ে গেলে দেহ ক্ষারীয় হয়। আবার ফুসফুসে থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইড কম বেরোলে রক্তে জল ও কার্বন ডাইঅক্সাইড যুক্ত হয়ে কার্বনিক অ্যাসিড তৈরি করে (H2O + CO2 = H2CO3)। ফলে দেহের অম্লীক হয়ে পড়ে।

এবার নীচের ঘটনাগুলো লক্ষ্য করো –

  • 1. খেলতো খেলতে হঠাৎ পায়ে চোট পেলে আমাদের খুব ব্যথা হয়। আমরা তখন চিকিৎসার পরামর্শ মতো ব্যথা কমানোর ওষুধ খাই। এই জাতীয় কিছু ওষুধ অম্ল-ক্ষারের ভারসাম্য নষ্ট করে।
  • 2. কখনো-কখনো আমাদের অনেকের মুখ টক হয়। টেবিলে টক ওঠে।
  • 3. আমাদের যখন কোনো অসুখে অনেককাল হলে আমরা পায়খানা পায় না, তখন পায়খানার সঙ্গে ক্ষারীয় রস বেরিয়ে যায়।

পরিবেশ গঠনে পদার্থের ভূমিকা

  • 4. বিভিন্ন জীবাণু যখন আমাদের দেহে রোগ সৃষ্টি করে, তখন আমাদের দেহের কোষে ল্যাকটিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়।
  • 5. আমরা যখন কোনো কাজ অনেক সময় করি, তখন আমাদের পেশিকোষ ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তখন পেশিকোষে মৃদুভাবে ল্যাকটিক অ্যাসিড উৎপন্ন বেড়ে যায়।
  • 6. আমাদের অনেকেরই রক্তে সুগারের (গ্লুকোজ) পরিমাণ স্বাভাবিকের থেকে বেশি থাকে। সেক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় যে তাদের দেহকোষে অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে গেছে।
  • 7. মানসিক চাপ বাড়লে বা দীর্ঘদিন ধূমপান করলে দেহে অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়ে।
  • 8. আমাদের বুক যদি কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তবে রক্তে ইউরিক অ্যাসিড, ইউরিয়া ও ক্রিয়াটিনিনের পরিমাণ বেড়ে যায়।

এবার তোমরা ওপরের কোন কোন অবস্থায় –

দেহের অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায় ........................................

অম্ল-ক্ষার ও আয়নের ভারসাম্য রক্ষা দেহের কোন কোন অঙ্গ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বা না তা আলোচনা থেকে নির্দেশ করো।

যে সব অঙ্গ বা দেহতরল অম্ল-ক্ষারের ভারসাম্য রক্ষা করে ........................

টুকরো কথা

উদ্ভিদ উৎস থেকে পাওয়া খাদ্যগুলো (ফল, নানা ধরনের শাকসবজি) দেহের মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ক্ষারজাতীয় পদার্থ উৎপন্ন করে। আবার মাছ, ডিম, মাংসের মতো প্রাণীজ উৎস থেকে পাওয়া খাদ্যগুলো দেহের মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অম্লজাতীয় পদার্থ উৎপন্ন করে। মানুষের প্রতিদিনের খাবারের 20 শতাংশ উষ্ণ উৎপাদনকারী খাদ্য (মাছ, মাংস, ডিম) ও 80 শতাংশ ক্ষার উৎপাদনকারী খাদ্য (ফল, নানা ধরনের শাকসবজি) হওয়া প্রয়োজন তবেই মানুষের শরীরের অম্ল-ক্ষারের ভারসাম্য ঠিক থাকে। যারা আমিষ বেশি খান বা পছন্দ করেন তাদের খাদ্যের তালিকা শরীরের প্রয়োজন 20 শতাংশের মধ্যে এই ধরনের খাদ্য সীমাবদ্ধ করা হয়।

Fruit 1 Fruit 2 Fruit 3 Meat Eggs Milk Vegetables Fish

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

খাদ্য লবণ

Food 1 Food 2

উপরের ছবি দুটো দেখে বলো, আমরা খাবার হিসাবে যে সমস্ত জিনিস গ্রহণ করি তাদের প্রধান দুটো উৎস কী কী?

  • 1. .................... উৎস এবং
  • 2. .................... উৎস

এই দুটো উৎস থেকে পাওয়া কী কী খাবার তোমরা সাধারণত খাও তার একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করো:

কোন ধরনের উৎস থেকে পাওয়া কী কী খাদ্য

এই সমস্ত খাবার আমরা করকমভাবে খেয়ে থাকি?

  • 1. ....................
  • 2. ....................
  • 3. ....................
  • 4. রান্না করে খাই।

আবার ভেবে দেখো –

  • (ক) সব অঞ্চলের আবহাওয়া একইরকম নয়।
  • (খ) সব অঞ্চলে সবরকম খাবার পাওয়াও যায় না।

তাই সব মানুষের খাদ্যাভ্যাস কী একইরকম হয়?

Warm region food

উষ্ণপ্রধান অঞ্চলের খাদ্য

Cold region food

শীতপ্রধান অঞ্চলের খাদ্য

পরিবেশ গঠনে পদার্থের ভূমিকা

এখন ভেবে দেখো নুন ছাড়া বা কম নুন দেওয়া খাবার তোমাকে খেতে দেওয়া হলো। কেমন খেতে লাগবে তোমার?

— খেতে ভালো লাগবে/ভালো লাগবে না (সঠিক উত্তরটি বেছে নাও)।

তাহলে দেখো, খাদ্যের উষ্ণতা বা খাদ্যাভাস তেমনই হোক না কেন, আমাদের খাদ্যের অপরিহার্য উপাদান হলো খাবার নুন। তার প্রধান একটা কারণ হলো নুনের স্বাদে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া। অন্য কারণটা কী?

— আমাদের শরীরে নুনের প্রয়োজনীয়তা। এ বিষয়ে পরে আলোচনা করা হবে। বাড়িতে সবাই খাবার নুন দেখেছ। নুনের কয়েকটি সাধারণ ধর্ম কী কী?

  • (a) খাবার নুনের রং সাধারণতঃ ...................................
  • (b) সাধারণ অবস্থায় এটি ................................... পদার্থ।
  • (c) খাবার নুন জলে ...................................।

(d) একটুকরো কাগজের উপর কিছুটা খাবার নুন ছড়িয়ে জানালার কাছে নিয়ে যাও। একটু স্পর্শ করলে বুঝতে পারবে নুন জিনিসটা দানা-দানা। আবার কাগজটা একটু কাত করে উল্টোপাল্টা লক্ষ্য করলে দেখবে ওই দানাগুলোতে আলো প্রতিফলিত হচ্ছে। এই ধরনের নির্দিষ্ট আকারের দানাবিশিষ্ট পদার্থকে কেলাসাকার পদার্থ বলে।

তাহলে কী বোঝা গেল?

তাহলে নুন হলো একটি .................... রঙের কেলাসাকার .................... মিশ্র পদার্থ। এর প্রধান উপাদানের রাসায়নিক নাম সোডিয়াম ক্লোরাইড ও সংকেত NaCl।

প্রশ্ন- নীচের কোন কোন পদার্থ কেলাসাকার বলে তোমার মনে হয়? চিনি, গুঁড়ো দুধ, চুন, বালি, গায়ে মাখার পাউডার, ফটকিরি।

উঃ - ....................।

আমাদের মধ্যে বাইরে থেকে নুন (NaCl) যোগ করা হয়, এটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু সেটই কি আমাদের শরীরে যতটা নুন প্রয়োজন তার একমাত্র উৎস?

  • (a) একটা দুধের সর বা একটা মাখন খেলে তার স্বাদ কেমন কেমন?
  • এদের স্বাদ ....................। মাখনে নুন মেশানো হয়।
  • এই খাবারে উৎস উদ্ভিজ্জ না প্রাণীজ? এদের উৎস ....................।
  • এ রকমই প্রাণীজ উৎস থেকে খাদ্যের মধ্য দিয়ে আমরা প্রয়োজনীয় নুনের বেশ কিছুটা পেয়ে যাই।
  • (b) পানীয় জলের মাধ্যমেও কিছুটা নুন দেহে প্রবেশ করতে পারে।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

  • (c) উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে পাওয়া বিভিন্ন খাদ্যের মাধ্যমে পরিমাণে কম হলেও কিছুটা নুন দেহ পেয়ে যায়।

কিন্তু দেহের সম্পূর্ণ চাহিদা মেটানোর জন্য যে বাইরে থেকে নুন খাবার প্রয়োজন, তা প্রাচীনকালে নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে জানতে পেরেছিল। তখন তারা ওই নুন সংগ্রহ করত কোথা থেকে?

তখন সামুদ্রিক লবণই ছিল খাবার নুনের প্রধান উৎস। আবার বিভিন্ন পাথরের খনিতে জমে থাকা নুনও তারা সংগ্রহ করত।

এখন আমরা খাবার জন্য কতরকম লবণ ব্যবহার করি বলো তো?

মূলত: তিন ধরনের লবণ —

  • (i) সৈন্ধব লবণ
  • (ii) বিট লবণ বা 'রক সল্ট'
  • (iii) খাবার নুন বা 'টেবিল সল্ট'

প্রথম দুটো লবণের প্রধান উপাদান সোডিয়াম ক্লোরাইড। তার সঙ্গে আরও অনেক যৌগও মিশে থাকে। সমুদ্র লবণ প্রায় 47 রকমের যৌগের মিশ্রণ পাওয়া গেছে, যার মধ্যে 7 টি যৌগ উল্লেখযোগ্য। সেগুলো হলো:

কী ধরনের যৌগ কোন কোন ধাতুর যৌগ যৌগের সংকেত লেখো
ক্লোরাইড যৌগসোডিয়াম
ম্যাগনেসিয়াম
সালফেট যৌগপটাশিয়াম
ক্যালসিয়াম
ব্রোমাইড যৌগম্যাগনেসিয়াম
কার্বনেট যৌগক্যালসিয়াম
  • (a) উপরের তালিকায় সবচেয়ে বেশি ধরনের যৌগ আছে ধাতুটির? .................... ধাতুটির পরিমাণ সোডিয়ামের পরিমাণের ঠিক পরের।
  • (b) সমুদ্র লবণে বিভিন্ন ধাতব যৌগ আছে। এই তালিকা সমুদ্র লবণ থেকে কী কী যৌগ আছে তা দেখতে পাচ্ছ?
  • (c) অন্যান্য উপাদান হিসাবে যে সমস্ত যৌগগুলি কম পরিমাণে থাকে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড, .................... (সংকেত লেখো)

আমরা রোজকার জীবনে যে খাবার নুন ব্যবহার করছি তার উৎস তাহলে কী?

— সেই সমুদ্র লবণ; যদিও সমুদ্র লবণকে রাসায়নিকভাবে পরিমার্জন করার পর তার সোডিয়াম

পরিবেশ গঠনে পদার্থের ভূমিকা

ক্লোরাইডের পরিমাণ বেড়ে শতকরা 99.9 ভাগ হয়ে যায়। খাবার নুনের বাকি অংশটা বাতাসে কী মিশে থাকে?

তার জন্য একটা সহজ পরীক্ষা করো:

তোমাদের বাড়িতে বায়ুরোধক বা খোলা পাত্রে রাখা খাবার নুন ভালো করে লক্ষ্য করো। কয়েকদিন এভাবে রাখা থাকলে দুটো আলাদা পাত্রে দু-ভাবে রাখা নুন কেমন অবস্থায় থাকে তা নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে।

  • (a) আবদ্ধ পাত্রের নুন
  • (b) খোলা পাত্রের নুন

এই ঘটনাটা আরো ভালো করে বোঝা যায় বর্ষাকালে।

Salt and humidity

বিশুদ্ধ সোডিয়াম ক্লোরাইড বাতাস থেকে জল শোষণ করতে পারে না। নুনের মধ্যে থাকা অন্যান্য উপাদান হলো – সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম ধাতুর ক্লোরাইড যৌগ। উপরের ঘটনার জন্য তাহলে নুনের মধ্যে থাকা কোন কোন যৌগ দায়ী?

  • (a) আমাদের দেহের মধ্যে যে দেহতরল আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে কী আছে?

    — তার প্রধান উপাদান হলো ..............................................................

  • (b) দেহের তরলের মধ্যে খাবার নুনের প্রধান উপাদান সোডিয়াম ক্লোরাইডের কী হয়?

    — সোডিয়াম ক্লোরাইড আয়নে ভেঙে যায়:

    সোডিয়াম ক্লোরাইড (NaCl) $\rightarrow$ সোডিয়াম আয়ন (Na+) + ক্লোরাইড আয়ন (Cl-)

  • (c) তাহলে খাবার নুনের অন্য মূল উপাদান দুটোর কী হয় দেখব?

    — তারাও আয়নে ভেঙে যায়:

    ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইড (MgCl2) $\rightarrow$ Mg2+ + 2Cl-

    ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড (CaCl2) $\rightarrow$ Ca2+ + 2Cl-

  • (d) নুনের এই সোডিয়াম আয়ন (Na+) দেহের জলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে থাকে। তাই দেহের মধ্যে তার কার্যকারিতা সবচেয়ে বেশি।

কোনো কারণে যদি তোমার ঠোঁট কেটে যায় বা গিয়ে গালেঁর ভিতরে কামড় বসাও, তখন রক্তের স্বাদ কেমন লাগে?

— রক্তের স্বাদ ....................

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

  • (e) তাহলে রক্তের মধ্যে .................... দ্রবীভূত অবস্থায় আছে।
  • (f) পরিমাপ করলে দেখা যাবে মানুষের দেহের রক্তে 100 মিলিলিটারে NaCl-এর পরিমাণ 0.9 গ্রাম। মানব রক্তের প্রধান অংশটা কী?

    — তা হলো ............................

  • (g) রক্তের মধ্যে NaCl আয়নিত হয়ে Na+ ও Cl- আয়ন তৈরি করে।

মানবদেহের সারা শরীরকেই সুস্থ করে রেখেছে এমন তরল মাধ্যমটি কী?

— তা হলো রক্ত।

নীচের ক্ষেত্রগুলোতে নুনের প্রভাবে কী ঘটছে তা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে লেখো:

কী করা হলো কী কী দেখবে কেন এরকম হবে
(1) আলুর চিপস বানানোর সময় আলু পাতলা করে কেটে নুন মাখিয়ে রাখা হলো।
(2) কোনো গাছের গোঁড়ায় বেশি নুন দেওয়া হলো।
(3) সদ্য কাটা মাছ বা মাংসের টুকরোয় নুন মাখিয়ে রাখা হলো।

তোমার বাড়িতে বা পরিচিত পরিবেশে উচ্চ রক্তচাপ থাকলে, ডাক্তারবাবুকে কী কী তথ্য দেখব। দেখবে, তাকে নুন থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

তাহলে বেশি নুন খাওয়া আমাদের রক্তচাপের সম্পর্ক কেমন?

তোমরা জেনেছ যে রক্তে প্রচুর পরিমাণে লবণ থাকে। কিন্তু নুন এর পরিমাণ কোনো কারণে বেড়ে গেলে রক্ত কোষ কথা থেকে জল টেনে নেয়। ফলে রক্তের মধ্যে জলের পরিমাণ বেড়ে যায়। তখন রক্তের পরিমাণের কেমন পরিবর্তন হবে?

তখন রক্তের স্বাভাবিক চাপের কেমন পরিবর্তন ঘটতে পারে তা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে লেখো।

রক্তের চাপ যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়, আমাদের শরীরে কী কী ঘটতে পারে তা জেনে নেওয়া যাক।

শরীরের কোথায় কী কী ঘটতে পারে
শিরা-ধমনিবেশি রক্তচাপে ছিঁড়ে যেতে পারে।
হৃৎপিণ্ডকম্পাটিকা নষ্ট হতে পারে।
মস্তিষ্কমস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে।

পরিবেশ গঠনে পদার্থের ভূমিকা

এখন খুব গরম পড়েছে। তাই ঘামও হচ্ছে খুব। স্কুলে যাওয়ার সময় রক্তচাপ স্বাভাবিকের থেকে বেশি হচ্ছে। এই রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে এমন অনেক ফল খাও।

আয়ন জিঙ্কস করল – হ্যাঁ হলো?

টাকমা একটা উত্তর দিলেন বটে; আনো তার কিছু বুঝাতে পারল না। কিন্তু সে এটা বুঝল যে টাকমার শরীরে কোথাও একটা বড়োগোড়া গোলমাল হয়েছে।

তারপর আগের মা ফোন করে ডাক্তারবাবুকে সব দিলেন। ডাক্তারবাবু এসে মন দিয়ে দেখলেন টাকমাকে।

আয়নার সামনে একটা গ্রামের মেইনফুট তৈরি করে। টকমা একটা গ্রামের মেইনফুট তৈরি করে।

আশ্চর্য! একুট্রা টাকমা আবার আগের মতোই স্বাভাবিক।

এই ঘটনার কিছুক্ষন পরে আয়নার মা টিউবলাইট পাড় করে দিলেন। পরে ভাঙার বসে জানালা দিয়ে দেখছিল মায়ের জল ভরা। কিন্তু এখন দেখব- হঠাৎ মা পাড় গেলেন। পরে ভাঙার দেখতে জানা গেল বিষয়ের নীচের দিকে ছাটাটা তেগো গেছে।

এই দুটো ঘটনা থেকে আরও গুরুত্বপূর্ণ যোগামোদের নির্দেশ হলো – কেন এমনটা হলো?

  • আমাদের শরীরের আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের মাধ্যম কী বলো তো?
  • আমাদের ধাতু-ব্যবস্থা; যা পায়ের নখ থেকে মাথা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে থাকে। ধাতুর কাজ কী?
  • মস্তিষ্ক বা সুষুম্নাকাণ্ড ও দেহের বিভিন্ন অংশের মধ্যে সংবেদন আদানপ্রদান করা। এই কাজে তার গুরুত্ব সহকারী কী?

খাবার নুনে থাকা সোডিয়াম আয়ন (Na+)। তবে পটাশিয়াম আয়ন (K+) ও ক্যালসিয়াম আয়ন (Ca2+) এই কাজে গুরুত্বপূর্ণ।

তাহলে আমাদের দেহে হঠাৎ করে কোনো নুনের পরিমাণ কমে গেলে আমাদের শরীরের কেমন ব্যবস্থায় তার প্রভাব পড়বে?

এর ফলে শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝিঁঝিঁ দেখা দেবে। কথাবার্তা অসংলগ্ন হয়ে যেতে পারে।

তখন নুন না থাকা NaCl ছাড়া আরো কী কী খাবার আমরা খাচ্ছি জেনেছি? সেই দুটো লবণ দেহের মধ্যে সোডিয়াম ছাড়া কী কী আয়ন উৎপন্ন করে?

.................... ও .................... আয়ন।

এর মধ্যে ক্যালসিয়াম আয়নের কী কী কাজ করে?

  • মূলত দুটো কাজে ক্যালসিয়াম সাহায্য করে: (i) হাড় ও দাঁতের গঠনে সাহায্য। (ii) হৃৎপিণ্ডের কাজ নিয়ন্ত্রণ করে।

হাড়ের গঠনে ক্যালসিয়াম কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা পরের পৃষ্ঠার কর্মপত্র পূরণের মাধ্যমে বোঝার চেষ্টা করো।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

কর্মপত্র

  • (a) আমাদের শরীরের হাড়ের ওজনে সবচেয়ে বেশি। এই হাড় বা অস্থির মূল উপাদান কোন ধাতু?

    ....................

  • (b) শরীরের প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম আমরা কোন কোন উৎস থেকে পাই?
    • (i) প্রাণীজ উৎস থেকে পাওয়া বিভিন্ন খাদ্য; যেমন – দুধ, দই, ছোটো মাছের কাঁটা ইত্যাদি।
    • (ii) অন্য একটা উৎস হলো খাবার নুন।
  • (c) আমাদের শরীরের হাড়ের ভেতরের তাপমাত্রা কেমন হতে পারে? (i) ও (ii)-এর প্রশ্ন থেকে সঠিক উত্তর বেছে নাও।
    • (i) ঠাণ্ডা
    • (ii) শুকনো
    • (iii) জলীয় তরল ও বর্জ্য পরিপূরক।
  • (d) আবার ভাবো, রক্তে Ca2+ আয়নএর ঘাটতি হলো। তাহলে শরীরের যেখানে ক্যালসিয়ামের অভাব রয়েছে, সেখান থেকেই শরীর তা নিও ওই ঘাটতি পুষিয়ে নেবে।
  • আমাদের শরীরের বেশিরভাগ ক্যালসিয়াম কোথায় আছে? ............................

    তাহলে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণের জন্য শরীর কোথা থেকে নেবে? ............................

  • (e) এই অবস্থায় শরীরের মধ্যে কী কী হবে?
    • হাড় দুর্বল হয়ে যাবে।
    • কোনোও ভেঙেও যেতে পারে।

যদি ক্যালসিয়ামএর ঘাটতি হয়, তাহলে কী কী হবে? নীচের দিকের গঠনে কোনো প্রভাব পড়বে না? নিজেরা ভেবে দেখো।

খাবার নুনের মধ্যে উপস্থিত অন্য গুরুত্বপূর্ণ ধাতব আয়ন অর্থাৎ ম্যাগনেসিয়ামের কী কী ভূমিকা থাকতে পারে। আমাদের কর্মপত্রটি নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ও শিক্ষক/শিক্ষিকার সাহায্যে পূরণ করো।

  • (a) আমাদের রক্তের একটা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো শ্বেতকণিকা। এই শ্বেতকণিকার কাজ কী?

    ....................

  • (b) শরীরে ভিটামিন D কী কাজ করে?

    ....................

  • (c) শরীরে উপস্থিত বিভিন্ন উৎসেচক কী কী কাজ করে?

    ....................

  • (d) শরীরের মধ্যে গ্লুকোজ কিভাবে শক্তি উৎপন্ন করে?

    ....................

পরিবেশ গঠনে পদার্থের ভূমিকা

এই প্রক্রিয়াগুলোর অনেকগুলোতে ম্যাগনেসিয়াম সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে ও তার কার্যকারিতা বাড়ায়।

জেনে রাখো: ভূকম্পন মুখ সমুদ্র থেকে খনিজ দ্রব্যের এক একরবার নতুন তৈরি করা হয় যাকে Organic Sea salt বলে। এর মধ্যে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসাবে ম্যাগনেসিয়ামও ব্যবহৃত হয়।

এ প্রসঙ্গে একটা কথা গুরুত্বপূর্ণ—প্রাণীরা দিকে মানুষ যে এত বুদ্ধিমান, তার একটা কারণ মানুষের মস্তিষ্কের গঠন। অন্য কারণটি হলো খাগোর মাধ্যমে নুন গ্রহণ করা। এই নুনের চাহিদা মেটানোর জন্যই অভাবনীয় যন্ত্র ব্যবহার হয়। এক পাউন্ডের নুন পেতে দেওয়া যায়। যে কোনো প্রাণীর শরীরে নুন পরিমাণের নিম্নঅংশে তাদের দেহে ভূমিগত ও গতিশীল চুম্বক থাকে।

সাধারণত আমরা খাবার জন্য যে সাধারণ নুন ব্যবহার করি তার প্যাকেটের গায়ে লক্ষ্য করলে তোমরা দেখতে পাবে ওই নুনের মধ্যে একটি বিশেষ মৌল যুক্ত আছে। ওই মৌলটা হলো আয়োডিন

আয়োডিনের যোগান দিতে নুনে প্রয়োজনীয় পরিমাণে পটাশিয়াম আয়োডেট (KIO3) মেশানো হয়।

আমাদের শরীরে আয়োডিনও প্রয়োজন কেন?

খতিয়ে দেখব কিছুদিন আগে তোমার জোরালো ঘুমে থেকে উঠত না। এখন তার অনেক দেরি করে উঠলে। এখন তার অনেক দেরি করে উঠেছে।

একদিন তো কাঁপে তো করে কাকুকে তা দিয়ে কিভাবে কাগজটি গেল কাকিমার হাত থেকে।

যখন তখন সরিতে ছাগলুন কাকীমা: মাঝেই মাঝেই উঠছি। ঝিমঝিমে হয়ে গেছে।

কাকীমা নিজে বলেছ – শরীরটা যেন আর চলছেই না। কিছুই খাচ্ছি না, তাও মোটা হচ্ছি।

সুনীল দেখল যে কাকিমার গলাটা অস্বাভাবিক একটু ফোলা। গলার কাজটা একটু মোটাও মনে হচ্ছে।

ডাক্তারবাবুকে দেখাতে তিনি বলেছেন – সুনীলের কাকিমার থাইরক্সিন হরমোনের সমস্যা হয়েছে।

এখন প্রশ্ন হলো 'থাইরক্সিন' কী?

আমাদের গলার দুটো বড়ো অংশে স্পর্শ করলে বরাবর উপস্থতি বুঝতে পারবে। এই থরক্সিনের দুই-পাশে ছোটো একটা গ্রন্থি আছে, যাকে থাইরয়েড গ্রন্থি বলে।

এই গ্রন্থির কার্যকারিতা আয়োডিনের ওপর নির্ভরশীল। শরীরে আয়োডিন কম হলে এই থাইরয়েড গ্রন্থির কী পরিবর্তন হয়?

Throat thyroid

তখন কাজ কমে কার্যকারিতা বাড়াতে থাইরয়েড গ্রন্থি বড়ো হয়ে যায়। তখন গলা অস্বাভাবিকভাবে ফুলে যায়; এটিকে গয়টার বা গলগণ্ড বলা হয়।

থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা কমে গিয়ে মহিলাদের ক্ষেত্রেও গয়টার সমস্যা হতে পারে।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

আর কী কী ভাবে আয়োডিন আমাদের কাজে করে?

মস্তিষ্কের বিকাশে আয়োডিনের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের পক্ষে এটি অপরিহার্য।

ডান হাতীক শ্বাস স্বাভাবিক অবস্থায় 'গয়টার' রোগ হওয়া যায়। হিমালয় প্রদেশের পার্বত্য এলাকায় খুব বেশি আয়োডিন থাকে। এখানে আয়েডিনের ঘাটতি হয় না।

জেনে রাখো: আয়োডিন ব্যবহারের ইতিহাস আছে আমাদের দেশে। অনেক আগে আয়োডিন ছাড়া নুনই ব্যবহার হত না। বিশ শতকের পঞ্চাশের দশকে প্রফেসর ডি. রামলিঙ্গাম এর নেতৃত্বে একজন বিজ্ঞানী হিমালয় প্রদেশের কাজটা 'উপচার' এর মতো করে দেওয়া যায়। যেখানে আয়োডিনের ঘাটতি হচ্ছে।

এর ফলে 1962 সাল থেকে জাতীয় সরকার 'পাওয়ার' প্রকল্প শুরু হয়। এই এলাকায় আয়োডিনযুক্ত নুন পাচার ও সরবরাহ করা হয়। WHO ও UNICEF-এর সহযোগিতায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আয়োডিনযুক্ত নুন তৈরির কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়। 1983 সালে ভারতের জনসংখ্যা অনুসারে এর উৎপাদন যথেষ্ট হয়।

সাধারণত সমতলের চেয়ে পাহাড়ি এলাকায় আয়োডিনজনিত সমস্যার প্রকোপ বেশি।

আমাদের যেমন বিভিন্ন উৎস থেকে মুখের লবণ গ্রহণ করি, তেমনই শরীর থেকে অতিরিক্ত লবণও রেচনও ঘটে।

উদ্ভিজ্জ উৎস

প্রাণীজ উৎস

পানীয় জল

খাবার নুন

দেহের লবণ

প্রয়োজনের বেশি লবণ

রেচন

ঘাম

মূত্র

  • (a) আমাদের শরীরে বেশিরভাগ রেচন কোথায় ঘটে?

    — এর মাধ্যমে ঘটে, যার বেশিরভাগ জল।

  • (b) জল যেহেতু মূত্রকে দ্রবীভূত করে রাখে, তাই আমাদের প্রধান রেচন পদার্থ ........................................ এর মধ্যে .................... ও উপস্থিত থাকে।
  • (c) রেচনক্রিয়া দেহের ভেতরের মূলত কোন অঙ্গ কাজ করে? – বৃক্ক (কিডনি)।
  • (d) যদি কোনো কারণে রক্তে নুনের পরিমাণ বেড়ে যায়, তাহলে কী হবে?

    ....................

দেহের প্রয়োজনে যখন আরো বেশি এই লবণের রেচন প্রয়োজন, তাহলে আমাদের প্রধান পদার্থের পরিমাণে কেমন পরিবর্তন ঘটবে? — মূত্রর পরিমাণ বাড়বে/কমবে (ঠিক উত্তরটি বেছে নাও)।

তখন আমাদের প্রধান রেচন অঙ্গ কাজ করবে।

  • (e) এখন ভাবো, কারো বৃক্কের কার্যকারিতা কোনো কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। তখন তাকে কী পরামর্শ দেওয়া হবে?

    ....................

দীর্ঘদিন লিভারের রোগে ভুগলে একই পরামর্শ দেওয়া হয়।

পরিবেশ গঠনে পদার্থের ভূমিকা

খাওয়া ছাড়া আর কোন কোন কাজে নুন ব্যবহার হতে দেখেছ তোমরা?

তোমাদের বাড়িতে মা-কাকিমার আলমারি বা অন্য জিনিসের আলমার বানাতে দেখেছ। তাদের একটি খোঁজ জানতে পারবে। তার একটা প্রধান উপাদান হলো নুন।

বেশিরভাগ সময়ে আমের টুকরো (বা, অন্য জিনিসও) নুন মাখিয়ে রোদে শুকানো হয়। এটা করা হয় দুটো কারণে –

  • i) যাতে আমের টুকরোর বেশিরভাগ জলীয় অংশ বেরিয়ে যায়।
  • ii) বাতাসে ভেসে থাকা জীবাণুর থেকে ওই জিনিসটা বেশদিন ভালো থাকে।

কীভাবে খাদ্যকে নুন ও নুনের মাধ্যমে জীবানুর আক্রমণ থেকে জীবানুর কোষের প্রাচীর বেরিয়ে আসে। তখন অধিকাংশ ক্ষেত্রে জীবাণু মরে যায়। তাই খাদ্য সংরক্ষণ করার জন্য বহুকাল থেকেই এই পদ্ধতি চালু রয়েছে।

সংরক্ষণ হিসাবে নুন ব্যবহার করা হচ্ছে, এরকম আরো উদাহরণ দাও:

  • (a)
  • (b)
  • (c)

সমুদ্র, পর্বত বা মেরু অভিযানে ক্ষেত্রে অভিযাত্রীরা বা সৈনিকরা খাবার যান তা থেকেই প্রয়োজনীয় নুন তারা পেয়ে যায়।

জেনে রাখো: এখনকার প্রচলিত শব্দ Salary (মাইনে) এসেছে Salt থেকে; প্রাচীন রোমের সেনামাহিনীর অফিসারদের নুন কেনার জন্য অর্থ দেওয়া হতো তখন তাকে বলা হতো 'Salarium' এর থেকেই Salary শব্দের উৎপত্তি।

তাহলে ভাবো, একসময়ে খাদ্যলবণ এক সহজলভ্য বস্তু ছিল না নিশ্চয়ই। মানুষ তার নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই এর অভাব অনুভব করেছে। আর তাকে সহজলভ্য করেছে। নুন নিয়ে আমাদের দেশসহ বহু দেশে অনেক সংবাদ ছড়িয়েছে। সেগুলো জানার চেষ্টা করো।

নীচের ক্ষেত্রগুলোতে লবণের ব্যবহার করা যেতে পারে বা কীভাবে খাদ্য কাজে লাগবে:

কোন ক্ষেত্রে কীভাবে খাদ্য কাজে লাগবে
1. তোমার পিঠে মোচড়া হচ্ছে
2. হঠাৎ একদিন তোমার ঘন ঘন বমি ও ডায়রিয়া হলোতোমাকে কিন্তু সমস্ত তরল আর নুন ও সামান্য চিনি মেশানো জল খেতে হবে।
3. তোমার গলা ব্যথা হলো
4. তোমার পায়ে জোঁক কামড়ে ধরল
5. তোমাকে পাকা তেঁতুল সংরক্ষণ করতে বলা হলো
6. কারো রক্তচাপ কমার লক্ষণ দেখা দিলে

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

সংশ্লেষিত যৌগ ও পরিবেশে তার প্রভাব

তোমরা হয়তো দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে রাতে শুয়ে যাওয়ার আগে পর্যন্ত যে জিনিসগুলো ব্যবহার করো নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে তাদের একটা তালিকা বানাও। তাদের উৎস প্রাকৃতিক, প্রক্রিয়াজাত না মানুষের সৃষ্টি তা উল্লেখ করো:

রোজকার ব্যবহার্য জিনিসের নাম কীভাবে তৈরি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াজাত মানুষের সৃষ্টি
মাঞ্জন বা টুথপেস্ট
পাউডার
সাবান
শ্যাম্পু
ডিটারজেন্ট
রিঠা ফল
মশারীর সুতো
নারকেল তেল

তোমাদের তৈরি উপরের তালিকা থেকেই তোমরা বুঝতে পারছ যে আমরা প্রতিদিন যেসমস্ত জিনিস ব্যবহার করি তার কিছু প্রাকৃতিক হলেও বেশিরভাগ জিনিসই কৃত্রিমভাবে সংশোধিত পদার্থ থেকে তৈরি। এগুলো যেমন আমাদের সুবিধা করে দিয়েছে, তেমনি এদের অনেক কুপ্রভাবও আছে যা আমরা পরে জানব।

তোমরা সকলেই খেলাতে ভালোবাসো। ধরো তুমি ফুটবল খেলো। ফুটবল খেলতে যে জিনিসগুলো লাগে তার একটা তালিকা বানাও; আর এসো দেখি তার কোনটা কী জিনিস দিয়ে তৈরি।

কোন জিনিস কী কী দিয়ে তৈরি ব্যবহার বন্ধ হওয়ার পর জিনিসগুলোর কী হয়

পরিবেশ গঠনে পদার্থের ভূমিকা

তোমাদের স্কুলে বা পাড়ায় মাঠে বল আছে। প্রতিযোগিতায় হয়। সেখানে যে জিনিসগুলো লাগে তাদের ছবি নীচে দেওয়া হলো। ছবি দেখে তাদের নাম লেখো এবং আলোচনা করে লেখো সেগুলো কিসের তৈরি আর তাদের উৎস প্রাকৃতিক না সংশ্লেষিত?

Sports equipment
কী জিনিস কীসের তৈরি বলে মনে হয় উৎস
প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াজাত সংশ্লেষিত
1.
2.
3.
4.
5.
6.
7.

উপরের ছক থেকে একটি বিরাট বিষয় স্পষ্ট যে আমাদের চারপাশে যে সমস্ত জিনিসের নাম আমরা বলছি বা দেখছি বা ব্যবহার করছি তাদের মধ্যে খুব কম সংখ্যক জিনিসেরই উৎস প্রাকৃতিক, তাদের অধিকাংশই সংশ্লেষিত পদার্থ। নীচের ছবিটি লক্ষ্য করে দেখো, আমরা কীভাবে প্রতিদিনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এই ধরণের পদার্থ ব্যবহার করছি।

সংশ্লেষিত পদার্থ থেকে জিনিস

Glue Spectacles Clothes Bowl

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

Cup Bottle Detergent Perfume
  • 1. উপরের ছবিতে যেসব বস্তুর ছবি দেওয়া আছে তা তৈরিতে যে যে সংশ্লেষিত পদার্থ ব্যবহার হয়েছে সেগুলো কী কী?

    ................................................................

  • 2. এই ধরণের সংশ্লেষিত পদার্থ আর কী কী জিনিস তৈরিতে ব্যবহার করা হয়?
সংশ্লেষিত পদার্থটির নাম তার ব্যবহার
প্লাস্টিক
  • 3. যে সমস্ত সংশ্লেষিত পদার্থগুলোর নাম তোমরা জানলে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে তাদের আর কোনো জানা থাকলে লেখো। উপরের তালিকা যতদূর সম্ভব সংশ্লেষিত পদার্থের ব্যবহার আমরা দেখতে পাচ্ছি, তাদের মধ্যে প্লাস্টিক, পলিথিন, লুমিষ্টভাবে তৈরি সুতো -এরকম অনেকগুলোই পলিমার বলা হয়।

এখন দেখা যাক, পলিমারজাতীয় পদার্থগুলো কিভাবে তৈরি হয়।

পলিমার

তোমরা সকলেই ফুলের তৈরি মালা দেখেছ। এটা কীভাবে তৈরি করা হয়? অনেকগুলো একই ধরনের বা বিভিন্ন ধরনের ফুল একসঙ্গে একটা সুতো দিয়ে গাঁথা হয়। একটা গোলমাল ট্রেনে অনেকগুলো একরকম কামরা জোড়া থাকে। ঠিক এইভাবেই অনেক ছোটো ছোটো যৌগ অণু জুড়ে তৈরি হয় বৃহদণুযৌগ বা পলিমার। পলিথিন পলিমারটি অনেক ইথিলিন (C2H4) অণু জুড়ে তৈরি।

Polythene structure

ইথিলিন
C2H4

ইথিলিন
C2H4

ইথিলিন
C2H4

(C2H4)n হলো পলিইথিলিন বা পলিথিন। এখানে n দিয়ে বহু সংখ্যক ইথিলিন অণু বোঝানো হয়েছে।

জানো কি? -'পলিমার' শব্দটার উৎপত্তি দুটো গ্রিক শব্দ পলি (poly) ও মেরোস (meros) থেকে। 'পলি' মানে বহু, আর 'মেরোস' কথার অর্থ অংশ বা খন্ড (parts)।

এছাড়াও আমরা যে চিরুই গাম খাই এবং আরও যা আছে দেশীয় জাতীয় যে সমস্ত জিনিস ব্যবহার করি সেগুলোও বিভিন্ন নরম পলিমার দিয়ে তৈরি। আবার কৃত্রিমভাবে তৈরি সুতোগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই পলিমারীয় পদার্থ।

সংশ্লেষিত তন্তু

অনেকদিন থেকেই জামাকাপড় তৈরিতে সুতির সুতো ব্যবহার করা হতো। কিন্তু সেগুলো কম টেকসই আর তার সৌন্দর্য বজায় রাখা ছিল কঠিন। যুগান্তকারী আবিষ্কার হিসাবে এল পলিএস্টার, রেয়ন, অ্যাক্রাইলিক ইত্যাদি। তারপর সুতির সুতোর সঙ্গে এগুলো মিশিয়ে নতুন ধরনের সুতো তৈরি হতে লাগল।

করে দেখো : একটি শক্ত, একটি সুতির সুতো, না একটি টেনিসটের? দুটা একটি শক্ত প্লাস্টিকের বালতি ও মুখ খোলা বোতল নাও। এবার দু-রকম সাদার সাহায্যে দুটো বোতল বোতল ব্যবস্থা করো। এরপর দুটো বোতলই ধীরে ধীরে জল ঢালতে থাকো। কী করলে ও কী দেখলে লেখো।

Thread experiment
কী করা হলো কী কী দেখা গেল

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

প্রাকৃতিক পলিমার: নানান ধরনের শর্করা (কার্বোহাইড্রেট) জাতীয় পলিমার দিয়ে উদ্ভিদের সুতো বা আঁশ তৈরি হয়। আর প্রাণীদেরদেহে মাসপেশি, লিপিড বা টেনডন তৈরি হয় প্রোটিন জাতীয় দিয়ে।

করে দেখো : মোমবাতির আগুনের কাছে সাবধানে কিছুটা সুতির সুতো ও কিছুটা নাইলন সুতো একটি চিমটে দিয়ে ধরে দেখো।

কী দেখলে কী বোঝা গেল

তাহলে রান্না করা বা বাজি পোড়ানোর সময় আমরা কেমন জামাকাপড় পরব?

— সংশ্লেষিত সুতোর তৈরি জামাকাপড় আগুনের গরমে গলে গিয়ে চামড়ায় আটকে যেতে পারে। তাই ওই সময় সুতির জামাকাপড় পরা উচিত।

আমরা রোজই অনেকরকমের প্লাস্টিকের জিনিস ব্যবহার করি। কিন্তু সব প্লাস্টিকই কি একই ধরনের?

লক্ষ্য করলে দেখবে বিভিন্ন জিনিসে ব্যবহৃত প্লাস্টিক প্রধানত দু-ধরনের।

  • (i) একরকমের প্লাস্টিক নরম। তাদের আকৃতি তাপ দিয়ে (বা অনাতাপে) পাল্টানো যায়। তাদের গলানো যায়, বাঁকানো যায়। তাই এদের থার্মোপ্লাস্টিক প্লাস্টিক বলা হয়।
  • (ii) অন্য আর একরকমের প্লাস্টিক একবার তাপ দিলে তাদের আকৃতি আর পাল্টানো যায় না। তাই এদের থার্মোসেটিং প্লাস্টিক বলা হয়।

নিত্যব্যবহার্য বিভিন্ন জিনিসে পলিমারের ব্যবহার

পলিমারের নাম প্রকৃতি বা গুণাবলি ব্যবহার
পলিথিনঅত্যন্ত নমনীয় ও জলরোধী
PVCমজবুত, তাপ ও তড়িতের অন্তরক, জলরোধী, অম্লপ্রতিরোধী
PETদীর্ঘস্থায়ী ও মজবুত, থার্মোসেটিং প্লাস্টিকজলের বা পানীয় দ্রবণের বোতল,খাবারের বাক্স তৈরিতে।

পরিবেশ গঠনে পদার্থের ভূমিকা

সাবান ও ডিটারজেন্ট

তোমাদের বাড়িতে বা পাড়িয়ে মাছের জানা, জামাকাপড় পরিষ্কার করতে বা নীচে লেখা অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা হয় এমন কোনো সংশ্লেষিত পদার্থের কথা জানা থাকলে লেখো।

কোন কাজে কী কী ব্যবহার করো
গা, হাত, পা ধোয়ার কাজে
চুল পরিষ্কার করার জন্য
বাসনপত্র মাজর জন্য

এখানে যে পদার্থগুলোর নাম দেখা গেল তাদের বেশিরভাগই সাবান বা ডিটারজেন্ট শ্রেণির। তোমরা জানো যে ডিটারজেন্ট দিয়ে জামাকাপড় পরিষ্কার করা হয়, দাঁত মাজার পেস্ট বা চুল পরিষ্কার করার শ্যাম্পুও এধরনের কিছু পদার্থ থাকে।

সাবান হলো কিছু জৈব অ্যাসিডের সোডিয়াম বা পটাশিয়াম যৌগ, যা তৈরি হয় চর্বি বা উদ্ভিজ্জ তেলের সঙ্গে কস্টিক ক্ষারের (NaOH বা KOH) বিক্রিয়ায়।

চর্বি বা উদ্ভিজ্জ তেল + কস্টিক ক্ষার $\rightarrow$ সাবান + গ্লিসারিন।

পেট্রোলিয়াম বা অন্য উৎস থেকে প্রাপ্ত হাইড্রোকার্বন জাতীয় যৌগের সঙ্গে সালফিউরিক অ্যাসিডের বিক্রিয়ায় উৎপন্ন হয় অ্যাসিডে দ্রব্য ডিটারজেন্ট। বাজারে ডিটারজেন্ট বিভিন্ন মিশ্রণ।

যেসব উৎস থেকে পাওয়া জল আমরা সাধারণত জামাকাপড় কাচার জন্য ব্যবহার করি সেগুলো নীচে দেওয়া হলো। বাড়ির বড়দের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করো। এদের মধ্যে কোন কোন উৎসের জল ব্যবহার করলে কোন ক্ষেত্রে কীরকম ফেনা তৈরি হয়; তারপর নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে নীচের সারণিটি পূরণ করো।

জলের উৎস সাবান ব্যবহারে কেমন ফেনা হয় ডিটারজেন্ট ব্যবহারে কেমন ফেনা হয়
পুকুর/দিঘীর জল
কুয়ার জল
নলকূপের জল
নদীর জল
শহরের কলের জল

এখন বুঝতে পারছ সাবান বা ডিটারজেন্ট কোনটা জামাকাপড় বেশি ভালো পরিষ্কার করে?

সাবান সবরকম উৎসের জলে সমানভাবে কার্যকারী হয় না, কিন্তু ডিটারজেন্ট যে-কোনো জলে সমান কার্যকর। তাই আমাদের চারদিকে ডিটারজেন্টের এত ব্যাপক ব্যবহার।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

সার ও কীটনাশক

দলগত কাজ: তোমাদের স্কুলের বা বাড়ির আশেপাশে চাষের ক্ষেত্রে অথবা কোনো নার্সারিতে গিয়ে একটু খোঁজ নিয়ে দেখো ও জানো সার ও কীটনাশক কোন কোন প্রয়োজনে ব্যবহার করা হচ্ছে।

যে জিনিসগুলোর ব্যবহার তোমরা জানো, আরও বিস্তারিতভাবে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে নীচের সারণিটি পূরণ করো।

কী কী ব্যবহার হচ্ছে কী কাজে ব্যবহার হচ্ছে পদার্থটার উৎস প্রাকৃতিক না কৃত্রিমভাবে তৈরি
ধান
শাকসবজি
ফুল

উপরের সারণি থেকে তোমরা মূলত দু-ধরনের জিনিসের ব্যবহার দেখতে পাচ্ছ; যার বেশিরভাগই প্রাকৃতিক নয়, সংশ্লেষিত।

গাছের বৃদ্ধি ও ফলন বাড়ানোর জন্য যা ব্যবহার হয় সেগুলো কী? ............................

গাছকে রোগ বা পোকামাকড়র হাত থেকে রক্ষা করার জন্য যা ব্যবহার হচ্ছে সেগুলো কী? ............................

তোমাদের পরিচিত কয়েকটি সার ও কীটনাশকের মধ্যে থাকা সংশ্লেষিত পদার্থের নাম দেওয়া হলো। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ও শিক্ষক-শিক্ষিকার সাহায্যে দিয়ে আরও কয়েকটি নাম যোগ করো।

সারের নাম কীটনাশকের নাম
ইউরিয়ামিথাইল প্যারাথিয়ন
অলড্রিন
কার্বালিল

টুকরো কথা : তোমরা র‍্যাচেল কারসনএর লেখা Silent Spring বইটার কথা হয়তো শুনে থাকবে। এই বইতে তিনি প্রথম ডি.ডি.টি কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সারা পৃথিবীকে সচেতন করেন। দেখা গেছে, পাখি বা কচ্ছপের দেহে এই কীটনাশকের প্রভাবে ডিমের খোলা পাতলা হয়ে যায়। বাচ্চা বেরোবার জন্য পেটের নীচে ডিম রেখে তা দিয়ে গেলে ডিম ফেঁটে নষ্ট হয়ে যায়। পোকামাকড় মারতে একরকম কীটনাশকের ব্যবহারের জন্য আজ মৌমাছি, রেশমপোকা, নানা পাখি বেঁচে থাকা মুশকিল হয়ে পড়েছে। আগামী দিনের ফসলগুলোতে এই কীটনাশক মানুষের দেহের দিকে অজানা রোগের সংখ্যা বাড়িয়ে তুলেছে। পৃথিবী জুড়ে ডি.ডি.টি নিষিদ্ধ কীটনাশক।

পরিবেশ গঠনে পদার্থের ভূমিকা

প্রসাধনী, সুগন্ধি দ্রব্য

তোমাদের পরিচিত কিছু জিনিসের ছবি নীচে দেওয়া আছে। দেখো তো চিনতে পারো কিনা। তাদের ব্যবহার লেখো।

Product a Product b Product c Product d Product e Product f Product g Product h
কী জিনিস কী কী কাজে লাগে
a.
b. শ্যাম্পু
c.
d. টুথপেস্ট
e. বডি স্প্রে
f. পাউডার
g.
h.

তোমরা এতরকম প্রসাধনীর ব্যবহার দেখছ। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে জানার চেষ্টা করো তোমাদের পরিচিত কারণ বা দেহের অন্য অংশে এই সমস্ত জিনিসের কোনো কুপ্রভাব পড়েছে কিনা।

কোন ধরনের প্রসাধনীতে কী রকম কুপ্রভাব পড়তে পারে
চুল রং করার কলপ বা ডাইচুলকানি ও লাল হয়ে ফুলে ওঠা
সুগন্ধি স্প্রেশ্বাসের সমস্যা

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

এরকম কেন হলো বলো তো?

প্রসাধনীতে এমন অনেকরকম সংশ্লেষিত পদার্থ মেশানো হয় যেগুলোর প্রভাবে এই সমস্যা ঘটে। তাই এরকম সমস্যা যাদের এই সমস্ত জিনিস উচিত।

ওষুধ

নীচের তালিকা থেকে ঠিক উত্তর নির্বাচন করে কয়েকটি প্রশ্ন দুটো পূরণ করো। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ও বড়দের বা শিক্ষক-শিক্ষিকার সাহায্যে প্রতিটি প্রশ্ন পূরণ করো।

কোন ধরনের অসুখে সাধারণত ডাক্তারবাবু কী ঔষধ ব্যবহার করতে বলেন এর পরিবর্তে আগেকার সময়ে কী ধরনের ঔষধ ব্যবহার করা হতো
জ্বরজ্বরনাশক
ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণেঅ্যান্টিবায়োটিক বা জীবাণুনাশক
পেঁচাপড়া হলে
অম্বল বা অ্যাসিডিকঅ্যান্টাসিড
ছড়ে যাওয়া বা কেটে যাওয়াঅ্যান্টিসেপটিকগলা গাছের পাতার রস বা দূর্বার রস
ছোটো লেগে ব্যথা হলেপেইনকিলার বা বেদনানাশক

ঔষধ হিসাবে আমরা যে সমস্ত পদার্থ ব্যবহার করছি তার প্রায় সবই সংশ্লেষিত। অথচ একটা সময় ছিল, যখন মানুষের ও অন্যান্য প্রাণীর শারীরিক অসুস্থতা নিরাময়ে ব্যবহৃত হতো প্রাকৃতিক বা ভেষজ ঔষধ। আমাদের চারপাশে সেই সমস্ত উপাদান ব্যবহার করে ঔষধ তৈরি করা হয়। এখন প্রয়োজন তা প্রয়োগ করার উপযুক্ত জ্ঞান।

তোমার বাড়ির কুকুর-বিড়ালকে কখনও ঔষধ খেতে দেখেছ?

এভাবে একটি লক্ষ্য করলে দেখতে পাবে আমাদের চারপাশের মানুষতো জীব কীভাবে প্রাকৃতিক বা ভেষজ উপায়ে নিজেদের প্রধান করে রাখল। কেবল আমরা, মানুষেরা শুধু প্রকৃতির উপর প্রথাগতভাবে নির্ভরশীল থাকতে পারি না। তার প্রধান কারণ কী হতে পারে?

একটা কারণ যদি হয় আমাদের প্রতিবেশ প্রাণীর ক্ষমতা কমে যাওয়া, তবে অন্য কারণগুলো হলো মানুষের জীবনযাত্রার পরিবর্তন ও পুরোনো ঔষধের বিরুদ্ধে রোগসৃষ্টিকারী জীবাণুর প্রতিরোধ গড়ে ওঠা। তাই আরও নতুন নতুন ঔষধ তৈরি করার প্রয়োজন হয়েছে। বিজ্ঞানীরা নানা গবেষণার ফলাফলকে শুধু মানুষই ব্যবহার করতে পারে।

একটা বিষয় লক্ষ্য করে, যে সমস্ত মোড়কের মধ্যে ঔষধ থাকে সেগুলো আমরা ছুঁড়ে ফেলে দিই। তারপর সেগুলোর কী হয়? নিজেদের মধ্যে আলোচনা করো।

পরিবেশ গঠনে পদার্থের ভূমিকা

রং ও রঞ্জক

আমাদের পৃথিবীতে এমন অনেক প্রাণী আছে যাদের দর্শনেন্দ্রিয় শুধুমাত্র সাদা-কালো ছবি বা বস্তু দেখার জন্যই তৈরি। কিন্তু আমরা, মানুষেরা রঙিন জিনিস দেখতে অভ্যস্ত। তোমাদের চারপাশে যে সমস্ত রঙিন জিনিস দেখতে পাচ্ছ তার একটা তালিকা তৈরি করো। আর শিক্ষক/শিক্ষিকার সহায়তায় তাদের রঙের উৎস সন্ধান করো।

কী জিনিস তার রঙের উৎস
গাজরজৈব
হলুদ
গাদা বা গোলাপ ফুলের পাপড়ি
রঙিন প্লাস্টিকের বালতি

তোমাকে বাড়ির দেয়াল, দরজা-জানালা অথবা লোহার আলমারি রং করতে বলা হলো। কোন ক্ষেত্রে তুমি জলে গোলা রং বা তেলে গোলা রং ব্যবহার করবে?

কোন ক্ষেত্রে কেমন রং ব্যবহার করবে
দেয়ালজলে গোলা রং
দরজা-জানালাতেলে গোলা রং
লোহার আলমারিতেলে গোলা রং

এরকম রং ব্যবহার করার আগে কী কী প্রয়োজন বলে তুমি মনে করো?

প্রায় কোনো রং-ই ছোটো থেকেই সরাসরি ব্যবহার করা যায় না। কারণ এখানকার ব্যবহৃত বেশিরভাগ রং-এর দুটো অংশ আলাদা হয়ে গেছে। তাদের মেশানোর দরকার হয়। রং-এর মধ্যে এই দুটো অংশ কী কী?

  • (i) রঞ্জক (বা স্বাভাবিক রঙে যা হাল্কা রং), যেমন হালকা রঙ
  • (ii) রঞ্জক বা পিগমেন্ট অংশ (রঙিন মৌলের কণা)।

বেশিরভাগ রং-এর এই দুটি অংশই কৃত্রিমভাবে তৈরি।

জানো কি? অনেক আগে জামাকাপড় রং করার জন্য নীল (Indigo) পাওয়া যেত নীচের গাছ থেকে। এখন রাসায়নিক গবেষণাতেই এই রঙগুলো তৈরি করা যায়। একসময় বিদেশী নীলককরা আমাদের দেশের চাষীদের নুন চাষ করতে না দিয়ে তাদের জমিতে নীলের গাছ চাষ করতে বাধা করত। চাষীরা রাজি না হলে তাদের ওপর অত্যাচার করা হতো। নিধুয়া চাষীরা শেষ পর্যন্ত বিদ্রোহ ঘোষণা করে। এই হলো উনিশ শতকের নীল বিদ্রোহের ইতিহাস।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

আমাদের ব্যবহার করা পেনের কালি বা ঘষার কালিও এধরনের একাধিক রঞ্জকের মিশ্রণে তৈরি।

করে দেখো: একটা ফিল্টার কাগজে কয়েকটি কালির ফোঁটা ফেলো। এবার একটা প্লাস্টিকের ছোটো গ্লাসের গায়ে কাগজটা সুতো দিয়ে দিয়ে জলের ফোঁটা ফেলো। কিছুক্ষণ পর তুমি কি দেখতে পেলে তা দেখো (জলও ফোঁটা থেকে জলের মধ্যে স্প্লিটও দিতে পারো)।

Ink drops
কী করলে কী দেখলে

সিমেন্ট

আধুনিক নির্মাণশিল্পের একটি প্রধান উপাদান হলো সিমেন্ট। আমাদের চারপাশে সিমেন্টের বহু জিনিসই আমরা দেখতে পাই। নীচের তালিকায় তোমাদের জানা আরও জিনিসের নাম লেখো, যেগুলোর একটা উপাদান সিমেন্ট।

কী কী জিনিস তৈরিতে সিমেন্ট ব্যবহার হচ্ছে সিমেন্টের সঙ্গে আরও কী কী জিনিস কাজে লেগেছে বলে মনে হয়
বাড়িইঁট, বালি, লোহার রড, পাথরকুচি

সিমেন্টের এত ব্যাপক ব্যবহারের কারণ কী জানো? সিমেন্ট সহজলভ্য, তার আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা ও সর্বোপরি সিমেন্টের জিনিসের স্থায়িত্ব বেশি।

সিমেন্ট কি কোনো একটি রাসায়নিক পদার্থ?

সিমেন্টের মধ্যে বেশ কিছু ধাতুর যেমন ক্যালসিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম, আয়রনের অক্সাইড ও সিলিকন জাতীয় যৌগ মেশানো থাকে। এর উপাদানগুলো বিভিন্ন খনিজ পাথর থেকে পাওয়া যায়, যেমন চুনপাথর চূর্ণ বা চূনাপাথর। আবার কিছু কৃত্রিমভাবে তৈরি হয়। তোমরা দেখেছ রাসায়নিক বিক্রিয়া যখন সিমেন্ট দিয়ে তৈরি করেন তখন বালি আর সিমেন্টটা নির্দিষ্ট অনুপাতে মিশিয়ে তাতে জল মেশানো।

তুমি যদি সিমেন্ট, বালি আর জল মিশিয়ে একটা দানা পাকিয়ে এক এক রাতি রেখে দাও কী দেখতে পাবে?

—পুরোটাটই জমাট বেঁধে যাবে।

আবার দেখবে সিমেন্ট - বালি দিয়ে ইঁট গাঁথা বা ঢালাই করার পর তাতে বেশ কয়েকদিন জল দেওয়া হয়। জলের সংস্পর্শে সিমেন্টের মধ্যে থাকা ক্যালসিয়াম অক্সাইড, হাইড্রক্সাইড পরিণত হয় এবং বিভিন্ন সিমেন্টের মৌলের সঙ্গে যুক্ত হয়। এইসব রাসায়নিক বিক্রিয়াগুলোতে তাপ উৎপন্ন হয় বলে সিমেন্ট ফেঁটে যায়। তাই ঢালাইয়ের পরদিন থেকেই তার গায়ে জল দেওয়া হয়।

পরিবেশ গঠনে পদার্থের ভূমিকা

তোমাদের চারপাশে চেনা বস্তু জিনিসেই আগে যা উপাদান ছিল তা পালটে সিমেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে। নিজেরা আলোচনা করে উদাহরণগুলো লেখো:

কী জিনিস তৈরিতে আগে কী ব্যবহার হতো এখন কী ব্যবহার হচ্ছে
গোবর যুক্ত খাবার গামলাপোড়া মাটি
বাড়ি

কাঁচ

কর্মপত্র

  • i) তোমাদের চারপাশে দেখা কাঁচ ব্যবহার হচ্ছে এমন কয়েকটি জিনিসের উদাহরণ দাও—
  • ....................

  • ii) এই জিনিসগুলো কী কী কাজে লাগে তা লেখো।
  • ....................

  • iii) এই জিনিসগুলোয় কাঁচ ছাড়া অন্য কিছু ব্যবহার করা যেত কি? তোমার মতামত লেখো।
  • ....................

এই বিভিন্ন কাঁচ ব্যবহৃত কাঁচ আসলে কি জানো? এটা একটা মিশ্রণ, যা মূলত চূনাপাথর, সোডাভস্ম ও বালি (সিলিকা) থেকে তৈরি করা হয়। রং করার জন্য কাচে বিভিন্ন ধাতব অক্সাইড মেশানো হয় যাদের সবই কৃত্রিমভাবে তৈরি।

কাঁচের কোন রং-এর জন্য কোন যৌগ মেশানো হয়
হলুদআয়রন অক্সাইড
নীলকোবাল্ট অক্সাইড
সবুজক্রোমিয়াম অক্সাইড

জানো কি? — রসায়ন, পদার্থবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা, প্রাণীব্রিদ্যা, চিকিৎসাবিদ্যা, জ্যোতির্বিজ্ঞান - বিজ্ঞানের এইসব শাখায় কাঁচের তৈরি নানান যন্ত্রপাতি ছাড়া এগোনোই পারত না। কাঁচ সত্যাকারে বহু দূর এগিয়ে দিয়েছে। কাঁচের তৈরি অপটিক্যাল ফাইবার এখন বিদ্যুৎ ও যান্ত্রিকতা যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে। প্লাস্টিকের মোড়া কাঁচের তন্তু ফাইবারসবেরু ভূমি ও বিদ্যুৎ চালন করে প্রাকৃতিক রূপতে ব্যবহৃত হয়।

পরিবেশে সংশ্লেষিত যৌগের প্রভাব

আজ থেকে প্রায় 25-30 বছর আগেও কলকাতা শহরের যত জঞ্জাল ফেলা হতো ঝাপার মাঠে। কোন কোন জিনিস তখন ফেলা হতো তার কয়েকটি জিনিসের নাম পরের পৃষ্ঠায় তালিকা দেওয়া হলো। এখনও ঝাপার মাঠে যে এলাকায় ছিল, সেখানে কোনো জায়গা মানুষ মাটির নীচে থেকে সেগুলোর কী কী এখনও পাওয়া যাবে আর কোনগুলো যাবে না তা নিজেদের মধ্যে বা শিক্ষক/শিক্ষিকার সঙ্গে আলোচনা করে লেখো।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

ফেলা জিনিসের তালিকা: ছেঁড়া পলিথিন, চটের ব্যাগ, প্লাস্টিকের ভাঙা খেলনা, ছেঁড়া ছাতাই, আনারসের খোলা, মাছের আঁশ, ছেঁড়া জামাকাপড়, ভাবের খোল, কাঁচের ভাঙা শিশি, ওষুধের মোড়ক, নাইলনের দড়ি, লোহার পেরেক, ইনজেকশনএর সিরিঞ্জ, পলিথিনের বোতল, পেনসিলের ছোটো টুকরো, বাতিল টিভ, মরা জীবজন্তু ইত্যাদি।

এখন আর কোন কোন জিনিস পাওয়া যাবে না কোন কোন জিনিস এখনও পাওয়া যাবে আজ থেকে পঞ্চাশ বছর পরেও কোন কোন জিনিস পাওয়া যাবে

যে জিনিসগুলো এখন আর পাওয়া যাবে না, সেগুলোর কী হলো?

আর যেগুলোকে পঞ্চাশ বছর পরেও পাওয়া যাবে তাদের কী হবে?

যেগুলো প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া নষ্ট হয়ে যায় তারা জৈব ভঙ্গুর (বায়োডিগ্রেডেবল)। আর যা যায় তারা জৈব অভঙ্গুর (নন-বায়োডিগ্রেডেবল)। এই দুই ধরনের পদার্থ তাদের গঠন, জলধারণ ক্ষমতা ইত্যাদিতে সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রকৃতির। জীবদেহে সম্পূর্ণভাবে জৈব ভঙ্গুর, কিন্তু মানুষের তৈরি সংশ্লেষিত পলিমারগুলোর অধিকাংশই জৈব অভঙ্গুর।

করে দেখো: নন-বায়োডিগ্রেডেবল পদার্থগুলোর ব্যবহার যেন কমাতে হবে তা যুক্তি দিয়ে বোঝাতে একটা পোস্টার তৈরি করো।

পরিবেশ গঠনে পদার্থের ভূমিকা

তোমাদের স্কুলের বা বাড়ির চারপাশে দেখা এমন কোনো পদার্থ দেখতে পাও তাদের কথা জানাতে পারো কিনা যেগুলি দীর্ঘদিন পরিবেশে থেকে যাচ্ছে ও কোনো ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলছে (প্রয়োজনে শিক্ষক/শিক্ষিকার সাহায্য নাও):

কী পদার্থ পড়ে থাকছে পরিবেশে তার কী প্রভাব পড়ছে

তোমাদের নিজেরের পর্যবেক্ষণ থেকেই তোমরা বুঝতে পারছ কীভাবে চারদিকে পলিমারের তৈরি জিনিসপত্র ছড়িয়ে আছে; তারা যেমন জলের গতিপথও বা কৃষি ফসলের উষ্ণতা নষ্ট করছে তেমনি তাদের উৎপাদন অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ বিভিন্ন উৎসের জলের রং বা পরিবেশ পরিবর্তন ঘটাচ্ছে।

কৃষিকাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন কীটনাশক বা ছত্রাকনাশক কী শুধু প্রাকৃতিক হিসাবে সীমাবদ্ধ থাকে? — তা নয়, সেখান থেকে অনেক দূরে ছড়িয়ে পড়ে জল ও বাতাসের দ্বারা। এগুলো কিভাবে ক্ষতি করতে পারে? শিক্ষক/শিক্ষিকার সাহায্যে নীচে সারণিটি পূরণ করো।

কোন সংশ্লেষিত পদার্থ বিশেষ ক্ষেত্রে সরাসরি প্রভাব পড়ছে কী ক্ষতি ঘটবে
ডিডিটি, মিথাইল প্যারাথিয়ন, পেন্টাক্লোরোফেনলখোলা রাইজোবিয়াম ব্যাকটেরিয়া
অলড্রিন, হেপ্টাক্লোরভূগর্ভস্থ প্রাণী (প্রথম শ্রেণির খাদক)

পরীক্ষা করলে প্রায় প্রত্যেক মানুষের দেহে কিছু পরিমাণে কীটনাশক পাওয়া যাবে, বিশেষত শিশুদের মধ্যে, কারণ তাদের অনাক্রম্যতা কম ও বৃদ্ধির হার বেশি।

আমাদের চারপাশে আর এখন দেখতে পাও কি পাও না জানো? চাষের কাজে অনিয়ন্ত্রিত কীটনাশক ও গরিব শাখ রোগীরা অনিয়ন্ত্রিত মাত্রায় ডাইক্লোফেনাক নামক বেদনানাশকের ব্যবহার এর একটা কারণ। এই পশুদের মৃত্যু পর তা পরবর্তী খাদকের শরীরে গিয়ে তাদের বিলুপ্তি ঘটিয়েছে।

করে দেখো: মানুষ যখন জল দিয়ে মুখ ধোরা শিখল, তখন কীসের তৈরি ছিল জল? আর এখন কেন নাইলনের জল হলো? ফুটবলার গোলাপটেট কেন নাইলনের জল বাঁ হয়? আমি সুস্থ থাকার জন্য, আর এখন নাইলনের। সুন্দরবনের মাছ যাতে তোলপাড়ে ডুবতে না পারে তার জন্য আগানো হয়েছে লোহার জল, আর এখন লাগানো হচ্ছে উচ্চচাপের নাইলন জল। নাইলনের জল ব্যবহার পরিবেশের কী ক্ষতি হচ্ছে? ছোটো ফঁদের গাছ পোনা। হাঁস, চামড়া জ্বলে মরে গিয়ে জীববৈচিত্র্য নষ্ট হচ্ছে। পাহাড়তে চড়ার শব্দ অথবা, প্যারাসুটও এই ধরণের তন্তু থেকে তৈরি।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

আমাদের দেশে বহু ব্যবহৃত নরম পানীয়গুলোর মধ্যে উদ্বেগজনক পরিমাণে কীটনাশক পাওয়া গেছে। এই সমস্ত দীর্ঘস্থায়ী জৈব দূষকগুলো অনাক্রম্যতা কমানো, জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা নষ্ট করে দেওয়া, বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কার্যক্ষমতা হ্রাস, স্নায়বিক অবিরাম, এবং অন্যান্য নানা পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম। তাছাড়া ফসলের পক্ষে ক্ষতিকারক পোকামাকড় মারার জন্য যে সমস্ত কীটনাশক ব্যবহৃত হয় তা তাদের ছাড়াও বহু পরিবেশবান্ধব জীবকেও (মৌমাছি, রেশম মথ) মেরে ফেলে। ফলে পরিবেশের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়।

বিভিন্ন রং ও রঞ্জক কীভাবে মানুষের ক্ষতি করতে পারে জানো?

অণুগুলো তৈরি করতে যেসমস্ত ধাতব যৌগ ব্যবহার করা হয় তারা বিভিন্নভাবে আমাদের ক্ষতি করে। যেমন –

কোন ধাতুর যৌগ কী প্রভাব পড়তে পারে
লেডস্বাদগ্রন্থির ইচ্ছে কমে যাওয়া, বদহজম, মাথাব্যথা।
পারদমুখ ও জিভের পেশির কাজ কমে যাওয়া, বুদ্ধির ক্ষতি হওয়া।
ক্যাডমিয়ামহাড়ের জোড়ে ব্যথা, মেরুদণ্ডের হাড় বেঁকে যাওয়া।

তোমরা প্রতিদিনের জীবনে যে সমস্ত সংশ্লেষিত পদার্থ ব্যবহার করছ তাদের ব্যবহার দেখছ তার পরিবর্তে অন্য কিছু ব্যবহার করা যায় কি? প্রয়োজনে শিক্ষক/শিক্ষিকার সাহায্য নাও:

এখন কী ব্যবহার করছ কী কী ব্যবহার করা যেতে পারে বলে মনে হয়
পলিথিন ব্যাগমোটা কাগজ বা চটের ব্যাগ

মানুষের খাদ্য

খাদ্য উৎপাদন

আমরা সারাদিনে যে যে কাজ করি তার একটা তালিকা নীচের ছবি দেখে তৈরি করি।

আচ্ছা, এইসব কাজ করতে গেলে কী প্রয়োজন?

Work 1 Work 2 Work 3 Work 4 Work 5 Work 6 Work 7 Work 8
Daily tasks diagram

দৌড়ানো

সারাদিনের কাজ

তোমার সামনের টেবিলটা এক হাতে তোলার চেষ্টা করো। না পারলে দু-হাতে তোলার চেষ্টা করো। এই টেবিলটা তুলতে তোমার দেহের শক্তির প্রয়োজন।

এই শক্তি কোথা থেকে পাও?

সারাদিন টিফিন না খেয়ে থাকলে, সকালে না খেলে স্কুলে গেলে তোমার কেমন লাগবে? শরীরে কী জোর পাও?

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

তাহলে তোমার দেহের শক্তির উৎস কী? ............................

ঠিকমতো খাবার খেলে সুস্থ মানুষের শরীরে জীবাণুর সংক্রমণ কম হয়। এবার বলো কীসের অভাবে দেহে রোগজীবাণুর সংক্রমণ অতিমাত্রায় ঘটে এবং শরীর অসুস্থ হয়।

তাহলে বলো, রোগজীবাণুর আক্রমণ ঠেঁকানো বা তাদের মারার শক্তি কী থেকে আসে? ............................

রোগজীবাণুর আক্রমণ ঠেঁকানো বা তাদের মারার ক্ষমতা (রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা অনাক্রম্যতা) বাড়াতে গেলে কী করা উচিত? ............................।

এবার বলার চেষ্টা করো:

  • (1) সারাদিনে নানা কাজ করার জন্য কীসের প্রয়োজন? ............................
  • (2) নানা রোগ বা সমস্যা হাত থেকে বাঁচাতে গেলে কীসের প্রয়োজন? ............................

এখন এই শক্তি এবং রোগ প্রতিরোধ উপাদানের উৎস হলো খাদ্য

Fish Papaya Milk

খাদ্যে নানারকম উপাদানের অভাব হলে দেহে নানা সমস্যা হয়। পরবর্তী আলোচনা থেকে কোন খাদ্যে কোন উপাদান আছে তা জেনে নাও।

সমস্যা খাদ্যের কোন উপাদানের অভাব হয়
রাতে কম দেখাভিটামিন
চোখের কোষ ফ্যাকাশেখনিজ মৌল
ঠোঁটের কোণে ও জিভে ঘাভিটামিন
মাড়ি ফোলা ও রক্ত পড়াভিটামিন
প্রায়ই হাড় ভেঙে যাওয়াখনিজ মৌল

মানুষের খাদ্য

তাহলে কীরকমের (উদ্ভিজ্জ / প্রাণীজ) খাবার আমরা খাই? এতে কোন খাদ্য উপাদান বেশি/কম হচ্ছে তা পরবর্তী আলোচনা থেকে এবং শিক্ষক/শিক্ষিকার সাহায্যে করে নীচের সারণিতে লেখো।

উদ্ভিজ্জ খাদ্য প্রাণীজ খাদ্য
কোন খাদ্য উপাদানটি বেশি/কম আছে কোন খাদ্য উপাদানটি বেশি/কম আছে
বেশি কম বেশি কম
চাল, আটাশর্করাদুধ
মুড়ি, চিঁড়েমাছপ্রোটিনশর্করা
ডালছানা
সয়াবিনমাংস
তেললিপিডডিম
মাশরুমদুধ
সবজিখনিজ মৌল, তন্তুচিঁড়ি
ফলভিটামিন, খনিজ মৌলকাঁচকলালিপিড

নীচের খাদ্যতালিকায় কী কী উপাদান থাকতে পারে তাই নিয়ে এসো এবার আলোচনা শুরু করি।

Food components

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

আদাগুলোর প্রধান উপাদান এধরনের রস দেখা —

  • (1) শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট (2) প্রোটিন (3) লিপিড (4) ভিটামিন (5) জল (6) খনিজ মৌল (7) খাদ্যতন্তু (8) উদ্ভিজ্জ রাসায়নিক (ফাইটোকেমিক্যাল)। (এর কোনো কোনোটা অনেকটা তো খাওয়া হয়। আবার কোনোটা অল্প করে খাওয়া হয়। কোনো কোনো উপাদান খাবার দেহের বিশেষ দরকার লাগে।

কোন খাদ্যে কোন খাদ্য উপাদান থাকতে পারে এসো তার একটি তালিকা তৈরি করি। ফাঁকা জায়গা পূরণ করতে প্রয়োজনে শিক্ষক/শিক্ষিকার সাহায্য নাও।

খাদ্য উৎস প্রধান খাদ্য উপাদান
1. ভাত, রুটি, দুধ, ফল ....... ,শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট
2. মাছ, মাংস, ডিম .......প্রোটিন
3. মাখন, তেল, বাদাম, নারকেল ....... ,লিপিড
4. পানীয় জল, ফল, সবজি .......জল
5. টমেটো, আমলকী, আটা, গাজর .......ভিটামিন
6. দুধ, নুন, চাল, গুড়, হাঁটাশাক, মাংস .......খনিজ মৌল
7. আম, আপেল, হাঁটাশাক, পেঁপে, ওট .......খাদ্যতন্তু
8. চা, পাকা আম, পাকা পেঁপে ....... ,উদ্ভিজ্জ রাসায়নিক/ফাইটোকেমিক্যাল

একটি খাদ্য থেকে একাধিক খাদ্য উপাদান পাওয়া যেতে পারে। পাকা আমে ভিটামিন, শর্করা, খনিজ মৌল, খাদ্যতন্তু এবং প্রচুর পরিমাণে জলও পাওয়া যায়। এই প্রসঙ্গে পরের পাতার আলোচনাগুলো লক্ষ্য করো ও নীচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করো।

  • দুধে আর কোন কোন খাদ্য উপাদান থাকতে পারে? প্রোটিন, খনিজ মৌল, শর্করা ....................
  • গমে আর কোন কোন খাদ্য উপাদান থাকতে পারে? খনিজ মৌল, ভিটামিন, প্রোটিন ....................
  • আমলকীতে আর কোন কোন খাদ্য উপাদান থাকতে পারে? ভিটামিন, জল, ....................
  • আঁপেল এ আর কোন কোন খাদ্য উপাদান থাকতে পারে? শর্করা, তন্তু, জল ....................
  • মাছে আর কোন কোন খাদ্য উপাদান থাকতে পারে? লিপিড, খনিজ মৌল, ভিটামিন ....................

মানুষের খাদ্য

কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা

Sugarcane Rice Wheat Corn Dates Fruits Banana Pineapple Nuts Beans Bread Dragon fruit Meat Sugar Milk Honey White sugar Mustard oil Caramel Sweets

উপরের ছবিগুলোতে বিভিন্ন শর্করা জাতীয় খাদ্য উপাদানের উৎসগুলো দেওয়া হলো। এদের মধ্যে –

  • কোন কোন উদ্ভিজ্জ খাদ্য থেকে শর্করা পাওয়া যায় – আলু ........................................
  • কোন কোন প্রাণীজ খাদ্য থেকে শর্করা পাওয়া যায় – মেটে ........................................

কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাদ্যদ্রব্যকে নীচের শ্রেণিগুলোতে ভাগ করা যেতে পারে –

  • (1) মিষ্টি খাদ্যবস্তু – আখ, মধু, পাকা আম, পাকা কলা, আঙুর, আপেল, ........................
  • (2) দানাশস্য – চাল, গম, জোয়ার, বাজরা, ........................ , ........................
  • (3) মূল ও কন্দ – বিট, আলু, গাজর, রাঙা আলু, শাঁকালু, ........................
  • (4) সবুজ শাকসবজি – লালশাক, নটেশাক, ........................ , ........................
  • (5) বিভিন্ন প্রকার ডাল – মসুর, মুগ, ........................ , ........................
  • (6) প্রাণীজ খাদ্যবস্তু – মধু, দুধ, ........................ , ........................

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

দেহ গঠনের জন্য যেসকল শর্করা আমরা ব্যবহার করি তা প্রধানত দু-ধরনের – গ্লুকোজ এবং স্টার্চ বা শ্বেতসার। অনেক শ্বেতসার অণু জুড়ে গ্লুকোজ তৈরি হয়।

এবার তোমরা জানার চেষ্টা করো কার্বোহাইড্রেটএর উৎসরূপে যে খাদ্যগুলোকে আমরা চিহ্নিত করলাম, তাদের ছাড়াও নীচের খাদ্যগুলোতে কার্বোহাইড্রেট আছে কিনা (প্রয়োজনে শিক্ষক/শিক্ষিকার সাহায্য নাও)।

খাদ্য উপস্থিত/অনুপস্থিত
1. কুমড়ো
2. কিশমিশ
3. আতা
4. জাম
5. ডিম
6. জিরাউপস্থিত
7. দই
8. রেক
9. ঘি
10. টিড়া

এসো এবার মনে করি, আমাদের দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কী কী কাজ করে।

হাত-পায়ের পেশি কী কাজ করে?

হৃৎপিণ্ড কী কাজ করে?

ফুসফুস কী কাজ করে?

অন্ত্র কী কাজ করে?

এইসব কাজ করার শক্তি পাওয়া যায় কোথা থেকে?

কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার (শ্বেতসার) হজম হবার পর যখন সেল থেকে ছোটো কণাতে পরিণত হয়, তাই হলো গ্লুকোজ। এই গ্লুকোজ আবার শরীরের সমস্ত অঙ্গের সীমানায় পৌঁছে যায় রক্তের মাধ্যমে। সেখানে কোষের ভেতর বাতাস থেকে নেওয়া অক্সিজেনের সাহায্যে এই গ্লুকোজ থেকে তৈরি শক্তি, যা দিয়ে দেহের নানা কাজ হয়।

মানুষের খাদ্য

শর্করা ও দেহের সমস্যা

সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের দেহকোষ গ্লুকোজ থেকে শক্তি তৈরি করে। সেই শক্তি দিয়ে দেহের নানা কাজ হয়। কিন্তু রক্ত থেকে গ্লুকোজ যদি কোষ প্রবেশই না করতে পারে? ওই গ্লুকোজ তখন রক্তে জমে, আর রক্তে গ্লুকোজ বেড়ে যায়। গ্লুকোজ তখন রক্তের মাধ্যমে ঘুরতে থাকে, যতক্ষণ না তা মূত্রের মাধ্যমে দেহ থেকে বের হয়ে যায়। কোনো গ্লুকোজ ঢুকতে না পারার জন্য দেহের নানা অঙ্গ (হৃৎপিণ্ড, বৃক্ক, চোখ, পা) সমস্যার সৃষ্টি হয়। এই অবস্থাকে বলা হয় ডায়াবেটিস বা ডায়াবেটিস মেলাইটাস। আমাদের দেশের মানুষ এই সমস্যায় ভুগছেন। কলিক পলিশ্রম বিধায় এই সকল খাদ্যাভাস মেনে চললে অনেক ক্ষেত্রে এই রোগকে এড়ানো যায়।

কোনো কোনো শিশু কিসিরক রক্তে দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার খাওয়ার পর নানা সমস্যায় ভোগেন। দুধ শর্করা ল্যাকটোজ হজম না করতে পারার জন্য এই সমস্যা।

প্রোটিন

এসো দেখি, কোথায় কোথায় থাকে প্রোটিন। মনে রেখো মানুষের দেহের প্রোটিন দিয়ে তৈরি টেনডন ও লিগামেন্ট খুব শক্ত দড়ির মতো, টানলে ছেঁড়ে না। আবার মুরগি বা হাঁসের ডিমের সাদা অংশ প্রোটিন দ্রবণ গরম করলে জমে শক্ত হয়ে যায়।

নীচের ছকে মানুষের দেহে কোথায় কোথায় কী কী প্রোটিন পাওয়া যায় তা দেখি।

প্রোটিন কোথায় থাকে
কেরাটিনচুল,নখ
অ্যাকটিন, মায়োসিনপেশি
হিমোগ্লোবিনলোহিত রক্তকণিকা
গ্লোবিউলিন, ফাইব্রিনোজেনরক্তের প্লাজমা
কোলাজেনঅস্থি, টেনডন, লিগামেন্ট
Protein source

শক্তি উৎপন্ন করতে, দেহের বিভিন্ন অংশ বা কণা গঠনে, ক্ষত সারাতে, শ্বাসবায়ু পরিবহনে, পেশির সংকোচনে, ভিন্ন ভিন্ন প্রোটিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দেহের রোগ প্রতিরোধেও প্রোটিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কোনো জায়গা কেটে গেলে, ওই জায়গায় রক্ত পড়া বন্ধ করতেও রক্তের প্লাজমায় থাকা প্রোটিন সাহায্য করে। আবার অতিরিক্ত প্রোটিন শরীরে জমা হলে রক্ত, কিডনি ও অন্যান্য সমস্যার সৃষ্টি হয়।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

কোনো খাদ্য থেকে আমরা প্রোটিন সংগ্রহ করি তা নীচের ছবিগুলো দেখে বা নীচের তালিকা থেকে লেখো:

Soybean Wheat Pulses Shrimp Rice Meat Beans Eggs

উপরের ছবিগুলো দেখে কী সিদ্ধান্তে আসা যায় –

  • (i) কোন কোন উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে প্রোটিন পাওয়া যায় – সয়াবিন, গম, ....................
  • (ii) কোন কোন প্রাণীজ উৎস থেকে প্রোটিন পাওয়া যায় – মাছ, মাংস, ডিম, ....................

উপরের ছবিগুলো ছাড়াও আমাদের খাদ্যতালিকা এমন কতগুলি খাদ্য আছে যা থেকেও প্রোটিন পাওয়া যায় –

উদ্ভিজ্জ উৎস প্রাণীজ উৎস
1. চাল, পিস, চিনাবাদাম, ........1. ছানা, পনির, ........
2. বাজরা, ভুট্টা, ........2. কাঁকড়া, ........
3. রসুন, লবণ, এলাচ, ধনে, হলুদ, ........3. দুধ, ........

এবার তোমরা জানার চেষ্টা করো প্রোটিনের উৎসরূপে যে খাদ্যগুলোকে আমরা চিহ্নিত করলাম, তাদের ছাড়াও নীচের খাদ্যগুলোতে প্রোটিন আছে কিনা (প্রয়োজনে শিক্ষক/শিক্ষিকার সাহায্য নাও)।

খাদ্য উপস্থিত/অনুপস্থিত
(1) চাল, গম
(2) ঘি
(3) চিনাবাদাম
(4) তিল
(5) কলা
(6) মাশরুম
(7) সুজি
(8) পিঁপড়ের ডিম

মানুষের খাদ্য

লিপিড

একজন সুস্থ বা মোটা মানুষকে লক্ষ্য করো। দেখো তো দেহের কতগুলো জায়গায় লিপিড প্রচুর পরিমাণে জমা থাকে। এই লিপিডযুক্ত দেহের অঙ্গের নাম

Lipid human body

দেহের অঙ্গের নাম

ঘাড় ও গলায়

ওপর হাতে

বুকে

পেটে

ঊরুতে

লিপিড মানুষের দেহের শক্তির উৎসরূপে কাজ করে, দেহকে বাহিরের আঘাত থেকে রক্ষা করে। দেহের থেকে তাপ বেরিয়ে যাওয়া কমিয়ে দেয়। আবার শরীরে অতিরিক্ত লিপিড জমা হলে হৃৎপিণ্ড, রক্তনালী ও যকৃতের নানা সমস্যা তৈরি হয়।

কোন কোন খাদ্য থেকে আমরা লিপিড সংগ্রহ করি তা নীচের ছবিগুলো দেখে ও লেখো।

Coconut Mustard oil Ghee Meat Almonds Eggs

উপরের ছবিগুলো ছাড়াও আমাদের খাদ্যতালিকা ব্যবহৃত এমন কতগুলি খাদ্য আছে যা থেকেও লিপিড পাওয়া যায় –

উদ্ভিজ্জ উৎস প্রাণীজ উৎস
1. নারকেল, কাঁঠাল, ........1. মাছের তেল, ........
2. ডাল, আটা, ........2. দুধ, দই, ........
3. গোলমরিচ, জিরা, ........3. মাংস, ........

এবার তোমরা জানার চেষ্টা করো লিপিডের উৎসরূপে যে খাদ্যগুলোকে আমরা চিহ্নিত করলাম, তাদের ছাড়াও নীচের খাদ্যগুলোতে লিপিড আছে কিনা (প্রয়োজনে শিক্ষক/শিক্ষিকার সাহায্য নাও)।

খাদ্য উপস্থিত/অনুপস্থিত
1. ফল ও শাকসবজি
2. দানাশস্য
3. সর ওঠানো দুধ

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

খাদ্য / পানীয় উপস্থিত/অনুপস্থিত
4. পপকর্ন
5. আলু
6. আখের রস
7. লেবু
8. গম, ভুট্টা, চাল
9. মাশরুম
10. মুরগির মাংস
11. খেজুর

ভিটামিন

আজ থেকে 500 বছর আগে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে একটি খুব প্রচলিত রোগ ছিল স্কার্ভি। জাহাজের নাবিকদের অনেকেই এই রোগে মারা যেত। তাই জাহাজে কমলালেবু ও অন্যান্য টক জাতীয় ফল নাবিকদের খেতে দেওয়া হতো।

এরকম নানা ঘটনা লক্ষ্য করে বিশ্ব শতকের গোড়ার দিকে বিজ্ঞানী ক্যাসিমির ফংকে ও হপকিন্স সিদ্ধান্তে আসে যে খাদ্যের মধ্যে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও লিপিড ছাড়াও 'এমন কোনো' উপাদান আছে যার অভাবে স্কার্ভি বা বেরিবেরির মতো রোগ হয়। এই উপাদানটি হলো ভিটামিন। এদের গ্রিক শর্করা, প্রোটিন বা লিপিডের মতো শক্তি পাওয়া যায় না।

ভিটামিন দু-ধরনের –

  • 1. তেলে বা ফ্যাটে গুলে যায় (ফ্যাট দ্রাব্য) এমন ভিটামিন – A, D, E ও K।
  • 2. জলে গুলে যায় (জল দ্রাব্য) এমন ভিটামিন – B কমপ্লেক্স, C।

A, D, E ও K ভিটামিনগুলো মানুষের দেহে নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে।

ভিটামিনের নাম কাজ
Aচোখ, চামড়া, হাড়, দাঁত ও খাদনালীর গঠন ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
Dহাড় ও দাঁতের স্বাভাবিক গঠন ঠিক রাখে।
Eত্বক,লোহিত রক্তকণিকা, হৃৎপিণ্ড ও মস্তিষ্কের সক্রিয়তা বজায় রাখে।
Kকেটে যাওয়া জায়গা থেকে রক্ত পড়া বন্ধ করে।

এখন পরের পাতার খাদ্য উৎসগুলোর ছবি লক্ষ্য করো এবং জানো এদের মধ্যে কোনগুলো A, D, E, K ভিটামিনের উৎস।

মানুষের খাদ্য

ভিটামিন A-র উৎস

Carrot Egg Tomato Oil Milk

ভিটামিন D-র উৎস

Sun Egg Fish Butter

ভিটামিন E-র উৎস

Mustard oil Nuts Egg Leafy greens Fruits

ভিটামিন K-র উৎস

Cauliflower Milk Peas Cabbage Turnip Broccoli

উপরের ছবিগুলো ছাড়াও আমরা আরও নানা ধরনের খাদ্য যা খাই থেকেও ফ্যাট দ্রাব্য এমন ভিটামিন পাওয়া যায়। সেগুলো হলো—

উদ্ভিজ্জ উৎস প্রাণীজ উৎস
পাকা আম, কুমড়ো, ডুমুর, হাঁটাশাক, জিরা, জোন, জগপটে, বেলপাতা, নটেশাক, তেল,ডাল, ........মাংস, ঘি, ছানা, কাঁকড়া, ........

নীচের ক্ষেত্রগুলোতে কোন কোন ভিটামিনের সাহায্য নেবে (A, D, E, K)?

সমস্যা ভিটামিনের নাম
1. রাতে দেখতে কষ্ট হয়।1.
2. হাড়গুলো বাঁকা ও মেরুদণ্ড বেঁকে গেছে।2.
3. ক্ষতস্থানে রক্ত সহজে জমাট বাঁধে না।3.

জল দ্রাব্য ভিটামিন

এবার এসো দেখি তোমাদের পরিচিত কোন খাদ্য উৎস থেকে জল দ্রাব্য ভিটামিনগুলো পাওয়া যায় –

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

Lemon Custard apple Green chili Tomato Guava Rice Wheat Corn Egg Milk Fish Meat

উপরের ছবিগুলো দেখে নীচের ছকটি পূরণ করো। তোমার জানা অন্যান্য খাদ্যের নাম তালিকাভুক্ত যোগ করো।

জলে দ্রাব্য ভিটামিনের নাম খাদ্য উৎস
1. ভিটামিন Cলেবু জাতীয় ফল, অঙ্কুরিত বীজ, কাঁচালঙ্কা, টমেটো, পেয়ারা
2. ভিটামিন B কমপ্লেক্সদানাশস্য, বাঁধানাকপি, মূলশাক, ছোটোমাছ, কাঁচালঙ্কা, দুধ ....................

এবার নীচের সারণির বাম দিকে কতকগুলো উপসর্গ দেওয়া হলো। জলে গুলে যায় এমন কোন ভিটামিনের অভাবে কোন রোগ হয় এসো তা দেখি।

উপসর্গের নাম ভিটামিনের নাম
1. ঠোঁট ফেটে যাওয়াi. B কমপ্লেক্স
2. চোখের নীচ ও নখ ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়াii. B কমপ্লেক্স
3. মাড়ি থেকে রক্ত পড়া, দাঁতও পচিয়ে যাওয়াiii. C
4. স্নায়ুর দুর্বলতাiv. B কমপ্লেক্স
5. অ্যানিমিয়া, পাতলা পায়খানা, স্মৃতিশক্তি হ্রাস হওয়াv. B কমপ্লেক্স

এবার তোমরা জানার চেষ্টা করো ভিটামিনের উৎসরূপে যে খাদ্যগুলোকে আমরা চিহ্নিত করলাম, তাদের ছাড়াও পরের পাতার খাদ্যগুলোতে জল দ্রাব্য ভিটামিন আছে কিনা (প্রয়োজনে শিক্ষক/শিক্ষিকার সাহায্য নাও)।

মানুষের খাদ্য

খাদ্য উপস্থিত/অনুপস্থিত
1. রুটি, ভুট্টা
2. পটল, বিন
3. কলমিশাক
4. লালপাতা
5. পেঁয়াজ, কাঁচা পেঁপে
6. জাম, তরমুজ, শশা
7. আলু
8. ডিমের সাদা অংশ
9. পনির, মেটে

খনিজ মৌল

নীচের ঘটনাগুলো ভালো ও এর সঙ্গে কোন খাদ্য উপাদান যুক্ত থাকতে পারে বোঝাবার চেষ্টা করো।

  • নখ চামট আকৃতির হয়।
  • মাঝেমধ্যে পেশিতে টান ধরে।
  • দেহের স্বাভাবিক রক্তচাপ হঠাৎ বেড়ে বা কমে যায়।
  • আখের পর অনেক শিক্ষক চামড়া টাচ যায় ও মানসিক বুদ্ধি ও বুদ্ধির প্রকাশ দেখা যায় না।
  • রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়বে থাকে।

এই সমস্যাগুলো কার্বোহাইড্রেট, লিপিড ও প্রোটিনের অভাবে ঘটে না।

এই সমস্যাগুলো ফ্যাট বা জলে গুলে যায় এমন ভিটামিনের অভাবেও ঘটে না।

তবে কি এই সমস্যাগুলো অন্য কোনো খাদ্য উপাদানের অভাবে ঘটে? এসো জানা যাক।

এই প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান হলো খনিজ মৌল। এরকম দরকারি খনিজ মৌলগুলো হলো – আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সোডিয়াম, আয়োডিন ও জিঙ্ক। এছাড়াও শরীর গঠনে অন্যান্য খনিজ মৌলেরও প্রয়োজন হয়। জিবিনের মতো খনিজ মৌল থেকে শক্তি পাওয়া যায় না।

জড় বা সজীব উপাদানে জল এবং খনিজ মৌল।

  • উদ্ভিদ প্রধানত মাটি বা মাটির নীচে থাকা জল থেকে খনিজ মৌল সংগ্রহ করে।
  • প্রাণীরা বিভিন্ন উদ্ভিজ্জ খাদ্য, প্রাণীজ খাদ্য বা জল থেকে খনিজ পদার্থগুলো সংগ্রহ করে।

পরের পাতার মানবদেহের কাজগুলোর সঙ্গে তোমার পরিচিতি আছে? না থাকলে পরিচিত হওয়ার ও বোঝার চেষ্টা করো। শরীরের এই কাজগুলোর সঙ্গে বিভিন্ন খনিজ মৌল সম্পর্কযুক্ত। ডানদিকে মৌলগুলোর নাম আর বামদিকে ওই মৌলগুলোর কাজ দেওয়া হলো।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

খনিজ মৌলের কাজগুলো কী কী?

কাজ খনিজ মৌলের নাম
দেহে জলের পরিমাণ নির্দিষ্ট রাখাসোডিয়াম
পেশি সংকোচন স্বাভাবিক রাখাক্যালসিয়াম
কোনো কাটা জায়গা দিয়ে রক্ত বেরোনো বন্ধ করালে রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করাক্যালসিয়াম
অক্সিজেন পরিবহন করাআয়রন
দাঁত ও হাড় গঠন করাক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম
মানসিক বুদ্ধি ও বুদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করাআয়োডিন
মস্তিষ্কের গঠন ও রক্তের শর্করার পরিমাণ ঠিক রাখাজিঙ্ক

নীচে বিভিন্ন খাদ্যের ছবি দেওয়া হলো। এবার পরিচিত হও ও কোন খাদ্য থেকে আমরা কোন খনিজ মৌল পেয়ে থাকি। তোমার জানা অন্যান্য খাদ্য উৎসের নাম তালিকায় যোগ করো।

Green leafy vegetables Strawberry Peas Cauliflower Cabbage Fish Snail Dates Gourd Cucumber Custard apple Fruit Honey Pulses Milk Egg Apple Wheat Flour Tomato Cucumber

মানুষের খাদ্য

খনিজ মৌলের নাম

খনিজ মৌলের নাম খাদ্য / পানীয় উৎস
1. ক্যালসিয়াম, ফসফরাসদুধ, ডিম, ফুলকপি, পনির, ....................
2. ম্যাগনেসিয়ামশাকসবজি, ফল, ....................
3. আয়রনশাঁকালু, চুন, আমলকী, শশা, চিচিঙ্গ
4. সোডিয়ামনুন, পানীয় জল, ....................
5. আয়োডিননুন, ....................
6. জিঙ্কশাকসবজি, ....................

মানুষের দেহে খনিজ মৌলের অভাবে কতকগুলো সমস্যা তৈরি হয়। এসো জানি কোন খনিজ মৌলের সঙ্গে কোন রোগের সম্পর্ক আছে।

রোগ রোগ সম্পর্কিত খনিজ মৌল
1. উচ্চ রক্তচাপসোডিয়াম
2. অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা, চামচ আকৃতির নখআয়রন
3. গলগণ্ড বা গয়টারআয়োডিন
4. বারবার হাড় ভেঙে যাওয়া, বেঁকে যাওয়া, হাড় ফুটি ফুটা হওয়া, দাঁতের সমস্যাক্যালসিয়াম, ফসফরাস
5. রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যাওয়াজিঙ্ক

জল

  • (i) কোন খাদ্য উপাদানকে আমরা সরাসরি গ্রহণ করি? ....................।
  • (ii) যে-কোনো জীবদেহের গঠনের একটি প্রধান উপাদান হলো জল। একজন মানুষের ওজন 70 কেজি হলে দেহে জল থাকে প্রায় 45 কেজি। এই পরিমাণকে শতাংশের হিসাবে প্রকাশ করো।
  • দেহে ব্যবহৃত জল আমরা কোথা থেকে পাই –
    • (i) পানীয় জলের মাধ্যমে।
    • (ii) ফলের রস থেকে (তরমুজ, ....................)
    • (iii) বিভিন্ন খাদ্য থেকে।
    • (iv) বিভিন্ন তরল পানীয় থেকে (দাবের জল, ....................)।
  • কোন কোন অবস্থায় দেহের চাহিদা বৃদ্ধি পায়?
    • (i) অনেকটা ঘাম অথবা বারবার পাতলা পায়খানা হলে।
    • (ii) ....................
  • কী কী ঘটতে পারে?
    1. 1. তুমি যদি পানীয় জলের পরিবর্তে সমুদ্রের জল ক্রমাগত পান করতে থাকো।
    2. 2. তুমি নুন মাখানো বিস্কুট, বাদাম বা কাঁচা আমের টুকরো খাও।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

খাদ্যতন্তু

আমরা যে খাদ্য প্রতিদিন গ্রহণ করি তার কী কী পরিবর্তিত হয় খাদ্যতন্তুতে? না খাদ্যতন্তুতে? না।

খাদ্য হজম হয় ও খাদ্যনালীর শোষণ হয়। যে খাদ্য হজম হয় না বা মল দেহে থেকে বেরিয়ে যায়।

মলের মধ্যে তন্তু থাকে যা খাদ্যনালীকে কোনোভাবেই হজম করা যায় না। তন্তু এক ধরনের সেলুলোজ বা পেকটিন জাতীয় কার্বোহাইড্রেট। এটি জল গুলে খেতে পারে না। মানুষ এদেরকে হজম করতে পারে না।

মানুষ এদেরকে হজম করতে পারে না। তবে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। নীচের খাদ্যগুলোতে তন্তু বেশি পরিমাণে থাকে।

  • (i) সবুজ শাকসবজি, (ii) বাঁধাকপি, (iii) চাল, (iv) আপেল, (v) বীজের খোসা, (vi) ওট।
Vegetables Cabbage Rice Apple Oat

শিক্ষক/শিক্ষিকার সঙ্গে আলোচনা করে তন্তুজাতীয় খাদ্য উপাদানের আরো কয়েকটি উৎস জানার চেষ্টা করো।

তন্তুজাতীয় খাদ্য থেকে কতকগুলো রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায় – উচ্চ রক্তচাপ, স্থুলতা, অন্ত্রের ক্যানসার ও কোষ্ঠকাঠিন্য।

ফাইটোকেমিক্যালস বা উদ্ভিজ্জ রাসায়নিক

তুমি নীচের নানা রঙের খাদ্যগুলো ছবির দেখে চেনার চেষ্টা করো।

Red onion Grapes Turmeric Corn Tomato Papaya Watermelon Pomegranate Ginger Beetroot Banana Garlic
  • (i) ...................., (ii) ...................., (iii) ...................., (iv) ...................., (v) ...................., (vi) ...................., (vii) ...................., (viii) ...................., (ix) ...................., (x) বিট, (xi) চা, (xii) ....................

মানুষের খাদ্য

আগের পাতার খাদ্যগুলো প্রত্যেকটি রঙিন। এদের মধ্যে নানা রঙের উদ্ভিজ্জ রাসায়নিক যৌগ থাকে। যেমন – ক্যারোটিনয়েডস বা ফ্ল্যাভোনয়েডস। এরা মানবদেহের খুব তাড়াতাড়ি বুড়ো হয়ে যাওয়া আটকায়। হৃৎপিণ্ডের কাজ ঠিকঠাক রাখে। আর খাদ্যকে শক্ত রাখে। ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা কমায়।

উপরের আলোচনা থেকে আমরা বলতে পারি- খাদ্য উপাদানগুলো নীচের বিভিন্ন খাদ্যের শ্রেণি বিভাগের মধ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে।

খাদ্যের শ্রেণি বিভিন্ন প্রকার খাদ্য খাদ্য উপাদান
1. দানাশস্য ও তা থেকে উৎপন্ন খাদ্যচাল, গম, ভুট্টা, ........কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ........
2. ডাল ও শুঁটি জাতীয় খাদ্যমুগ, ........ সয়াবিন, ........প্রোটিন, ভিটামিন, ........
3. দুধ, মাছ, ডিম ও মাংস জাতীয় খাদ্যদুধ, দই, ........ মাখন তোলা দুধ, ........প্রোটিন, খনিজ মৌল, ........
4. শাকসবজি ও ফলমূলআম, পেঁপে, পটল, ........ভিটামিন, তন্তু, ........
5. মিষ্টি ও তেলআখ, সরষের তেল, ........কার্বোহাইড্রেট, লিপিড ........

কোন কোন খাদ্য উপাদানগুলো তোমাদের অবশ্যই খেতে হবে যদি তোমরা সুস্থ থাকতে চাও?

................................................................

কোন খাদ্য উপাদানগুলো কোন কোন খাদ্য থেকে পাবে, তাদের নাম নীচের সারণিতে লেখো:

খাদ্য উপাদান খাদ্যের নাম
1.
2.
3.
4.
5.
6.
7.
8.

পরের পৃষ্ঠায় লেখা মানুষের যে যে শারীরিক সমস্যা আছে, তা এড়াতে কোন কোন খাদ্য খাওয়া উচিত তা ছকে লেখো।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

শারীরিক সমস্যা কোন খাদ্য খাবে তা থেকে কোন খাদ্য উপাদান পাবে
মাড়ি থেকে রক্ত বারছে
দেহে রক্তাল্পতা হচ্ছে
হাড়গুলো দুর্বল, বাঁকা
কোষ্ঠকাঠিন্য
রাতে কম দেখতে পাচ্ছে
মুখে আর জিভে ঘা
চামড়া কুঁকড়ে গেছে
রক্তচাপ হঠাৎ বেড়ে গেছে

নীচে তিনদিনের খাদ্যাভ্যাস তালিকা লেখো। কোন খাদ্য উপাদানের অভাব তা চিহ্নিত করো।

1 নং তালিকা—

প্রথম দিন : রুটি, গুড়, ভাত, ডাল, তরকারি, মুড়ি, মাছের ঝোল, জল

দ্বিতীয় দিন : গুঁড়ো রুটি, চিঁড়ে, কলা, আটা, মাখন, তরকারি, আমের চাটনি, জল

তৃতীয় দিন : ভাত, মাছের ঝোল, শাক, ঘি, শশা, আলুসেদ্ধ

2 নং তালিকা—

প্রথম দিন : এরোল, চকোলেট, রুটি, ঘি, ডাল, আলুভাজা, সবজি

দ্বিতীয় দিন : পাউরুটি, কুড়কুড়ে, পেস্ট্রি, পরোটা, মাংস, হালকা পানীয়, ডিম

তৃতীয় দিন : ভাত, দুধ, সবজি, ফল, কেক, কুমড়ো সেদ্ধ, পেস্ট্রি

দেহ সুস্থ রাখতে গেলে, নামীদামি কোন খাবারের বদলে আর কী কী খেতে পারো?

  • আপেলের বদলে ....................। (পাকা পেঁপে/পাকা পেয়ারা/পাকা আমড়া/পাকা কুল)
  • মাংস বা ডিমের বদলে ....................। (ডাল/ডিম/ছোলা বা মটর/মাশরুম/সয়াবিন)
  • দুধ, ছানা আর হেলথ্ ড্রিঙ্কসএর বদলে ....................। (ছাত্রবৃন্দ শরবত/লেবুর রস/বেলের শরবত)
  • আইরন ট্যাবের বদলে ....................। (নটেশাক/কাঁটা পেয়ারা/সজনে পাতা/কুমড়ো শাক)

পরের পৃষ্ঠায় কতকগুলো খাবার নাম দেওয়া হয়েছে। এগুলো থেকে তুমি কোন কোন খাদ্য উপাদান পেতে পারো (প্রয়োজনে শিক্ষক/শিক্ষিকার সাহায্য নাও)।

মানুষের খাদ্য

  • 1. পাকা আম: খাদ্যতন্তু, ....................।
  • 2. দুধ: প্রোটিন, ....................।
  • 3. বাদাম: লিপিড, ....................।
  • 4. ডিম: খনিজ মৌল, ....................।
  • 5. পেয়ারা: ভিটামিন, ....................।
  • 6. দই: ভিটামিন, ....................।
  • 7. টমাটো: উদ্ভিজ্জ রাসায়নিক, ....................।
  • 8. চাল: কার্বোহাইড্রেট, ....................।
  • 9. পালংশাক: ভিটামিন, ....................।
  • 10. আমলকী: খনিজ মৌল, ....................।
Pomfret fish Green banana Bitter gourd Garlic Kidney beans Jackfruit Scaled fish Sugarcane

উপরের খাদ্যগুলো চিহ্নিত করো। ওই খাদ্যগুলোতে কোন কোন খাদ্য উপাদান পাওয়া যেতে পারে তা দেখো:

  • 1. ....................
  • 2. ....................
  • 3. ....................
  • 4. ....................
  • 5. ....................
  • 6. ....................
  • 7. ....................
  • 8. ....................

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

অপুষ্টি ও স্থলজ

নীচের ছবিগুলোকে লক্ষ্য করো ও সমস্যাগুলো জানো।

Goiter Anemia Cloudy eye Blindness Marasmus

ওপরের অপুষ্টির লক্ষণগুলো শিশুদেহে এই সমস্যাগুলো দীর্ঘদিন ধরে বা এক বা একাধিক খাদ্যশস্যের উপাদানের গুণগত বা পরিমাণগত অভাবে ঘটতে পারে।

ছবির প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ও শিশুগুলি নানা রোগে আক্রান্ত। স্থূলত্বের মূল কারণ অপুষ্টি। অপুষ্টিজনিত সমস্যাগুলো হলো –

  • রক্তাল্পতা : নানা কারণে রক্তে লোহিত রক্তকণিকার সংখ্যা বা লোহিত রক্তকণিকায় থাকা হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যেতে পারে। হিমোগ্লোবিন কোষে অক্সিজেন সরবরাহ করে। হিমোগ্লোবিন কম থাকলে কোষগুলোর শক্তি উৎপাদন প্রক্রিয়া বাধা পায়। সামগ্রিকভাবে মানুষটি দুর্বল হয়ে পড়েন।
  • আয়রনের অভাব (অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা)। রক্তাল্পতা নানা কারণে হতে পারে। যেমন – অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, জীবাণুর সংক্রমণ, হিমোগ্লোবিন বা লোহিত রক্ত কণিকায় সংশ্লিষ্ট উপাদানের অভাব (হিমোগ্লোবিনের ক্ষেত্রে আয়রন আর লোহিত রক্ত কণিকার ক্ষেত্রে ভিটামিন B12)।
  • আয়োডিনের অভাব (টারা চোখ)।
  • ভিটামিন A এর অভাব (অন্ধত্ব)।
  • প্রোটিন ও শক্তির অভাব (ম্যারাসমাস)।

খাদ্য শক্তি উৎপাদক খাদ্য উপাদানগুলোর অভাব ঘটলে অপুষ্টির সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। পাশের শক্তি উৎপাদক উপাদানগুলো হলো কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও লিপিড। এছাড়াও শক্তি উৎপাদক নয় এমন খাদ্য উপাদানের (ভিটামিন ও খনিজ লবণ) অভাবেও অপুষ্টিজনিত নানা সমস্যা দেখা যায়। কুমির সমস্যা থাকলেও অপুষ্টি হতে পারে। অপুষ্টিতে ভুগতে থাকা শিশুদের খাদ্যতালিকার কোন কোন উপাদান তুমি যোগ করবে?

  • (1) কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাদ্য: ....................
  • (2) প্রোটিনযুক্ত খাদ্য: ....................
  • (3) লিপিডযুক্ত খাদ্য: ....................
  • (4) ভিটামিনযুক্ত খাদ্য: ....................
  • (5) খনিজ মৌলযুক্ত খাদ্য: ....................

মানুষের খাদ্য

অপুষ্টির ফলে শিশুর দেহে কী কী উপসর্গ দেখা যায়?

পাশের ছবিতে শিশুটিকে লক্ষ্য করো। দেখে শিশুটির উপসর্গগুলো নীচে লেখো:

  • দেহের .................... খুব বেশি কম হয়েছে।
  • বাহিরে থেকে পলিথিন বর্জ্য।
  • জায়গায় জায়গায় কোষ্ঠকাঠিন্য।
  • হাড়, পায়খানা খুব ....................।

শব্দভান্ডার: সরু, পেশি, হাড়, চামড়া

শিশুদের এই অপুষ্টিজনিত রোগটি হলো ম্যারাসমাস। খাদ্য প্রোটিন ও শক্তির অভাব ঘটলে এই রোগ হয়। এক বছরের কম বয়স্ক শিশুদের মধ্যে সাধারণত এই রোগ দেখা যায়।

পাশের ছবিটি লক্ষ্য করো। শিশুটির চামড়া গাঢ় বর্ণের ও পেট ফোলা। দেখে মনে হয় যেন চোখগুলো টিকর বেরিয়ে আসছে। খাদ্য উপযুক্ত পরিমাণ প্রোটিনের অভাব ঘটলে 4 বছর বয়স্ক শিশুদের যে অপুষ্টিজনিত রোগ দেখা যায় তা হলো কোয়াশিওকর

এই ধরনের শিশুদের সুস্থ করতে তুমি কোন কোন খাদ্য নির্বাচন করলে তার তালিকা তৈরি করো।

  • 1. ....................
  • 2. ....................
  • 3. ....................

ম্যারাসমাস ও কোয়াশিওকর ছাড়াও শিশুদের অপর কিছু প্রধান অপুষ্টিজনিত সমস্যা হলো :

  • 1. আয়রনের অভাবজনিত রোগ – অ্যানিমিয়া, চামচ আকৃতির নখ
  • 2. আয়োডিনের অভাবজনিত রোগ – গয়টার, জড়বুদ্ধি, টারা চোখ
  • 3. ভিটামিন D এর অভাবজনিত রোগ – রিকেট
  • 4. ভিটামিন B কমপ্লেক্স এর অভাবজনিত রোগ – বেরিবেরি
  • 5. ভিটামিন A এর অভাবজনিত রোগ – অন্ধত্ব

কী করে সারানো যায় এই অসুস্থ?

  • ক্যালসিয়ামযুক্ত খাদ্যদ্রব্য (পেয়ারা, আম, আটা, ঘি, গুড়, কিশমিশ, গোলমরিচ, জোয়ান, জিরা, তিল, কচু, নটেশাক, ঘনপাতা, পালংশাক, পেঁয়াজ, কলা, চিনাবাদাম, মুলোশাক, ....................)
  • আয়োডিনযুক্ত খাদ্যদ্রব্য (আয়োডিনযুক্ত দই ও টমেটো) ....................
  • ভিটামিন B কমপ্লেক্স যুক্ত খাদ্যদ্রব্য (টোস্টেড চাল, সবুজ শাকসবজি, ....................)
  • ভিটামিন D যুক্ত খাদ্যদ্রব্য (দুধ, ....................)
  • ভিটামিন A যুক্ত খাদ্যদ্রব্য (পাকা আম, কমলালেবু, গাজর, ফুল, কাঁচালঙ্কা, টমেটো, নারকেল, ....................)

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

নীচের উপসর্গগুলি নানা খাদ্য উপাদানের অভাবে ঘটে। কোন কোন খাদ্য খেলে এই সমস্যাগুলির হাত থেকে পাওয়া যায় তা নীচের তালিকায় লেখো:

উপসর্গের নাম কোন খাদ্য উপাদানের অভাবে ঘটে কোন খাদ্যে ওই খাদ্য উপাদান পাওয়া যায়
হাত পা বাঁকাভিটামিন D
চামচার মতো সাদা দাগভিটামিন A
পেন্সিরের সারি থেকে ত্রাণবোর্ডের লেখা পড়তে পারে নাভিটামিন A
জিভে, মুখের কোণে ঘা, মাড়ি ফোলাভিটামিন B কমপ্লেক্স
ফ্যাকাশে মুখপ্রোটিন
ভাঙা নখক্যালসিয়াম
খসখসে চামড়াভিটামিন A

এতক্ষণ আমরা অপুষ্টির জন্য কী কী অসুস্থ হয়ে জানলাম। এবার আমরা জানাব চিড়, জিনের সমস্যা।

জিনের খাদ্যাভ্যাস

খাদ্য
1. ভাত বা রুটি, 2. ডাল
3. শাক 4. সবজি 5. ফল
6. দুধ 7. তেল, 8. মাছ, মাংস বা ডিম
9. পনির, 10. আলুরচপ

চিড় ও জন ওজন স্বাভাবিকের থেকে 20% বেশি হবে এবং বা 20% কম হবে। এই ওজনটা স্বাভাবিকের থেকে 20% বেশি হলে তাকে স্থুল বা মোটা বলা হয়।

চিড় ও জন শরীরের গঠন এবং ওজন স্বাভাবিকের তুলনামূলকভাবে বেশি হলে তাদের সুস্থ থাকার জন্য তাদের খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাপন ব্যবস্থা কী হবে তা নীচের সারণিতে লেখো।

চিড় ও জন পরিমাণের তুলনায় কম/বেশি খাদ্য গ্রহণ করে।

মানুষের খাদ্য

চিড় ও জনের এই ওজন বেড়ে যাওয়ার ফলে কী কী সমস্যা হতে পারে?

  • রক্তচাপ ক্রমাগত বাড়তে পারে।
  • রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে গিয়ে ডায়াবেটিস হতে পারে।
  • রক্তনালীর গায়ে লিপিড জমে রক্তনালীর ব্যাস কমে যেতে পারে। এর ফলে হৃৎপিণ্ডর নানা সমস্যা হতে পারে।
  • অস্থিসন্ধিতে ব্যথা ও ক্যানসার হতে পারে।
Obese person

এছাড়াও স্থুলত্বের ফলে আর কী কী সমস্যা হতে পারে তা নিজেরা আলোচনা করে তালিকা তৈরি করো।

  • 1. ....................
  • 2. ....................
  • 3. ....................
  • 4. ....................
  • 5. ....................

কোন ধরনের খাদ্য গ্রহণ করলে স্থুলত্বের প্রবণতা রোধ করা যায় তা তালিকা তৈরি করো (ঠিক দাও)।

শব্দভান্ডার : শিশু, তেল, হালকা পানীয়, আলুভাজা, তৈলাক্ত মাছ, ডিমের কুসুম, চকলেট, ঘি, মাখন, ফল, সবজি, ডাল, রুটি, পুঁটির মাছ, পেঁয়াজ, পনির, ছোটো মাছ, সুষম খাদ্য, খাবার।

এবার নীচে বিভিন্ন শিশুর বা ব্যক্তির ওজন ও উচ্চতা দেওয়া হলো। এর ভিত্তিতে BMI এর মান গণনা করো। তারপর শিক্ষক/শিক্ষিকার সাহায্যে বোঝার চেষ্টা করো কোন কোন ক্ষেত্রে স্থুলত্বজনিত সমস্যার সম্ভাবনা হতে পারে।

BMI = ওজন (kg) / (উচ্চতা (m))2

BMI 18.5 – 25 : স্বাভাবিক ওজন; BMI 25 – 30 : বেশি ওজন; BMI 30 – 40 : স্থুলত্ব

ওজন (kg) উচ্চতা (m) BMI (ওজন/উচ্চতা2) স্থুলত্বের সম্ভাবনা (আছে/নেই) কী কী উপসর্গ দেখা যায়
621.57
661.50
721.59
381.62
751.60
711.58
721.67

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

প্রাকৃতিক খাদ্য, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, সংশ্লেষিত খাদ্য

গাছের খাবার, ঘরে তৈরি খাবার আর কারখানায় তৈরি খাবার

আমরা অনেকেই গাছের পাকা ফল খেতে ভালোবাসি আবার অনেকেই পপকর্ন, কোড ড্রিঙ্কস, পটাটো চিপস খেতে ভালোবাসেন।

Mango Popcorn Code drinks

আগে দেখে নিই, কোনটা কোথা থেকে পেলে। দরকারে কারো জিজ্ঞেস করে নাও।

কোথা থেকে পেলে কোথা থেকে পেলে
আম (বা অন্য ফল)
জাম বা জেলি
কোড ড্রিঙ্কস
  • ফলটা যেমনটি গাছে ফলে, তেমনটি তুমি খাও। আর কী কী তুমি খাও এমন চার-পাঁচটা খাবারের নাম লেখো।
  • তুমি রোজ দুপুরে বা রাতে যা যা খাও, তা কেমনটি গাছে ফলে তেমনটি খাও না। সেই খাবারগুলো কীভাবে বানানো হয়? সেরকম কয়েকটি খাবারের নাম লেখো।
  • জাম আর কোড ড্রিঙ্কস? এসো ভালো করে দেখি।
ফল জাম, জেলি, আচার ঠান্ডা পানীয়
যেমনটি ফলে, তেমনটি থাকে?
কী কী দিয়ে তৈরি হয়? (বোতলের গায়ে লেখা আছে দেখো)
কোথায় তৈরি হয়? (এটাও বোতলের গায়ে লেখা আছে দেখো)

মানুষের খাদ্য

তোমরা প্রতিদিন নানারকমের খাদ্য খাও। এবার তোমাদের অভিজ্ঞতা ভিত্তিতে নীচের তালিকাটি পূরণ করো।

খাবারের আকৃতি, স্বাদ, গন্ধ ও রং প্রধান প্রকৃতি আরও কয়েকটি খাবারের নাম
প্রাকৃতিক সংশ্লেষিত
সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক
প্রাকৃতিক থেকে একটু আলাদা
কারখানায় তৈরি

তাহলে দেখো:

প্রাকৃতিক খাদ্যের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, দাম তুলনায় কম। প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের পরিমাণ তুলনায় কম, দাম কিছু বেশি। আর কৃত্রিম বা সংশ্লেষিত খাদ্যের পরিমাণ প্রায় নেই, অথচ দাম অনেক বেশি। তা বলে কি এই সব খাবার সবটাই ভালো?

প্রাকৃতিক খাদ্য : সরাসরি প্রকৃতি থেকে পাওয়া খাবার।

প্রক্রিয়াজাত খাদ্য : এই ধরনের খাবার তৈরি করতে প্রকৃতি থেকে পাওয়া বিভিন্ন খাদ্য উপাদানের নানা রকম প্রক্রিয়া মধ্যে দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

সংশ্লেষিত খাদ্য : এই ধরনের খাবারের উপাদানগুলো সম্পূর্ণ কৃত্রিম। কিন্তু তৈরি খাবারটার রং, স্বাদ, গন্ধ ইত্যাদি অনেকটাই প্রাকৃতিক খাবারগুলোর মতো হয়।

এসো দেখি নীচের খাবারগুলোতে নানা ধরনের ক্ষতিকারক পদার্থ (যেমন রং ও স্বাদ) মেশানো হয় যা মানুষের খাদ্য হিসেবে ব্যবহারযোগ্য নয়।

খাদ্য কী কী মিশে থাকতে পারে
হলুদ চিপস ও সিঙ্গারাতেমেটানিল ইয়েলো
চকোলেট, পেস্টি আর কোলা ড্রিঙ্কসবাদামি রং হিসেবে ক্যারামেল
পটাটো চিপস, ভুটিয়া দইট্রান্স ফ্যাট
মোমো, চাউমিনঅজিনোমোটো
আইসক্রিমকারাজিনান, ব্রোমিনেটেড ভেজিটেবল অয়েল
চা, কফি আর নানা ফলের স্বাদের রসেস্যাকারিন, অ্যাসপারটাম, স্যাকারিন

এছাড়া আরও কত রোগ রয়েছে। এইসব প্রক্রিয়াজাত ও কৃত্রিম খাবার খেলে হতেও ইচ্ছা হয়। যা থেকে শারীরিক অসুবিধা বা হৃৎপিণ্ড, বৃক্ক, হাড় ও মস্তিষ্কের ক্ষতি হতে পারে। শরীর ভালো রাখলে বা উজ্জ্বল লাল রং-মেশানো খাবার না খাওয়াই ভালো। এধরনের খাবার আমাদের না খেলেও চলে।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

এসো নিজেরা একটা ছক বানাই, কোন খাবার আমরা কতটা (কম না বেশি) খাব:

রোজ সকালে কী কী খেতে পারি?
রোজ দুপুরে কী কী খেতে পারি?
রোজ বিকেলে কী কী খেতে পারি?
রোজ রাত্রে কী কী খেতে পারি?
বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে মাঝে মধ্যে কী কী খেতে পারি?
রোগ এড়িয়ে চলতে গেলে কোন কোন খাবার না খাওয়াই উচিত?

ভাত, মুড়ি, চিঁড়ে, রুটি, দই, ঘোল, ছানা, পনির, এরোল, আলুর চপ - এগুলোর কোনগুলো প্রাকৃতিক, প্রক্রিয়াজাত বা কৃত্রিম তা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করো।

নীচের ছবিগুলো থেকে প্রাকৃতিক, প্রক্রিয়াজাত ও সংশ্লেষিত খাদ্যগুলো শনাক্ত করো।

Ice cream Samosa Shrimp Potato chop Paneer Cabbage Bread Chicken Banana Fruit

মানুষের খাদ্য

জীবনে জলের ভূমিকা

জল দিয়ে আমরা কী কী করি বলো তো? জল অন্যান্য জীবের বা কি কাজে লাগে?

Cooking Bathing Extinguishing fire Fish farming Boating Drinking water Frog Washing dishes

উপরের ছবিগুলো থেকে মানুষ ও বিভিন্ন জীবের জীবনে জলের ভূমিকাগুলো লিখে ফেলো।

  • 1. ....................
  • 5. ....................
  • 9. ....................
  • 2. ....................
  • 6. ....................
  • 3. ....................
  • 7. ....................
  • 4. ....................
  • 8. ....................

পৃথিবীতে এত জল কোথায় কোথায় থাকে?

Total water Fresh water Surface water

মিষ্টি জল কোথায় কত .................... ভূ-পৃষ্ঠীয় জল কোথায় কত ....................

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করে কোনটার শতকরা পরিমাণ কত বলো। (না জানলে শিক্ষক / শিক্ষিকার সাহায্য নাও)।

সমুদ্রের জল .................... মিষ্টি জল .................... পানীয় জল ....................

আমরা খাবার জল কোথা থেকে পাই?

  • 1. ....................
  • 2. ....................
  • 3. ....................
  • 4. ....................
  • 5. ....................
  • 6. ....................

বলো তো, কুনো ও টিউবওয়েলের জল আসে কোথা থেকে? (ছবিটা দেখে বলো। না পারলে শিক্ষক / শিক্ষিকার সাহায্য নাও)।

Tube well

এসো জলের পরিমাণ সংক্রান্ত কতকগুলো বিষয় জানি।

পৃথিবীর মিষ্টি জলের হিসেব :

  • পৃথিবী পৃষ্ঠের প্রায় 75% জলে ঢাকা। এর প্রায় 97% সমুদ্রের জল। প্রায় 3% মিষ্টি জল।
  • এই মিষ্টি জলের প্রায় $\frac{2}{3}$ অংশ মেরু অঞ্চল, পর্বতশ্রেণীর বরফ ও হিমবাহের অংশ হিসেবে সঞ্চিত আছে। বাকি জল মাটির নীচে ও অন্যান্য জায়গায় নানাবাবুড়ে সঞ্চিত আছে।
  • যদি পৃথিবীর প্রায় $\frac{1}{3}$ ভাগ জল ঢাকা, কিন্তু এই জলের 0.37% অংশ জলই পান করার উপযোগী।

তোমরা বন্ধুরা কতজন কোন উৎস থেকে জল ব্যবহার করো। ওই জলের রং, গন্ধ আর স্বাদ কেমন, আর কী কী কাজে তা ব্যবহার করো লেখো।

উৎস রং গন্ধ স্বাদ কতজন ব্যবহার করো কী কী কাজে ব্যবহার করো
পুকুর
নদী
ঝরনা
কুয়ো
টিউবওয়েল
টাইমকল
নিজেরদের পাম্প

মানুষের খাদ্য

গত কয়েক মাসে তোমাদের কটি পেটের রোগ আর চামড়ার রোগ হয়েছে সবাই আলোচনা করে লেখো :

রোগ কতজনের হয়েছে তারা কোন উৎসের জল খায়
পেট খারাপ
পেট ব্যথা
কৃমি
ডায়রিয়া
পাঁচড়া

দূষিত জল থেকে নানা রোগ হতে পারে। জলকে পরিষ্কার করব কীভাবে?

এসো সকলে মিলে আলোচনা করে দেখি, নীচের জিনিসগুলো ব্যবহার করে কীভাবে জলকে পরিষ্কার করা যায়। তুমি এই কাজে ছবিতে দেওয়া জিনিসগুলো থেকে এক বা একাধিক উপকরণ একবারে ব্যবহার করতে পারো। এই উপকরণগুলো ব্যবহার করে কতরকমভাবে জলকে পরিষ্কার করা যায়?

Clay filter

মাটির ফিল্টার

Water filter

জল ফিল্টার

Clay pot

মাটির কলসি

Cloth Tablet
কী কী উপকরণ ব্যবহার করা যায় কীভাবে বাড়িতে বিশুদ্ধ পানীয় জল তৈরি করা যায়
হাঁড়ি, উনুন, কাপড়জলের উৎস থেকে পাওয়া জল অন্তত 20 মিনিট ফুটিয়ে ঠান্ডা করে নিতে হবে।
ফিল্টার যন্ত্র
হাঁড়ি, হ্যালোজেন ট্যাবলেটখুব তাড়াতাড়ি জলকে জীবাণুমুক্ত করতে হলে হ্যালোজেন ট্যাবলেট দিয়ে জল শোধন করা হয়।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

সাগর-মহাসাগর পৃথিবীর ওপরকার প্রায় 3/4 অংশ দখল করে আছে। তেমনি মানুষের শরীরের ওজনের প্রায় 70% শুধু জল। গাছের শরীরে জলও অন্যান্যদের তুলনায় ভাগ বেশি।

গাজর শরীরের জলবায়ু 95%, ডিম 74%।

আবার শশাতে ওজন হিসাবে জলের পরিমাণ 95%। কাঁচের মধ্যে জলের পরিমাণ প্রায় 10%।

এবার এসো দেখি মানুষের শরীরে কোন পদার্থ তরলরূপে থাকে।

প্রথমে লেখো তোমার দেহে জল কোথায় কোথায় থাকে?

  • 1. রক্ত
  • 2. ....................
  • 3. ....................
  • 4. ....................
  • 5. ....................
  • 6. ....................

তারপর লেখো তোমার দেহ থেকে জল কীভাবে বেরিয়ে যায়?

  • 1. ঘাম
  • 2. ....................
  • 3. ....................
  • 4. ....................

আবার মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ ও তরল পদার্থের ওজনে পরিমাণ জল থাকে।

অঙ্গ/তরল পদার্থের নাম ওজন হিসেবে জলের পরিমাণ (%)
ফুসফুস83
মস্তিষ্ক (মগজ)73
বৃক্ক (মেটে)85
অস্থি (হাড়)31
পেশি (মাংস)75
ত্বক (চামড়া)64
হৃৎপিণ্ড73
বৃক্ক83
রক্ত90
লালা95

মানুষের খাদ্য

আগের পাতার ছক থেকে মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ/তরলকে জলের পরিমাণের অনুক্রমে সাজাও:

  • 1. ....................
  • 2. ....................
  • 3. ....................
  • 4. ....................
  • 5. ....................

মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গে জল কীভাবে অবস্থান করে তা নীচে দেওয়া আছে। কোন অঙ্গে জল কীভাবে আছে, তা নিয়ে পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে নীচে ছকে লেখার চেষ্টা করো:

অঙ্গর নাম জল হিসেবে থাকে
(1) মুখবিবর
(2) যকৃত
(3) রক্তনালী/হৃৎপিণ্ড
(4) মুখগুলি
(5) চোখ
(6) ত্বক
(7) মস্তিষ্ক
(8) অস্থিসন্ধি

শব্দভান্ডার : পিত্তিল রস, ঘাম, রক্ত, পিত্ত, লালা, মূত্র, সেরিব্রোস্পাইনাল তরল।

এবার একটা একটা করে নীচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দেবার চেষ্টা করো। না পারলে শিক্ষক/শিক্ষিকার সাহায্য নাও। আর সবচাইতে নীচে জলের কাজগুলো একটা একটা করে লেখো।

  • 1. তোমার পা কেটে গেছে। ডাক্তারবাবু তোমার হাতে ঔষধ ইঞ্জেকশন দিলেন। ওই ঔষধ তোমার কাটা পা-এর কীসের মধ্যে দিয়ে ....................
  • তাহলে এখানে জলের কাজ কী? ....................
  • 2. একটা বড়ো বিস্তৃত ক্ষেত্রীয় আলো যখন মুখের ভেতরে তখন কেমন, শুকনো না ভিজে? ....................। দেখতো, ভিজে আছে কি? কথা বলতে চেষ্টা করত। কথা বলা যাচ্ছে কি? ....................। যদি মুখের ভেতরটা শুকনো থাকে তাহলে তুমি কী করবে?
  • তাহলে এখানে জলের কাজ কী? ....................
  • 3. খুব গরমে আমরা ঘামি। ঘাম জড়ানো গায়ে বাতাস দিলে কেমন লাগে? ....................।
  • তাহলে এখানে জলের কাজ কী? ....................
  • 4. তোমার চোখে কোন তরল থাকে? ....................।
  • চোখে পোকা পড়লে চোখ থেকে কী বেরোয়? ....................
  • কেন বেরোয়? ....................
  • তাহলে এখানে জলের কাজ কী? ....................

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

  • 5. তোমার নিশ্বাস একটা আয়নায় ফেলে দেখো, আয়নায় কীসের দাগ পড়বে? ....................।
  • নিশ্বাসের মধ্যে ওই জল কোথা থেকে এল? ....................।
  • এখানে জলের আর কী কাজ আছে? ....................।
  • 6. তোমাদের দুটো হাড়ের জোড়ে থেকে পিচ্ছিল রস জল আছে সেটা জেনেছ। ওই জল কী কাজ করে?

    ................................................................

  • 7. পেট খারাপ হলে বারবার তরল মল বেরিয়ে যায় বা বমি হয়। তখন অনেক দরকারি জিনিস অজৈব গুলে বেরিয়ে যায়। জল এখানে কী কাজ করে বলো তো? ....................।
  • 8. খাদ্যগ্রহণের পর মুখবিবরে খাদ্য হজম করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। তাহলে এখানে জলের কাজ কী? ....................।
  • 9. পাচনের পর খাদ্যের সারাংশ ক্ষুদ্রান্ত্রের প্রাচীর বরাবর শোষিত হয়। তাহলে জলের এখানে কী কাজ আছে? ....................।
  • 10. খাদ্যের যে অংশ হজম হয় না তা নরম মলরূপে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। তাহলে এখানে জল কী ভূমিকা পালন করে? ....................।
  • 11. ম্যালেরিয়া বা নিউমোনিয়ার মতো রোগে প্রবল জ্বর আসে। ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ার সময় বা প্রবল জ্বরে ঘাম করানোর সময় জল কী কাজ করে? ....................।
  • 12. খাদ্য সংরক্ষণের সময়ও জল ব্যবহৃত হয়। এখানে জল কী কাজ করে? ....................।

জলের ভূমিকা : জল সাধারণত কোনো বস্তুকে দ্রবীভূত করে, কোনো বস্তুকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যায় বা বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে।

এবার ওপরের ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে জলের ভূমিকাগুলো শিক্ষক/শিক্ষিকার সঙ্গে আলোচনা করে নীচে লেখো।

ঘটনা সমূহ জলের ভূমিকা
1.
2.
3. ঘাম জড়ানো গায়ে বাতাস দিলে আরাম লাগেতাপ পরিবাহক হিসেবে
4.
5.
6.
7. পেট খারাপ হলে অনেক দরকারি জিনিস মল বা বমির সঙ্গে বেরিয়ে যায়দ্রাবক হিসেবে
8.
9.
10.
11.
12. খাদ্য হজমের সময় জল ব্যবহৃত হয়বিক্রিয়ক হিসেবে

মানুষের খাদ্য

শরীর সুস্থ রাখতে প্রতিদিন পরিমাপমতো জল খাওয়া দরকার। গরমকালে তুমি রোজ কত জল খাও? তোমার বন্ধুরা সবাই একসঙ্গে নীচের ছকে লেখো:

জলের উৎস তুমি তোমার বন্ধু তোমার বন্ধু তোমার বন্ধু তোমার বন্ধু
খাবার জল
চা, দুধ বা অন্য পানীয়
ডাল, ঘোল
ফলের রস
অন্যান্য
  • কয়েকটা কথা মনে রেখো।
  • ভাত বা তরকারির মধ্যে কিছু 40-60% জল থাকে।
  • একটা বড়ো গ্লাসে প্রায় 200 মিলি জল ধরে; আর একটা বড়ো কাপে প্রায় 100 মিলি জল ধরে। সাধারণত ছাতায় জল থাকে প্রায় 50 মিলি।
  • জলের বোতলে জল ধরে: ছোটো – 500 মিলি, মাঝারি – 1 লিটার আর বড়ো – 2 লিটার।

24 ঘন্টায় কতটা জল পান করো?

তুমি ....................

তোমার বন্ধুরা: 1. .................... 2. .................... 3. .................... 4. ....................

তাহলে গরমকালে তুমি আর তোমার বন্ধুরা এক-একজনে রোজ জল খাও কতটা?

আর এইক্ষেত্রে তুমি তোমার বন্ধুরা সাপ্তাহিক অভিজ্ঞতা থেকে দেখো, তোমাদের দেহ থেকে কতট জল বের হয়ে যায়।

1.5 - 2 লি
1. মূত্রের মাধ্যমে1.5 - 2 লি
2. ঘামের মাধ্যমে2 লি
3. শ্বাসের মাধ্যমে400 মিলি
4. মলের মাধ্যমে200 মিলি
5. চোখের জলের মাধ্যমে50 মিলি

মোট কত পরিমাণ জল সারাদিনে দেহ থেকে বেরিয়ে যায়? ....................।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

একজন সুস্থ ব্যক্তি কি পরিমাণ জল পান প্রয়োজন?

একজন সুস্থ ব্যক্তি যদি প্রতিদিন তার দেহের ওজনের প্রতি 50 মিলিলিটার জল পান করেন তবে তার দেহের দৈনিক জলের চাহিদা পূরণ হয়।

নীচের তালিকায় বিভিন্ন শিশু/প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ওজনের হিসাব দেওয়া হলো। তাদের জলের চাহিদা হিসাব করে বের করো:

দেহের ওজন (কেজি) দৈনিক জলের চাহিদা (লি) দৈনিক কত গ্লাস জল পান করা প্রয়োজন (এক গ্লাসে প্রায় 200 মিলি জল ধরে)
1. 20
2. 30
3. 40
4. 50
5. 70

এবার বলো তো, তোমার দেহ রোজ যতটা জল হারায় তুমি ততটা জল কি পান করো? ....................।

না হলে কী কী হতে পারে? ....................।

এতক্ষণ তোমরা দেখলে জল মানুষের দেহে নানা ভূমিকা পালন করে। অন্যান্য জীবদের বেঁচে থাকার জন্যও জল একইভাবে জরুরি। এই ভূমিকার জন্য জলের নানা ধর্ম কাজ করে। এবার বুঝে নাও কোন ধর্ম জীবদেহে কোন ভূমিকা পালন করতে সাহায্য করে।

জলের ধর্ম জীবদেহে জলের ভূমিকা
1. জলের তাপমাত্রায় তরল।জীবনের প্রয়োজনীয় নানা বিক্রিয়া ঘটাতে ও জীবের বেঁচে থাকার তরল মাধ্যম কাজ করে।
2. জলকে গরম করতে প্রচুর তাপের প্রয়োজন।বাহিরের পরিবেশের তাপমাত্রা দ্রুত বদলালেও বড়ো চেহারার প্রাণীদের দেহের তাপমাত্রা নির্দিষ্ট থাকে।
3. জলকে বাষ্প করতে প্রচুর তাপের প্রয়োজন।ঘাম হওয়া ও বাষ্পাচনে জল বেরিয়ে গেলে দেহ ঠান্ডা হয়। খুব অল্প পরিমাণ জল বাষ্পীভূত হলেও অনেক পরিমাণ তাপ দেহ থেকে বেরিয়ে যায়।
4. অন্য যে-কোনো তরলের তুলনায় জল বিভিন্ন বস্তু সহজে গুলে যায়।সহজেই বিভিন্ন দেহকে এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে ছড়িয়ে দেওয়া যায়।
5. জলের কোনো রং নেই।জলের গভীরতাকে উষ্ণও ঠান্ডা তৈরির জন্য আলো পেতে পারে।

মানুষের খাদ্য

খাদ্য তৈরিতে জল ও আলোর ভূমিকা

  • 1. (a) একটা গাছের টবে বেশ কয়েকদিন সূর্যের আলোতে, জল না দিয়ে, রেখে দিলে কী হবে?

    ....................!

  • (b) কেন এমন হলো? ....................।
  • (c) ওই কয়েকদিন গাছটি যদি সূর্যের আলো না পেত তাহলে কী হতো? ....................।
Dry plant
  • 2. (a) ঐ টবের গাছটাকে যেখানে কোনো আলোই পৌঁছায় না, এমন অন্ধকার ঘরে বেশ কয়েকদিন (10-15 দিন) রেখে দেওয়া হলো। কয়েকদিন পরে টবের গাছটার কী অবস্থা হতে পারে বলে তোমার মনে হয়? ....................।
  • (b) এমন হওয়ার পেছনে কারণ কী? ....................।

3. কয়েকদিন গাছটাকে অন্ধকার ঘরে রেখে নিয়মিত জল দেওয়া হলো। তাহলে কি গাছটার পরিণতি অন্যরকম কিছু হবে? ....................।

4. টবের গাছটাকে জল দিয়ে পূর্ণ করে রেখে দেওয়া হলো। তুমি কী দেখবে?

ওপরের চারটে ঘটনা দেখে কী বোঝা গেল বলো তো? গাছের তাহলে বেঁচে থাকার জন্য জল আর আলো দুটোই প্রয়োজন।

কিন্তু গাছের জল আর আলো কেন প্রয়োজন পারবে কি?

আছছা গাছ থেকে তো আমরা নানারকম খাবার পাই। তাহলে গাছ খাবার কীভাবে বলো তো?

দেখা তো তোমরা বলতে পারো কিনা? বাড়িতে আর গাছে কীভাবে খাবার তৈরি হয় নীচের ছকটায় লিখতে চেষ্টা করো।

বাড়িতে গাছে
1. খাবার তৈরি হয় কোথায়? ....................1. খাবার তৈরি হয় কোথায়? ....................
2. রান্না করতে কী কী লাগে?2. খাবার তৈরিতে কী কী লাগে?
চাল(i) সবুজ গাছের ক্লোরোফিল কণা
(ii) কার্বন ডাইঅক্সাইড
3. রান্নার পর কী কী খাবার তৈরি হয়?3. খাবার তৈরির সময় কী কী পাওয়া যায়?
(i) ভাত(i) শর্করা জাতীয় খাবার (গ্লুকোজ)
(ii) ....................(ii) অক্সিজেন
(iii) ....................(iii) জল

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

উদ্ভিদের খাবার তৈরি এবং জল

এসো প্রথমেই জেনে নেওয়ার চেষ্টা করি গাছ কোথা থেকে জল পায়?

স্থলজ উদ্ভিদ জল পায় ....................

জলজ উদ্ভিদ জল পায় ....................

কিন্তু এই জলটাকে গাছ কিভাবে নিজেদের শরীরে নেয়? এই জল, গাছ নিশ্চয়ই কোনোভাবে নিজেদের দেহের থেকে? কীভাবে জানো কি?

মাটির নীচে থাকা কোন অংশটা দিয়ে গাছ জল টানে? ....................!

ওই অংশটা কি কোনোভাবে মাটি থেকে জল শুষে নিতে সাহায্য করে? ....................।

Plant water absorption

স্থলজ উদ্ভিদ তার মূলের সাহায্যে মাটির কণার গায়ে লেগে থাকা জল শুষে নেয়। কোনো কোনো স্থলজ উদ্ভিদ বায়ুমণ্ডল থেকে মূল দিয়ে জলীয় বাষ্প শুষে নেয়। আর জলজ উদ্ভিদ তার জলে ডুবে থাকা সমস্ত অংশ দিয়ে জল শোষণ করে।

আর আলো? গাছেরা সেটা কোথা থেকে পায় নিশ্চয় তোমাদের আলাদা করে বলে দিতে হবে না।

লিখে ফেলো দেখি .................................................................

উদ্ভিদের খাদ্য তৈরিতে জলের ভূমিকা:

মূল বা দেহের অন্যান্য অংশ দিয়ে শোষণ করা জল গাছ পাতায় পৌঁছে দেয়। গাছের খাবার তৈরি হয় এই পাতায় বা অন্যান্য সবুজ অংশে। তাই এই সংশ্লেষণ

গাছের খাবার তৈরির প্রক্রিয়ায় পাওয়া যায় অক্সিজেন গ্যাস। জানো কি এই অক্সিজেন কোথা থেকে পাওয়া যায়? খাবার তৈরির সময় এই অক্সিজেন পাওয়া যায়।

মানুষের খাদ্য

উদ্ভিদের খাদ্য তৈরিতে আলোর ভূমিকা :

গাছের খাবার তৈরি করার প্রক্রিয়াটির নাম জানো কি? গাছের খাবার তৈরির প্রক্রিয়াটির নাম হলো সালোকসংশ্লেষ। এসো এই শব্দটাকে ভেঙে বেশি শব্দটার মানে কী? সালোকসংশ্লেষ শব্দটাতে ভাঙলে পাই, সালোক আর সংশ্লেষ। আর সালোক শব্দটাকে ভেঙে কী পাই? স + আলোক

তাহলে কী বোঝা গেল? স + আলোক মানে আলোর উপস্থিতি আর সংশ্লেষ মানে তৈরি করা। অর্থাৎ আলোর উপস্থিতিতে কোনো একটা কিছু তৈরি করা হচ্ছে। এই আলো হলো সূর্যের আলো।

সূর্যের আলোর শক্তির খুব সামান্য অংশ গাছ শোষণ করে। সূর্যের এই শক্তি আর গাছের সবুজ কণা - ক্লোরোফিল, এদের সাহায্যেই গাছ সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়াটি করে। সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ার পরের ধাপগুলো প্রয়োজনীয় জল আর পরিবেশ থেকে নেওয়া কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাসের।

সূর্যের আলো থেকে যে শক্তি গাছ শোষণ করে, তার একটা অংশকে গাছ রূপান্তরিত করে তার তৈরি করা শর্করা জাতীয় খাবারে জমা রাখে।

মানুষ এবং বিভিন্ন প্রাণী খাদ্য হিসেবে উদ্ভিজ্জ কোনো খাবার খায়, তারা আসলে খাবারে জমিয়ে রাখা সূর্যের ওই রূপান্তরিত শক্তিটাকেই ব্যবহার করে। সূর্যের ওই রূপান্তরিত শক্তিটাকেই ব্যবহার করেই মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীরা তাদের নানা কাজের শক্তির চাহিদা পূরণ করে।

পরিবেশের সজীব উপাদানের গঠনগত বৈচিত্র্য ও কার্যগত প্রক্রিয়া

উদ্ভিদের দেহের গঠনগত বৈচিত্র্য

মূল

মূল আর আমাদের পরিচিত খাবার

নীচের ছবিটা ভালো করে দেখো। তোমরা রোজ যেসব খাবার খাও তার কিছু নীচে দেওয়া আছে। খুঁজে বের করে লেখো, তার কোনটি গাছের কোন অংশ (অংশগুলোর নাম নীচে দেওয়া আছে)।

Vegetables and fruits

মূল, কাণ্ড, পাতা, ফুল, ফল ও বীজ

এবার তুমি আজ আর গতকাল যেসব খাবার খেয়েছ তা নীচের তালিকায় সাজিয়ে লেখো, তারপর সেই খাবারগুলোর কোনটি গাছের কোন অংশ থেকে পাওয়া যায়, তা লেখো।

ক্রমিক সংখ্যা খাবারের নাম গাছের কোন অংশ থেকে তৈরি হয়
ভাত
রুটি
ডালবীজ

এবার তুমি দু-দিনে গাছের মূলজাতীয় কোন কোন উদ্ভিজ্জ খাবার খেয়েছ তার নাম লেখো : ....................।

ভেবে দেখো তো মাটির নীচে থাকে যা অংশ তুমি খাও, তার সবটাই কী মূল? নীচের তালিকায় লেখো।

ক্রমিক সংখ্যা খাবার মূল/কাণ্ড
গাজর
বিট
আলু
আদা
মূলো

পরিবেশের সজীব উপাদানের গঠনগত বৈচিত্র্য ও কার্যগত প্রক্রিয়া

শিক্ষক/শিক্ষার্থীরা দলগতভাবে প্রতিটা দলকে একটি করে মুলো/গাজর/বিট/মাটির নীচের অংশ সমেত থানকুনি বা কোনো ঘাস আর একটি করে জবা বাষ্পের কান্ড/বীজ এবং/পেইশাক আনতে বলবেন। সারণিতে দেওয়া বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী তোমরা আনা সবজিগুলোর তুলনা করে দেখব। কী কী জানতে পারবে?

বৈশিষ্ট্য মূলো/গাজর/বিট/মাটির নীচের অংশ সমেত থানকুনি বা কোনো ঘাস জবা গাছের ডাল/বাঁশের কচি/পেইশাক
মাটির ওপর বা নীচ থেকে পাই
সবুজ রংএর মোটা গঠন পাশ থেকে বেরিয়েছ কিনা
সাধারণত খানিক দূরে পাতা
বা শাখা প্রশাখা ব্যাড়েছ কিনা
খাদ্য হিসাবে কাজে লাগিছ
সবুজ বা অন্য কোনো রঙের নাকি রংহীন
কোনো সামান্য ফেলা অংশ আছে কিনা
যেখান থেকে শাখা বা পাতা বেরিয়েছ

এবার তাহলে এসো দেখি মূল চেনার উপায় কী?

  • বীজের নীচের অংশ থেকে বের হয়ে প্রথম দিকে বেরিয়া থাকে।
  • কোনো গাঁট বা নোড (Node) নেই।
  • নীচের দিকে ডগায় একটা টুপি আর কিছুটা ওপরের দিকে রঁয়া থাকে।

শিক্ষক/শিক্ষিকা ছাত্রছাত্রীদের প্রতিটা দলকে একটি করে রুটশাপ/নটেশাক/পেইশাকের মূল, যে-কোনো জংলা গাছএর মূল এবং তুসকী / আকন্দ / কলমাকুন / কুলেনারা গাছের মূল আনতে বলবেন। এই মূলগুলো একটি ছিদ্রযুক্ত কালো অবজেক্টের মতো। এবার আলু, আম বা তেঁতুল বীজ সঙ্গে আনবেন।

তোমাদের আনা নমুনা মূলগুলোকে এসো ভালো করে জানা যাক।

  • 1. মূলটি মাটির উপরে ছিল, না মাটির ছিল?
  • 2. অঙ্কুরিত বীজের সঙ্গে তুলনা করে বলো, বীজের কোন অংশটি থেকে তৈরি হয়েছে?
  • 3. দেখো তো মূলে কী কী বিভাজন আছে কিনা।
    • (ক) মূলের একেবারে ডগায় টুপি আছে কিনা।
    • (খ) টুপির ঠিক ওপরে কোনো রঁয়া ছাড়া কিছুটা নরম অংশ আছে কিনা।
    • (গ) রঁয়া ছাড়া অংশের পর রঁয়া হওয়া অংশ আছে কিনা।
    • (ঘ) রঁয়া হওয়া অংশের ওপর কোনো রঁয়া আছে কিনা।

গাছকে মাটি তোলার সময় অথবা মূল ছিঁড়ে যাওয়ার সময় অথবা মূল ছিঁড়ে যাওয়ার সময় তোমরা হয়তো মূল টুপি বা তার ওপরের রঁয়াগুলো দেখতে পাবে না। তাই তোমরা যদি জবাফুলের জল থেকে তুললে সেগুলোকে দেখো তাহলে ওই মূলের ডগায় টুপি দেখতে পাবে।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

  • এবার আমরা জানি মূলের এই বিভিন্ন অংশগুলোর নাম কী কী সেগুলো কাঁচের বাইরে।
  • মূলের ডগায় টুপির মতো অংশটা হলো মূলত্র (Root cap)। এই অংশ, মাটিতে মূল চলার সময় শক্ত আঘাত থেকে মূলের নরম অংশকে বাঁচিয়ে রাখে। আর মূলের এই জায়গাটাই হলো মূলত্র অঞ্চল (Root cap zone)।
  • মূলের টুপির ঠিক ওপরের জায়গা যেখানে কোনো রঁয়া নেই এই জায়গাটাতেই মূল লম্বা হওয়ার কাজ করে। আর মাটির মধ্যে ঢুকে যায়। এই জায়গাটাকে বলে মূলের বেডে ও এটা হলো বৃদ্ধি অঞ্চল (Growth zone)।
  • মূলের যে বেডে ওটার জায়গাটা ঠিক ওপরেই রঁয়া রঁয়া যে জায়গাটা, সেটা হলো মূলরোম অঞ্চল (Root hair zone)। এই রোমগুলো দিয়ে গাছ মাটি থেকে জল ও নানারকম খনিজ পদার্থ শোষণ করে।
  • মূলের এই রঁয়া রঁয়া জায়গাটার ওপরের যে শক্ত অংশের জায়গাটা সেটা হলো স্থায়ী অঞ্চল (Permanent zone)। মাটি সহজে গাছেকে শক্ত করে আঁটকে রাখা এই অঞ্চলের কাজ।
  • তোমার জানা মূলটা কত গভীর পর্যন্ত পৌঁছেছিল? (স্কেল দিয়ে মেপে ফেলো)।

মূলের কাজ :

  • a. গাছটা কোণ দিয়ে মাটি আটকেছিল?
  • b. এর থেকে মূলটি কী কাজ করে তুমি বুঝলে?
  • 2. মূলটা তোলার সময় শুকনো না ভিজে ছিল?
  • a. গাছের গোঁড়ায় মাটি দিলে জল ঢাললে সেটা কোথায় কোথায় যেতে পারে?
  • b. টবের গাছের গোঁড়ায় জল না দিলে গাছটা কী কী পরিবর্তন হয়?
  • c. এর কারণ কী?
  • d. এর থেকে মূলের আর কী কী কাজ আছে তোমার মনে হয়?

মূলের প্রধান কাজ : দুতো প্রদান আঁটকে মাটির কাছে মাটি থেকে রাখা ও মাটি থেকে জল শোষণ করা।

এসো দেখা যাক মূলের আর কী কী কাজ আছে।

শিক্ষক/শিক্ষার্থীরা প্রতিটা দলকে একটি করে মূলসহ গাছ এবং যেখানে যেমন পাওয়া যাবে যেমন পেরাগাছ, পাথরকুচি মসৃণ পাতা, বটের কুঁড়ি, ডাল গাছের কাঁটা আর সুন্দরী ইত্যাদি গাছের মূল আনতে বলবেন।

তোমার আনা বাস বা ধানের মূলটা ভালো করে দেখো। আগের দিন যে মূলটা দেখেছিলে, এটা কী তারই মতো? এসো দেখি। নীচের তালিকাটি পূরণ করো।

বৈশিষ্ট্য উদভিজ্য ইত্যাদি মূল ঘাস বা ধানের মূল
মূলগুলো এক জায়গা থেকে গোঁড়ায় বেরিয়েছ, না মূলের পাশ থেকে অনেক মূল বেরিয়েছে
মাটির ওপরে ছড়িয়ে আছে, না মাটির ভেতরে ঢুকে যায়

পরিবেশের সজীব উপাদানের গঠনগত বৈচিত্র্য ও কার্যগত প্রক্রিয়া

টুকরো কথা

বটগাছের একটি প্রধান মূল। সেখান থেকে অন্যান্য শাখামূল বেরিয়ে আসে। এই মূলকে স্থানিক মূল বলে। আর যাদের কোনো প্রধান মূল নেই, তাদের কাণ্ডের গুঁড়ো থেকে অনেকগুলো মূল একসঙ্গে গোছা করে বের হয়। কখনো-কখনো পাতা বা কাণ্ড থেকেও মূল বের হয়। এদের অস্থানিক মূল বলে। ধান, পাথরকুচি বা ঘাসে এই ধরনের মূল দেখা যায়।

তোমার চেনা কয়েকটি গাছের নাম, আর তার মূলটি কোন ধরনের, তা নীচের তালিকায় লেখো:

ক্রমিক সংখ্যা গাছের নাম মূলটি কোন ধরনের
নয়নতারা
সন্ধ্যামালতী
ধান
আম
দুর্বাঘাস
কচুরিপানা

নীচের ছবিগুলোতে বিভিন্নরকম মূলের চেহারা দেখো। প্রয়োজনে শিক্ষক/শিক্ষিকার সাহায্য নাও।

Plant 1 Plant 2 Plant 3 Plant 4 Plant 5 Plant 6 Plant 7

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

মূল গাছকে মাটিতে রাখা আর জলশোষণ ছাড়াও অন্যান্য কাজ করে। আগের ছবিগুলো দেখেছো তো, কোন মূল কী ধরণের কাজ করে? কোনো কোনো মূল এদের বেশিকর্ম কাজ করে। প্রথম ছকের কথা সঙ্গে দ্বিতীয় ছকের কথা মিলিয়ে দ্বিতীয় তৃতীয় ছকে লিখে ফেলো দেখি।

মূলের নাম কাজ মিলিয়ে লেখো
1. বটগাছের ডালের মূলa) বংশবিস্তার করা2 & a
2. পাথরকুচি পাতার মূলb) মাটি ও ওপর থেকে শ্বাস নেওয়া
3. সুন্দরী গাছের মূলc) গাছকে ঠেস দিয়ে সোজা দাঁড়িয়ে থাকতে সাহায্য করে
4. রান্নার (অচ্ছি) মূলd) খাদ্য সঞ্চয় করা
5. গজপিপুলের উটার মূলe) অন্য গাছকে আঁকড়ে ওপরে ওঠা
6. কেয়ার কাণ্ডের নীচের দিকের মূলf) বাতাস থেকে জলীয় বাষ্প নেওয়া
7. মূলো

মূল আমাদের রোজকার জীবনে কী কী কাজে লাগে? এসো দেখি!

  • 1. পুকুর বা নদীর পাড়ে গাছ লাগানো হয়, কেন বলতে পারো?
  • 2. গাছে না-লাগাননো, না-বাঁধানো পুকুর পাড় পড়ে যেতে যায় কেন?
  • 3. মাটির ক্ষয় রোধে গাছ লাগানোর এরকম আর কোন কোন উদাহরণ তুমি জানো?
    • (a)
    • (b)
    • (c) সমুদ্রের তীরে
    • (d)
  • 4. এইরকম কোন কোন গাছ লাগানো যেতে পারে?
  • 5. বন্যাপ্রবণ ও ক্ষয়প্রবণ অঞ্চলে নদীর ধার বরাবর আর পাহাড়ি অঞ্চলে কোন কোন গাছ লাগানো দরকার?
  • 6. মরুভূমিতে বিস্তার কীভাবে রোধ করা যেতে পারে?
  • 7. কোন কোন গাছের মূল মানুষ খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করে? এগুলো বাজারে কোন মেলে?
  • 8. অন্য কোন প্রাণী গাছের মূল খায়?
  • 9. কোন কোন গাছের মূল থেকে আমরা ওষুধ পাই? কোন কোন রোগে তা ব্যবহৃত হয়?
    • (a)
    • (b)
  • 10. (i) কোন কোন জীব অন্য গাছের মূলে বসবাস করে?
    • (a) মাটির গভীরে মূল রাইজোবিয়াম নামক অণুজীব (b) পাইন জাতীয় গাছের মূলে ছত্রাক (মাইকোরাইজা)
  • (ii) এতে গাছের কী সুবিধা?
    • (a)
    • (b)

পরিবেশের সজীব উপাদানের গঠনগত বৈচিত্র্য ও কার্যগত প্রক্রিয়া

র্যাচেল কারসনের মতে, পাহাড়ি জমি খোলা মাটি আর বাগানের/নদীর পাড়ে/পার্কে ছায়ায় থাকা মাটির তুলনা করো।

মাটি কেমন পাহাড়ী মাটি ছায়াওয়ালা মাটি
মাটিটা খুব শক্ত না নরম
মাটিতে বেশি নিচ কম
মাটিতে কতরকম ছোটো ছোটো প্রাণী আছে
মাটি কি ঝুরঝুরে না ঝুরঝুরে নয়
মাটি কি ভিজে না শুকনো
মাটিটা খুব গরম না ঠান্ডা (দুপুরবেলা)

এ থেকে তোমার কী মনে হয়, গাছের মূল মাটিকে কী কী ভাবে প্রভাবিত করে?

  • 1. ....................
  • 2. ....................
  • 3. ....................
  • 4. ....................

কাণ্ড

পেঁয়াজ ও আখের যে যে বৈশিষ্ট্যগুলো দেখেছো সেগুলো লেখো।

শিক্ষক/শিক্ষিকারা ছাত্রছাত্রীদের দল ভাগ করে প্রতিটি দলকে একটি করে মূলসহ শাখাপ্রশাখা সমেত গাছ নিয়ে আসতে বলবেন ও ছাত্রছাত্রীদের দল বিভাজন করে বসাবেন।

তোমরা সবাই গাছ দেখেছ। মাটি ওপরে গাছের কী কী অংশ থাকে?

তোমার আনা গাছটির মাটির ওপরের একটা ছবি নীচে দেখো, আর তার নানা অংশ চিহ্নিত করো।

Plant structure

এবার এসো নীচের তালিকাটি পূরণ করি:

  • 1. গাছটির বড়ো ডালপালা কোন অংশটা সঙ্গে যুক্ত থাকে?
  • 2. এর গায়ে যেখানে ডালগুলি যুক্ত হয় সেখানটা কেমন দেখতে? (রং, দাগ, উঁচু বা নীচু জায়গাটি সাবধানে)
  • 3. এইরকম দুটি জায়গার মাঝখানটি কেমন দেখতে? তার নাম কী?
  • 4. পাতা, ফুল, ফল ইত্যাদি সব গাছের কাণ্ডীয় শাখা কোথায় যোগ থাকে?
  • 5. পাতা আর কাণ্ডের মধ্যে কীরকম জ্যামিতিক আকার তৈরি হয়?

টুকরো কথা

কাণ্ডের যেখান থেকে শাখাপ্রশাখা বেরিয়েছে তাকে পর্ব বা নোড (Node)। আর দুটি পর্বের মাঝখানের জায়গাটা হলো পর্বমধ্য (Internode)। পাতা আর কাণ্ডের মধ্যে যে কোণ তৈরি হয় তাকে কক্ষ বা অ্যাক্সিল (Axil) বলে। আর মাটির ওপরে কাণ্ড, শাখাপ্রশাখা বা ডালপালা, পাতা, ফুল, ফল নিয়ে গাছের যে অংশ থাকে তার রূপান্তর Shoot বলে।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

তাহলে গাছের মাটির উপরে কী কী অংশের নাম জানলাম?

  • 1. ....................
  • 2. ....................
  • 3. ....................
  • 4. ....................
  • 5. ....................

তুমি যতরকম গাছ দেখেছ তার সবগুলিই কি একরকম দেখতে? এসো তুলনা করি।

Mango tree Deodar tree Coconut tree Bamboo
বৈশিষ্ট্য আম দেবদারু নারকেল বাঁশ
1. গুঁড়ো কাণ্ডের গোঁড়ার দিকের (মোটা কাষ্ঠল কাণ্ড) আছে কি?
2. থাকলে কীরকম? (মোটা/সরু)
3. গুঁড়োর গা কেমন? (মসৃণ/এঁড়োখেড়ো)
4. শাখা আছে কিনা?
5. বীটএর আকৃতি কেমন?
6. কাণ্ড নিরেট না ফাঁপা?

তোমার দেখা সব গাছগুলি সমান উচ্চ নয়; এসো তাদের চিনি।

Banyan tree Datura plant Paddy plant

গাছগুলোর নাম লেখো:

  • 1. কোন গাছটি কতটা উঁচু?
  • 2. কোন গাছ বাতাসে বেশি হেলে পড়ে?

পরিবেশের সজীব উপাদানের গঠনগত বৈচিত্র্য ও কার্যগত প্রক্রিয়া

  • 3. কোন গাছের কাণ্ড আর ডাল বেশি শক্ত বা শুকনো?
  • 4. কোনো গাছের ডালপালা মাটির কত উপর থেকে বেরোয়?
  • 5. কতদিন বাঁচে?
  • 6. কোন গাছের প্রকৃতি কেমন? (যেমন, আম - বৃক্ষ, জবা - গুল্ম, ধান - বীরুৎ)

তোমার দেখা কী কী গাছ মাটিতে সোজা দাঁড়াতে পারে না?

  • 1. ....................
  • 2. ....................
  • 3. ....................
  • 4. ....................
  • 5. ....................
Gourd plant Pea plant Bean plant Aparajita plant

এসো দেখি ওপরের গাছগুলি কী কী রকম হয়?

  • 1. কাণ্ডের পর্ব থেকে মূল তৈরি হয়ে মাটিতে প্রবেশ করে কিনা?
  • 2. কাণ্ডটা মাটিতে শুয়ে থাকে কিনা?
  • 3. কাণ্ড শক্ত কিছু ওঠে কিনা?

বলো তো নীচের গাছগুলি দেহের কোন অঙ্গ দিয়ে কোনো ওপর ও ওঠে?

গাছের নাম অঙ্গের নাম
1. লাউ গাছa) কাণ্ডের পর্ব থেকে বেরোনো মূল
2. মটর গাছb) ডাল থেকে বেরোনো আকর্ষি
3. অপরাজিতাc) পাতা থেকে হওয়া আকর্ষি
d) কাণ্ড

নীচে দেওয়া তোমার রোজকার চেনা জিনিসগুলোর মধ্যে কোনটা কাণ্ড, কোনটা নয় বলো তো? (প্রয়োজনে বাজারে গিয়ে সবজি বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলো।)

চেনা জিনিস কাণ্ড কাণ্ড নয় আকৃতি কেমন
মূলাশাক
বাঁধাকপি
সজনেটাটা
আলু
কচু

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

কিন্তু কিছু কাণ্ড আমাদের ঠিক চেনা বস্তুর মতো নয়। নিজেদের সুবিধা জন্য সেই সমস্ত গাছগুলো তাদের খাদ্য ব্যবস্থা বাড়ায়। এই সমস্ত গাছগুলো তাদের ভূগর্ভস্থ কাণ্ড (Modified Shoot) । আমরা যে আলু খাই সেইটা আলুগুলোর পালট পাওয়া যায়। কাণ্ড আর এর ওপরের অংশে খাদ্যের পরিবর্তন সেসবে হয়।

নীচের ছবিগুলোতে গাছের কাণ্ডের কোন অংশ কীভাবে পরিবর্তিত হয়েছে তা নীচে দেখো আর লেখো।

Stem 1 Stem 2 Stem 3 Stem 4

এসো এবার এইসব কাণ্ডের কয়েকটি সম্পর্কে ভালো করে জানি:

ক্রমিক সংখ্যা নাম কোনরকম কাণ্ড কেমন দেখতে কাজ কী
1.বেলের শাখাকণ্টকরূপান্তরিত কাণ্ড : কাণ্ড শাখা কাঁটায় রূপান্তরিত হয়েছে।লম্বা, ধারালো কাঁটার মতোআত্মরক্ষা করা
2.কচুরিপানা থর্ব-ধাবকরূপান্তরিত অর্ধবায়বীয় কাণ্ড
3.আলুর স্ফীত কন্দরূপান্তরিত ভূগর্ভস্থ কাণ্ড
4.কুমড়োর শাখাকর্ষরূপান্তরিত বায়বীয় কাণ্ড

এসো এবার এসব কাণ্ডের কয়েকটি সম্পর্কে ভালো করে জানি:

  • গাছ তার পাতায় খাবার বানায়। তার জলটা মূল দিয়ে। সেই জলটা কোন পথে পাতায় পৌঁছায়? ....................
  • গাছের তৈরি খাবারটা গাছের নীচমহলে পৌঁছায় বা মূল পথে? ....................।
  • গাছের বাড়তি খাবারটা গাছ কোথায় জমা রাখে ....................
  • গাছ তার চারপাশে ডালপালাগুলোকে মেলে ধরে; গাছপালাগুলোকে রোদে মেলে রাখে। গাছের কোন অংশটি ডাল, পাতা, ফুল আর ফল ধরে রাখে।
  • ভূগর্ভস্থ পশুরা গাছকে খেতে এলে, কোন অংশটা দিয়ে গাছ নিজেকে বাঁচায় ....................।

পরিবেশের সজীব উপাদানের গঠনগত বৈচিত্র্য ও কার্যগত প্রক্রিয়া

  • চাঁদ ও রোদে এমন মাটি থেকে জল তোলা পাতা থেকে বাষ্প হয়ে যেতে থাকে। তখন গাছের গাছের গোড়ার উপরের জল আসে। এখানে গাছের ভূমিকা কী?
  • বাঁশগাছ, কলাগাছ, পান এবং গাঁজ ফুল না ফুটলে বা বীজ না করে কাণ্ডের সাহায্যে পৃথিবীতেরাদের বংশবিস্তার করে। এখানে গাছের ভূমিকা কী?
  • পুইশাক, লাউশাক এরা পাতা ছাড়াও আর কোন অংশের সাহায্যে খাদ্য তৈরি করে? এখানে গাছের ভূমিকা কী?

তাহলে আমরা গাছের কোন কোন কাজের কথা জানলাম? নীচে লিখি।

  • 1. জল বয়ে যাওয়া
  • 2. ....................
  • 3. খাদ্যসংগ্রহ
  • 4. ....................
  • 5. ....................
  • 6. ....................
Algae Lichen

গাছের গায়ে ওই সবুজ যৌগগুলো হলো লাইকেন। বাতাসে দূষণমুক্ত থাকলে লাইকেনের রং থাকে সবুজ। বাতাসে বেশি দূষিত হলে লাইকেনের রং বদলে হয়ে যায়।

আমাদের সারাদিনে গাছের কোন কোন কাজে প্রয়োজন হয়?

  • 1. তোমার বাড়িতে কোন কোন কাঠে কী কী ব্যবহার হয়?
  • 2. তুমি যে কাগজে লেখো, তা কী থেকে তৈরি?
  • 3. বলো তো কোন কোন যান তৈরিতে কাঠ ব্যবহার হয়?
  • 4. তোমার বাড়িতে রান্না করতে গাছ কী কী ভাবে কাজে লাগতে পারে?
  • 5. কোন কোন গাছের কাণ্ড তুমি খাবার হিসাবে খাও?
  • 6. তোমার সুতির পোশাক, চটের বস্তা কী থেকে তৈরি?
  • 7. গাছের কী কী অংশ আঠা, রঁয়া ভাবনার ধূলো, সাইকেলের টায়ার আর কাঠের পালিশ তৈরিতে কাজে লাগে?
  • 8. দু-একটা ওষুধের নাম লেখো যা গাছের কাণ্ড থেকে পাওয়া যায়?

আর পরিবেশে বা গাছের কাণ্ড কী ভূমিকা নেয়–

  • 1. রাতে পাখি, কাঠবেড়া, বাদুড়, বানর এরা কোথায় আশ্রয় নেয়?
  • 2. গাছে থাকে এমন কয়েকটি পোকামাকড়ের নাম লেখো।
  • 3. তোমার সরকারি অভিযানে যে বাতাসে ছেড়ে দেয়? আর তোমার ছেড়ে দেওয়া কার্বন ডাইঅক্সাইড কে টেনে নেয়?
  • 4. গরমকালে গাছের নীচে দাঁড়ালে ঠান্ডা বোধ হয় কেন?
  • 5. গাড়ির ধোঁয়া নানা বিষাক্ত গ্যাস টেনে নিয়ে বাতাসকে নির্মল রাখে কে?
  • 6. জানো কি, গাছের গুঁড়ি দেখে পরিবেশ দূষিত কিনা কীভাবে বুঝবে?
  • 7. জানো কি, গাছের কাঠ গুঁড়ি দেখে গাছের বয়স বলা যায় কীভাবে?

পরি পরিবেশ ও বিজ্ঞান

পাতা

তোমরা স্কুলে যাওয়ার পথে যেসব পাতা দেখেছ, তার কয়েকটি ছবি নীচে দেওয়া আছে।

Leaf 1 Leaf 2 Leaf 3 Leaf 4 Leaf 5

কোনটা কোন গাছের পাতা তার নাম লেখো:

  • 1. ....................
  • 2. ....................
  • 3. ....................
  • 4. ....................
  • 5. ....................

এবার তুমি পাতাগুলো সংগ্রহ করে পাতাগুলোর চওড়া প্রসারিত অংশের আকারগুলো বোঝার চেষ্টা করো এবং নীচে তার ছবি আঁকো।

নমুনা পাতার নাম নমুনা পাতার প্রসারিত চ্যাপ্টা অংশের আকার
1. ঝাউপাতা
2. বাঁশপাতা
3. জবা পাতা
4. পদ্মপাতা
5. ছাতিমপাতা

উপরের প্রত্যেকটি গাছের পাতার যে প্রসারিত ও চ্যাপ্টা অংশের আকারের সঙ্গে তুমি পরিচিত হলে তাহলে পাতার ফলক (Lamina)। আর পাতার গোঁড়ায় যে সবুজ গুঁড়োর মতো থাকে সেটি গোটা। তবে সব গাছের পাতার ফলক সরাসরি কাণ্ড থেকে বের হয়।

পরিবেশের সজীব উপাদানের গঠনগত বৈচিত্র্য ও কার্যগত প্রক্রিয়া

তুমি/তোমরা লেবু, ধুতকুমারী ও অশ্বথ গাছের পাতা সংগ্রহ করো।

Lemon leaf Datura leaf Banyan leaf

এর মধ্যে –

  • a. কোন পাতার ফলক ছিঁড়ে মিষ্টি গন্ধ পাওয়া যায়? ....................।
  • b. কোন গাছের পাতার ফলক ছিঁড়লে উপটপ করে রস গড়িয়ে পড়ে? ....................।
  • c. কোন গাছের পাতা চামড়ার মতো পুরু? ....................।

উপরের বৈশিষ্ট্যযুক্ত এরকম আরও তিনটি পাতা খুঁজে বের করে।

ক্রমিক নং মিষ্টি গন্ধের পাতা রসালো পাতা চামড়ার মতো পাতা
1.
2.
3.
Rough and smooth leaves

পাশের গাঁদা গাছের পাতার ধার শক্ত ও আঁশ। আর অশ্বত্থ গাছের পাতার ধার মসৃণ, কোনো খাঁজ নেই।

এরকম আঁশ বা খাদযুক্ত ফলপ্রসূ দুটি করে পাতার নাম লেখো:

তোমরা প্রত্যেকটা জবা পাতা ও কলা পাতা নিয়ে আলোর দিকে ধরে দেখো তো এরকম দেখা যায় কিনা –

  • (i) জবা পাতা – মাঝখানে একটা শিরা, এই শিরার দু-পাশ থেকে অনেকগুলো শিরা বেরিয়েছে। শিরাগুলো সব মিলে একটা জালের মতো তৈরি করেছে।
  • (ii) কলা পাতা – মাঝখানে একটা শিরা, মাঝখানের শিরার দু-পাশ থেকে সমান্তরালভাবে অনেকগুলো শিরা বেরিয়েছে।

পরের পাতার ছবিগুলো লক্ষ্য করো। দেখো তো পত্ররন্ধ্র কীভাবে কাণ্ডের পর্বের সঙ্গে যুক্ত থাকে?

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

1. জবা গাছের পাতায় .................... 2. আকন্দ গাছের পাতায় .................... 3. শালুক পাতার পাতায় ....................

পাতার যে গঠনটি পত্রবৃন্তকে কাণ্ডের পর্বের সঙ্গে যুক্ত করে তার নাম হলো পত্রমূল (Leaf base)।

জবাপাতার ছবিতে পাতার বিভিন্ন গঠনগত অংশ চিহ্নিত করো।

Hibiscus leaf

পাতার বিভিন্ন অংশ কী কী কাজ করে? নীচের সারণির বামদিকের সঙ্গে ডানদিকের স্তম্ভের সাদৃশ্য বিধান করো: (একটি অংশ একাধিক কাজ করতে পারে)

পাতার অংশ কাজ
1. পত্রফলক(a) খাদ্য প্রস্তুত করা।
2. পত্রবৃন্দ(b) জল ও খাদ্য পরিবহন করা।
3. পত্রমূল(c) পত্রফলককে ধরে রাখা।
(d) গ্যাসের আদানপ্রদান করা।
(e) কাণ্ডকে আড়াল বা সরণের সঙ্গে যুক্ত করা।

নীচের ছবিগুলো লক্ষ্য করো এবং এই পাতাগুলো কোন কোন উদ্ভিদের?

Plant 1 Plant 2 Plant 3 Plant 4 Plant 5
  • 1. ....................
  • 2. ....................
  • 3. ....................
  • 4. ....................
  • 5. ....................

পরিবেশের সজীব উপাদানের গঠনগত বৈচিত্র্য ও কার্যগত প্রক্রিয়া

আগের পাতার পাতাগুলো খাদ্য তৈরি, বাষ্পমোচন, শ্বাসবায়ু আদানপ্রদান ছাড়াও অন্যান্য কাজ করে। ছবিগুলো দেখে বলো তো কোন পাতা কী কী কাজ করে? (কোনো কোনো পাতা একের বেশি কাজ করতে পারে)।

পাতার নাম কাজ
1. মটরের পত্রবৃন্ত(a) বংশবিস্তার করা
2. ফণীমনসার পত্রকণ্টক(b) খাদ্য সঞ্চয় করা
3. ধুতকুমারী পাতা(c) পতঙ্গদের দেহস্থিত নাইট্রোজেন ঘটিত উপাদান সংগ্রহ করা।
4. পাথরকুচি পাতা(d) আরোহণে সাহায্য করা
5. কলশপত্রী পাতা(e) অতিরিক্ত বাষ্পমোচন বন্ধ সৃষ্টি করা।
Simple leaf

অখণ্ড ফলক একটি মাত্র ফলক দিয়ে গঠিত। ফলকের ধার সম্পূর্ণ অর্থাৎ প্রান্ত বরাবর কোনো খন্ড থাকে না। এই ধরনের পাতাকে একক পত্র (Simple leaf) বলে।

তেঁতুল পাতার ফলক মাঝখানের শিরা পর্যন্ত কতকগুলো আলাদা আলাদা ভাগে ভাগ হয়ে যায়। এইধরনের পাতাকে যৌগিক পত্র (Compound leaf) বলে।

তোমার চারপাশে দেখা এরকম তিনটি করে একক ও যৌগিক পত্রের উদাহরণ দাও।

একক পত্রযুক্ত গাছের নাম যৌগিক পত্রযুক্ত গাছের নাম
1.1.
2.2.
3.3.

পাতা জীবজগতের কী কী কাজে লাগে? এসো দেখি:

  • 1. গাছের পাতা কোন গ্যাস বাতাসে ছাড়ে এবং কোন গ্যাস শোষণ করে?
  • 2. মানুষের পক্ষে উপকারী পোকার নাম করো যারা গাছের পাতা খাবার হিসাবে খায়।
  • 3. মানুষের পক্ষে ক্ষতিকর পোকার নাম করো যারা গাছের পাতা খাবার হিসাবে খায়।
  • 4. হাতি, হরিণ, ঘোড়া কোন কোন গাছের পাতা খাবার হিসাবে খায়?
  • 5. কোন গাছের পাতার শিরা বাড়ির ধুলো-ময়লা পরিষ্কার করতে কাজে লাগে?
  • 6. কোন কোন গাছের রস বা নির্যাস আমরা ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করি?
  • 7. কোন কোন গাছের পাতা মানুষ জীবিকা অর্জনের জন্য ব্যবহার করে?
  • 8. কোন কোন গাছের পাতা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়?
  • 9. কোন জীব গাছের পাতায় ডিম পাড়ে?

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

  • 10. ঘরের ছাদ বা দেয়াল তৈরিতে কোন কোন গাছের পাতা ব্যবহার করা হয়?
  • 11. ঘর সাজানোর কাজে কোন কোন গাছের পাতা ব্যবহার করা হচ্ছে?
  • 12. কোন কোন প্রাণী কোন কোন পাতার আকৃতি বা রং-কে অনুকরণ করে বেঁচে থাকে?

এবার এক-একটা করে পাতা নাও। স্কেল দিয়ে মেপে দেখো, পাতাটা কতটা লম্বা, কতটা চওড়া। তার দৈর্ঘ্য আর প্রস্থের অনুপাত হিসাব করো। তারপর যা পেলে, তা নীচের ছকটায় দেখো।

কী ধরনের গাছ কোন গাছের পাতা দৈর্ঘ্য প্রস্থ দৈর্ঘ্য/প্রস্থের অনুপাত
ছোটো গাছ
1.
2.
মাঝারি গাছ
1.
2.
বড়ো গাছ
1.
2.

ফুল

নীচের ছবিটি ভালো করে দেখো। তোমরা রোজ যে ফুল দেখো তার কয়েকটি নীচে দেওয়া আছে।

Flower 1 Flower 2 Flower 3 Flower 4

এবার তুমি একটি জবাফুল দেখে দেখো কী কী দেখতে পাচ্ছ?

ফুলের বাইরে থেকে ভেতরের দিকে কতকগুলো অংশ নিয়ে তৈরি। ওই অংশগুলোকে এক একটি বৃতুক বলা হয়।

ফুলের নীচে ঠিক ওপরে সবুজ রঙের একটা উনটিপটা ফুলের মতো অংশ আছে। যখন ছোটো কুঁড়ি থাকে তখন পুরো কুঁড়িটা এটা দিয়ে ঢাকা থাকে। সবুজ ঘটাটা আসলে ছোটো ছোটো পাতার মতো অংশ জুড়ে তৈরি। সবুজ ঘটাটা এই অংশটা ফুলের বৃতি (Calyx)。 আর বৃতির ছোটোটা অংশ হলো বৃত্যংশক (Sepal)। এগুলো আলাদা থাকে পারে আবার জুড়েও যেতে পারে।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

এর মধ্যে, (a) কোনগুলি গাছের বংশবৃদ্ধি সরাসরি অংশগ্রহণ করে? ....................।

(b) কোনগুলি অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজে সাহায্য করে? ....................।

Flower 5 Flower 6 Flower 7 Flower 8 Flower 9 Flower 10 Flower 11 Flower 12

উপরের বিভিন্ন ফুল ও ফুলের অংশের ছবি দেওয়া আছে। ফুলগুলো যোগাড় করে নীচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।

  • 1. কোন ফুলের বৃতি বা দলমণ্ডলের অংশগুলোর আকৃতি বা গঠন সমান (মেপে দেখো)? ....................।
  • 2. কোন ফুলের বৃতি বা দলমণ্ডলের অংশগুলো পরস্পর সমান নয়? ....................।
  • 3. কোন কোন ফুলে চারটি স্তবকই উপস্থিত? ....................।
  • 4. কোন কোন ফুলে একটি বা একাধিক স্তবক অনুপস্থিত? ....................।
  • 5. কোন ফুলের কোন কোন স্তবক অনুপস্থিত? ....................।

ফুল সম্পর্কে এসো আমরা আরও কিছু বিষয় জানার চেষ্টা করি:

  • 1. পাতার রং সবুজ কিন্তু ফুলের পাপড়ির রং হয় কেন?
  • 2. একই ফুলের পাপড়ির রং কি (উজ্জ্বল, দিন-রাত, ঋতুভেদে) বদলাতে পারে?
  • 3. কোনো ফুলের পাপড়ির রং কোথাও লাল, কোথাও হলুদ, কোথাও বেগুনি বা কোথাও নীল হয় কেন?
  • 4. ফুলের পাপড়িতে গন্ধ থাকলে গাছের কী সুবিধা হয়?
  • 5. রাতে বা দিনে কোন কোন ফুল ফোটে?
  • 6. কোনো ফুলের পরাগ কি কোনো প্রাণী খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করে?
  • 7. ফুলের পরাগ মানবদেহে প্রবেশ করলে কী কী সমস্যা হতে পারে?
  • 8. ফুলের পাপড়ির রং-কে মানুষ কী কী কাজে ব্যবহার করে?
  • 9. সূর্যের আলোর সঙ্গে ফুল ফোটার সম্পর্ক কী?
  • 10. ফুলের কোন অংশটি থেকে ফল তৈরি হয়?

পরিবেশের সজীব উপাদানের গঠনগত বৈচিত্র্য ও কার্যগত প্রক্রিয়া

ফল

ফলের ধারণা

তুমি তো নিশ্চয়ই নানারকমের ফল দেখেছ। তোমার চেনা কয়েকটি ফলের নাম লেখো যারা নীচের বৈশিষ্ট্যগুলো যুক্ত:

এমন দুটো ফল, যেগুলোর খুব রসালো, আর পাকলে ভারি মিষ্টি।
এমন দুটো ফল, যেগুলোর খুব রসালো, কিন্তু পাকলেও ভারি টক।
এমন দুটো ফল, যেগুলোর খুব রসালো, আর পাকলে ভারি কষাটে।
এমন দুটো ফল, যেগুলোর কাঁচা অবস্থায় সবজি হিসেবে খাওয়া হয়, আর পাকলে ফল হিসেবেও খাওয়া যায়।
এমন দুটো ফল, যেগুলোর কাঁচা অবস্থায় সবজি হিসেবে খাওয়া হয়, কিন্তু পাকলে ফল হিসেবে খাওয়া যায় না।
এমন দুটো ফল, যেগুলোর রসালো নয়, কিন্তু খাওয়া যায়।

ফলের একাল-সেকাল

তোমার বাবা, মা, দাদু বা দিদিমাকে জিজ্ঞেস করো তো, তাঁরা কে কী ফল খেতেন?

দেখো তো, তাঁরা এমন কোন ফল খেতেন, যা তুমি খাওনি, অথবা যা এখন পাওয়া যায় না?
না খেলে কেন খাওনি?
না পাওয়া গেলে, কেন পাওয়া যায় না?
তাঁরা যেসব ফল খেতেন, সেগুলোর তখন যেমন দেখতে ছিল, এখন কি তেমনটিই আছে, না কি অন্যরকম দেখতে হয়েছে?
দেখো তো এমন কোন ফল তাঁরা খাননি, কিন্তু তুমি খেয়েছ?
কেন এমন হলো?

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

ফলের অন্দরমহল

এসো, ফলের ভেতরে কী কী আছে দেখি। তোমার লাগবে: একটা ছোটো কাঁচা আম আর একটা ছুরি।

কাজ তোমার উত্তর
ধীরে ছুরি দিয়ে আমটাকে লম্বালম্বি এমনভাবে কাটো যেন আটিটা কেটে না যায়। ধারালো ছুরিটাকে সাবধানে ব্যবহার করবে, যাতে হাত না কাটে। দরকারে শিক্ষক/শিক্ষিকা তোমাকে সাহায্য করবেন। কাটতে গিয়ে ফলটাকে কেমন মনে হলো, শক্ত না নরম? ফলটার সময় ফলটা থেকে কী বেরিয়েছে?
এবার ফলটার কাটা পাশটা আলোতে ধরে লক্ষ্য করো (দরকারে শিক্ষক/শিক্ষিকা তোমাকে সাহায্য করবেন)।
ফলটার বাইরে থেকে ভেতরে কটা দাগ দেখতে পাচ্ছ?
দাগগুলোর নাম লেখো।
ফলের ঠিক মাঝখানটায় কী দেখতে পাচ্ছ?
ফলের মাঝখানের অংশটা ছুরি দিয়ে খুব সাবধানে কেটে দেখবার চেষ্টা করো ভেতরে কী আছে?
কাটা ফলটা যেমন দেখছ, তেমন করে পাশের খোপে আঁকো।
তারপর বিভিন্ন অংশগুলো চিহ্নিত করো।

এসো এবারো, ফলটা কাটার পর ফলটার বাইরে থেকে ভেতরে যেতে পরপর যে পাঁচটা ভাগ দেখতে পাওয়া যায় সেগুলো কথা লিখি :

  • 1. প্রথম ভাগ
  • 2. দ্বিতীয় ভাগ
  • 3. তৃতীয় ভাগ
  • 4. চতুর্থ ভাগ
  • 5. পঞ্চম ভাগ

একটি ফলের গঠন :

আম একটি বীচিযুক্ত রসালো ফল। একটি ফুল থেকে একটিমাত্র ফল গঠিত হয় বলে এটি একটি সরল ফল (Simple fruit)।

আমের গঠনে দুটি অংশ দেখা যায় – (A) পেরিকার্প বা ফলত্বক (B) বীজ

(A) ফলত্বক- উদ্ভিদশাস্ত্রের আবরণীযুক্ত থেকে ফলত্বক গঠিত হয়।

ফলত্বকের তিনটি স্তর থাকে।

Mango seed
  • (i) বহিঃত্বক- পাতলা বা গাঢ় হওয়া। কাঁচা অবস্থায় এর রং সবুজ ও পাকলে এটি হলুদ বা লালচে রং-এর হয়। এটিকে আমরা খোসা বলে থাকি।
  • (ii) মধ্যত্বক- এটি রসালো ও শাঁসালু। আমের এই অংশে আমরা খেয়ে থাকি।

পরিবেশের সজীব উপাদানের গঠনগত বৈচিত্র্য ও কার্যগত প্রক্রিয়া

  • (iii) অন্তঃত্বক - এটি কঠিন। আমরা একে আটি বলি। এটি বীজকে ঢেকে রাখে।

তাই বীজ বাহিরে থেকে দেখা যায় না।

  • (B) আমের বীজ দুটি বীজপত্র নিয়ে গঠিত।
  • আমের মধ্যত্বক রসালো শাঁসযুক্ত। তাই আম .................... ফল। (সরস/নীরস)
  • আমের বীজে .................... বীজপত্র থাকে। তাই আমগাছ .................... উদ্ভিদ।

ফলের হরেক রকম

তোমরা আম এর গঠন দেখেছ। আর কী কী রকম ফল হয়?

একটা করে আম, আতা, (পাকা) আর এঁচোড় (ছোটো মতো) জোগাড় করো। এবার এসো এদের মিলিয়ে দেখি:

Mango Custard apple Jackfruit
আম আতা এঁচোড়
ফলটাকে একটু জোরে চাপ দিয়ে দেখো, কী হয়
ফলটাকে কেটে ভেতর দেখো, কতগুলো বীজ দেখতে পাচ্ছ

কোন ফলটা দেখেছ লেখো:

ফলের বর্ণনা ফলের নাম ফলের প্রকৃতি আরও উদাহরণ
একটা বীচি, তার উপরে একুমাত্রা অংশ, আর তাতে একটা বীজ।আমএই রকম ফলকে সরল ফল বলা হয়।
একটা বোঁটা, তার উপরে অনেকগুলো অংশ, অংশগুলো আলাদা আলাদা করা যায়। আর প্রতিটি অংশে একটা করে বীজ।আতাএই রকম ফলকে গুচ্ছিত ফল বলে। বলো তো, এক থোকা আঙুর কী কী ধরনের ফল? হলে, কেন? না হলেই বা কেন?
একটা বোঁটা, তার উপরে অনেকগুলো অংশ, অংশগুলো আলাদা করা যায় না, আর প্রতিটি অংশে একটা করে বীজ।এঁচোড়এই রকম ফলকে যৌগিক ফল বলে।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

ফলটা এল কোথা থেকে?

তোমরা দেখেছ, ফুল থেকে ফল হয়। ফুলের কোন অংশ থেকে ফল হয়? এসো দেখি। তোমার লাগবে একটা সিম, বা, অপরাজিতা ফুল, আর তার একটা ফল। আর ফুল বাটার জন্য লাগবে একটি আলপিন।

আগে মনে করে লেখত, ফুলের অংশগুলো কী কী?

এবার আষ্টে আস্তে ফুলের অংশগুলো আলাদা আলাদা করো। তারপর ফলটাকে এক-একটা অংশের সঙ্গে মিলিয়ে দেখো, তেমনটার সঙ্গে ফলটার চেহারাটা মিল সবচেয়ে বেশি।

তোমার খাতায় এক একটা করে ফুলের এক-একটা অংশের ছবি আঁকো এবার ফুলের যে অংশটার সঙ্গে ফলের মিল সবচেয়ে বেশি তার পাশের খোপে ফলটার ছবি আঁকো

তাহলে ফুলের কোন অংশ থেকে ফল তৈরি হয়? ....................।

বীজ

নানা উদাহরণ

তোমরা জানা থাকলে বলো বীজের নাম লেখো। বীজগুলোর কোনটা কেমন দেখতে, আর কী কী কাজে লাগে তা লেখো আর ছবি দেখো।

বীজের নাম কেমন দেখতে কী কী কাজে লাগে ছবি

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

তাহলে বীজের সম্পর্কে কী কী জানলাম?

প্রথমে, বাইরের আবরণীটি:

বীজত্বক
(a) এর নাম কী?সংযুক্ত ফলত্বক ও বীজত্বক (United pericarp and seed coat)
(b) এর রং কী?সবুজ কিংবা হলুদ
(c) এর কটা স্তর?দুটো
(d) স্তরগুলোর নাম কী কী?বহিঃত্বক (Testa), অন্তঃত্বক (Tegmen)
(e) এর কাজ কী হতে পারে?সুখসহ বীজকে সমস্ত অংশকে রক্ষা করা
(f) এর ওপরে কী কী দাগ বা ফুটো দেখেছ?দাগ- ডিম্বকনাভি (Hilum), ছিদ্র- ডিম্বকরন্ধ্র (Micropyle)
(g) তাদের কাজ কী?অঙ্কুরোদগমের সময় ডিম্বকরন্ধ্রের মধ্য দিয়ে ভ্রূণমূল বেরিয়ে আসে।

তারপরের ভেতরের অংশ :

শাঁস বা অঙ্কুরবীজ
(a) এর নাম কী?অঙ্কুরবীজ বা ভ্রূণ (Kernel)
(b) এর রং কী?
(c) এর আকৃতি কেমন?
(d) একে চাপ দিলে কটা ভাগে ভাগ হয়ে যায়?দুটো ভাগে ভাগ হয়ে যায়।
(e) ভাগগুলোর নাম কী?বীজপত্র (Cotyledon)
(f) ভাগগুলোর আকৃতি কেমন?
(g) ভাগগুলো অত মোটা কেমন?খুশি
(h) তাদের কাজ কী হতে পারে?
(i) ভাগগুলো কোন অংশ দিয়ে একসঙ্গে আটকানো আছে?একটি ছোটো কর্বতার মতো বাঁকানো দণ্ড দিয়ে আটকানো থাকে।
(j) এই অংশটার নাম কী?ভ্রূণাক্ষ (Tigellum)
(k) এই অংশটার উপরের আর নীচের প্রান্ত দুটোকে কী বলে?ভ্রূণমুকুল (Plumule) এবং নীচের অংশ — ভ্রূণমূল (Radicle)
(l) এই অংশটার মাঝখানে যেখানে বীজপত্রগুলো আটকানো আছে, সেই জায়গাটার নাম কী?পর্বসন্ধি (Nodal zone)
(m) পর্বসন্ধির ওপর ও নীচের অংশকে কী বলে?উপরের অংশ — বীজপত্রাধিকাণ্ড (Epicotyl) নীচের অংশ — বীজপত্রাবকাণ্ড (Hypocotyl)

পরিবেশের সজীব উপাদানের গঠনগত বৈচিত্র্য ও কার্যগত প্রক্রিয়া

তাহলে বীজটা থেকে গাছ জন্মায় কী করে?

এবার তোমার লাগবে একটা ভেজানো মটর বীজের খোসা ছাড়ানো ভেতরের অংশটা, একটা অঙ্কুরিত মটর বীজের (যার থেকে একটা মোটামুটি বড়ো চারাগাছ জন্মেছে) খোসা ছাড়ানো ভেতরের অংশটা, আর একটা ছোটো চারাগাছ।

আগে মনে করে নাও, বীজের খোসা ছাড়ানো ভেতরের অংশ কোনটার কী নাম?

  • (1)
  • (2)
  • (3)
  • (4)

ভেজানো বীজের ভেতরের অংশটার ভাগগুলো সাবধানে আলাদা করো, কিন্তু সেগুলো যেন মাঝখানে লেগে থাকে। এদের খোলা দিকটা ওপরে করে সামনে রাখো। তারপরে চারাগাছটা তার পাশে রাখো। এবার মিলিয়ে দেখো তো, চারাগাছের কোন অংশের সঙ্গে বীজটার কোন অংশের মিল বেশি?

চারাগাছ বীজ
মূল
কাণ্ড
পাতা

ভেজানো মটর বীজের ভেতরের অংশটা আর অঙ্কুরিত মটর বীজের ভেতরের অংশটা তুলনা করো। কী তফাত দেখতে পাচ্ছ?

কেন এই তফাত?

বীজের ভেতরে ছোটো গাছটা কোথায় আছে নীচে একটি ছবি এঁকে দেখাও। চিহ্নিত করো। (দরকারে শিক্ষক/শিক্ষিকা তোমায় সাহায্য করবেন)।

তাহলে এবার বীজের বিভিন্ন অংশের কাজ লেখো:

1. বীজত্বক
2. ভ্রূণ
3. বীজপত্র
4. ভ্রূণমুকুল
5. ভ্রূণমূল

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

বীজ তৈরি হয় কোথা থেকে? ফুলের কোন অংশ থেকে?

এটা জানি, যে বীজ থাকে ফলের ভেতরে। মনে করে দেখো, ফল তৈরি হয় ফুলের কোন অংশ থেকে?

এবার দেখি, ফুলের কোন অংশ থেকে বীজ তৈরি হয়। তোমার দরকার হবে একটা সাদা কাগজ, একটা সিম, মটর অথবা অপরাজিতা ফুল, তার একটা ফল, আর কাটার জন্য একটা ব্লেড। (দরকারে শিক্ষক/শিক্ষিকা তোমায় সাহায্য করবেন)।

ব্লেড সাবধানে ব্যবহার করবে, হাত যেন না কাটে।

পুঁতির বৃতি, পাপড়িগুলো আর পুংকেশরগুলো সাবধানে কেটে ফেলো। তারপর গর্ভাশয়টা লম্বালম্বি কাটো। কাটা ফলটাকে একইভাবে গর্ভাশয়ের পাশে রাখো। এবার দুটিকে মিলিয়ে দেখো। গর্ভকেশরটির কোন অংশের সঙ্গে ফলের বীজের মিল দেখতে পাচ্ছ?

তোমার খাতায় নীচের ছকের মতো পাশাপাশি ছবি আঁকো আর লেবেল করো।
কাটা গর্ভাশয়
কাটা ফল

এবার দুটি জিনিস মেলাও:

গর্ভাশয় বীজ
ডিম্বকফল

ফুলের কোন অংশ থেকে বীজ তৈরি হয়? ....................।

আবার মটর বীজের গঠন জেনেছ। সব বীজের গঠনই কি একইরকম? এসো অন্য কোনো বীজের গঠন দেখি। এবার তোমার লাগবে সারা রাত ভিজিয়ে রাখা ভুট্টা বীজ, ভুট্টা কাটার জন্য আলপিন আর একটা ব্লেড, আর একটা সাদা কাগজ।

ব্লেড সাবধানে ব্যবহার করবে, হাত যেন না কাটে।

এবার মটর বীজের গঠন দেখেছ, সেই একইরকমে ভুট্টা বীজের গঠন পরীক্ষা করে দেখো। (দরকারে শিক্ষক/শিক্ষিকা তোমায় সাহায্য করবেন)

আলপিন দিয়ে বীজের উপরের আবরণীটা আস্তে আস্তে ছাড়িয়ে ফেলো। আবরণীটার নাম কী? কটা স্তর আছে?

আবরণীটার ভেতরের অংশটি সরিয়ে রাখো।

এবার আবরণীটাকে সাদা কাগজের ওপরে রাখো, আর পাশের ছকে তার ছবি আঁকো।

পরিবেশের সজীব উপাদানের গঠনগত বৈচিত্র্য ও কার্যগত প্রক্রিয়া

তারপর আবরণীটার ভেতরের অংশটা দেখো।

এর নাম কী?

এটিকে সাবধানে সামান্য চাপ দাও। কটি ভাগে ভাগ হয়ে যায়?

বীজটাকে ব্লেড করে সাবধানে ব্লেড দিয়ে সাবধানে লম্বালম্বি কাটো। বীজের ভেতরে ছোটো গাছটা ছাড়া বাকি অংশে কী কী রয়েছে? (দরকারে শিক্ষক/শিক্ষিকা তোমায় চিনিয়ে নেবেন।)

ছোটো গাছটার নাম লেখো।

বীজের ভেতরে ছোটো গাছটা ছাড়া বাকি অংশে কী কী রয়েছে?

এটা কাজ কী?

তারপরে ওটাকে কাগজের ওপরে রাখো, আর পাশের ছকে তার একটা ছবি এঁকে চিহ্নিত করো।

এবার এটা কেমন দেখতেছে।

কথা লেখো।

এবার দেখি বীজটার গঠন সম্পর্কে কী কী জানলাম?

Complete maize seed Longitudinally cut maize seed Endosperm

সম্পূর্ণ ভুট্টাবীজ লম্বালম্বি কাটা ভুট্টাবীজ অন্তঃবীজ

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

প্রথমে বাইরের আবরণী:

সংযুক্ত ফলত্বক ও বীজত্বক
(ক) এর নাম কী?(United pericarp and seed coat)
(খ) এর রং কী?
(গ) এর কটা স্তর?দুটো
(ঘ) স্তরগুলোর নাম কী কী?ফলত্বক ও বীজত্বক
(ঙ) এর কাজ কী হতে পারে?

তারপর ভেতরের অংশ :

শাঁস বা অঙ্কুরবীজ
(ক) এর নাম কী?শাঁস বা অঙ্কুরবীজ
(খ) এর রং কী?
(গ) এর আকৃতি কেমন?
(ঘ) একে চাপ দিলে কটা ভাগে ভাগ হয়ে যায়?দুটো ভাগে ভাগ হয়ে যায়। - শস্য ও ভ্রূণ
(ঙ) বীজের ভেতরে কোথায় ছোটো গাছটা রয়েছে?উপরে
(চ) গাছটির অংশগুলো কী কী?বীজপত্র ('স্কুটেলাম') ও ভ্রূণাক্ষ
(ছ) ছোটো গাছটার পাতা কটা?একটা
(জ) ছোটো গাছটার মূল কী দিয়ে ঢাকা?শুমুলবরণী বা কোলিওরাইজা
(ঝ) ছোটো গাছটার কাণ্ড কী দিয়ে ঢাকা?ভ্রূণমুকুলবরণী বা কোলিওপটাইল
(ঞ) গাছটার খাদ্য কোথায় রয়েছে?শস্য
(ট) ছোটো গাছটা আর তার খাদ্যের মাঝখানে কী রয়েছে?এপিথেলিয়াম স্তর

দেখো তো মটর বীজ আর ভুট্টা বীজ, দুটি বীজের মধ্যে কী কী মিল বা তফাত রয়েছে?

মটর বীজ ভুট্টা বীজ
বীজটার বাইরে কোনো আবরণ আছে কি?
বীজটার ভেতরে ছোটো চারাগাছ আছে কি?
বীজের ভেতরে ছোটো চারাগাছটার খাবার রয়েছে তো?
ছোটো চারাগাছটার দেহে কী কী অংশ রয়েছে?

পরিবেশের সজীব উপাদানের গঠনগত বৈচিত্র্য ও কার্যগত প্রক্রিয়া

দুটো বীজের সবটাই কি মিল, নাকি কিছু অমিলও আছে? দরকারে শিক্ষক/শিক্ষিকাকে জিজ্ঞাসা করে নাও।

বীজটার আবরণ কী কী গুণ দিয়ে তৈরি মটর বীজ ভুট্টা বীজ
আবরণের ভেতরে ছোটো চারাগাছটা ছাড়া আর কী অংশ রয়েছে?
ওই অংশটার কাজ কী?
ছোটো চারাগাছটার মূল কী দিয়ে ঢাকা?
ছোটো চারাগাছটার কাণ্ড কী দিয়ে ঢাকা?
ছোটো চারাগাছটার বীজপত্র কটা?
ছোটো চারাগাছটার খাদ্য কোথায় রয়েছে?

এবার তাহলে বীজপাক কত রকমের তা ঠিক করি। কটা বীজপত্র রয়েছে তা দেখে বীজের নাম দেব।

  • মটর বীজের বীজপত্র কটা?

    তাহলে মটর বীজটাকে কী বলব?

  • ভুট্টা বীজে কটা বীজপত্র রয়েছে?

    তাহলে ভুট্টা বীজটাকে কী বলব?

  • তোমার জানা মটর বীজের মতো আর কয়েকটি বীজের নাম লেখো।
  • ভুট্টা বীজের মতো আর কয়েকটি বীজের নাম লেখো।

পরাগ মিলন ও সমস্যা

নীচের প্রাণীগুলোর দিকে তাকাও। তুমি কি এদের কখন ফুলের উপর বসতে দেখেছ বা পরাগ ছুঁয়েছ?

Butterfly Bat Snail Ant Bee Bird

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

  • 1. ....................
  • 2. ....................
  • 3. ....................
  • 4. ....................
  • 5. ....................
  • 6. ....................

আগের পাতার প্রাণীগুলো ফুলকে সংগ্রহ করে? কী কাজে গাছগুলো ফুল সংগ্রহ করে?

তোমরা বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে/বিশ্ববিদ্যালয়ে বাগানে/বা অন্য কোনো পরিচিত বাগানে ও ওপরের প্রাণীগুলোর সঙ্গে কোন কোন ফুলের পরাগের সংযোগ ঘটতে পারে তার সারণি তৈরি করো।

প্রাণীর নাম ফুলের নাম
1. প্রজাপতি(a) উচ্ছে, কুমড়ো, ....................
2. বাদুড়(b) কদম, কাঁথল, কলা, ....................
3. শামুক(c) কচু, ওল, ....................
4. পিঁপড়ে(d) লিচু, ....................
5. মৌমাছি(e) রান্ন, সরষে, নিম, থাল,সি, ....................
6. পাখি(f) বিগোনিয়া, পলাশ, শিমুল, ....................

এই প্রাণীগুলো যে কাজ করতে পারে –

  • একটি ফুলের থেকে পরাগরেণু সেই গাছের অন্য ফুলের গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরিত করে।
  • একটি ফুলের থেকে পরাগরেণু ওই ধরনের অন্য গাছের ফুলের গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরিত করে।

কোনো ফুলের পরাগরেণু যখন ওই ফুল অথবা একই গাছের অন্য ফুলের গর্ভমুণ্ডে পড়ে বা স্থানান্তরিত হয় তখন ওই ঘটনাকে স্বপরাগযোগ (Self pollination) বলে।

  • কোনো ফুলের পরাগরেণু যখন একইরকম অন্য উদ্ভিদের ফুলের গর্ভমুণ্ডে পড়ে বা স্থানান্তরিত হয় তখন ওই ঘটনাকে ইতর পরাগযোগ (Cross pollination) বলে।
Pollination diagram

① স্বপরাগযোগ

② স্বপরাগযোগ

③ ইতরপরাগযোগ

উপরের ছবিগুলো দেখো। এবার বলো –

  • 1. কোন গাছের ফুলে একই সঙ্গে পুংকেশর ও গর্ভকেশর থাকে?

পরিবেশের সজীব উপাদানের গঠনগত বৈচিত্র্য ও কার্যগত প্রক্রিয়া

2. কোন গাছের ফুলে পুংকেশর ও গর্ভকেশর আলাদা ফুলে থাকে?

উপরের গাছ দুটির মধ্যে কোনটিতে স্বপরাগযোগ অথবা ইতরপরাগযোগ ঘটে তার নাম লেখো।

  • a) স্বপরাগযোগ হয় যে ফুলে ....................
  • b) ইতরপরাগযোগ হয় যে ফুলে ....................

শিয়ালকাঁটা, শিমুল, সোপটি, অপরাজিতা, সূর্যমুখী, চাঁপা, সন্ধ্যামালতী, আকন্দ, পদ্ম, কুনম, কুমড়ো, জুই, সরষে ও মুসাডা- এই ফুলগুলোর মধ্যে কোনগুলোতে স্বপরাগযোগ বা ইতরপরাগযোগ ঘটে তা নিজেরা আলোচনা করে বা শিক্ষক / শিক্ষিকার সাহায্যে নির্দিষ্ট সারণিভুক্ত করো।

স্বপরাগী ফুল ইতরপরাগী ফুল
শিয়ালকাঁটা, সোপটি ........চাঁপা, ........ আকন্দ, জুই, ........ মুসাডা, সন্ধ্যামালতী, ........
........

পরাগ মিলন সমস্যা

পোকামারার ঔষধ ব্যবহার গাছপালা ধ্বংস পরিবেশের উষ্ণতা বৃদ্ধি পরিবেশের উষ্ণতা হ্রাস

ওপরের ঘটনাগুলো থেকে পরাগযোগের সমস্যা সম্পর্কে জানো।

  • 1. বেশি পোকামাকড়ের ঔষধ ব্যবহারের ফলে মৌমাছি মতো পতঙ্গদের অভাবে পরাগযোগ ব্যাহত হচ্ছে।
  • 2. উষ্ণতার তারতম্যের জন্য ফুল ফোটার সময় পরিবর্তিত হচ্ছে। এর জন্যও পরাগযোগ ব্যাহত হচ্ছে।
  • 3. শিমুল জাতীয় গাছে ফল না হওয়ার ফলে বাদুড়ের মতো পরাগযোগের বাহকের বাসস্থান নষ্ট হচ্ছে। এজন্য পরাগযোগ ব্যাহত হতে পারে।

তোমার অঞ্চলে কোন কোন গাছের কোন কোন সমস্যা হয়েছে তার একটি তালিকা তৈরি করো। প্রয়োজনে স্থানীয় কৃষককের বা আনাজ ব্যবসায়ীদের সাহায্য নাও।

  • 1. পটল
  • 2. ....................
  • 3. ....................
  • 4. ....................

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

ব্যাপন

হাতেকলমে পরীক্ষা করে দেখো:

  • 1. একটা বড়ো ঘরের এক কোণে ধূপ জ্বালালোর পর পরই ধূপের কাছাকাছি জায়গায় যতটা সুগন্ধ পাওয়া যায় ঘরের দূরের কোণে কী ততটুকু গন্ধ পাওয়া যায়? তোমরা দেখেছ তা যায় না। ধূপ জ্বালালোর পর থেকে ঘরে সারা ঘরে তার সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়তে একটু সময় লাগে, অন্তত কয়েক সেকেন্ড। ধূপ জ্বালিয়ে পরীক্ষা করে দেখো। ঘরের জানালা-দরজা বন্ধ রাখো, পাখা চালিও না।
  • 2. একটা কাচের গ্লাসে জল নাও। জলের মধ্যে সাবধানে কয়েকটি লাল বা নীল কালির ফোঁটা ফেলো এবং তাকে তাকিয়ে দেখো। দেখতে পাচ্ছ ধীরে ধীরে জলের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। কালির ফেঁটা ফেলার পর রংটা সব জায়গায় সমানভাবে ছড়িয়ে পড়তে কতক্ষণ লাগছে? অল্পক্ষণ? অল্পক্ষণ? এক ঘন্টারও বেশি? (এই পরীক্ষা সব সময় গ্রাজুয়েট ন্যানো/গ্যাস ফ্লু চেম্বার/চটচটালে গ্যাস ব্যবহার করা হবে)।

যে দুটো পরীক্ষা করলে তাতে এই হাইরন্ম সুগন্ধি ছড়িয়ে পড়া আর দ্রবণে কালির রং ছড়িয়ে পড়ার মধ্যে একই মিল আর একটা অমিল নিশ্চয়ই তোমার চোখে পড়েছে। সেগুলো কী?

মিল: গন্ধ বা রং গাঢ় অংশ থেকে কম গাঢ় অংশে ছড়িয়ে পড়েছে। অমিল: গ্যাসের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারটা ঘটছে খুব তাড়াতাড়ি। দ্রবণে ঘটছে ধীর গতিতে।

অণুত্বের অতিক্রান্ত গতির জন্য গ্যাসীয় অবস্থায় বা দ্রবণে এই গণি গাছের থেকে কম গণি গাছের অণু পদার্থ অণুত্বের ছড়িয়ে পড়ার ঘটনাকে বলা হয় ব্যাপন বা ডিফিউশন (Diffusion)। উপরের উদাহরণে সুগন্ধি বা কালির রং হলো সেইসব পদার্থের অণুত্বের ব্যাপন ঘটছে।

বিজ্ঞানীরা পরীক্ষায় দেখেছেন যে:

  • একই উষ্ণতায় গ্যাসীয় অবস্থায় চেয়ে দ্রবণে ব্যাপন ঘটে ধীর।
  • একই উষ্ণতায়, একই মাধ্যমে হাল্কা অণুত্বের চেয়ে ভারী অণুত্বের ব্যাপন ঘটে ধীর।
  • তাপমাত্রা বাড়লে ব্যাপন ঘটে তাড়াতাড়ি।

ব্যাপনের আক্ষরিক ছবি :

পদার্থের বিভিন্ন ভৌত অবস্থা হলো কঠিন, তরল আর গ্যাস। এইসব অবস্থায় যে অণুরা থাকে সেকথা আমরা একটু একটু জেনেছি। পরীক্ষা করে ব্যাপনের কিছু বৈশিষ্ট্যও আমরা লক্ষ্য করেছি। এই দুটোকে মিলিয়ে এবার আমরা জানতে চাই ব্যাপনের আক্ষরিক 'ছবি'টা কীরকম। একটা বড়ো গ্লাসের পাতার ছবিগুলোতে দেখি: এখানে জলের মধ্যে গাঢ় চিনির দ্রবণ মেশাবার পর থেকে কীভাবে চিনির অণুরা জলের মধ্যে দিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে সেটা দেখানো হয়েছে। বোঝার সুবিধার জন্য দ্রবণের অংশটাকে তিনটে সমানভাগে ভাগ করা হয়েছে।

Water and sugar molecules 1 Water and sugar molecules 2 Water and sugar molecules 3

ব্যাপন সরে শুধু হচ্ছে : বামদিকে চিনির অণুর সংখ্যা ডানদিকের চেয়ে অনেক বেশি।

কিছুক্ষণ পর : ব্যাপনের ফলে চিনির অণুরা দ্রবণের মধ্যে কিছু দূর ছড়িয়ে পড়েছে।

অনেকক্ষণ ব্যাপনের পর : চিনির অণুরা দ্রবণের মধ্যে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।

দৈনন্দিন জীবনে এরপর অণুপ্রতের অণু ছড়িয়ে পড়ার উদাহরণ হয়:

  • পেঁয়াজ কাটার সময় চোখ জ্বলে।
  • ছোটো ছোটো মাছেরা ডিম ছিঁড়ে ফেলে।
  • ফুল ফুটলে মৌমাছি উড়ে আসে।
  • ফল পচাতে বাদুড়রা ফল পেটে যায়।

প্রত্যেক ক্ষেত্রে উদ্ভিজ্জ পদার্থ উদ্বায়ী (যা সহজে বাষ্পীভূত হয়, volatile) যৌগগুলো বাষ্পীভূত হয়। এইসব মৌলের অণুরা বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। এই অণুরা খুব কম পরিমাণে থাকলেও প্রাণীদের ঘ্রাণেন্দ্রিয়ের নিয়ে কিছু প্রোটিনের সঙ্গে যুক্ত হয়। এর ফলে এগিয়ে গয়টের অনুভূতি হয়। বাতাসে বহুল মৌলের অণুগুলো আরো খুব ছড়িয়ে পড়তে থাকে। বিভিন্ন প্রাণীর ঘ্রাণেন্দ্রিয়ের সুস্থতা বিভিন্ন রকমের হয়।

তোমরা নিশ্চয়ই লক্ষ করেছ যে ফল কাটলে একরকম ছোটো ছোটো মাছিরা উড়ে আসে। আবার মানুষের মাঝে কামড়ালে যে আনোমিলিস মক্ষীরা আসে তারা ফল কাটলে উড়ে আসে না। কেন এরকম হয় জানো?

ফল কাটলে যেসব ছোটো ছোটো মাছি উড়ে আসে তারা হলো ড্রসোফিলা। আবার আনোমিলিস মক্ষী হলো ম্যাক্রোফাইটরা। এদের 'গন্ধ দ্বারা' প্রোটিনগুলো দ্রুত আসে — ফলের মিষ্টি গন্ধের জন্য যেসব উদ্বায়ী যৌগ দায়ী তাদের আনোমিলিস চিনতে পারে না, ড্রসোফিলা মাছিরা পারে। আবার, মানুষের গায়ে কামড়ালে যেসব উদ্বায়ী যৌগ থাকে সেগুলোকে আনোমিলিস মক্ষী চিনতে পারে। তাই সববেলায় তারা রক্তপান থেকে এই ধরনের উৎসের দিকে আসে।

  • সাপ কেন প্রায়ই জিভ বার করে জানো?

বিভিন্ন প্রাণীর দেহ থেকে নানান উদ্বায়ী মৌলের অণু বাতাসের মধ্যে দিয়ে ছড়িয়ে পড়ে। সাপের জিভে যেসব মৌলরা আটকে যায়। তারপর সাপ মুখের মধ্যে জিভটা নিয়ে উপরের তালুতে ঠেলায়। সেখানে থাকে একটি বিশেষ অঙ্গ। তাকে বলা হয় জেকবসন অর্গান (Jacobson Organ)। সাপ যখন জিভটা দেখায় তখন সেই গন্ধের অণুগুলো মস্তিষ্কে উদ্দীপনা সৃষ্টি করে। সেই থেকে সাপ চারপাশের পরিবেশ সম্পর্কে জানতে পারে।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

  • ফেরোমোন (Pheromone)

জীবজগতে পোকামাকড়, হাতি, বাদুড় নানা প্রজাতির ও মাংসাশী প্রাণীদের বিভিন্ন ধরনের উদ্বায়ী রাসায়নিক পদার্থ (ফেরোমোন) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। পরীক্ষায় দেখা গেছে যে কিছু প্রজাতির পুরুষ মথেরা স্ত্রী মথের যৌন নিসঃসৃত ফেরোমোনএর গন্ধ থেকে কিলোমিটার দূর থেকেও উড়ে এসে হাজির হয়। এত সম সংখ্যক অণু থাকলেও পুরুষ মথ এত দূর থেকে ফেরো থেকে চিনে পারে যে তা আমাদের কাছে অভাবনীয়।

এবার ভেবে বলো তো:

  • খোলা হওয়ায় বিষাক্ত অণুগুলা তরল বা কঠিনের চেয়ে বিষাক্ত উদ্বায়ী তরল বেশি বিপজ্জনক কেন?
  • অন্ধকার করা ছোটোখাটো প্রাণীগুলো গ্যাস বাষ্পের মাধ্যমে সংবরণ করে কেন?
  • ফঙ্গুর জীবাণু মানুষের দেহে নানা অঙ্গ (ফুসফুস, হৃদ, বৃক্ক, বৃক্ষ) বাসা বাঁধে। বরো, যখন যন্ত্রাংশী আছে একজন কেস জীবাণু বাসা বেধেছে মানুষ পাটের হাতের মধ্যে, আনান্য ফুসফুসে। কোন রোগীর দেহ থেকে যক্ষ্মা ছড়াবার সম্ভাবনা বেশি? (ইঙ্গিত: ফুসফুসে যক্ষ্মা হলে কাশি হয়)।

দৈনন্দিন জীবন ভাবনা :

  • বাড়িতে গ্যাস লিক করলে দরজা জানালা খুলে দিয়ে হাওয়া চালাবে কেন? কোনো আগুন জ্বালাতে নেই। সুইচও জ্বালালো-নেভালো চলবে না। অবাঞ্ছিত ফলের গ্যাসের অণুগুলা এখন ঘরের মধ্যে বেশি ছড়িয়ে পড়েছে। সামান্য জ্বালালে গ্যাস আগুন থেকে মেতে পারে এবং বিস্ফোরণও ঘটাতে পারে।
  • বালবটা সুপরিবাহী টর্চ ব্যবহার করে। গ্যাস (হাইড্রোলাইজেন সালফাইড, H2S) জমে থাকে। তাই সেখানে নামলে প্রাঙ্গণের সঙ্গে বিষাক্ত গ্যাস ফুসফুস থেকে এক্ষেত্রে সুস্থতা ঘটায়। বালবতা রাখলে কিছুটা গ্যাস বেড়িয়ে আসে। আর এই কারণে H2S গ্যাসের উষ্ণতা চেয়ে তাপে গ্যাস অণুগুলো ছড়িয়ে পড়টাটট অল্পক্ষণও ধীর।

হাতেকলমে নীচের পরীক্ষাগুলো করে দেখো:

  • (i) দুটো একই রকম গ্লাসে একই পরিমাণ জল নিয়ে একটি কালি ফেলে দাও। এবার একটাকে চামচ দিয়ে নাড়ো, অন্যটা স্থির থাকুক। কোনক্ষেত্রে কালি জলের মধ্যে দ্রুত ব্যাপন ঘটে তাড়াতাড়ি?
  • (ii) ধূপ জ্বালিয়ে ঘরের পাখা চালাও কিংবা ঘরের জানালা-দরজা খুলে দাও। দেখো গন্ধ ছড়িয়ে পড়াতে পাখা না-চালানোর ব্যবস্থার চেয়ে কম সময় লাগল কিনা।
  • (iii) দুটো একই রকম গ্লাসে সমান পরিমাণ জল নিয়ে হবে। একটা সাধারণ উষ্ণতার জল, আরেকটা বেশ গরম জল। এবার দুটোতে এক ফেঁটা কালি ফেলে লক্ষ্য করো কোনটায় কালি তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়ে।

নীচের ছকে তোমার পরীক্ষার ফলাফল লেখো:

প্রথমবারের পরীক্ষা দ্বিতীয়বারের পরীক্ষা কখন কম আর কখন বেশি সময় লাগল
কালি না কালিয়ে ধূপ জ্বালানো হলোধূপ জ্বালিয়ে পাখা চালানো হলো
ঠাণ্ডা জলে কালির ফোঁটা ফেলা হলোগরম জলে কালির ফোঁটা ফেলা হলো

পরিবেশের সজীব উপাদানের গঠনগত বৈচিত্র্য ও কার্যগত প্রক্রিয়া

অভিস্রবণ

পটাটো চিপস কী করে তৈরি করে জানো? আলু থেকে পাওঁলা, গোল চাকতি করে কেটে নুন মাখিয়ে জিগিয়ে রাখা হয় দু-তিন ঘন্টা। এতে কী কী হয় বলো তো? নুন জলে আলুর টুকরোগুলো থেকে জল বেরিয়ে যেতে থাকে।

Potato chips 1 Potato chips 2

তোমার মা কিছু কিশমিশ ভিজিয়ে রেখেছিলেন। ঘন্টাখানেক পর তুমি দেখলে কিশমিশগুলো জল শুষে ফুলে উঠেছে:

Raisins 1 Raisins 2

উপরের ঘটনা দুটো পরস্পরের ঠিক উল্টো: প্রথম ক্ষেত্রে বাইরে নুনের গাঢ়ত্ব বেশি ছিল তাই আলু থেকে জল বেরিয়ে গেছে। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে কিশমিশের মধ্যের প্রবণতা গাঢ় ছিল তাই জলে ডোবানো কিশমিশ জল শুষে নিয়েছে।

Potato chips 3 Raisins 3

দুটো ক্ষেত্রেই কোষের পর্দা দিয়ে জল ঢুকছে বা বেরোচ্ছে। গ্যাস বা তরলের মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন মৌলের অণুুর ব্যাপনের কথা আমরা আগেই জেনেছি। এখানে জীবন্ত কোষের পর্দা দিয়ে ব্যাপন ঘটেছে। কোষপর্দাকে আমরা প্রাথমিকভাবে অর্ধভেদ্য বলতে পারি কারণ এরা দিয়ে জল অণুরা থেকে-আঁশতে পারেও সব অণু আর আয়নরা পারে না। কোনো কোনো অণু বা আয়ন চলাচল করতে পারে বলে একে বিভেদ মূলক পর্দাও বলা যেতে পারে।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

পদার্থের মাধ্যমে দ্রবণ দেহের অভ্যন্তরে যাওয়া-আসা ঘটলে তাকে অভিস্রবণ বা অসমোসিস (Osmosis)। জীবকোষ ছাড়া কী অন্য কোথাও অভিস্রবণ হয় না? নির্দিষ্ট পরিমাণের তো অভিস্রবণের জন্য কোষের প্রয়োজন নেই? কৃত্রিম অর্ধভেদ্য পর্দা সেলুলোজ অ্যাসিডিট দিয়ে তৈরি করা হয়। ফেঁটা, গ্যালন, বাদুড় ইত্যাদি চামড়া দিয়ে তৈরি পদার্থে প্রলেপ দেওয়া অর্ধভেদ্য পর্দা।

Osmosis apparatus

A B

এবার আমরা একটি দেখি। একটা দ-মুখ খোলা (U) আকৃতির নলের মাঝখানে একটা অর্ধভেদ্য প্রাচীর বা পর্দা লাগানো। বাঁদিকে 'A' অংশে আছে গাঢ় চিনির দ্রবণ, ডানদিকে 'B' অংশে আছে বিশুদ্ধ জল। অর্ধভেদ্য পর্দাটি এমনই যে জলের অণুরা পারদের চিনির অণুর মধ্যে দিয়ে যেতে পারে না। আদর্শ নুনজলে ভেজানো আলুর টুকরোটা কী হয় তা তোমরা জেনেছ। তা থেকে বলো: পর্দা কোন দিকটা থেকে কোনদিকে জল ঢুকতে শুরু করবে?

Sugar molecule

চিনি অণু

Water molecule

জল অণু

নীচের কোন কথাটা ঠিক?

  • 1. চিনির দ্রবণ অভিস্রবণ শুরু হবার কিছুক্ষণ পর চিনির পরিমাণ (যতো গ্রাম চিনির দেওয়া হয়েছিল) কমে, গাঢ় প্রবণতাটার জল ঢুকতে পাওঁলা হয়ে যাবে।
  • 2. চিনির দ্রবণ অভিস্রবণ শুরু হবার কিছুক্ষণ পর চিনির মোট পরিমাণ (যতো গ্রাম চিনির দেওয়া হয়েছিল) একই থাকবে, গাঢ় প্রবণতাটা জল ঢুকতে পাওঁলা হয়ে যাবে।

তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।

কী ধারণাও মিলানো?

যদি আমরা প্রোটিন দিয়ে চিনির দ্রবণটা (A নল) একটা পিস্টন দিয়ে বাইরে থেকে চাপ দিই তাহলে অভিস্রবণ থামানো যেতে পারে। যে গ্লাসকে (অন্তত শক্ত গটুক) চাপ দিলে গাঢ় দ্রবণের দিকে জলের অণু পড়া থামানো যায় তাকে বলে গাঢ় দ্রবণের অভিস্রবণ চাপ। চিনির দ্রবণে চিনির গাঢ়ত্ব যত বাড়তো এই অভিস্রবণ চাপও বাড়বে।

Osmotic pressure

কোষ তার জলীয় পরিবেশে অভিস্রবণ চাপের ভূমিকা কী কী?

  • অভিস্রবণ চাপ সমান এমন দুটো দ্রবণে যদি অর্ধভেদ্য পর্দা দিয়ে আলাদা করে রাখা হয় তাহলে সামগ্রিকভাবে কোনো পার্থক্য থাকবে না।
  • এর মানে জলের অণুরা কোনো দিকে বেশি পরিমাণে ঢুকতে থাকবে এমন কিছু ঘটবে না। এদেরকে সমায়তন দ্রবণ (isotonic; iso = সমান) বলা হয়।
  • যদি কোনো কোষের বাইরের দ্রবণের অভিস্রবণ চাপ কোষের ঘরের চাপের চেয়ে বেশি হয়ে থাকে? তাহলে বাইরের দ্রবণকে কোষের তুলনায় হাইপারটোনিক (hypertonic; hyper = বেশি) বলা হবে। এক্ষেত্রে কোষ থেকে জল বেরিয়ে যেতে থাকবে।
  • যদি কোষের মধ্যেকার দ্রবণের অভিস্রবণ চাপ বাহিরের চেয়ে বেশি হয়? তাহলে বাইরের দ্রবণটাকে কোষের তুলনায় হাইপোটোনিক (hypotonic; hypo = কম) বলা হবে। এক্ষেত্রে ক্রমশ বাইরে থেকে কোষের মধ্যে জল ঢুকতে থাকবে।

পরিবেশের সজীব উপাদানের গঠনগত বৈচিত্র্য ও কার্যগত প্রক্রিয়া

এবার নীচের সমস্যাগুলোর সঙ্গে পরিচিত হওয়া যাক:

  • লোহিত রক্তকণিকার সাথে অতিরিক্ত চিনির চাটর সংস্পর্শে থাকলে তা দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। সাবধান হতে হয়। আম্লিক বা ক্ষারীয় খাদ্য বা গোষ্ঠীর শিরাপথে যখন নুন-গ্লুকোজ মেশানো জল দেওয়া হয় তখন প্রকৃতি কী? [ভেবে দেখো: লোহিত রক্তকণিকার মধ্যের দ্রবণের সঙ্গে রক্ত কিরূপে হলো লোহিতকণিকা ফেঁটে বা কুঁকড়ে যাবে না?]
  • হাইপারটোনিক/হাইপোটোনিক/আইসোটোনিক
  • যখন কলা-আঙুর লোহিত শিরার গাঁয় নুন জল দেওয়া হয় তাহলে রক্তকণিকার কী হবে বলো? তুমি কী মনে করো?

টুকরো কথা

গাঢ় নুনজল হলো লোহিত রক্তকণিকার সাপেক্ষে হাইপারটোনিক। এই দ্রবণ মেশালে রক্তের অভিস্রবণ চাপ অনেক বেড়ে যায়। তখন রক্তনালীর (জলাকার) বাইরে থেকে প্রচুর কোষরস টেনে নেয়। এর ফলে রক্তের আয়তন ও রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং বিপদজনক ঘটনা ঘটে।

জীবজগতে অভিস্রবণের গুরুত্ব

  • গাজর মুলারোমের মাধ্যমে মাটি থেকে জল শোষণ অভিস্রবণের সবচেয়ে বড়ো উদাহরণ। শোষিত জল জাইলেম নলগুলো দিয়ে কাণ্ড হয়ে পাতায় পৌঁছায়।
  • ব্যাকটেরিয়া কোষের কোষপ্রাচীর শক্তিশালী হলে কোষের ভিতরে ও বাইরে অভিস্রবণ চাপের পার্থক্য কোষ ফেঁটে যায়। ব্যাকটেরিয়াগুলি কিন্তু ব্যাকটেরিয়ানাশক ওষুধ দিয়ে রোগ চিকিৎসার পেনিসিলিন ও সেফালোস্পোরিন অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহৃত হয়। এই জাতীয় ওষুধের অপেরা ব্যাকটেরিয়ার কোষপ্রাচীর তৈরিতে বাধা দেয়। এর ফলে ব্যাকটেরিয়ার কোষপ্রাচীর শক্তিশালী হয় না। তখন ভিতরের অভিস্রবণ চাপে কোষপ্রাচীর ফেটে কোষপর্দা ফেঁটে যায়।

নীচের ঘটনাগুলোকে অভিস্রবণের ধারণা দিয়ে ব্যাখ্যা করতে পারো কী?

  • রসগোল্লার গাঢ় রস সহজে পচে না।
  • কাঁচা মাছ নুন মাখিয়ে রোদে রেখে দিলে পুঁচকি মাছ তৈরি করা হয়।
  • জর্দার ভিজে সীলর উপর শুয়ে মূল আছে। এরকম জল কি কিছু দিন ধরে কাঁচাতে পারে?
  • মানুষকে কোনো ব্যাকটেরিয়া সহজে নষ্ট করতে পারে না।

অঙ্কুরোদগম

তোমরা এর আগেই জেনেছ, যে মূলের বিভিন্ন অংশ থেকে চারাগাছের বিভিন্ন অংশ তৈরি হয়। একবার মনে করে লেখো:

  • চারাগাছের কাণ্ড তৈরি হয় ভূপৃষ্ঠের .................... অংশ থেকে।
  • চারাগাছের মূল তৈরি হয় ভূপৃষ্ঠের .................... অংশ থেকে।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

এবার কীভাবে বীজ থেকে চারাগাছ তৈরি হয় তা দেখি। তোমার দরকার হবে 5-6 টা শুকনো ছোলাবীজ, 5-6 টা ছোটো বোতলের ছিপি, পেন, 1 টা আলপিন। সম্মিলিত সময় লাগবে 5-6 দিন।

তুমি প্রথম দিন একটা ছিপিতে জল নিয়ে তাতে একটা ছোলাবীজ ভেজাও। তার পর সারাদিন একটা একটা করে ছিপিতে একটা একটা করে ছোলাবীজ ভেজাও। ৭দিন পরে সবগুলো ছোলাবীজের তুলনা করো।

প্রথমে এসো বাইরে থেকে দেখি:

1ম বীজ 2য় বীজ 3য় বীজ 4র্থ বীজ 5ম বীজ
বীজটা কঁচানো, বা ফোলা
বীজটা শক্ত, না নরম?
বীজটা থেকে কিছু বেরিয়েছে?

এবার বীজের খোসাটি আলপিন দিয়ে সাবধানে ছাড়াও। বীজপত্র দুটো সাবধানে আলাদা করো, যেন দুটো পুরোপুরি আলাদা হয়ে বেরিয়ে আসে। তারপর ভেতরেরটা লক্ষ্য করো।

1ম বীজ 2য় বীজ 3য় বীজ 4র্থ বীজ 5ম বীজ
উপমূলটার কী পরিবর্তন ঘটেছে?
ভ্রূণমুকুলটার কী পরিবর্তন ঘটেছে?
বীজপত্রে কোনো পরিবর্তন ঘটেছে কিনা?
যদি থাকেল, দেখা?

তাহলে এবার বলো–

উপমূল কী তৈরি হলো ....................।

ভ্রূণমুকুল থেকে কী তৈরি হলো ....................।

ছোলাবীজের বীজের কাজ? ....................।

একটি বীজ থেকে চারাগাছ তৈরি হবার এই প্রক্রিয়াটি নামই হলো অঙ্কুরোদগম (Germination)।

  • কুমড়ো, ঢেঁড়শ বীজের অঙ্কুরোদগমের সময় বীজপত্র বীজত্বক ফুঁটিয়ে মাটির ওপরে উঠে আসে। একে মৃদুভেদী অঙ্কুরোদগম (Epigeal Germination) বলে।
  • মটর, ছোলা বা আমের বীজের অঙ্কুরোদগমের সময় বীজপত্রকে আবরণ বীজপত্র কখনো মাটি ছেড়ে ওপরে উঠে আসে না। একে গুরুভেদী অঙ্কুরোদগম (Hypogeal Germination) বলে।

পরিবেশের সজীব উপাদানের গঠনগত বৈচিত্র্য ও কার্যগত প্রক্রিয়া

অঙ্কুরোদগমের শর্তসমূহ

তোমরা মুদির দোকানে দেখেছ বস্তা ভর্তি করে ছোলাবীজ থাকে, অঙ্কুর বেরোয় না। আবার চানা-মটরওয়ালাদের কাছে যে ছোলাবীজগুলো থাকে, তাতে অঙ্কুর বেরিয়া যায়। তাহলে বীজের অঙ্কুরোদগম হতে গেলে কী কী দরকার? এসো দেখি তাই।

তোমায় জোগাড় করতে হবে ছোটো শ-শ-বারো শুকনো ছোলাবীজ, তিনটে মাটির থুরি, খানিকটা বুরো মাটি, আর সাগবে জল। তোমার সময় লাগবে তিন-চার দিন।

প্রথমে থুরিতে শুকনো তিন-চারটা ছোলাবীজ আর বুরো মাটি পুড়তে দাও। একটা মাটির থুরিতে আরও তিন-চারটা ছোলাবীজ অল্প মাটি নিচে পুড়তে দাও; এই থুরিটা ভালো করে জল দিয়ে। তৃতীয় মাটির থুরিটায় বাকি তিন-চারটা ছোলাবীজ একইভাবে মাটি নিচে পুড়তে দাও;এই থুরিটায় জল বেশি করে জল দাও। এবার থুরিগুলো তিন দিন দিন রেখে দাও।

তিন দিন পরে সবকটি থুরি থেকে ছোলাবীজগুলোকে তুলে পরীক্ষা করো। কী দেখলে নীচের সারণিতে লেখো।

প্রথম থুরি বীজ দ্বিতীয় থুরি বীজ তৃতীয় থুরি বীজ
কটা বীজ অঙ্কুরিত হয়েছেমাটিতে জল দেওয়া হয়নিমাটিতে জল দেওয়া হয়েছেমাটিতে অনেক জল দেওয়া হয়েছে, বীজ মাটির অনেক নিচে ছিল
বীজের অঙ্কুর কতটা বড়ো হয়েছে

এসো ভালো করে বুঝে নিই:

  • কোন থুরির বীজ সবচেয়ে ভালো অঙ্কুরিত হয়েছে? ....................
  • কোন থুরির বীজ বাতাস পেয়েছে, ....................
  • কোন থুরির বীজ একটু কম অঙ্কুরিত হয়েছে? ....................
  • কোন থুরির বীজ বাতাস আর জল দুটোই পেয়েছে? ....................
  • কোন থুরির বীজ সবচেয়ে কম অঙ্কুরিত হয়েছে? ....................
  • কোন থুরির বীজ জল পেয়েছে, কিন্তু বাতাস পায়নি? ....................

উপরের সারণির দুটি দিক মিলিয়ে দেখো। এবার কেন এমন হয়েছে বলতে পারো?

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

  • যে থুরির বীজ সবচেয়ে ভালো অঙ্কুরিত হয়েছে, তা কী কী পেয়েছে? ....................
  • যে থুরির বীজ একটু কম অঙ্কুরিত হয়েছে, তা কী কী পেয়েছে, আর কী কী পায়নি?
  • যে থুরির বীজ সবচেয়ে কম অঙ্কুরিত হয়েছে, তা কী কী পেয়েছে, আর কী কী পায়নি?

করে দেখো: থার্মোকল দিয়ে ছোটো ঢাকনাওয়ালা বাক্স বানাও। একটা মাটির আন্ন নীচে বীজ পুতে জল দাও, তারপর ওই থুরিটা বাক্সটার ভেতরে রেখে লাগাও। তিন দিনকে মাঝের বাজার থেকে রোজ কিছু বরফ এবং ওই থুরিটার মাটিতে দাও। তারপর বীজটা বাক্সটার ঢাকনা তুলে দেখো, কেমন অঙ্কুর বেরিয়েছে।

কেন এমন হলো, তার কারণ বলতে পারো?

তাহলে অঙ্কুরোদগমের জন্য কোন কোন উপাদান বা শর্ত আবশ্যই প্রয়োজন?

  • 1. ....................
  • 2. ....................
  • 3. ....................

এইসব উপাদান অঙ্কুরোদগমের সময় কী ভূমিকা পালন করে?

একটু মনে করা যাক:

  • জল আমাদের খাদ্যবস্তুকে তরল করে, আর দেহের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যায়।
  • অক্সিজেন আগুন জ্বলতে সাহায্য করে, আর খাদ্যবস্তু থেকে শক্তি মুক্ত করতে সাহায্য করে।
  • তাপ আমাদের জৈবনিক কাজগুলি চলতে সাহায্য করে।

এই পরীক্ষাটা আবার করো।

  • (a) অন্য কোনো বীজ নিয়ে
  • (b) পচা পাতা যুক্ত মাটি নিয়ে
  • (c) গোবর সার দেওয়া মাটি নিয়ে

বলো তো:

  • চাষের সময়ে বীজের অঙ্কুর তাড়াতাড়ি বেরোতে গেলে কী করা যায়?
  • বীজ মাটির অনেক গভীরে পোঁতা উচিত কিনা?
  • বীজতলা বেশি শুকনো বা জল অনেকটা বেশি হলে কী হবে?

পরিবেশের সজীব উপাদানের গঠনগত বৈচিত্র্য ও কার্যগত প্রক্রিয়া

বীজের অঙ্কুরোদগমে ব্যাপন আর অভিস্রবণের ভূমিকা

বীজের অঙ্কুরোদগম ঘটতে গেলে ব্যাপন আর অভিস্রবণ দরকার হয় কেন?

এবার এসো, বীজের অঙ্কুরোদগমের সময়ে ব্যাপন আর অভিস্রবণ কেন দরকার হয় দেখি।

ব্যাপন আর অভিস্রবণ পদ্ধতিতে গিয়ে আমরা যা জেনেছি সেগুলো একটি করে দেখো। যে কথাগুলো সত্যি তাদের পাশে '✓' চিহ্ন আর যেগুলো ভুল তাদের পাশে 'x' চিহ্ন দাও।

  • 1. একই উষ্ণতায় তরলের চেয়ে গ্যাসীয় অবস্থায় ব্যাপন ঘটে ধীর।
  • 2. তাপমাত্রা কমলে ব্যাপন ঘটে তাড়াতাড়ি।
  • 3. ব্যাপনের সময় অণুরা বেশি গাঢ় অংশ থেকে কম গাঢ় অংশের দিকে ছড়িয়ে পড়ে।
  • 4. অভিস্রবণের সময় দ্রাবনের অণুরা অর্ধভেদ্য পর্দা পেরিয়ে যেতে-আসতে পারে না।
  • 5. জলে একটুকানি গাঢ় চিনির দ্রবণ দেওয়া হলো। যত সময় যাবে চিনির অণুর জলের মধ্যে দিয়ে ততটা ছড়িয়ে পড়বে। এর ফলে দ্রবণের বিভিন্ন অংশে চিনির পরিমাপের তফাত ক্রমশ কমে আসবে।
পাশের খোপে একটি মটর বীজের ভিতরের ছবি আঁকো, যেখানে বীজটির বীজপত্র দুটি মেলানো রয়েছে, আর ভ্রূণটি দেখা যাচ্ছে।
এবার ওই ছবিতে লেবেল করে দেখাও, বীজটার ভেতরে কোথায় সুগঠিত খাদ্য জমা করে রাখা আছে।
তারপর লেবেল করে দেখাও, বীজটার কোন অংশ বেড়ে উঠে অঙ্কুর হয়েছে।
তাহলে কোন পথে খাদ্য তার সঞ্চয়স্থান থেকে সুগঠিত বাড়ন্ত অংশে পৌঁছায় তা রেখা এঁকে বুঝিয়ে দাও।
পাশের খোপে একটি ভুট্টা বীজের ভিতরের ছবি আঁকো, যেখানে বীজটি কেটে রাখা হয়েছে, আর ভ্রূণটি দেখা যাচ্ছে।
এবার ওই ছবিতে লেবেল করে দেখাও, বীজটার ভেতরে কোথায় সুগঠিত খাদ্য জমা করে রাখা আছে।
তারপর লেবেল করে দেখাও, বীজটার কোন অংশ বেড়ে উঠে অঙ্কুর তৈরি করেছে।
তাহলে কোন পথে খাদ্য তার সঞ্চয়স্থান থেকে সুগঠিত বাড়ন্ত অংশে পৌঁছায় তা রেখা এঁকে বুঝিয়ে দাও।
বলো তো, ওই খাদ্য কোন প্রক্রিয়ায় সঞ্চয়স্থান থেকে বাড়ন্ত অংশে পৌঁছায়।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

এবার এসে ফিরে একবার মনে করে দেখি, বীজের অঙ্কুরোদগমের জন্য কোন কোন উপাদান প্রয়োজন (এগুলো তোমরা কিছু আগেই পড়েছ)।

  • 1. ....................
  • 2. ....................
  • 3. ....................

এদের মধ্যে কোন উপাদানটি গ্যাসীয় পদার্থ, আর কোনটি বা তরল পদার্থ?

গ্যাসীয় পদার্থ তরল পদার্থ

এদের সম্পর্কে আমরা কী কী জানি? এসো নীচের ছকে লিখি:

গ্যাসীয় উপাদান তরল উপাদান
অঙ্কুরোদগমে কী ভূমিকা পালন করে
কোথা থেকে বীজ পায়
কী প্রক্রিয়ায় বীজের দেহে প্রবেশ করে
কী প্রক্রিয়ায় বীজের দেহ ছাড়িয়ে পড়ে

তাহলে অঙ্কুরোদগমের সময়ে ব্যাপন আর অভিস্রবণ কী কী ভূমিকা পালন করে?

ব্যাপন অভিস্রবণ

পরিবেশে জীবের অভিস্রবণ, ব্যাপন ও অভিস্রবণের ভূমিকা

তোমার দেহের জলের ভান্ডার

দেখো তো এগুলো বলতে পারো কিনা:

  • বছরের কখন তোমার বারবার তেষ্টা পায়? আর কোন সময়ে তেষ্টা পায় খুব কম? ....................।
  • বছরের কোন সময়েই বা তোমার ঘাম খুব বেশি? আর কখন ঘাম হয় খুব কম? ....................।
  • ঘাম তো জলের মতো তরল। তাহলে ঘামের সঙ্গে দেহ থেকে কোন পদার্থ সবচেয়ে বেশি বেরিয়ে যায়? ....................।
  • এর ফলে দেহে জলের মোট পরিমাণ কমে যায় না বেড়ে যায়? ....................।
  • তাহলে আমাদের জানতে হবে, শরীরের জলের পরিমাণ ঠিক রাখতে হলে আমাদের কী করা দরকার?
  • প্রথমে দেখি, দেহের জলের পরিমাণ ঠিক রাখা দরকার কেন।
  • আমাদের দেহের জল কী কাজ করে? এসো দেখি।

পরিবেশের সজীব উপাদানের গঠনগত বৈচিত্র্য ও কার্যগত প্রক্রিয়া

তোমার খুব পেস্ট করলে শরীরে কীরকম অনুভূতি হয়?

কীরকম অনুভূতি হয় তার কারণ কী? (মনে রেখো, তোমার রক্তের প্রায় 90 শতাংশ জল, তোমার লালারসও তাই, আর তোমার দেহের কোষগুলোর মধ্যেও প্রায় 70 শতাংশ জল)
1.
2.
3.
4.

যখন খুব ঘাম হয়, ঘাম শুকোবার পর তোমার জামায় আর প্যান্টে কীরকম দাগ পড়ে? সেটা কীসের দাগ?

(দরকারে শিক্ষক/শিক্ষিকার কাছে জেনে নাও)। তাহলে ওই সময়ে তোমার দেহ থেকে ঘামের সঙ্গে কী কী বেরিয়ে যায়? ....................।

  • তাহলে দেখি, দেহে নুনের পরিমাণ ঠিক রাখা দরকার কেন।
  • আমাদের দেহে নুন কী কাজ করে? এসো দেখি।
  • অনেকক্ষণ টুথপেস্ট করে ফেললে তোমার শরীরে কীরকম অনুভূতি হয়?
কীরকম অনুভূতি হয় তার কারণ কী? (মনে রেখো, তোমার দেহে এক শতাংশের সামান্য নুন থাকে)।
1.
2.
3.
4.
  • ফুটবল খেলতে গিয়ে ফুটবল খেলোয়াড়ের মাঝে মাঝে কীসে টান ধরে?
  • তোমার কখনও এই রকম হয়েছে কী?
  • তাহলে, দেহে জল আর নুনের অভাব হলে আমরা তা পূরণ করি কী উপায়ে? ভেবে দেখো।
  • তোমার কুয়া গুলে বুঝতে হবে, যে তোমার দেহের জলের অভাব হয়েছে; তখন তুমি কী করো?
  • তুমি কি নুন ছাড়া ভাত খেতে ভালোবাসো? তাহলে সাধারণ নুনযুক্ত খাবার খেলে তোমার দেহে কী প্রভাব করে?

এবার তাহলে বলো, তোমার দেহে জল আর নুনের অভাব কী উপায়ে পূরণ হয়:

  • জলের অভাব পূরণ করতে কী কী: ..............................................................
  • নুনের অভাব পূরণ করতে কী কী: ..............................................................

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

  • কখনও পেট খারাপ হলে, তরল মল আর মূত্রের সঙ্গে অনেক জল দেহ থেকে বেরিয়ে যায়। তখন শরীরে কী কী ক্ষতি হয়?
  • ওই সময়ে কীভাবে ক্ষতির পূরণ করা সম্ভব?

তাহলে ওই রকমই এক গ্লাস জলে তিন চামচ চিনি আর এক বড়ো চিমটে নুন মিশিয়ে নাও। এবার এইমিশ্রণ তিন গ্লাস জল সারা দিন ধরে আস্তে আস্তে খেয়ে যাও। তাহলে তোমার দেহে জল আর নুনের অভাব পূরণ করা সম্ভব হবে। এইমিশ্রণ শরবতকে বলে ওরাল রিহাইড্রেশন সল্যুশন (Oral Rehydration Solution) বা ওআরএস (ORS) বলে।

  • আছা, খুব গরমে অনেকক্ষণ জল না খেয়ে থাকলে, আর খুব ঘামলে, দেহের কীসের অভাব হতে পারে?
  • আগে যেমনটি দেখেছ, দেহে জল আর নুনের খুব অভাব হলে, কী কী অবস্থা হয়?

তাহলে এই সমস্যা মানুষ অজানা হয়ে যেতে পারে। এক বলে নুন সলুক। তাহলে তখন কী করতে হবে? এই সুস্থ্য মানুষটিকে শুইয়ে দিয়ে, জামাকাপড় আলগা করে দিতে হবে। আর পর তাকে ঠান্ডা জল খাওয়াতে হবে ও ঠান্ডা জলে গা ধুইয়ে দিতে হবে।

তোমার দেহ যেমন, অন্যান্য জীবের দেহেরও জলের ভারসাম্য বজায় রাখা দরকার।

এসো গাছের ক্ষেত্রে ভারসাম্য কীভাবে বজায় থাকে দেখি।

বাড়িতে প্লাস্টিকের মুখ বন্ধ রাখা শাকসবজি আর ফুলের প্যাকেটের ভেতরে জলকণা জমে থাকতে দেখেছ তো? এই জলকণা কোথা থেকে আসে?

করে দেখো ও ছবি আঁকো :

তোমার লাগবে দুটো টেবের মধ্যে লাগানো ছোটো চারাগাছ, দুটো প্লাস্টিকের পাত্র, দু-টুকরো সুতো আর দুটো পলিথিন শিট।

একটা গাছওয়ালা টবে জল দেবে আর অন্যটায় জল দেবে না। টব দুটোকে পলিথিন শিট দিয়ে মুড়ে দাও। এবার দুটো প্লাস্টিকের পাত্রে আর সুতো দিয়ে দুটো গাছের পাতাগুলো টেবের উপর থেকে ফেলো।

একটা গাছে জল দাও, অন্যটায় দিও না। এবার গাছদুটোকে তিন-চার ঘন্টা রেখে দাও।

1. তারপর দেখো: প্যাকেটের ভেতরে কোন গাছের পাতা বেরিয়েছে?

2. এবার দু-দিন বাদে এই গাছদুটোকে আবার দেখো: দুটো গাছই কি সমান তাজা রয়েছে? না থাকলে গাছদুটির মধ্যে কী তফাত দেখা যাচ্ছে?

3. তফাত থাকলে তার কারণ কী?

তাহলে গাছ জল হারালেও জল কোথা থেকে আর কীভাবে ফিরে পায়?

জল দেওয়া গাছ : জল না-দেওয়া গাছ :

জল দেওয়া গাছ : জল না-দেওয়া গাছ :

জল দেওয়া গাছ : জল না-দেওয়া গাছ :

পরিবেশের সজীব উপাদানের গঠনগত বৈচিত্র্য ও কার্যগত প্রক্রিয়া

  • মূল থেকে জল পাওয়া যায়। মাছের কী কী দেখেছ?

তুমি কি কখনও পুকুর বা নদীর জল আর সমুদ্রের জল পান করেছ? পুকুর বা নদীর জল আর সমুদ্রের জলের মধ্যে স্বাদের কী ফারাক রয়েছে বলো?

এই পার্থক্যের কারণ কী?

তাহলে এই দুরকম জল থাকা মানুষের দেহেও কি একইরকম ভাবে জল রাখা হয়? এসো জানার চেষ্টা করি।

একটা করে নলী বা পুকুরের আর সমুদ্রের জলের নাম লেখো।

প্রথম দেখি, পুকুরের জল পুকুরের মাছ কেমন হয়, আর সমুদ্রের জল সমুদ্রের মাছের কী অবস্থা হয়। সেটা বুঝতে হলে নীচের পরীক্ষাটি করো।

করে দেখো :

তোমার লাগবে দু-সাতটা শুকনো কিশমিশ, দুটো ছোটো গ্লাস, আর চার-পাঁচটা নুন।

  • 1. গ্লাস দুটোয় জল নাও।

    একটা গ্লাসের জল ওই নুনটা পুতে ফেলো।

    অন্য গ্লাসের জল নুন দিও না।

  • 2. প্রথমে নুন না দেওয়া গ্লাসের চারটে শুকনো কিশমিশ ফেলে দাও; চারটে-পাঁচ ঘন্টা রেখে দাও।
  • 3. মনে করো বলো তো, কেন এমন পরিবর্তন হয়েছে?
  • 4. এবার ওই ভেজানো কিশমিশগুলো দুটোয় তুলে নিয়ে অন্য গ্লাসের জলের মধ্যে চার-পাঁচ ঘন্টা রাখো।
  • 5. এবার সাধারণ জলে ভেজানো কিশমিশগুলোর সঙ্গে তুলনা করে বলো তো, নুন জলে ভেজানো কিশমিশগুলোর কী পরিবর্তন হয়েছে?
  • 6. কেন আবার এমন পরিবর্তন হয়েছে বলো তো?
Raisin experiment 1 Raisin experiment 2

জেনে রেখো, পুকুরের বা নদীর মাছের দেহে যা নুন রয়েছে, পুকুর বা নদীর জলে নুন রয়েছে তার চেয়ে কম। তাহলে এইসব মাছের অবস্থা হয় সাধারণ জলে ভেজানো কিশমিশগুলোর মতো।

Freshwater fish
  • বলো তো, ওইসব মাছের দেহে জলের পরিমাণের কী পরিবর্তন হয়?
  • তাহলে, নিজেদের দেহের জলের পরিমাণ স্বাভাবিক রাখতে ওইসব মাছেরা কী করে? (তোমার শিক্ষক/শিক্ষিকা তোমায় সাহায্য করবেন)।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

আবার, সমুদ্রের মাছের দেহে লবণ রয়েছে, সমুদ্রের জল লবণ রয়েছে তার চেয়ে বেশি। তাহলে ওইসব মাছের অবস্থা হয় লবণ জলে ভেজানো কিশমিশগুলোর মতো।

  • এবার বলো তো, ওই সব সব জলের পরিমাণের কী পরিবর্তন হয়?
  • তাহলে, নিজেদের দেহের জলের পরিমাণ স্বাভাবিক রাখতে ওইসব মাছেরা কী কী করে? (তোমার শিক্ষক/শিক্ষিকা তোমায় সাহায্য করবেন)।

এবার তাহলে নীচের ছক থেকে কোন কোন রকমে কী কী ভাবে নিজের দেহের জলের পরিমাণ স্বাভাবিক রাখে তা নাও :

  • পুকুরের বা নদীর মাছ কী করে :
    • 1. লঘু মূত্র ত্যাগ করে; ফলে অতিরিক্ত জল বেরিয়ে যায়।
    • 2. ফুলকার মাধ্যমে জল থেকে অয়ন শোষণ করে।
  • সমুদ্রের মাছ কী করে :
    • 1. ঘন মূত্র ত্যাগ করে; ফলে খুব কম জল দেহ থেকে বেরিয়ে যায়।
    • 2. ফুলকার মাধ্যমে দেহের অতিরিক্ত অয়ন ত্যাগ করে।

শব্দভান্ডার :

এক্কেবারে জল খায় না; সারা দিনে অনেকটা মুখ দিয়ে মুখে খাওয়া যায়। সারা দিনে অনেকটা মুখ দিয়ে মুখে খাওয়া যায়। সারা দিনে অনেকটা মুখ দিয়ে মুখে খাওয়া যায়। অতিরিক্ত লবণ বার করে দেয়; দেহ থেকে অনেকটা লবণ বার করে দেয়; দেহ থেকে অনেকটা লবণ বার করে দেয়; দেহ থেকে অনেকটা লবণ বার করে দেয়; দেহ থেকে অনেকটা লবণ বার করে দেয়; দেহ থেকে অনেকটা লবণ বার করে দেয়; দেহ থেকে অনেকটা লবণ বার করে দেয়; দেহ থেকে অনেকটা লবণ বার করে দেয়; দেহ থেকে অনেকটা লবণ বার করে দেয়; দেহ থেকে অনেকটা লবণ বার করে দেয়; দেহ থেকে অনেকটা লবণ বার করে দেয়; দেহ থেকে অনেকটা লবণ বার করে দেয়; দেহ থেকে অনেকটা লবণ বার করে দেয়।

Freshwater fish

পাশে মিষ্টি জলের ও নোনা জলের একটি করে মাছের ছবি দেওয়া আছে। ওরা কীভাবে দেহে জল ও লবণের ভারসাম্য রক্ষা করে তা ও এদের শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। নিচে দেওয়া শব্দভান্ডারগুলো একাধিক ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারো।

Saltwater fish

নোনা জলের মাছ

অত্যন্ত অল্প মূত্র ত্যাগ করে

পরিবেশের সংকট, উদ্ভিদ ও পরিবেশের সংরক্ষণ

জলবায়ুর পরিবর্তন

Cyclone Landslide Flood Melting ice Drought City

উপরের ছবিগুলোতে কী কী ঘটছে বলো? এর কারণ কী হতে পারে তা লেখার চেষ্টা করো।

................................................................................

এসো জানার চেষ্টা করা যাক আবহাওয়া আর জলবায়ু শব্দ দুটোর অর্থ কী কী?

আবহাওয়া হচ্ছে এমন একটা বায়ুমণ্ডলী অবস্থা যেখানে রোদ, বায়ু, বৃষ্টি, জল দিনে দিনে, ঘন্টায় ঘন্টায় এমনকী মুহূর্তে মুহূর্তেও বদলায়। কাছাকাছি থাকা দুটি স্থানের আবহাওয়া বদলাতে দেখা যায়।

জলবায়ু হচ্ছে আবহাওয়ার দীর্ঘ সময়ের (বছরের) গড় অবস্থা। বিস্তীর্ণ অঞ্চলে নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট জলবায়ু দেখা যায়।

তাহলে এবারো বলো তো আবহাওয়া আর জলবায়ু-র মধ্যে পার্থক্য কী?

আবহাওয়া জলবায়ু

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

আবহাওয়া আর জলবায়ু কী কী বিষয়ের ওপর নির্ভর করে? লেখার চেষ্টা করো।

  • 1. ....................
  • 4. ....................
  • 2. ....................
  • 5. ....................
  • 3. ....................
  • 6. ....................

নীচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করো।

Mango bud Flock of birds Palash flower
  • 1. আম গাছে কখন মুকুল আসে? ....................।
  • 2. বাইরের দেশ থেকে পরিযায়ী পাখিরা কখন এদেশে আসে? ....................।
  • 3. ইলিশ মাছ কখন ডিম পাড়ে? ....................।
  • 4. পলাশ ফুল কখন ফোটে? ....................।
  • 5. এইরকম আরও কিছু প্রাকৃতিক ঘটনা কথা লেখো যেগুলো বছরের একটা নির্দিষ্ট সময়ে হয়।
    • a) ....................
    • c) ....................
    • b) ....................
    • d) ....................
  • 6. আমাদের দেহের কোন সময়ে বেশি গরম পড়ে? ....................।
  • 7. গরম, বর্ষা, শরৎ আর শীত ছাড়া আর অন্য কোনো ঋতুর কথা কি তোমরা জানো? ....................।
  • 8. বর্ষা কি বছরের নির্দিষ্ট সময়ে আসে? ....................।
  • 9. তোমার অঞ্চলে শীত ঋতুতে শীত স্থায়িত্ব কত দিনের? ....................।

প্রতিটি ঋতুর স্থায়িত্ব স্বাভাবিক সময়ের থেকে বেশি বা কম হলে কি কোনো সমস্যা দেখা দিতে পারে? নীচের সারণিতে লেখো:

ঋতুর নাম স্বাভাবিক স্থায়িত্ব সময়ের চেয়ে বেশি বা কম হলে কী সমস্যা হতে পারে
1. গ্রীষ্ম1.
2.2.
3.3.
4.4.

প্রকৃতির এই খামখেয়ালিকে – এক এক কথা আমরা জলবায়ুর পরিবর্তনের ফল ধরে নিতে পারি।

পরিবেশ সংকট, উদ্ভিদ ও পরিবেশের সংরক্ষণ

এসো এবার তোমাদের এলাকায় এই পরিবর্তন কেমন তা বোঝার চেষ্টা করি।

বাবা-মা বা এলাকার বয়স্কদের সঙ্গে আলোচনা করে নীচের কর্মপত্রটা ভর্তি করার চেষ্টা করো।

কর্মপত্র

তারিখ : ............................

  • 1. আপনার নাম কী? ............................
  • 2. আপনার বয়স কত? ............................
  • 3. আপনি যে অঞ্চলে থাকেন সে অঞ্চলের নাম ও আবহাওয়ার বৈশিষ্ট্য কী? ............................
  • 4. আপনার অঞ্চলে ছোটোবেলার জলবায়ুর সঙ্গে এখনকার জলবায়ুর (উষ্ণতা, বৃষ্টিপাত ইত্যাদি) কী কী পরিবর্তন লক্ষ্য করেছেন?
    • i) ............................
    • iii) ............................
    • ii) ............................
    • iv) ............................
  • 5. এখনকার জলবায়ুর সঙ্গে 20 বছর আগেকার জলবায়ুর কী কী পরিবর্তন লক্ষ্য করেছেন?
    • i) ............................
    • iii) ............................
    • ii) ............................
    • iv) ............................
  • 6. জলবায়ুর এই পরিবর্তনের পিছনে কী কী কারণ থাকতে পারে বলে আপনার মনে হয়?
    • i) ............................
    • iii) ............................
    • ii) ............................
    • iv) ............................
  • 7. জলবায়ুর এই পরিবর্তনের ফলে কোনো শারীরিক সমস্যা কথা কী আপনার জানা আছে?
    • i) ............................
    • iii) ............................
    • ii) ............................
    • iv) ............................
  • 8. জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে শারীরিক সমস্যা ছাড়াও আর কী কী সমস্যা আপনার এলাকায় হচ্ছে বলে আপনার মনে হয়?
    • i) ............................
    • iii) ............................
    • ii) ............................
    • iv) ............................
  • 9. জলবায়ুর পরিবর্তন যাতে ভয়াবহ আকার ধারণ না করে, সেই বিষয়ে করণীয় কী কী বলে আপনার মনে হয়?
    • i) ............................
    • iii) ............................
    • ii) ............................
    • iv) ............................

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

পৃথিবীর মোড়ক

Bus Factory Motorcycle
  • i) উপরের ছবিগুলো থেকে কী কী দেখতে পাচ্ছ? ............................।
  • ii) বিভিন্ন উৎস থেকে বেরোনো ধোঁয়ার মধ্যে থাকে নানারকমের গ্যাসীয় পদার্থ এবং বিভিন্ন ভাসমান কণা (Suspended particulate matter)। যেমন – কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO2), মিথেন (CH4), নাইট্রাস অক্সাইড (N2O), ক্লোরোফ্লুরোকার্বন, সালফার ডাইঅক্সাইড ইত্যাদি গ্যাস এবং ধুলো, কার্বন ইত্যাদির কণা। এই পদার্থগুলো বায়ুমণ্ডলে গিয়ে জমা হয় আর পৃথিবীকে একটা চাদরের মতো মুড়ে রাখে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে এই সমস্ত গ্যাসীয় পদার্থ ছাড়াও আছে ওজোন আর জলীয় বাষ্প।

পৃথিবীর ছেড়ে দেওয়া তাপশক্তি একটা অংশকে বায়ুমণ্ডলে ধরে রাখতে সাহায্য করে বিভিন্ন গ্যাসীয় পদার্থের এই চাদর। পৃথিবীতে প্রাণের স্পন্দন জাগিয়ে রাখার পেছনে এই গ্যাসীয় পদার্থগুলোর (CO2, CH4, জলীয় বাষ্প) ভূমিকা অনেকখানি। বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্প, কার্বন ডাইঅক্সাইড না থাকলে পৃথিবীর পৃষ্ঠের উষ্ণতা -18°C-এ নেমে যেত। তাহলে পৃথিবীতে প্রাণের বিকাশ ঘটত না। কিন্তু উদাহরনিক আলোর ব্যবহারের নানারকমের ফলে পরিবেশে এইসমস্ত গ্যাসীয় পদার্থের পরিমাণ বেড়ে যায়। তখন এইসব গ্যাসীয় পদার্থগুলোই প্রয়োজন অতিরিক্ত তাপকে পৃথিবীকে আটকে রাখে। ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যায়। এইটাই বিশ্ব উষ্ণায়ন (Global Warming)। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে বিশ্ব উষ্ণায়নের এক গভীর সম্পর্ক আছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব

নীচে জলবায়ুর পরিবর্তন সংক্রান্ত বিভিন্ন ঘটনাগুলো ভালো করে পড়ো।

পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি

  • কিছু গ্যাস পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে স্বাভাবিকভাবে থাকে। বিজ্ঞানীরা গবেষণার মাধ্যমে জেনেছেন যে গত কয়েক যুগ ধরে এই গ্যাসগুলো মাত্রায় অনেকটা বেড়ে গেছে।

পরিবেশ সংকট, উদ্ভিদ ও পরিবেশের সংরক্ষণ

  • মানুষের বিভিন্ন কাজের ফলে সৃষ্টি হওয়া গ্যাসগুলোর মধ্যে কার্বন ডাইঅক্সাইড অন্যতম। 1970 থেকে 2004 সালের মধ্যে পরিবেশে এই গ্যাস মেসোর বাইরে বাড়ছে। এই গ্যাস মেসোর বাইরে বাড়ছে।
  • বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের মাত্রা 2006 সাল থেকে এত মাত্রা বেড়েছে যা গত কয়েক লক্ষ বছরে আর কখনোই এতট বাড়েনি।
Arctic ice Polar bear
  • 2001 সালের গোড়া জানা যায়, গত 100 বছরে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বেড়েছে 1°C।
  • মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (NASA) জানিয়েছে, 2005 সাল ছিল গত এক শতাব্দীর মধ্যে উষ্ণতম বছর।
  • 1980-98 সালের মধ্যে ভারতে 18 টি তাপপ্রবাহের (Heat wave) ঘটনা রুকথ জানা গেছে। এর ফলে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
  • 2005 সালে রাজস্থানে বন্যা আর উষ্ণ-পূর্ব ভারও দ্বারা হয়। এননিতে রাজস্থান খুব শুকনো। কম বৃষ্টিপাতের অঞ্চল। আর উষ্ণ-পূর্ব ভারও বেশি বৃষ্টিপাত অঞ্চল।
  • 2007 সালে 4 বার মরুভূমি নিরূপণ হয়, যা স্বাভাবিকের থেকে বিগুণ। এর ফলে বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালে ভয়াবহ বন্যা হয়। প্রচুর মানুষের জীবন আর জীবিকা নষ্ট হয়।
  • একইভাবে প্রায় এক পকেটেও বেশি মানুষ ঘরবাড়ি হারাও।
Climate change example
  • গত 5 হাজার বছর ধরে যে মাস থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত পৃথিবীর অঞ্চলের ভূ-পৃষ্ঠের উষ্ণতা থাকত প্রায় 12 ফুট। অথচ 2007-এ জুন মাসে মোট উষ্ণতা 4-5 ফুট উষ্ণতর হয়েছে।
  • উত্তরাখণ্ডে 2013 সালের মেঘভাঙা বৃষ্টি থেকে বিধ্বংসী বন্যা হয়েছে। বহু মানুষ মারা গেছে। বড়ো মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। বাড়ির আর অন্যান্যা সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে।

হিমবাহের বরফের গলন ও নদীর জলস্তরের উচ্চতা বৃদ্ধি

হিমবাহে বরফের জমাটিরা নদী নোনাবে খুব একটা ভুল বলা হবে না। কারণ পৃথিবীর মিউজিকের বৃহৎতম ভান্ডার হলো এই হিমবাহগুলো। এই হিমবাহগুলোয় বরফ গলা জল পুষ্ট হয় বিভিন্ন নদনদী। পৃথিবীর প্রায় 99% হিমবাহের অবস্থান উত্তর আর দক্ষিণ মেরুতে। হিমালয় পর্বতমালাতেও আছে অনেকগুলো হিমবাহ।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

এর মধ্যে অন্যতম হলো গঙ্গা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র প্রভৃতি নদীর উৎস হলো হিমালয়ের বিভিন্ন হিমবাহ। হিমবাহের বরফ গলা জলই এদের প্রধান পুষ্টি। হিমালয়ের এশিয়ার বড়ো বড়ো নদীকে পুষ্ট করে। এর ফলে প্রায় 120 কোটি লোকের বসবাস হয়।

Gangotri Glacier Yamunotri Glacier Zemu Glacier

বৃষ্টিপাত, বায়ুর প্রকৃতি আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদানের পরিবর্তন পৃথিবীর হিমবাহগুলোর ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। পৃথিবীর গড় উষ্ণতা বেড়ে গেলে হিমবাহগুলোয় বরফ বেশি মাত্রায় গলতে আরম্ভ করবে।

  • গঙ্গা নদীর উৎসের গঙ্গোত্রী হিমবাহ প্রতি বছর একটু একটু করে ছোটো হয়ে আসছে।
  • উত্তর মেরুতে সমুদ্রের বরফ স্তর রয়েছে, তা গত 30 বছরে 40% কমে গিয়ে পাতলা হয়ে গেছে।

হিমবাহগুলো গলে যাওয়ায় ফলে সমুদ্রের জলতল বেড়ে যেতে পারে।

  • 1993 থেকে 2005 সালের মধ্যে সমুদ্রের জলতল প্রতি বছর গড়ে বেড়েছে 3 মিলি (0.1 ইঞ্চি)।
  • পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের হিমবাহগুলো গলে যাওয়ায় প্রধান পুকুরে সমুদ্রের জলতলের ওপর। এর বিষাদে একটি গবেষণা বলছে যে 2100 সালের মধ্যে সমুদ্রের জলতলের উচ্চতা প্রায় 70 সেমি বেড়ে যেতে পারে।

সমুদ্রের জলতল বেড়ে গেলে উপকূল অঞ্চলে বন্যার সম্ভাবনা দেখা দেবে। উপকূল অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের মুখে পড়বে। আঠাশান ও আর্থিক অর্থনীতি ও সংলগ্ন দেখা দেবে। সমুদ্রের জলতল বৃদ্ধি পাওয়াল ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে সারা পৃথিবীতে সমুদ্রের উপকূলের বাস করা অসংখ্য মানুষ।

  • ভারত ও বাংলাদেশের অন্তর্গত সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ অঞ্চলও আজ এই বিপদের সম্মুখীন। পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি বাঘের আবাস এই সুন্দরবন। আর এই অঞ্চলে বাস করে প্রায় চল্লিশ লক্ষ মানুষ। এদের সকলেরই অস্তিত্ব আজ সংকটের মুখে।

উষ্ণায়নের ফলে হিমবাহ গলে গেলে গলে হিমবাহের জল পৃষ্ঠ নদ-নদীর জল থেকে বেরিয়ে যায়। প্রথম বন্যা আর পরে খরা থেকে পারে। প্রথম বন্যা আর পরে খরা থেকে পারে। তীব্র জলসঙ্কট।

হিমবাহ প্রায় 80 শতাংশ সূর্য রশ্মি প্রতিফলিত করে আর প্রায় 20 শতাংশ শোষণ করে। হিমবাহ সম্পূর্ণ গলে গেলে এই 80 শতাংশ সূর্য রশ্মি শোষণ করা যায়। পৃথিবীর উষ্ণতাও আরো বাড়িয়ে দেবে।

পরিবেশ সংকট, উদ্ভিদ ও পরিবেশের সংরক্ষণ

প্রবাল দ্বীপ - প্রবাল প্রাণীর ক্ষমতা

প্রবাল বা কোরাল হলো একরকমের সামুদ্রিক অমেরুদণ্ডী প্রাণী। এরা নিদারুনভাবে পর্বত ও পাথরের মতো কলোনি তৈরি করে বাস করে। প্রবালরা নিজেদের দেহের বাইরে ক্যালসিয়াম কার্বনেট-এর একটা বহিঃকঙ্কাল তৈরি করে।

Coral reef

এই বহিঃকঙ্কাল কিসের থেকে রক্ষা করে। মুখ প্রবালের গয়না হিসেবে সুন্দর মতো হয়। মেইন মেইন ও গয়না হিসেবে কিসিরক পরিচিত।

একসঙ্গে বাস করা অনেক প্রবালের দেহের বাইরে ক্যালসিয়াম কার্বনেট বহিঃকঙ্কাল একটা শক্ত প্রাচীরএর মতো গঠন তৈরি করে। এটাই প্রবাল প্রাচীর।

পৃথিবীর সমুদ্রতলের মাত্র 0.1% দখল করে থাকা প্রবাল প্রাচীর প্রায় 25% সামুদ্রিক প্রজাতির আশ্রয়স্থল। মাছ, মৌমাছি, ইনকোহলোরামিটা, পশু, প্রোটেশিয়া, ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের প্রাণী প্রবাল প্রাচীরে বাস করে। জীববৈচিত্র্যের নিরিখে প্রবাল প্রাচীরের গুরুত্ব অপরিসীম।

সমুদ্রের উষ্ণতাও সামান্য তারতম্য প্রবাল প্রাচীরের স্থায়িত্বের ওপর গভীর প্রভাব বিস্তার করে।

আর প্রবাল দ্বীপ কি জানো? খুব প্রবাল আর অন্যান্য শৈব সাহায্য করে প্রবাল দ্বীপ তৈরি হয়। প্রবাল শৈব সাহায্য করে প্রবাল দ্বীপ তৈরি হয়। প্রবাল শৈব সাহায্য করে প্রবাল দ্বীপ তৈরি হয়। প্রবাল শৈব সাহায্য করে প্রবাল দ্বীপ তৈরি হয়।

উপ-ক্রান্তীয় অঞ্চলে সাধারণত প্রবাল দ্বীপ দেখা যায়। প্রবাল দ্বীপগুলো সম্পূর্ণ থেকে কয়েক মিটার উঁচু হয়ে থাকে। উপকূলীয় নারকেল গাছের সারি আর সাদা বালির দিয়ে ঘেরা থাকে সমুদ্রের প্রবাল দ্বীপ।

  • বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে পৃথিবীর প্রবাল দ্বীপ ও প্রবাল প্রাচীরগুলো বিপন্ন হয়ে পড়েছে। 1988 সাল পৃথিবীর প্রায় 16% সম্পদ ধ্বংস হয়ে গেছে।
  • অসুস্থতা ফলে আরও মহাকাশে জলের উষ্ণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অঞ্চলগুলো প্রবাল প্রাচীরগুলো ধ্বংস হচ্ছে। অনেক ধরনের উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে প্রবাল প্রাচীরগুলো বিলুপ্ত হয়েছে।
  • ঠান্ডা রক্তের প্রাণীরা রোদ পোহায়।

তোমরা তো খবরের কাগজ বা ম্যাগাজিন পড়েছো। দেখো বিশ্ব উষ্ণায়ন আর জলবায়ুর পরিবর্তন সংক্রান্ত কী কী খবর পাও। এই বিষয়ে তোমরা যা যা পড়লে নীচের সারণিতে ছোটো করে লেখো।

বিষয় খবর
(i) হিমবাহের গলন
(ii) সমুদ্রের জলস্তরের উষ্ণতা বৃদ্ধি
(iii) জীববৈচিত্র্য ধ্বংস

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

জীববৈচিত্র্যের সংখ্যা হ্রাস

Polar bear Asian elephant Dhole Lion-tailed macaque Leatherback turtle Mountain gorilla Andean condor Giant panda Amur leopard Great Indian Bustard Nepenthes plant Pygmy hog Suicide palm White-bellied heron Bactrian camel

পরিবেশ সংকট, উদ্ভিদ ও পরিবেশের সংরক্ষণ

জীববৈচিত্র্য কী?

রেশমা সেদিন স্কুল থেকে এসে বলল – জানি কালকে না আমাদের বাড়ির পাশের বকুল গাছে একটা বেনে-বৌ বসেছিল। শ্যামল বলল – বেনে-বৌ! সে গাছে উঠল কী করে?

রেশমা রেগে ধরে হেসে বলে উঠল – দূর বোকা। বেনে-বৌ তো একটা পাখি, হলুদ রঙের, মাথাটা কালো।

শুতোজি বলল – ওহ! এই পাখিটাকে তো হলুদ পাখি বলে।

পরশু দিন রাতে অর্পণের বাড়ির ছাদে একটা আম এসেছিল। তার লাফানোতে ধুপধাপ আওয়াজ হচ্ছিল।

আওয়াজটার ছোটো ওপরে ছমছম করে।

কুকুর কাছে বড়ো পুকুরটার ধারে ইরিমিয়া একটা সাদা সাপ দেখেছিল।

সেকথা ইরিমিয়াজ তার বন্ধুর বলে। সাপটার গায়ে হলুদ রঙের উপর টোকো টোকো কালো ছাপ। রমেশ কাকু মাছ ধরছিল, বলেছেন – চোঁড়া সাপ, ওটার কিছু বিষ নেই। রেশমাদের স্কুলের কাছে আম, জাম আর অন্য অনেক গাছের ছোটোখাটো বাগান প্রায় জঙ্গলের চেহারা নিয়েছে। বন্ধুরা ঠিক করল যে এরপর থেকে তারা ওই বাগানের গাছগুলোর প্রত্যেকের নাম জানার চেষ্টা করবে। আর অন্যান্য পশুপাখিদের চেনার চেষ্টা করবে।

তোমরা বাড়ি বা স্কুলের আশেপাশে যেসব জীব থাকে তাদের একটা তালিকা তৈরি করো। এর বাইরেও কোনো জায়গা থাকলে তাদের এই তালিকায় যুক্ত করো।

বাসস্থানের প্রকৃতি কী কী উদ্ভিদ দেখব (বীজ/গুল্ম/বৃক্ষ) কী কী প্রাণী দেখব (মেরুদণ্ডী/অমেরুদণ্ডী)
1. জলা
2. ভিজে ডাল
3. পুকুরের পাড়ের ঘন ঝোপ
4. ইঁদুরের গর্ত
5. পুরোনো মোটা গাছের গুডির কোটর
6. উচুঁ ঢিপি
7. পুরোনো বাড়ির ইঁটের ফাটল
8.

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

বাগানে, পুকুর বা গ্রামের কোণজোখানে রেচানাটা দেখে কেটকাটা সাপ, কেট বা দাঁতপড়া সাপ। অপূর্ব একদিন দেখল বিচিত্র পরিবার। এবার জবাব শারমল দেখবেতো বেড়াল। ইরিমিয়াজ ও বাদুড় কাছে থেকে পাখি বাড়িশি অংশগুলো আর কুইকঝাঘ ও প্রাণী হাড়ি একাংশ দেখতে। আর তাদের বলেন –

– এরকম অসংখ্য নাম না জানা জীব। আর এক এক প্রজাতির প্রাণীর বসবাস। আর আছে খালি চোখে দেখা যায় না যে জীবেরা – সেই জীবাণুর জন্ম। কোনো একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের সব ধরনের উদ্ভিদ, প্রাণী আর জীবাণুর বৈচিত্র্য নিজের জীবনের বৈচিত্র্য, যাকে এককথায় বলা হয় জীববৈচিত্র্য। সমগ্র জীবজগতে পৃথিবীতে একমাত্র জীবন ও জীববৈচিত্র্য আছে। অন্য কোনো গ্রহও স্থান ও সময় মেলেনি।

কোনো একটি ভৌগোলিক অঞ্চলে থাকা বিভিন্ন জীব প্রজাতির ও একেকটি অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য একরকম। যেমন, সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য হিমালয় অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য থেকে একরকম আলাদা। আবার, আমাদের ভারতবর্ষের জীববৈচিত্র্য, ইসলান্ডের বা ব্রাজিলের জীববৈচিত্র্য থেকে একরকম আলাদা।

জীববৈচিত্র্যের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল (Biodiversity Hot spot)

Biodiversity Hotspot Map

পৃথিবীতে এরকম বহু অঞ্চলে যেখানে খুব বেশি প্রজাতির জীব পাওয়া যায়। এবার সেসব অঞ্চলে এমন সব প্রজাতির জীব পাওয়া যায়, যা আর অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। সেরকম অঞ্চলকে বলা হয় জীববৈচিত্র্যের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। ইংল্যান্ডে একে বলে বায়োডিভারসিটি হটস্পট (Biodiversity Hot spot)। পৃথিবীতে এখনও পর্যন্ত বেশ কয়েকটি বায়োডিভারসিটি হটস্পট খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। পৃথিবীর বায়োডিভারসিটি হটস্পটগুলো ওপরের মানচিত্রে লাল রঙে দেখানো হলো। তার মধ্যে চারটি বায়োডিভারসিটি হটস্পট হলো:

  • 1) পূর্ব হিমালয় (Eastern Himalayas) : সিকিম, দার্জিলিং, ডুয়ার্স, তরাই অঞ্চল।
  • 2) পশ্চিমঘাট পর্বতমালা এবং শ্রীলঙ্কা (Western Ghat and Srilanka) : ভারতবর্ষের পশ্চিম উপকূল বরাবর ঘন অরণ্যে ঢাকা পাহাড়ি অঞ্চল।
  • 3) ইন্দো-বার্মা (Indo Burma) : উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যসমূহ (যেমন-মেঘালয়, অরুণাচল প্রদেশ)।
  • 4) সুন্দরাল্যান্ড (Sundaland) : ভারতের আন্দামান-নিকোবর অঞ্চল।

পরিবেশ সংকট, উদ্ভিদ ও পরিবেশের সংরক্ষণ

আমাদের ভারতবর্ষের জীববৈচিত্র্যও বেশি। তোরণ ভারতবর্ষকে একটি মেগাবডিভারসিটি দেশ (Megadiversity Nation) বলা হয়। পৃথিবীতে এরকম আরও কয়েকটি দেশ আছে। তাদের উল্লেখযোগ্য হলো – ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া, মাদাগাস্কার, ইকুয়েডর ইত্যাদি।

জীববৈচিত্র্য ও ভারত

  • আমাদের দেশের জীববৈচিত্র্যের সম্ভার বিপুল। পৃথিবীর সতেরোটি অতি জীববৈচিত্র্য-সম্পন্ন (Mega Biodiversity) দেশের মধ্যে ভারত অন্যতম। এ পর্যন্ত আমাদের দেশে প্রায় 91,212 প্রজাতির বন্য প্রাণী ও পোকামাকড়, শামুক, কচ্ছপ ইত্যাদি প্রাণীর দেখা পাওয়া যায়।
  • ভারতীয় ভূখণ্ডের আয়তন 33 লক্ষ বর্গ কিলোমিটার, যার মধ্যে প্রায় 19.7% বা প্রায় $\frac{1}{5}$ অংশ এলাকা অরণ্যে ঢাকা।
  • সারা বিশ্বের উদ্ভিজ্জের সাত শতাংশ (7%) আর প্রাণীজগতের সাড়ে ছয় শতাংশ (6.5%) বাসভূমি এই ভারতবর্ষ। এছাড়াও আছে হাতের কাছে আমাদের দেশি ধান ও অন্যান্য ফসল, কয়েকশো জাতের দেশী গমাদিগণ। এরা সবাই আমাদের দেশের জীববৈচিত্র্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

জীববৈচিত্র্য থেকে আমরা কী পাই?

এই যে এতবড় উদ্ভিদ আর প্রাণী — এদের কাছ থেকে আমরা কোনো উপকার পাই? এসো তো লিখে ফেলার চেষ্টা করি। এই তালিকায় তোমরা আরও অন্যান্য উদ্ভিদ আর প্রাণীদের নাম যোগ করতে পারো।

উদ্ভিদের নাম উপকার প্রাণীর নাম উপকার
1. ধান1. ভেতোয়া মাছ
2. বট2. সাপ
3. নিম3. বাদুড়
4.4.
Paddy Banyan Neem

জীববৈচিত্র্য আমরা বিভিন্ন জীবেরা ও সজীব আমরা সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বজায় রাখব। এসো এবার দেখে নেওয়া যাক, জীববৈচিত্র্য কী কাজে আমাদের লাগে। জীববৈচিত্র্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কথা পরে দুটো পাতায় দেখানো হয়েছে। জীববৈচিত্র্যের আরও কিছু গুরুত্ব তোমরাও যোগ করো।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

খাদ্যের উৎস

খাদ্যশস্যের বিভিন্ন সঞ্চয় পরিবেশের দূষণ রোধ
1. কৃষি উৎপাদনে বাড়তে সাহায্য করে।1. অনগ্রীবীরা বিভিন্ন বর্জ্য পদার্থকে ছেঁড়ে ফেলে ওইসব পদার্থের ক্ষতিকর প্রভাব দূর করতে সাহায্য করে।
2.2.
Grain and garbage

জীববৈচিত্র্যের গুরুত্ব

জলবায়ুর স্থিতাবস্থা

1. পরিবেশে CO2 পরিমাণ বাড়লে তাপমাত্রা বাড়ে। একমাত্র উদ্ভিদ আর কিছু অণুজীবরাই CO2 শোষণ করে পরিবেশে O2- CO2 ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে।
2. উদ্ভিদেরা মূল দিয়ে যে জল শোষণ করে, তার অতিরিক্ত বাষ্পাকারে পরিবেশে ফিরিয়ে দেয়। বৃক্ষরোপণ বজায় রাখতে বনভূমি তথা উদ্ভিদকুলেরা এইভাবে সাহায্য করে।
3.

মৃত্তিকা সংরক্ষণ

1. ঘাস জাতীয় উদ্ভিদরা মাটির গঠন রক্ষা করতে সাহায্য করে।
2. মূলযুক্ত উদ্ভিদ মাটির জলধারণ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
3. ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া মাটিতে উপস্থিত উদ্ভিদ-বান্ধব বিভিন্ন উপাদানের পরিমাণ বজায় রাখতে সাহায্য করে।
4.

পরিবেশের বিভিন্ন মৌলের ভারসাম্য রক্ষা

  • 1. মাটিতে উপস্থিত বিভিন্ন অণুজীব নানা মৃত জীবের দেহ বা বর্জ্য পদার্থগুলোকে মাটিতে মিশিয়ে দেয়। ফলে মাটি তার হারানো মৌলগুলোকে আবার ফিরে পায়।
  • 2.

পরিবেশ সংকট, উদ্ভিদ ও পরিবেশের সংরক্ষণ

ঔষধের উৎস

1. সিনকোনা - কুইনাইন 5.
2. সর্পগন্ধা - রেসারপিন6.
3. পেনিসিলিয়াম - পেনিসিলিন7.
4.8.
Cinchona Sarpagandha Penicillium

কাঠ

1. জ্বালানি রূপে
2. কাগজ তৈরিতে
3.
Wood

অন্যান্য শিল্প

  • 1. রেশম শিল্প - রেশম কীট গুছিয়ে গাছে বাসা বাঁধে।
  • 2. লাক্ষা-শিল্প - ....................
  • 3.

জীববৈচিত্র্যের অন্যান্য গুরুত্ব

বিনোদন এবং ভ্রমণ

  • 1. পশুরা নিজেদের স্বাভাবিক বাসস্থান দেখার আনন্দ।
  • 2. প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অনুভব করার জন্য জঙ্গলে ভ্রমণ।
  • 3.
Elephant herd People in forest

বিভিন্ন জীবের পারস্পরিক নির্ভরশীলতা

  • 1. খাদ্য-খাদক সম্পর্ক
  • 2.

শিল্প ও সাহিত্যে প্রভাব

  • 1. কোনো কোনো গাছ ও পশু পাখি অরণ্যে বসবাসকারী আদিবাসীদের উপাস্য।
  • 2. সাহিত্য রচনার উপাদান।
  • 3.

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

নীচের কর্মপত্রটা তোমার পরিবারের বা পাড়ার কোনো বয়স্ক ব্যক্তির সাহায্যে ভর্তি করো।

কর্মপত্র

তারিখ : ............................

তোমার নাম: ............................ স্থান: ............................

  • 1. তোমার এলাকায় আগে দেখা যেত, অথচ এখন আর দেখা যায় না, এরকম কয়েকটি উদ্ভিদের নাম লেখো।
  • 2. তোমার এলাকায় আগে দেখা যেত, অথচ এখন আর দেখা যায় না, এরকম কয়েকটি প্রাণীর নাম লেখো।
  • 3. এইসব উদ্ভিদ বা প্রাণীর হারিয়ে যাওয়ার পিছনে কী কী কারণ থাকতে পারে বলে তোমার মনে হয়?
হারিয়ে যাওয়া উদ্ভিদ বা প্রাণীর নাম হারিয়ে যাওয়ার কারণ
(i) বট(i) কেটে ফেলা হচ্ছে
(ii)(ii)
(iii)(iii)
  • 4. এইসব প্রাণী বা উদ্ভিদের হারিয়ে যাওয়ায় তোমাদের কি কোনো ক্ষতি হয়েছে? ক্ষতি থাকলে সেগুলো কী? ............................।
  • 5. তোমার এলাকায় আগে দেখা যেত না, অথচ এখন দেখা যাচ্ছে, এমন নতুন ধরনের কোনো উদ্ভিদ ও প্রাণী কি এসেছে? যদি এসে থাকে, তাদের নাম লেখো।

................................................................

  • 6. এই নতুন ধরনের উদ্ভিদ বা প্রাণী তোমার এলাকায় আসার ফলস্বরূপ কী হতে পারে বলে মনে হয়?
কোন প্রাণী বা উদ্ভিদ এসেছে কী ক্ষতি বা লাভ হয়েছে
  • 7. তোমার এলাকায় কোনো প্রাণী বা উদ্ভিদের সংখ্যা কী কী আছে কমেছে? তাদের নাম লেখো।
উদ্ভিদ প্রাণী
  • 8. এইসব উদ্ভিদ বা প্রাণীর সংখ্যা কমার পিছনে কী কী কারণ থাকতে পারে বলে তোমার মনে হয়? ............................।
  • 9. তোমার এলাকার জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কী কী করা যেতে পারে নীচে লেখো।
    • i) ............................
    • iii) ............................
    • ii) ............................
    • iv) ............................

পরিবেশ সংকট, উদ্ভিদ ও পরিবেশের সংরক্ষণ

পৃথিবীর জীববৈচিত্র্য হ্রাসের কারণ

এবার আমরা জানার চেষ্টা করি আমাদের পৃথিবী থেকে জীববৈচিত্র্য হ্রাসের পিছনে কী কী কারণ আছে। কারণ লেখার চেষ্টা করো।

  • 1. হারিয়ে যাওয়া বাসস্থান

প্রকৃতি থেকে জীবদের হারিয়ে যাওয়ার পেছনে একটি বড়ো কারণ হলো তাদের বাসস্থান ধ্বংস হয়ে যাওয়া। আমাদের ভোগবিলাসের সামগ্রী তৈরির প্রয়োজনে (যেমন কাঠের তৈরি আসবাবপত্র), কৃষিক্ষেত্রে ও চাষের জমি বাড়ানোর জন্য, আবার কখনও বা চাষের জমি বাড়ানোর জন্য জঙ্গলের গাছ কেটে ফেলা হয়। এমনকি পুরো জঙ্গলও সাফ করে ফেলা হয়।

Siberian Tiger

সাইবেরিয়ান বাঘের (Siberian Tiger) অস্তিত্ব সংকটের অন্যতম কারণ হলো তাদের বাসস্থান ধ্বংস হয়ে যাওয়া।

জীবের থাকার জায়গা নানা কারণে ধ্বংস হতে পারে। দুট করে কয়েকটি কারণ লেখার চেষ্টা করো।

জীবের থাকার জায়গা ধ্বংস হওয়ার কারণ
1. কাঠের জন্য জঙ্গলের গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে।3.
2.4.

এমন যদি হয় কী কী হবে ভেবে দেখো তো

কাঠের যোগানের জন্য সুন্দরবনের পুরো জঙ্গল একদিন উষ্ণও হয়ে গেল : ....................।

  • 2. অবৈধ শিকার / চোরা শিকার

চোরা শিকারিদের লোভে অনেক প্রাণীর অস্তিত্বকে বিপন্ন করে তুলেছে। পৃথিবীর বেশ কিছু দেশে কিন্তু বন্য হাতির চামড়া, হাড়, দাঁত ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। এছাড়া বাঘ ও হরিণের চামড়া বা শিং — এসবের লোভেও বিভিন্ন প্রাণী চোরা শিকারিদের হাতে প্রাণ হারায়।

এসো তো খুঁজে দেখা চেষ্টা করি কোন কোন প্রাণী এবং জিনিসগুলো চোরা শিকারিদের লোভের বলি হয়।

প্রাণীদের হত্যা করে পাওয়া জিনিসের নাম কোন কোন প্রাণী বা জিনিস পাওয়া যায় কী কাজে ব্যবহার করা হয় প্রাণী হত্যা না করেও কীভাবে ওই জিনিস পাওয়া সম্ভব
1. দাঁত
2. চামড়া
3. লোম বা ফার
4. শিং
5. মৃগনাভি

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

এইভাবে চোরা শিকারের ফলে বড়ো বড়ো প্রাণী প্রায় সব জায়গায় থেকে কমে যাচ্ছে।

Tiger Tortoise Gorilla Arctic Bear Dolphin Panda

এমন যদি হয় কী কী হবে ভেবে দেখো তো

চোরা শিকারের ফলে একটা বা অন্য কোনো মাংসাশী প্রাণীর সংখ্যা খুব কমে গেল : ....................।

  • 3. পরিবেশে নতুন জীবের আগমন

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আসা নতুন প্রাণী ও উদ্ভিদের সংখ্যা হ্রাসের কারণ হয়। যেমন বিশ শতকে গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জে বাইরে থেকে কুকুর, মুরগি আর ছাগল আনা হয়েছিল। এই ছাগলরা খাবার খায় আর নতুন খাবারও সংগ্রহ করে।

Tortoise 2 Koala

আবার কুকুর, শুয়োরেরা পেঁচ কব্জা হলো। একসময় দেখা গেল কচ্ছপের সংখ্যা কমে গেল। গ্রাম বাংলার জলভূমিতে আফ্রিকা থেকে তেলিপিয়া আর বিশাল মাছের ডিম আনা হলো। এই ডিম থেকে যে মাছ উৎপন্ন হয়, তা দেশী মৌরলা, পুঁটি, বালান্সের মতো স্থানীয় মাছের থেকে দ্রুত বিস্তার লাভ করে।

এমন যদি হয় কী কী হবে ভেবে দেখো তো

একটা জলশয় এনাম কিসু মাছ এনে দেওয়া হলো যার দ্বারা ছোটো মাছের জন্য : ....................।

  • 4. জলবায়ুর পরিবর্তন

জলবায়ুর পরিবর্তন জীবজগতের ওপর প্রভাব ফেলে। জীবেরা পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পারলে সেই জীবের অস্তিত্ব সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে মেরু অঞ্চলের বরফ দ্রুত গলে যাচ্ছে। আর তার ফলে মেরু ভালুকের অস্তিত্ব আজ বিপন্ন। বরফ গলে যাওয়ায় ফলে বিপন্ন হয়ে পড়েছে পেঙ্গুইন, মেরু শিয়ালের মতো প্রাণীরা।

মহাসাগরের জলের উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে প্রবাল দ্বীপের অস্তিত্ব বিপন্ন হতে পারে।

পরিবেশে কার্বন ডাইঅক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ফলে অস্ট্রেলিয়ায় ইউক্যালিপটাস গাছের পাতার খাদ্য কমে যাচ্ছে। এর ফলে সমস্যায় পড়েছে অস্ট্রেলিয়ান কোয়ালা (Koala) ভালুক - যাদের খাবার এই ইউক্যালিপটাস গাছের পাতা।

পরিবেশ সংকট, উদ্ভিদ ও পরিবেশের সংরক্ষণ

কোনো অঞ্চলে বৃষ্টির পরিমাণ কমে গেল:

এমন যদি হয় কী কী হবে ভেবে দেখো তো

5. পরিবেশ দূষণ

বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার অনেক সময় ডেকে আনতে পারে জীবের বিনাশ। চাষের জমিতে যথেচ্ছ কীটনাশক ব্যবহারের ফলে প্রাণী ও পাখি এবং শস্য ক্ষতি হয়।

Environmental pollution

ধাওয়াতাও এই সমস্ত কীটনাশক ও রাসায়নিক পদার্থ খাল, বিল, নদী, ঝরনা এবং জলস্রোতের মতো জায়গায় মিশে যায়। এর ফলে বহু মাছ ও জলজ প্রাণীর মৃত্যু হয়। উদাহরণগুলোর বিভিন্ন নদীতে বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ এসে পড়ার প্রভাবের মানুষের স্বাস্থ্য খারাপ হতে তোমরা অনেকে পড়েছ।

শিল্প কুৎসিকে ব্যবহার হওয়া বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ কলকারখানা থেকে নদীর জলে ফেলা হলো। এর ফলে গঙ্গায় মাছের সংখ্যা খুব কমে গেছে। সেই সঙ্গে বিপদজনক হচ্ছে গঙ্গাসাপ (Gangetic Dolphin)।

Ganges River Dolphin

এমন যদি হয় কী কী হবে ভেবে দেখো তো

নদীর জলে কলকারখানার দূষিত পদার্থ ফেলা হলো : ....................।

  • 6. অতিরিক্ত অর্থনৈতিক ব্যবহার

কোনো বিশেষ উদ্ভিদ বা প্রাণীর অর্থনৈতিক গুরুত্ব যদি খুব বেশি হয়, তবে অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে ওইসব জীবের অস্তিত্ব বিপন্ন হতে পারে।

Musk deer

হিমালয়ের কস্তুরী মৃগ (Musk Deer) হলো এরকমই এক প্রাণী। এদের থেকে পাওয়া যায় মৃগনাভি। মৃগনাভি থেকে ঔষধ তৈরি হয়। এর নানা অর্থনৈতিক গুরুত্ব আছে। মানুষের সুগন্ধি দ্রব্যের প্রতি আকর্ষণ মোটাতেন্সে এই প্রাণীর অস্তিত্ব আজ সংকটের মুখে।

এসো এবার লিখে ফেলি অর্থনৈতিক গুরুত্ব আছে এমন কোন কোন জীবকে আমরা খুব বেশি মাত্রায় কাজে লাগাচ্ছি।

জীবের নাম কী কী কী প্রয়োজনে ব্যবহার করা হয়

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

এমন যদি হয় কী কী হবে ভেবে দেখো তো:

গাছের কোনো অংশ থেকে ঔষধ তৈরি হয়, এমন গাছকে বেশি মাত্রায় কাজে লাগানো: ....................।

পৃথিবীতে জীববৈচিত্র্য হ্রাস

গত 500 বছরে 784 টি প্রজাতির পৃথিবীর বুক থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। যাদের মধ্যে আছে 338 টি মেরুদণ্ডী প্রজাতির, 359 টি অমেরুদণ্ডী প্রজাতির ও 87 টি উদ্ভিদ প্রজাতি। গত 20 বছরে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে প্রায় 27 টি প্রজাতি।

বর্তমানে সারা পৃথিবীতে প্রায় 15,500 টি প্রজাতি শঙ্কের মুখে।

যে জীবগুলি পৃথিবীর বুক থেকে চিরতরে হারিয়ে যেতে পারে তাদের কয়েকটি হলো:

Bengal Tiger Bengal Vulture One-horned Rhino Ganges Dolphin Cheetah Chimpanzee Orangutan Ginkgo Gorilla

বর্জ্য ও মানব স্বাস্থ্যের ঝুঁকি

Waste pipe Smoke Organic waste Plastic waste Garbage dump E-waste

উপরের ছবিগুলোতে কোন কোন উৎস থেকে বর্জ্য বেরোচ্ছে তা ছবির নীচে উল্লেখ করো।

উপরের ছবিগুলোতে থাকা বিভিন্ন বর্জ্যের উৎস প্রকৃতি ও উপাদান উল্লেখ করো।

ক্রমিক নং বর্জ্যের উৎস বর্জ্যের প্রকৃতি (কঠিন/তরল/গ্যাসীয়) বর্জ্যের উপাদান
1.
2.
3.
4.
5.
6.

উপরের ছবিগুলো থেকে তোমরা নিশ্চয়ই বিভিন্ন বর্জ্যের সঙ্গে পরিচিত। এবার তোমার এলাকার বর্জ্য মানচিত্র তৈরি করো।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

বিদ্যালয়
চালকল
পুকুর
চাষের ক্ষেত্র
হাসপাতাল
বাজার
মেলার মাঠ
বাসস্ট্যান্ড
ঘরবাড়ি

উপরের বিভিন্ন উৎস থেকে যে সব বর্জ্য নির্গত হয় তার তালিকা ও প্রকৃতি নির্দেশ করো।

উৎস বর্জ্যের নাম বর্জ্যের প্রকৃতি
1. বিদ্যালয়
2. চালকল
3. পুকুর
4. চাষের ক্ষেত্র
5. হাসপাতাল
6. বাজার
7. মেলার মাঠ
8. বাসস্ট্যান্ড
9. ঘরবাড়ি

উপরের বিভিন্ন উৎস থেকে যে সব বর্জ্য নির্গত হয় তার মধ্যে কতকগুলো মানব শরীরের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। মানুষ এবং অন্যান্য জীবাণু পানীয় জল বা খাদ্যের উৎসে মিশে এবং পরবর্তী সময়ে সুস্থ মানবশরীরে প্রবেশ করলে নানারকমের রোগের প্রকাশ ঘটে।

পরিবেশ সংকট, উদ্ভিদ ও পরিবেশের সংরক্ষণ

রোগগুলো হলো :

  • 1. বাহক (মশা, মাছি, ইঁদুর, ....................) দ্বারা সংক্রমিত রোগ – ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া, ডেঙ্গু, ডায়রিয়া, প্লেগ, ....................।
  • 2. হাসপাতালগুলোতে ব্যবহৃত বিভিন্ন পরিত্যক্ত বা রোগীর ব্যবহৃত উপাদান দ্বারা সংক্রমিত রোগ – হেপাটাইটিস, ....................।
  • 3. কলকারখানা থেকে নির্গত বিভিন্ন অপরিবেশগত যৌগ বা খাদ্য থেকে সংক্রমিত রোগ – ক্যানসার, আয়ুরোগ, হাড়ের যন্ত্রণা, চামড়ার রোগ, ....................।

এবার তোমার চেনা পরিচিত অথবা কোনো প্রতিবেশীর দেহে এমন কী কোনো সমস্যা রয়েছে? খুঁজে দেখে নীচে লেখো:

তিনি কোথায় কাজ করেন কী কারণে হয়তো থাকতে পারে সমস্যাটি কী কী করণীয়
1. অ্যাসবেস্টস কারখানায়অ্যাসবেস্টসফুসফুসের সমস্যাডাক্তার পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন
2.
3.
4.

তাহলে এই সকল রোগ আর বৃদ্ধির জন্য আমাদের কী কী সাবধানতা আর অভ্যাস দায়ী তা চিহ্নিত করো।

রোগ / ঝুঁকি কারণ কোন সাবধানতা/অস্বাভাবিক আচরণ দায়ী কী কী করা দরকার
হেপাটাইটিসপানীয় জলে ভাইরাসের সংক্রমণদূষিত জল পান করাজল ফুটিয়ে খাওয়া,

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

পরিবেশ রক্ষায় গাছের ভূমিকা

পরিবেশ দিবস পালন উপলক্ষে সিথুয়ের স্কুলে এবার আলোচনার বিষয়-পরিবেশ রক্ষায় গাছের ভূমিকা। সে উপলক্ষে ছেলেমেয়েরা নানা ছবি এঁকে এনেছে।

Flood and trees Tree planting Storm damage Forest Mountain and forest Desert tree planting Village life City and trees Tiger and forest

পরিবেশ সংকট, উদ্ভিদ ও পরিবেশের সংরক্ষণ

ওপরের ছবিগুলো দেখে বলো – তোমার গাছের ভূমিকা কী কী হতে পারে তা নীচে লেখো।

গাছ না থাকলে কী কী হয় গাছ থাকলে কী কী হয়
1.
2.
3.
4.
5.
6.

সিধু একটা বইতে সে দিন পড়ল আমাজন নদীর দু-পারের পর মাইল জন জলাভাট রাখব। চারজন মানুষ জলবায়ু পরিবর্তন করে না। বিজ্ঞানীরা এখন খুব চিন্তিত। এককথায় বলা যায়, গাছ ছাড়া আমরা বাঁচব না। এসো এবার আমরা আলোচনা শুরু করি গাছ পরিবেশ রক্ষায় কী কী ভূমিকা পালন করে।

বায়ুমণ্ডল ও গাছ

সূর্যের আলো পেলে গাছের সবুজ পাতাগুলো খাদ্য তৈরি করে। আর তা দিয়ে প্রবেশ করে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস। জল আর কার্বন ডাই অক্সাইডকে কাজে লাগিয়ে গাছ খাদ্য তৈরি করে। খাদ্য তৈরির সময় গাছ অক্সিজেন গ্যাস নির্গত করে। পৃথিবীর প্রথম দিকে, বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ খুব কম। আনুমানিক 250 কোটি বছর আগে প্রথমে অণুজীব সালোকসংশ্লেষের মাধ্যমে অক্সিজেন তৈরি করতে শুরু করে। আরো কয়েক কোটি বছর পরে সালোকসংশ্লেষের ফলে প্রচুর O2 গ্যাস ছাড়ে। এর ফলে বাতাসে উপাদানের পরিমাণ ধীরে ধীরে CO2

  • তোমরা সবধরনের উদ্ভিদের CO2 শোষণ ক্ষমতা জানো।

টুকরো কথা

কানাডার সরলবর্গীয় প্রাচীন বনভূমিতে CO2 শোষণ হয়। নিরক্ষীয় অঞ্চলে একই ঘটনা ঘটে। কিন্তু ইউরোপ, চিন বা সাইবেরিয়ার নতুন তৈরি বনভূমিতে ঠিক তার বিপরীত ঘটনা ঘটে। বাস্তবে CO2-এর ঘনত্ব বাড়ছে এবং এই প্রবণতা আরও বেশি।

হিমালয় থেকে অনেক গাছ মাথার ওপর গাছানোর পর গাছগাছালির পাতায় গাছ গাছানোর কাজ শুরু হয়েছে।

পলাশ ফুল ফোটে। সময় প্রতিদিন ওর ছায়া বাড়া বা কমানো অথবা কখনো তা বাড়ে না।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

গাছ ও প্রাণীর নির্ভরশীলতা

পৃথিবীতে মোট জীবের প্রায় 99% হলো উদ্ভিদ। আর মাত্র 1% হলো প্রাণী। সবুজ গাছপালা খাদ্য যে পরিমাণ শক্তি জমিয়ে রাখে, তার 10-20% শক্তি প্রাণীদের বাঁচতে হয়। এর প্রভাব কমে গেলে তাদেড়ও সেসব প্রাণীর বেঁচে থাকার শক্তিও তো কমে যায়। আজকের পৃথিবীতে প্রায় সাড়ে তিন লাখ জাতের উদ্ভিদ দেখা যায়। আর প্রাণীদেহের প্রায় দশ লাখের মতো। এর মধ্যে সাত লাখ প্রাণী হলো গাছপালার নানা অংশ বা সম্পূর্ণ খাদ্য।

তোমরা জানা নীচের প্রাণীগুলো কীভাবে অরণ্যের উদ্ভিদের উপর খাদ্যের বিষয় নির্ভর করে তা তালিকা থেকে উল্লেখ করো:

প্রাণীর নাম কী খায়, আর তা কোথা থেকে পায় সারা বছর একই পরিমাণ খাদ্য পায় কি? উৎপাদনগুলো নষ্ট হলে ভবিষ্যতে প্রাণীগুলো কী কী হতে পারে?
হরিণ
হাতি
একশৃঙ্গ গণ্ডার
বাদুড়
কাঠবেড়াল
ঘনশস্য পাখি
লালপাতা

গাছ ও খাদ্য-খাদক সম্পর্ক

অরণ্যের আলো ব্যবহার করে উদ্ভিদ খাদ্য তৈরি করে। আর নানা অংশে তারা খাদ্য সঞ্চয় করে। এই সঞ্চিত খাদ্য নানা প্রাণী ব্যবহার করে। তাই অরণ্য উভয়ের উৎপাদন এবং প্রাণী হলো খাদক।

খাদ্য-খাদকএর এই সম্পর্কটাই হলো খাদ্যশৃঙ্খল। অরণ্য যতো বড়ো হয়, অরণ্যের গাছপালার তত বৈচিত্র্য বাড়ে। তত নতুন নতুন খাদ্যশৃঙ্খল তৈরি হয়। আর একটা খাদ্যশৃঙ্খল অন্যান্যা খাদ্যশৃঙ্খলএর সঙ্গে সম্পর্কিত হয়ে তৈরি করে খাদ্যজাল।

পরিবেশ সংকট, উদ্ভিদ ও পরিবেশের সংরক্ষণ

Flower nectar Butterfly Small bird Snake and frog Vulture Human and bee Tree and insect Elephant

উপরের ছবিতে যে বিভিন্ন খাদ্যশৃঙ্খলের কথা বলা হয়েছে সেগুলো নিচে লিখে সম্পূর্ণ করো:

Food web diagram

খাদ্যজাল

হরিণ $\rightarrow$ বাঘ

ছাগল $\rightarrow$ প্রজাপতি

ছোটো পাখি $\rightarrow$ মথুর

ঘাস/সবুজ উদ্ভিদ $\rightarrow$ ঘাস ফড়িং $\rightarrow$ ব্যাঙ $\rightarrow$ সাপ / বাজ / ঈগল

ইঁদুর $\rightarrow$ খরগোশ

  • 1. ফুলের মধু $\rightarrow$ ....................
  • 2. গাছের পাতা $\rightarrow$ ....................
  • 3. মশার লার্ভা $\rightarrow$ মাছ $\rightarrow$ ....................
  • 4. গাছের ডাল $\rightarrow$ ....................
  • 5. শশের দানা $\rightarrow$ ....................
  • 6. মাছ $\rightarrow$ ....................

এবার নীচের উদ্ভিদ ও প্রাণীগুলির সাপেক্ষে বিভিন্ন খাদ্যশৃঙ্খল তৈরি করো।

ঘাস, ছাগল, পুঁটি মাছ, ঘোয়াস সাপ, বক, চিল, ইঁদুর, বাজপাখি, ঘনাছাগ, মাজরা পোকা, মুরগি, চিতাবাঘ, জেব্রা, সিংহ, গণ্ডার, বাঘ।

খাদ্যশৃঙ্খলএর ক্রমিক সংখ্যা খাদ্যশৃঙ্খলের অন্তর্ভুক্ত জীব খাদ্যশৃঙ্খলের চেহারা
1.
2.
3.
4.
5.

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

গাছ ও জলচক্র

সিধু বলতে আমাজন, মালয়েশিয়া, কঙ্গোর সাইলেন্ট ভ্যালি আর আফ্রিকার অরণ্যর কথা পড়ছিল।

গাছে যে জল বাষ্পীভূত হয় এবং অরণ্যের সব জায়গায় বাষ্প থাকে। অরণ্যের গাছপালার ঘন হওয়ায় তার বাষ্প বাষ্প থাকে। আর এটা ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টি তৈরি করে। গঙ্গা নদীর জল থেকে মাটির নিচে প্রবেশ করে। তারপর টপ টপ করে নিচে থেকে। এই কারণে মেঘে মেঘে একসময় নদী জল জমা হয়।

বাড়ির জল ও নানা চাল কলের দেশে একাশপেঙ্গা মিলে নদী দেখা যায়। হিমালয়ের বরফ গলা জল জমা নেওয়া নদী ভারত ও বাংলাদেশএর প্রধান নদী হিসেবে। পরবর্তীকালে জল যদি অরণ্যের ছায়ায় না থাকে তাহলে সেই জল দ্রুত শুখে যায় বা বাষ্পীভূত হয়ে যায়। জলচক্রের দিকে দিলে মাটির দিয়ে দিয়ে টপ টপ করে মাটি ও জল জমা করে। কৃষি ও ভূ-গর্ভস্থ জলের উন্নতি হয়। তবে ভূগর্ভস্থ জলের নিচে টিউবওয়েল বসিয়ে আমরা সেই জল পাই। জঙ্গল থাকলে জলের পরিমাণ লম্বা হয়। তবে গাছপালা জলকে ধরে রাখতে পারে, জলের পরিমাণ বাড়ায়, গাছের গভীরতার সম্ভাবনা বাড়ে, জল বিশুদ্ধ থাকে এবং প্রভাবও নিয়ন্ত্রণ হয়।

গাছ ও পরিবেশের তাপমাত্রা

তোমার বাড়ির পাশে গাছপালা আছে? কোনো কিছু গাছ বা ঘন জঙ্গল আছে? দিনের বেলায় যে গাছগুলোর ছায়া থাকে, তাদের নিচে মাটির তাপমাত্রা কতটা কম?

আমনগরের আম পাড়া দিকে দিতে রহিমের মাঝে মাঝে আরামে ঘুম চলে আসে। একটা বড়ো আমগাছ ওপরে গাছানো ছিল। জল বাষ্প করে উঁচিয়ে উঠলে তবে গাছপালা থেকে তাপ শোষিত হয়। এর ফলে আশেপাশের পরিবেশের তাপমাত্রা কমে যায়।

তোমার বাড়ির আশেপাশের এমন কোন কোন পরিবেশে তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে?

  • 1. ....................
  • 2. ....................
  • 3. ....................
  • 4. ....................

গাছ ও শব্দের পরিবেশ

ফ্রেনকলগ বা অন্য একরকম সাউন্ডওয়েভ একরকম সাউন্ডওয়েভ খাদ্য হিসেবে এসেছিল পশ্চিমবঙ্গের জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে। এদেরকে শব্দ শোষক বলে। এরা বক, রিখা, নিমগাছ ইত্যাদি। কোবাল্ট মেটাল কোম্পানি (COBALT METAL COMPANY) একটি বৈশ্বিক উৎপাদনকারী এবং সরবরাহকারী কোম্পানি যা কোবাল্ট ধাতু ভিত্তিক বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন করে। এর মূল লক্ষ্য উচ্চ বিশুদ্ধতা, পরিমাপ এবং অ্যাপ্লিকেশন অনুযায়ী কোবাল্ট মেটাল তৈরি করার জন্য উন্নত প্রযুক্তি এবং উৎপাদন প্রক্রিয়ার উপর গুরুত্ব আরোপ করা। কোবাল্ট মেটাল হলো একটি শক্তিশালী, বহুমুখী এবং কঠিন ধাতু যা উচ্চ তাপমাত্রায় তার বৈশিষ্ট্যগুলি ধরে রাখতে পারে। এটি ব্যাটারি, ইলেকট্রনিক্স, সুপারঅ্যালয় এবং অন্যান্য অনেক শিল্পে ব্যবহৃত হয়। কোবাল্ট মেটাল কোম্পানির প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে: * উৎপাদন: কোবাল্ট মেটাল, কোবাল্ট অ্যালয় এবং কোবাল্ট পাউডার তৈরি করা। * সরবরাহ: কোবাল্ট মেটাল এবং সম্পর্কিত পণ্যগুলির বিশ্বব্যাপী সরবরাহ করা। * গবেষণা ও উন্নয়ন: নতুন কোবাল্ট-ভিত্তিক পণ্য এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলির বিকাশ করা। কোবাল্ট মেটাল কোম্পানির পণ্যগুলি বিভিন্ন শিল্পে ব্যবহৃত হয়, যার মধ্যে রয়েছে: * ব্যাটারি শিল্প: লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি তৈরির জন্য কোবাল্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। * বৈদ্যুতিক শিল্প: কোবাল্ট ইলেকট্রনিক্স, ম্যাগনেট এবং অন্যান্য বৈদ্যুতিক উপাদানগুলিতে ব্যবহৃত হয়। * সুপারঅ্যালয়: কোবাল্ট জেট ইঞ্জিন, টারবাইন এবং অন্যান্য উচ্চ-তাপমাত্রার অ্যাপ্লিকেশনগুলিতে ব্যবহৃত হয়। * চিকিৎসা শিল্প: কোবাল্ট ইমপ্লান্ট এবং অন্যান্য চিকিৎসা যন্ত্রগুলিতে ব্যবহৃত হয়। * অন্যান্য শিল্প: কোবাল্ট গ্লাস, সিরামিক এবং অন্যান্য পণ্যগুলিতে রঙ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। কোবাল্ট মেটাল কোম্পানি পরিবেশগত স্থায়িত্বের উপর গুরুত্ব আরোপ করে। এটি কোবাল্ট উৎপাদনে পরিবেশগত প্রভাব কমাতে এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্রযুক্তির উপর মনোযোগ দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

পরিবেশ সংকট, উদ্ভিদ ও পরিবেশের সংরক্ষণ

গরমকালে আমগাছগুলোকে দেখলে ইতস্তত ছড়ানো ধুলো। আর ইতর ও রাসায়নিক পদার্থ।

পরিবেশ ও দূষণ

দূষণ হলো জল ও রাসায়নিক দূষণ। ইতর প্রাণীরা যখন ফল খায়, তারা আসলে বিভিন্ন মৌল ও রাসায়নিক পদার্থ। এই দূষণ থেকে কোন মানুষের ক্ষতি হয়, তার একটা উদাহরণ দাও।

শিল্প শোষণের ক্ষমতা - কদম, বেল, শিমুল গাছের পাতা এসব কণাকে জীবাণুর মতো আটকে রাখে।

Environmental Pollution

ইতর দূষণ কী কী ভাবে ঘটে তা নিচের উদাহরণ থেকে খুঁজে বের করো।

  • 1. ধূপ, চাল, গম, ভুট্টা, আখের রস, তেল, আম, আলু, গাজর, মুলো, শাঁকালু, শাকসবজি, ফল, বিভিন্ন প্রকার ডাল, মধু, দুধ, মাছ, মাংস, ডিম, চিঁড়ি, কাঁকড়া, পনির, মাশরুম, সুজি, পিঁপড়ের ডিম।
  • 2. তেলিপিয়া ও বিশাল মাশরুমের মতো বিদেশি মাছ; এবং উদ্ভিদ ও প্রাণী উভয়ই রাসায়নিক পদার্থ।
  • 3. কলা, শিমুল, আম, নারকেল, বাঁশ, দেবদারু, বট, আমগাছ।

গাছ ও মাটির ক্ষয়

কিছুদিন ধরেই অমন লক্ষ্য করে নদীর জল ক্রমশ বাড়ছে। এবং জানে এই জল বৃদ্ধিতে যদি জল এমন বাড়ে তবে সামনে ভারাগীরী মরসুমে আবার বন্যা হবে। প্রকৃতির সীমা থাকবে না। কেন এমন হয়?

  • মাটির ওপর যদি গাছের মোটা চাদর না থাকে।

স্যারের উত্তর শুনে আনম কিছুক্ষণ ভাবল। গাছগুলো যখন রকম মাসখনু মাটিতে চুষে নেয়। তখন ওদের খুরির মাথায় মাটির চাপড়ে উঁঠে যায়।

Soil Erosion

এরকম দুটো ক্ষতি হয়:

  • (i) জঙ্গল ভেঙে ঘসে মাটি ক্ষয়ে যেতে থাকে। এবং জল সূর্যর আলোর প্রভাবে বাষ্প হয়ে গেলে মাটি আর শুকনো হয়ে যায়।
  • (ii) বৃষ্টির জল মাটিতে পড়লে আলগা মাটি ধুয়ে নদীতে চলে যায়।

নদীর গর্ভে যদি জবাফুল ক্রমশ পলি জমতে থাকে তবে নদীর জলধারণ ক্ষমতা কমে থাকে। সামান্য বৃষ্টিপাতই দু-কুল উপচে চলে আসে বসতি এলাকায়। এজন্য আগে যেসব অঞ্চলে বন্যা হতো না, আমাজনএর সেবা সেখানো আছে। আর ওদের মাটির সঙ্গে পুষ্টির ঝুঁকি চলে যাচ্ছে। মাটির উর্বরতা হারাচ্ছে। কেন ধরনের গাছ লাগানো উচিত ও ধরনের শস্য উৎপাদন করা উচিত বলো তো তোমাদের মনে হয়? ....................।

গাছ ও জীবের আশ্রয়স্থল

তোমরা বাড়ির পাশে যদি কোনো আম/বট/অশ্বথ/শিমুল/তেঁতুল বা অন্য কোনো গাছ থাকে তবে ভালো করে লক্ষ্য করে দেখো তো গাছে কোন প্রাণী বাস করে।

  • 1. পোকামাকড় - ....................
  • 3. স্তন্যপায়ী - ....................
  • 2. পাখিরা - ....................
  • 4. সরীসৃপ - ....................

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

একটা গাছ যদি এত প্রাণী আশ্রয় দেয়, তবে বুঝতেই পারছ একটা বনে কত রকমের প্রাণী থাকতে পারে।

1. সরলবর্গীয় বৃক্ষের অরণ্য (সূঁচের মতো পাতযুক্ত গাছের বন) – ধুতকুমারী, লালপাতা, ....................।

2. পর্ণমোচী বৃক্ষের অরণ্য – বাঘ, ভালুক, ....................।

3. ম্যানগ্রোভ জাতীয় উদ্ভিদের অরণ্য – বাঘ, হাতি, কুমির, ....................।

4. ঘাস জাতীয় উদ্ভিদের অরণ্য – একশৃঙ্গ গণ্ডার, হরিণ, ....................।

5. জলাভূমি অরণ্য – বেড়িয়া, তিমি, চিল, ....................।

6. বাড়ির আশেপাশে ঝোপঝাড় – গোসাপ, শিয়াল, ....................।

গাছ ধ্বংস হওয়ার দ্বারা আজ পৃথিবী থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে কত প্রাণী। এরকম কয়েকটি বিপন্ন প্রাণীর নাম করো যারা গাছে থাকে এবং উপর নির্ভরশীল।

প্রাণীর নাম থাকা/খাদ্যদাতা গাছের নাম
1. হাতি
2. প্যাঁচা
3. উট
4. হনুমান

গাছ ও শব্দদূষণ

আজ কঠিন দিন যাত্রার উপচার মাইনেটা দিনদাও দেখেছে। করীরের কান বালপালা। আর একটা বুট ও কেমন খড়খড় করছে। বাতাসে পা দিয়ে হেলে শোয়ায় অনেকক্ষণ পরেও একটা হুমটা কেন আসছে না। ভাব এভাবে নাকি আমাদের জীবনেও বিপদ ঘটছে। গাছ ধ্বংস এই নীরবতাকে কিভাবে কমাতে পারে কী?

  • শব্দকে জব্দ করতে পারে তেল, হাতি, ও বাবুলএর মতো গাছ। বনের গভীরতায় যত শব্দ থাকে।

বনের গভীরতা যতো বা কমবে তত শব্দের তীব্রতাও কমবে। তাই এখন আমাদের শব্দ দূষণ কোথায় কোথায় পাওয়া যাবে -

  • 1. যানবাহন চলাচলের পথে ধু-ধু।
  • 2. ....................
  • 3. ....................
  • 4. ....................
  • 5. ....................

পরিবেশ দিবস পালন উপলক্ষে সিথুয়ের গাছের এত উপকারের কথা জানতে পেরে অবাক হয়ে গেল। পরিবেশবিদের প্রধান অভিযান হলো সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্য পরিবেশের সবরকম জীব ও অজৈব উপাদানের ভান্ডার। উপকূলবর্তী অঞ্চলকে বছরের পর বছর ধরে রেখেছে। একটা পরিণত ম্যানগ্রোভ

পরিবেশ সংকট, উদ্ভিদ ও পরিবেশের সংরক্ষণ

গাছ বছরে প্রতি এক হেক্টর জমিতে 47 কেজি নাইট্রোজেন, 26 কেজি পটাশিয়াম, 99 কেজি ক্যালসিয়াম, 34 কেজি ম্যাগনেসিয়াম আর 32 কেজি সোডিয়াম সরবরাহ করে। এজন্য এদের বাড়িতে রাখা খুব জরুরি।

Mangrove forest

গাছ তথা অরণ্য ধ্বংসে করলে মানুষ শুধু কাঠ পায়। কিন্তু তার ফলে পরিবেশ ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যায়।

এবার তাহলে পরিবেশ দিবস উপলক্ষে তোমরা পরিবেশকে বাঁচায় এমন কোন কোন গাছ পুঁতলে তা লিখে ফেলো:

  • (i) বিদ্যালয়ে ....................
  • (ii) রাস্তার দু-ধারে ....................
  • (iii) চাষের জমির আশেপাশে ....................
  • (iv) পুকুর পাড়ে ....................
Banyan tree Shimul tree Sal tree Mango tree Coconut tree Bamboo tree Deodar tree

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য

পরিবেশ সংকট ও দৈহিক স্বাস্থ্য

জ্বর মাপার জন্য আমরা কোন যন্ত্র ব্যবহার করি? ....................।

ইলেকট্রিক বাল্ব বা টিউবলাইটের বদলে রাস্তায় ইদানীং কোন ধরনের আলো ব্যবহার করা হচ্ছে? ....................।

Thermometer

থার্মোমিটারে তাপ আর ফুসফুসের বাল্ব তৈরি করতে রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। একটা বিশেষ ধাতু ব্যবহার করা হয়। কী ধাতু কী?

Mercury CFL bulb

ধাতুর আবিষ্কার ও ব্যবহার হওয়ার পর থেকে মানুষ নানা প্রয়োজনে তামা, লোহা, দস্তা, অ্যালুমিনিয়াম, পারদ ও নিকেলএর মতো বহু ধাতু ব্যবহার করেছে। এই সকল ধাতুর নাম আর জৈব যৌগ মানুষের দেহ বা পানীয়র মধ্যে দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশে প্রবেশ করেছে। আর তা থেকেই নানা রোগ দেখা দিচ্ছে।

টুকরো কথা

জাপানের সমুদ্রের ধারে এক ছোটো শহর হলো মিনামাতা। 1908 সালে সেখানে চিসো কর্পোরেশন একটা কারখানা খোলে। ও ওই কারখানা থেকে পারদ মেশানো বর্জ্য ক্রমাগত সমুদ্রের জলে মিশতে থাকে। 1930-এর দশক থেকে দেশে রোগ বাড়তে থাকে। বেডাল ও মানুষ অজানা কারণে মারা যেতে লাগল। 1956 সালে বহু মানুষের দেহে একইরকম উপসর্গ দেখা যেতে লাগল – পেশির দুর্বলতা, দেহের নড়চড় মতো বাঁকা, জিভ ও মুখের পেশি অসাড় হয়ে যাওয়া। অনেক বিকল্প কাজ ও অন্য শিল্পেরও জন্ম হচ্ছে। রোগ বাড়বার পেছনে এই এলাকার আক্রান্ত মানুষজন দীর্ঘদিন ধরে সমুদ্রের মাছ ও কাঁকড়া খাচ্ছিল। আর তার মধ্যে ছিল বিষাক্ত পারদের যৌগ ও মানুষের দেহে প্রবেশ করেছে। আর তা থেকেই এই সংকটের সূচনা।

এবার তোমরা জানার চেষ্টা করো মানুষের দেহে আর কোন কোন উৎস থেকে পারদ প্রবেশের ঝুঁকি থাকতে পারে।

  • (1) ....................
  • (2) ....................
  • (3) ....................
  • (4) ....................

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য

সূর্য নক্ষত্রের বাড়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনা আর মনোজ হেমেত্রের বাড়ে বীড়াগম জেলায়। দীর্ঘদিন ধরে অনাহারেতে মনো রোগ এবং চামড়া ও দাঁতের সমস্যা ভুগছে।

সূর্য নক্ষত্রের অসুস্থ মনোজ হেমন্তের অসুস্থ
(1) হাতের ওপরের তালুতে খসখসে উঁচু ছোপ।(1) দাঁতে ছোপ ছোপ দাগ।
(2) চামড়ার রং কালো।(2) দাঁত ও হাড় ছায়াছিয়ে যেতে পারে।
(3) বুকে ও পিঠেতে কালো ছোপ।(3) পিঠ ধনুকের মতো বেঁকে গেছে।
(4) পায়ের নানা জায়গায় ক্ষত।(4) চলার সময় হাঁটু দুটো টোকা খায়।

সূর্য ও মনোজকে দেখে ডাক্তারবাবুরা বললেন আর্সেনিক ও ফ্লুওরাইডের প্রভাবে নাকি এই ধরনের অসুস্থ হয়।

টুকরো কথা

পশ্চিমবঙ্গের মালদহ, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ও দক্ষিণ 24 পরগনা জেলার মাটির নীচে আর্সেনিকের বেশ কিছু খনিজ স্তর আছে। কৃষিজমিতে সেচ ব্যবস্থার প্রচলনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ প্রচুর পরিমাণে ভূগর্ভস্থ জল নলকূপ দিয়ে তুলতে শুরু করে। নলকূপের মধ্য দিয়ে বায়ুর অক্সিজেন ঢুকে পড়ে। ওই অক্সিজেনের সঙ্গে আর্সেনিকের বিক্রিয়া ঘটে নানা দ্রব্য যোগে পরিণত হতে শুরু করে। ওই যৌগ জল দীর্ঘদিন ধরে পান করলে দেহের শরীরের মতো অসুস্থ দেখা যায়। এক লিটার জল 0.05 মিলিগ্রাম বা তার বেশি মাত্রায় আর্সেনিক থাকলে সেই জল পান করা উচিত নয়।

পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম, বাঁকুড়া ও মালদহ জেলায় মাটির নীচে ফ্লুওরাইডের কিছু খনিজ পদার্থ আছে। এদের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ভূগর্ভস্থ জল ফ্লুওরাইড আয়ন দ্রবীভূত হয়। নলকূপের সাহায্যে ওই জল তুলে দীর্ঘদিন পান করলে মনোজের অসুস্থ দেখা যায়। এক লিটার পানীয় জল 1.5 মিলিগ্রাম ফ্লুওরাইড থাকলে দাঁত ও হাড়ের নানা সমস্যা দেখা দেয়।

এবার তোমরা জানার চেষ্টা করো মানুষের দেহে আর কোন কোন উৎস থেকে আর্সেনিক ও ফ্লুওরাইড প্রবেশের ঝুঁকি থাকতে পারে।

  • (1) ....................
  • (2) ....................
  • (3) ....................
  • (4) ....................

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

মানুষের বিভিন্ন পেশা-সমস্যা ও রোগ

Driving a car Cutting trees Chemical experiment Mining Playing football Burning garbage Farming Woodwork Butchering meat Factory

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য

পাশের ছবিগুলো এমন অনেক পেশা মানুষের আছে। দৈনন্দিন জীবনে ওই পেশায় যুক্ত থাকার মানুয়েরা কোনো না কোনো রোগে আক্রান্ত। তাহলে ওই ওপরের ছবির মানুয়েরা নানা পেশায় যুক্ত মানুষের সমস্যাগুলো লক্ষ্য করো। সারণিতে পেশা ও রোগের মধ্যে সম্পর্ক বিধান করো। (একটি অসুখ/রোগ একাধিক পেশার সঙ্গে যুক্ত হতে পারে)।

উপরের ছবিতে উল্লিখিত বিভিন্ন পেশা সংশ্লিষ্ট রোগ
1. মোটর গাড়ি চালানো(ক) পিঠে ও ঘাড়ে ব্যথা, চোখের সমস্যা
2. কারখানায় কাজ করা(খ) পাতার ফাকে সুজ চামড়া ছিঁড়ে যায়।
3. মাটি কাটা(গ) পিঠে ও ঘাড়ে ব্যথা
4. ফুটবল খেলা(ঘ) হাড় ভেঙে যাওয়া, কার্টিলেজ ছিঁড়ে যাওয়া
5. উনুন সামনে রান্না করা(ঙ) ঠোঁট কুঁকড়ে গিয়ে ঘুঁটে খায়।
6. খেলায় কাজ(চ) ফুসফুসে কলারের গুঁড়ো জমে যাওয়া
7. মাটি ধান রোয়া ও চাষ করা(ছ) পিঠে ও ঘাড়ে ব্যথা
8. ল্যাবরেটরি তে কাজ করা(জ) হাতে ও ঘাড়ে ব্যথা
9. মাথায় করে ভারী জিনিস বহন করা(ঝ) ঘাড়ে ব্যথা ও চোখের সমস্যা
10. মাংস কাটা(ঞ) হাতের সমস্যা
11. হাড় গুঁড়ো ও তেল দিয়ে কাজ করা(ট) ক্যানসার
12. চাষের জমিতে ফসল কাটা

পেশাগত রোগের বিভিন্ন কারণ

মানুষ বিভিন্ন ভৌত ও রাসায়নিক পরিবেশের মধ্যে বিভিন্ন পেশা থেকে কাজ করে। এ সকল ভৌত ও রাসায়নিক প্রভাবকের কারণে শরীরের নানা পেশায় নানা রোগ ও সমস্যা সৃষ্টি হয়। এবার এসো দেখি কোন প্রভাবকের জন্য মানুষের শরীরে নানা পেশাগত ব্যবহার বৃদ্ধি হয়।

  • (a) ভৌত পরিবেশ :
  • আলোর উৎসবের ক্ষেত্রে নীচের বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করো—

    • (a) কেমন বাড়িতে থাকেন? খুব খোলামেলা / অল্প খোলামেলা / অন্ধকার খোলামেলা।
    • (b) কীরকম জায়গায় কাজ করেন? কারখানা/শুড়িমোড়া/মাঠ/বাজার/বাস/ট্রেন/খনি।
    • (c) বাড়িতে ও কাজের জায়গায় আলোর উৎস কৃত্রিম না প্রাকৃতিক? ....................।
    • (d) বাড়িতে ও কাজের জায়গায় আলোর উৎস কেমন? ....................।
    • (e) বাড়িতে ও কাজের জায়গায় থেকে আলোর উৎস দূরত্ব কত (মাপের মতো দেখতে পাচ্ছ)?

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

  • (f) বাড়িতে ও কাজের জায়গায় এক এক জায়গায় লাগানো আছে কেন খোলামেলা করা যায়? ....................।
  • (g) বাড়িতে ও কাজের জায়গায় ব্যবহৃত আলোর উৎস বেশি। এই সমস্যাটি হলো ....................।

এবার ওপরের আলোচনার সাথে নীচের কী কী সমস্যা হতে পারে বলো তোমার মনে হয়?

  • অন্ধকারে বা ডার্করুমে একটা অনেকক্ষণ কাজ করেন ....................।
  • চোখ বালবানা আলোর নিচে দীর্ঘ সময় বসে কাজ করলে ....................।
  • সূর্য আলোতে দীর্ঘ সময় ধরে লেখাপড়ার কাজ করলে ....................।

শব্দভান্ডার :

চোখের ছবি, চোখ জ্বলে, চোখ টানে, মাথা ব্যথা ও মাথা ধরে।

  • (2) এক্স রশ্মি : রোগীর শরীরের ভেতরের আঘাত বা রোগগুলো বিভিন্ন অঙ্গের ছবি তুলতে এক্স রশ্মি ব্যবহার করা হয়। এই রশ্মি বেশি এবং বারবার সংস্পর্শে শরীরের কোষের ক্ষতি করে। এমনকি ক্ষতি হলে ক্যানসারও হতে পারে। এরপর মানুষের দেহের কী কী প্রভাব পড়তে পারে তা নীচে লেখো। (শিক্ষক/শিক্ষিকার সঙ্গে আলোচনা করে লেখো)।
(a) পাচনল ইউরেনিয়াম, নিউটোনিয়াম প্রভৃতি পদার্থ ও তাদের যৌগ থেকে কীভাবে এক্স রশ্মি পাওয়া যায়।
(b) ফুসফুসএইসব এক্স ক্যানসার সৃষ্টি করতে পারে।
(c) অস্থিমজ্জাএর প্রভাবের জন্য কী কী প্রভাব আছে।

শব্দভান্ডার :

রক্তকোষ ঠিকমতো তৈরি না হওয়া, বমি ভাব, জিভে ঘা হওয়া, পাতলা পায়খানা, শ্বাসকষ্ট, রক্তক্ষরণ, ক্যানসার।

এছাড়াও ছোটো ছোটো কাজ করলে বিদেশে সতর্কতা থাকে। মানুষকে নানা ব্যাধি সৃষ্টি হতে পারে। নীচের তালিকাটি তোমার বন্ধু বা শিক্ষক/শিক্ষিকার সঙ্গে আলোচনা করে পূরণ করো।

পেশাগত ক্ষেত্রের ব্যাধি সৃষ্টিকারী অন্যান্য ভৌত কারণসমূহ সৃষ্ট রোগ/উপসর্গসমূহ
1. বিদ্যুৎশক লাগা,
2. তাপপুড়ে যাওয়া
3. ধোঁয়াফুসফুস ক্ষত,
4. শব্দবধিরতা,
5. তেজস্ক্রিয় পদার্থরক্তাল্পতা, ক্যানসার।
  • (b) রাসায়নিক পরিবেশ : মানুষ প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে এসেছে। নানা রোগ এর ফলে মানুষের শরীরে বাসা বেঁধেছে। এবার তোমরা নীচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করো—
  • 1. প্রাচীন মিউরিয়েটিক অ্যাসিডযুক্ত বাসনপত্র অলংকৃত করতে কোন ধাতুর ব্যবহার করত? ........ (লোহা/তামা/জিঙ্ক)

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য

2. ঘনীর বাতাসের মধ্যে কোন গ্যাস থাকলে শ্রমিকদের মৃত্যুর সম্ভাবনা থাকে?

.................... (হাইড্রোজেন/অক্সিজেন/কার্বন মনোক্সাইড)।

3. প্রসাধনী সামগ্রী, সুগন্ধিদ্রব্য ইত্যাদি রং করতে কোন রাসায়নিক যৌগ ব্যবহার করা হয়?

.................... (জল/সোডিয়াম ক্লোরাইড/সংশ্লেষিত জৈব রঞ্জক)।

4. দেয়ালের রং, খেলনা, বাড়ির ব্যাটারি তৈরি করতে কোন ধাতু বা ধাতুর যৌগ ব্যবহার করা হয়?

.................... (লোহা/সোডিয়াম/সিসা)

উপরের আলোচনায় আমরা রাসায়নিক পরিবেশের নানা ধরনের উপাদানের সঙ্গে পরিচিত হলাম। রাসায়নিক প্রকৃতি অনুযায়ী এরা হলো –

রাসায়নিক প্রকৃতি উপাদানের নাম
1. গ্যাস
2. ধাতু
3. সংশ্লেষিত যৌগ

আমিন মানুষ শিকার, পশুপালন কিংবা অন্যান্য কাজের প্রয়োজনে প্রচুর শক্তি ব্যবহার করে। ফলে রক্তের ফ্ল্যাট বা মুকোজেলে অনবরত পুড়তে হতে হয়। এখানে মানুষের নানা কাজে বেশি বেশি ব্যবহৃত হলে থাকলে পরিশ্রম ততই কমতে থাকে। বহু মানুষ এমন পেশায় যুক্ত হতে থাকেন যেখানে কায়িক শ্রমের তুলনায় মানসিক শ্রম বেশি। চেয়ার-টেবিলে বসে লেখা, হিসেব-নিকেশ করা, কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করার মতো পেশায় নিযুক্ত ব্যক্তিদের পেশীর সম্মান কম হয়। বিভিন্ন অংশে রক্ত সরবরাহ কমে যায়। এই পেশাগুলোতে নিযুক্ত ব্যক্তিদের মুকো আর ফ্যাটিকেজ কোষাণুগুলোর দরকার হয় না। অতিরিক্ত মুকোজ ও ফ্যাট কোষাণুতে জমা হয়ে থাকে। এবার বন্ধুদের, শিক্ষক/শিক্ষিকা বা ডাক্তারবাবুর সঙ্গে আলোচনা করে জানার চেষ্টা করো এধরনের পেশায় কোন কোন রোগের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।

  • (1) ডায়াবেটিস (2) উচ্চ রক্তচাপ (3) ঘাড়ে ব্যথা (4) অ্যানিমিয়া, (5) ...................., (6) ....................।
Computer user Obese person

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

তাহলে তোমরা বুঝতে পারছ যে-কোনো পেশাতেই কোনো না কোনো রোগের প্রকাশ ঘটার সম্ভাবনা থাকে। এবার নীচের পেশাগুলিতে নিযুক্ত ব্যক্তিদের কী কী রোগ বা সমস্যা দেখা যায় তা লেখার চেষ্টা করো।

পেশার নাম সংশ্লিষ্ট রোগ/সমস্যা
1. যারা চা পাতা তোলার কাজ করেন
2. যারা ইঁট ভাঙার কাজ করেন
3. যারা কাঠের কাজ করেন
4. যারা লালা বহন করেন
5. যারা রিক্সা টানেন
6. যারা উলানোর সামনে দীর্ঘ সময় রান্না করেন
7. যারা ঝুড়ো গুলো নিয়ে কাজ করেন
8. যারা হাসপাতালে কাজ করেন
9. যারা বিভিন্ন খনিতে কাজ করেন
10. যারা নির্মাণ শিল্পে কাজ করেন
11. যারা ল্যাবরেটরিতে কাজ করেন
12. যারা নানা কারখানায় কাজ করেন
13. যারা পটকল কাজ করেন
14. যারা বিভিন্ন জিনিস তৈরি করেন

শব্দভান্ডার : বাত, পেশিতে টান, ঘাড়ে ব্যথা, বদহজম, কম বা বেশি পিঠে ব্যথা, চোখ জ্বালা, শ্বাসকষ্ট, মাথাব্যথা, রক্তে কণা কমে যাওয়া, হাড় ভেঙে যাওয়া, পঙ্গুত্ব, অনিদ্রা, বধিরতা, আগুনে পুড়ে যাওয়া, ক্যানসার, দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া, রক্তাল্পতা, বেঁকে যাওয়া, হিট ক্র্যাম্প, আঙ্গুলের ডগায় পচন, পায়ের শিরায় অসুস্থ।

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য

স্বাস্থ্যের প্রকৃতি (দৈহিক, মানসিক)

Children playing Eating food Playing

স্বাস্থ্য বলতে দৈহিক, মানসিক এবং সামাজিক সুস্থতা বোঝায় কেবল নিরোগ অবস্থাকে নয়। অনেক সময় আমাদের শরীরের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ প্রক্রিয়া চলতে থাকে, যা বাইরে থেকে ধরা পড়ে না। সেক্ষেত্রে বাইরে থেকে নিরোগ দেখালেও ভিতর থেকে আমরা অসুস্থ।

তুমি তোমার স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য কী কী করো?

Morning meal

সকালে

  • 1.
  • 2.
  • 3.
  • 4.
Noon meal

দুপুরে

  • 1.
  • 2.
  • 3.
  • 4.
Afternoon play

বিকালে

  • 1.
  • 2.
  • 3.
  • 4.
Night sleep

রাতে

  • 1.
  • 2.
  • 3.
  • 4.

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

তোমার কবে শরীর খারাপ হয়েছিল? তখন কী হয়েছিল?

তখন কী অসুবিধা হয়েছিল? ....................।

Causes of illness

রোগের কারণ-জীবাণু

রোগ

পোশাক

পরিবেশ

রোগ সৃষ্টির কারণ (যেমন জীবাণু, দূষণ সৃষ্টিকারী পদার্থ ইত্যাদি) আর পোশাক এই দুইয়ের আন্তঃক্রিয়ায় রোগ সৃষ্টির জন্য যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন রোগের অনুকূল পরিবেশ (যেমন আর্দ্রতা, তাপমাত্রা ইত্যাদি কারণে রোগ হয়)। সুতরাং স্বাস্থ্য রক্ষায় প্রয়োজন রোগপ্রতিরোধ। যা কয়েকটি ধাপে পারে—

  • (1) টীকা গ্রহণ, খাদ্য বাইরে থেকে পুষ্টি উপাদান (আয়োডিন, আয়রন, ভিটামিন) যোগ করা।
  • (2) রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা।
  • (3) ভিন্ন দক্ষতা সম্পন্ন (Differently abled) মানুষের পুনর্বাসন।
  • (4) জীবনকুশলতা শিক্ষা।

জীবনের বিভিন্ন সময়ে নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় এবং তার মোকাবিলা করতে হয়। এছাড়াও নানা সময়ে আমাদের অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সামাজিক সম্পর্ক তৈরি করতে হয়, আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। এসবের মধ্য দিয়েই সংবেদনশীল ও সমাজমনস্ক মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার শিক্ষা হলো জীবনকুশলতা শিক্ষা

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য

Unicef, WHO পরিচিত দশটি জীবনকুশলতা আমরা আলোচনা করব।

দৈহিক কুশলতা সামাজিক কুশলতা বাধা বিপত্তি এড়ানোর কুশলতা
1. আত্মসচেতনতা6. পারস্পরিক সহযোগিতা9. মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ
2. বিশ্লেষণধর্মী চিন্তা7. পারস্পরিক সম্পর্ক10. আবেগ নিয়ন্ত্রণ
3. সিদ্ধান্ত নেওয়া8. সহানুভূতি
4. সমস্যা দূর করা
5. সৃজনশীল চিন্তা
Children 1 Children 2 Children 3

প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীকে চারটি করে কার্ড দেওয়া হলো। এবার চটপট লিখে ফেলো তো।

  • 1. উপরের ছবিগুলোতে কী কী দক্ষতা দেখানো হয়েছে?
  • 2. তোমার কি কি দক্ষতা আছে বলে মনে করো? (আলাদা করে লেখো)।
  • 3. তোমার কোন কোন কুশলতার বিকাশের প্রয়োজন আছে বলে মনে করো?

লেখা শেষে কার্যগুলো নিয়ে আলোচনা করো।

WHO logo

World Health Organization (WHO)

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা রাষ্ট্রসঙ্ঘের অধীন। বিশ্বের মানবস্বাস্থ্যের রক্ষায় গবেষণা করে। 1949 সালে 7ই এপ্রিল স্থাপিত হয়। হেডকোয়াটার হলো সুইজারল্যান্ডের জেনেভায়।

UNICEF logo

UNICEF- United Nations International Children’s Emergency Fund

উন্নয়নশীল দেশগুলোর শিশু ও মায়েদের স্বাস্থ্য নিয়ে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে গবেষণা করে। 1946 সালের 11ই ডিসেম্বর রাষ্ট্রসঙ্ঘের অধিবেশনে এই সংস্থা গঠিত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের জরুরি খাদ্য এবং স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারের জন্য এই সংস্থা গঠিত হয়।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

পাশের ছবিটিতে দেখানো গাছটি নিজেদের মধ্যে আলোচনা করো। তারপর নীচের ছকটি পূরণ করে ফেলো।

Paper bird
সমস্যা কী কী ছিল কাক কীভাবে সমাধান করেছিল
1.
2.
3.
4.
5.

এবার তোমরা তোমাদের জীবনে সমস্যা সমাধানে কী কী কুশলতা প্রয়োগ করতে পারো তা দলে আলোচনা করে লেখো।

সমস্যা জীবনকুশলতা
1.
2.
3.
4.
5.
6.
7.
8.

নিজেদেরকে জানো

নীচের ছবিগুলোতে কী কী ধরনের অনুভূতির প্রকাশ পেয়েছে তা নীচের বক্সে লিখে ফেলো।

Emotion 1 Emotion 2 Emotion 3

কর্মপত্র

  • 1. আমার নাম : ....................
  • 2. পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক : ....................
  • 3. আমার সবথেকে ভালো লাগে : ....................
  • 4. আমার প্রিয় রং : ....................
  • 5. আমার খুব আনন্দ হয় যখন : ....................
  • 6. আমার খুব দুঃখ হয় যখন : ....................
  • 7. আমার খুব রাগ হয় যখন : ....................
  • 8. আমার শরীরে যা যা অসুবিধা হয় : ....................
  • 9. অসুবিধা হলে আমার মনের অবস্থা : ....................
  • 10. যেসব অসুবিধা আমি কাটিয়ে উঠতে পেরেছি : ....................
  • 11. যেসব অসুবিধা এখনও রয়ে গেছে : ....................
  • 12. বন্ধুদের নানা সমস্যা সমাধানের জন্য আমি যা যা করি : ....................

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

স্নায়ু ও মনের স্বাস্থ্য

শারীরিক স্বাস্থ্য অর্জনের লক্ষ্যে শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যও সমান গুরুত্বপূর্ণ এবং এরা একে অপরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে যুক্ত। মানসিক স্বাস্থ্য আমাদের স্নায়ুর উপর চাপ ফেলে, যা থেকে শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। এটা উল্টোদিকেও সত্যি।

মানসিক সমস্যার কারণ:

  • 1. জন্মগত ত্রুটি - গর্ভঅবস্থায় অপুষ্টি, বিভিন্ন রোগ সংক্রমণ জন্ম হওয়ার পর শিশুর মন ও বুদ্ধির বিকাশে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
  • 2. মানসিক চাপ - আশেপাশের পরিবর্তিত পরিস্থিতির চাপ (বিভিন্ন হিংসাত্মক ঘটনা, অপ্রত্যাশিত ঘটনা) আমাদের মনের প্রবণতাকে বাড়িয়ে দেয়। অনেক সময় সেই মানসিক চাপ আমরা সহ্য করতে পারি না।
  • 3. আমাদের বাড়ির অভ্যন্তরের নানা টানাপোড়েন।
  • 4. মানসিক দ্বন্দ্ব ও সিদ্ধান্ত নিতে না পারা।
  • 5. নেশা।

ওপরের কারণগুলোর জন্য কী কী সমস্যা হতে পারে তা জানার চেষ্টা করো:

  • 1. ডিসলেক্সিয়া (পড়া বুঝতে বা মনে রাখতে আর লিখতে অসুবিধা হয়। অক্ষর চিনতে ও লিখতে, বানান মনে রাখতে, অঙ্ক হিসেব করতে, নানা তথ্য মনে রাখতে বা বুঝাতে অসুবিধা হয়)।
  • 2. ....................
  • 3. ....................
  • 4. ....................
  • 5. ....................
  • 6. ....................
  • 7. ....................

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য

এসো দেখি নীচের কারণগুলো কী কী ধরনের মানসিক সমস্যা তৈরি করে –

রামের সমস্যা রামের দাদার তুলনায় রাম অনেক দেরিতে হাঁটতে, চলতে, কথা বলতে শেখে।
লেখাপড়ায় পিছিয়ে যাওয়া
নান্দনিক ও সৃষ্টিশীল কাজে আগ্রহ হ্রাস
ডান-বাম চিনতে না পারা
নিজের কাজ করতে না পারা
সমাজে মানিয়ে চলতে না পারা
হতাশা ও অবসাদ

সমস্যাটি হলো মানসিক প্রতিবন্ধকতা

আয়েনার সমস্যা

একই কাজ বারবার করা আয়েনা দু-বছর বয়স পর্যন্ত অন্য শিশুদের মতোই ছিল, তারপরে ওর বাবা-মা এই সমস্যাগুলো লক্ষ্য করতে থাকেন।
আত্মীয় পরিজনদের থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া
সামান্য উত্তেজেনাতেও অতিরিক্ত সংবেদনশীল
অনেক সময় বেশি উত্তেজেনাতেও পাড়া যায় না
অচেনা পরিবেশে মানিয়ে চলতে পারে না
পড়াশোনায় পিছিয়ে যাওয়া
Child 1 Child 2

সমস্যাটি হলো অটিজম

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

জোসেকের সমস্যা

ক্লাসে স্থিরভাবে বসতে পারে না। অফিস থেকে ফেরার পর জোসেফের বাবা প্রায়ই ভীষণ রেগে থাকেন ও কারণে-অকারণে ওকে মারধর করেন।
সহপাঠীদের ক্রমাগত বিরক্ত করে।
একই কাজে বা খেলায় মনোনিবেশ করতে পারে না।
বাড়িতে ও ক্লাসে একই সমস্যা চলতে থাকে।
রেগে গিয়ে জিনিসপত্র ভাঙচুর করে।
Father and son

সমস্যাটি হলো মনোযোগহীনতা

অ্যানিমিয়া ও রোহনের সমস্যা

ক্রমাগত উদ্বেগে ভোগা।
শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি।
উদ্বেগহীনতা।
উদ্বেগজনক পরিস্থিতি এড়িয়ে চলা।
কখনো-কখনো ভীষণ রাগ হওয়া।
Girl and boy

অ্যানিমিয়া রোহন দুই ভাইবোন। মা বাবা প্রায়ই ভীষণ রেগে থাকেন। কখন কখন কী কী শক্তি পেতে হবে, সেই ভয়ে দুজনেই চুপচাপ থাকে। ওরা মায়ের কাছে বসতে ভয় পায়। পারিপার্শ্বিক চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারে না। অ্যানিমিয়া প্রায়দিনই রাতে ঘুম আসে না। খিদেও পায় না। রোহনের অবস্থা ঠিক তার উল্টো।

সমস্যাটি হলো মানসিক উদ্বেগ

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য

স্মিতির সমস্যা

বানান করে পড়তে অসুবিধা। লিখতে এবং অঙ্ক করতে স্মিতির ভীষণ অসুবিধা।
নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া।
পড়াশোনায় মনোযোগের অভাব।
পড়াশোনায় বাইরে কোনো একটা বিষয়ে অন্যদের তুলনায় বিশেষ পারদর্শী।
Learning difficulty

সমস্যাটি হলো পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়া

রতনের সমস্যা

খিদের খুব বেড়ে যাওয়া। সবসময় খেতে ও ঘুমোতে রতনের খুব ভালো লাগে।
ঘুম বেড়ে যাওয়া।
প্রায় সময় কাদা।
মন খারাপ করে একা একা থাকা।
সবসময় অসহায় বোধ করা।
Sad boy

সমস্যাটি হলো মানসিক অবসাদ বা ডিপ্রেশন

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

মনোরোগী ও মনোচিকিৎসক

মনোবিদরা আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সেবা দেন। বিভিন্ন রোগ এবং টানাপোড়েনে আমরা মনোবিদের সাহায্য নিই। তাঁরা আলোচনা মাধ্যমে সমস্যা শনাক্তকরণ ও তার থেকে মুক্তির উপায় বাতলে দেন।

মনোচিকিৎসকদের কাজ প্রায় মনোবিদদেরই মতো। তবে অনেক সময় ওষুধের দ্বারা মানসিক রোগ নিরাময় সম্ভব এবং যেখানে মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতা পরস্পর সম্পর্কযুক্ত সেখানে মনোচিকিৎসকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে।

মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে আমরা যা কিছু করি:

  • 1. ব্যবহারিক পরিবর্তন (কু-অভ্যাস শনাক্তকরণ ও দূরীকরণ)।
  • 2. মনোবল বৃদ্ধি (কোনো কৃত্যহ্রাস ছাড়ার জন্য মনের জোরকে বাড়িয়ে তোলা)।
  • 3. মনের কথা খুলে বলা।
  • 4. বিতর্কিত ব্যাপারে খোলাখুলি আলোচনা করা।
  • 5. ধ্যান ও একাগ্রতা বৃদ্ধি।
  • 6. পাঠক্রম-বহির্ভূত ব্যাপারে চর্চা – ছবি আঁকা, গান, খেলাধুলা ইত্যাদি।

উপরের বিষয়গুলো দেখে তুমি তোমার মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য কী কী করবে তার তালিকা তৈরি করো।

  • 1. ....................
  • 2. ....................
  • 3. ....................
  • 4. ....................
  • 5. ....................
  • 6. ....................

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য

নীচের ছবিগুলো থেকে তুমি কোনগুলোকে বেছে নেবে তোমার রাগ কমানোর জন্য এবং কেন?

Listening to music Doing exercise Singing Reading book Playing game Talking face to face Dancing to music Watering garden Doing pranayama
রাগ কমানোর উপায় রাগ কমানোর উপায়টি কেন বেছে নিলে

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

সংক্রামক রোগ ও তার প্রতিকার

বায়ুবাহিত রোগ

সুস্থ তো আমরা সবাই থাকতে চাই। কিন্তু রোগ তাও আমাদের পিছু ছাড়ে না। তোমার পরিবারে বা পাড়ায় তুমি নিশ্চয়ই বিভিন্ন লোককে নানারকম রোগে ভুগতে দেখেছ। এমন কি তুমি হয়তো কখনও অসুস্থ হয়েছ।

তোমার পরিবার বা তোমার পাড়ায় তুমি কী কী রোগ দেখেছ তার একটি তালিকা তৈরি করো। ওইসব রোগগুলো কীভাবে ছড়াতে পারে সেটা একটু করে লেখার চেষ্টা করো।

রোগের নাম কীভাবে ছড়ায়
1.সাধারণ সর্দিকাশি1. বায়ুর মাধ্যমে
2. আমাশয়2. জলের মাধ্যমে
3. ম্যালেরিয়া3.
4.4.
5.5.

তাহলে তোমরা দেখতে পেলে যে, বিভিন্ন ধরনের রোগ বিভিন্নভাবে ছড়ায় – কখনও জল, কখনও বা বায়ু, আবার কখনও বা অন্য কোনো জীবের সাহায্যে।

Sitting with friends Hunting

বসন্ত রোগের আক্রমণ

কানাডা ভূখণ্ডের দখল নিয়ে যখন চলছিল ব্রিটিশ সেনাদের সঙ্গে সেখানকার আদিবাসী ফরাসি আর স্থানীয় আমেরিকান আদিবাসীদের (ফ্রেঞ্চ-ইন্ডিয়ান ওয়ার: 1754-1763)। এখনকার বিজ্ঞানীরা বলেছেন যে পঠ ফ্রন্ট পিট (Fort Pitt)-এ ব্রিটিশ সেনাদেরকে রেখেছিল পকেট আমেরিকা। ব্রিটিশ জেনারেল লর্ড ডর্জিম

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

  • এই তরলগুলো আকারে বড়ো হওয়ায় নিজেদের দেহের মাটিতে এসে পড়ে। আর পুষ্টিও পায়।
  • এরপর এইসব রোগজীবাণুগুলোর স্পর্শে মিশে খাদ্যের মধ্য দিয়ে যাওয়া। আবার নাক ও মুখ দিয়ে এইসব রোগজীবাণু সুখ শোষণ করে প্রবেশ করে।
  • পশু থেকে মানুষের দেহে রোগ :

কৃষি সভ্যতার প্রথম যুগে মানুষ তার নিজের প্রয়োজনে নিজে পশু পালন করে। মানুষ আর পশু-পাখি পাশাপাশি থাকতে অভ্যস্ত ছিল। নিজেরা কৃষি কাজ করত। সেখানে পশুদের ব্যবহার করা হতো। এদের ব্যবহার ছিল – পশুপালন, তাদের চামড়া থেকে পোশাক তৈরি, জুতো তৈরি ইত্যাদি। পশুদের মলমূত্রের মধ্য দিয়ে তাদের নানান সংক্রামক অসুখ সৃষ্টি হতো মানুষের দেহে।

কাবুলের রাজারা খামরার সময় খোদাই করা একটি পাথরে সবুজ পৃথিবীর রোগ জীবাণু (TB) রোগের জীবাণু ছিল। প্রাণীর রক্তে সেই জীবাণু প্রবেশ করত। রোগ সংক্রমণ ও শিল্পায়নের সময় অনেক লোক যখন একসঙ্গে ছোটো জায়গায় থাকত, তখন জীবাণু দ্রুত ছড়িয়ে পড়ত। মানুষ মারা যেত। জীবাণু খুব শক্তিশালী।

নিজেকে আলোচনা করে আরও কিছু শিক্ষক/শিক্ষিকা বা বাড়ির বড়দের সঙ্গে আলোচনা করে নীচের সারণিটা পূরণ করো। প্রয়োজনে তোমার ডাক্তারবাবুর সাহায্য নাও।

রোগের নাম রোগের লক্ষণ রোগীর প্রতিকার
1. যক্ষ্মাi. একনাগাড়ে জ্বর
ii. কাশি
iii. থুতুর সঙ্গে রক্ত পড়া
i. স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বা হাসপাতালে ডাক্তার দেখিয়ে তাঁর পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধের চিকিৎসা করা দরকার।
ii. যথেষ্ঠ জল পান করা দরকার।
iii. পুষ্টিকর খাবার খাওয়া দরকার।
iv.
2. সাধারণ সর্দিকাশিi. নাক দিয়ে জলের মতো পাতলা সর্দি
ii. কাশি
i. ....................
ii. ....................
iii. ....................
iv. ....................
3. ইনফ্লুয়েঞ্জাi. হাঁচি ও কাশি
ii. গা, হাত, পা-য়ে ব্যথা
iii. জ্বর
i. ....................
ii. ....................
iii. ....................
iv. ....................

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য

কাঁচের গুঁড়ো, ফুলের রেণু আর হাঁচি-কাশি

সেদিন স্কুলের মিড-ডে মিলে ডিমের তরকারি হয়েছে। অমিত বলল, আমি ডিম খাব না। ডিম খেলে আমার গালে লাল লাল দাগ বেরিয়া যায়। তিনি হয়, কখনও বমি ও ডিম খাচ্ছেন।

রুবিনা বলল, সে কী রে, তুই ডিম খেতে পারিস না। তাহলে তোর ডিমটা আমাকে দে। তোর কী কষ্ট রে! অমিত বলল, ডাক্তারবাবু বলেছেন আমার ডিমে অ্যালার্জি আছে।

প্রেরণা বলল, অ্যালার্জি কী রে?

আয়েনা বলল, ঠিক জানি না। তবে জিনিস তো আমারও না অমিত্ররই মতো সমস্যা আছে। তবে ডিম, গুলা খাচ্ছি না।

বাড়িতে বড়ি ঝলমলে ধুলো। লেপ-তোষকের ধুলো। আলমারি থেকে ধুলো। আর নাকে গেলে হাঁচি পায়। চোখ নাক জ্বালা করে।

তোমরা ও বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করো। আর নিজেরাও ভেবে দেখো তো, তোমাদের কার কার এই ধরনের সমস্যা হয়। আর ওই সমস্যার মূলে কোন জিনিসটা দায়ী, সেটাও লিখে ফেলার চেষ্টা করো।

কী জিনিস থেকে কী কী সমস্যা হয়েছিল কী করে সমস্যা থেকে মুক্তি পেয়েছি
1. ডিম খেলেআমার ডিমের অ্যালার্জি আছে।
2. ধুলো নাকে গেলে
3.
4.

বিভিন্ন বস্তুর বাতাসে থাকলে তোমাদের দেহে নানারকম সমস্যা (গায়ে লাল লাল দাগ, হাঁচি, চোখ নাক জ্বালা করা, বমি ইত্যাদি) দেখা যায়, সেটাই হলো অ্যালার্জি। আর যেসব বস্তুর জন্য তোমাদের দেহে অ্যালার্জি তৈরি করে, তারাই হলো অ্যালার্জেন। কয়েকটি অ্যালার্জেন হলো ডিম, ধুলো।

বায়ুবাহিত বিভিন্ন রোগের হাত থেকে বাঁচার জন্য কী কী করা উচিত এসো তা লিখে ফেলি।

বায়ুবাহিত বিভিন্ন রোগের হাত থেকে বাঁচার উপায়

Nose covered
  • 1. অসুস্থ অবস্থায় হাঁচি/কাশির সময় মুখ আর নাক রুমাল দিয়ে ঢেকে রাখা দরকার।
  • 2. যেখানে সেখানে থুতু না ফেলা।
  • 3. ....................
  • 4. ....................

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

বায়ুবাহিত আরও কিছু রোগ সম্পর্কে জেনে নীচের সারণিটি পূরণ করো। প্রয়োজনে তোমার শিক্ষক/শিক্ষিকার সাহায্য নিতে পারো।

রোগের নাম জীবাণুর প্রকৃতি (ভাইরাস/ব্যাকটেরিয়া) লক্ষণ প্রতিকার কীভাবে এই রোগটি সম্পর্কে জানলে
1. সাধারণ সর্দিকাশি
2. যক্ষ্মা

কিছু বায়ুবাহিত রোগ আর তাদের জীবাণু। নীচের সারণিতে দেওয়া জীবাণুর ছবিগুলো অনেকক্ষণ বড়ো করে দেখানো হয়েছে।

রোগের নাম জীবাণুর ছবি জীবাণুর প্রকৃতি
1. সাধারণ সর্দিকাশিVirusভাইরাস
2. যক্ষ্মাBacteriaব্যাকটেরিয়া

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য

জলবাহিত রোগ

Children eating food Children playing Family meal Market
Sick boy Sick girl

প্রথম তিনটে ছবিতে কী কী দেখতে পাচ্ছ? ....................।

শেষ দুটো ছবিতে কী কী দেখতে পাচ্ছ? ....................।

ছবিগুলো এক প্রসঙ্গে দেখে তোমার কী মনে হলো? ....................।

আসলে উপরের ছবিগুলোতে যেসব খাদ্য বা পানীয়ের কথা বলা হয়েছে, তাদের প্রধান উপাদান হলো জল। অনেক সময় সুস্বাদু খাদ্য বা পানীয় তৈরির জন্য বিশুদ্ধ জল ব্যবহার করা হয় না। আর ওই দূষিত জল থেকেই আমাদের শরীরে প্রবেশ করতে পারে কলেরা, টাইফয়েডের মতো বিষাক্ত রোগের জীবাণু। এর ফলে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়তে পারি।

তোমার কি কখনও এই রকম অসুস্থ হয়েছিলে? কী হয়েছিল আর কীভাবে সেরেছিলে সেটাও নীচের সারণিতে লেখো।

কবে হয়েছিল কী কী সমস্যা হয়েছিল কীভাবে অসুস্থ সেরেছিল

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

কিছুটা বা

কলেরা রোগের সংজ্ঞা হলো, একরকম সংক্রামক রোগ যার প্রধান লক্ষণ হলো বারবার পাতলা পায়খানা হওয়া। 1817 সালে কলেরা দেখা যায়। বোগোপাসারা চামচল ব্রিটিশ জাহাজের মাধ্যমে বাংলা থেকে ভারত সহ অন্যান্য দেশে পৌঁছে যায়। তারপর এটি মধ্য এশিয়া থেকে পারস্য, মধ্য এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া হয়ে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে পৌঁছে যায়।

History of Cholera

2010 সালেও সারা পৃথিবীতে কলেরার শিকার হয়েছিল প্রায় 1,00,000 - 1,30,000 মানুষ। আর প্রায় 30-50 লক্ষ মানুষই এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিল।

1827 সালে ভারতে গাঙ্গেয় উপত্যকা, কলকাতা আর তার আশেপাশে অঞ্চলে দ্বিতীয় কলেরার মহামারির সূচনা হয়। এরপর এই মহামারির বিস্তার গাঙ্গেয় উপত্যকা থেকে শুরু করে লাহোর আর আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে। সেখান থেকে ভুটান, পুনে ও রাশিয়ার আড়িয়া দিয়ে এটি মহামারীর বিস্তার ঘটে। 1835 সালের মধ্যে এই মহামারী আমেরিকা আর ইউরোপে পৌঁছে যায়।

1900 থেকে 1920 সালের মধ্যে এই রোগে ভারতে আনুমানিক 80 লক্ষ লোকের মৃত্যু হয়েছিল।

কলেরায় আক্রান্ত ব্যক্তির বারবার বমি আর মলত্যাগ। মলের রং চাল ধোয়া জলের মতো। মলে কোনো দুর্গন্ধ থাকে না।

রোগীর শরীর থেকে দিনে 10-11 লিটার মতো জল (আর নুন) বেরিয়ে যায়। শরীর থেকে এতটা জল আর নুন বেরিয়ে যাওয়ায় শরীর শীতল ও রক্তচাপ কমে যায়। এর থেকে ডিহাইড্রেশন বা জলশূন্যতা সৃষ্টি হয়।

Cholera disease and patient

এই রোগে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি শিশু আর বয়স্কদের। যারা অতিরিক্ত জল ও খনিজ লবণ হারিয়ে ফেলে।

বমি, পায়খানা, জল-তেষ্টা, পেট-ব্যথা, অবসাদ বোধ করা, পায়ের চামড়া পিচ্ছিলতা বা চামড়া শুকিয়ে যাওয়া, রক্তচাপ ক্রমশ নিচে নেমে যায়। জ্বর, মাথা ব্যথা, চোখের সমস্যা। কখনো এ মাত্রা 24-48 ঘন্টা।

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য

জীবনের মূল্য

আমরা সবাই বাঁচতে চাই। এই পৃথিবীতে আমরা এসেছি, বাবা-মায়ের হাত ধরে আমাদের জন্ম হয়েছে। আর তাদের অনেক স্বপ্ন। তারা আশা করে আমরা মানুষের মতো মানুষ হব। আমাদের সমাজে বাবা-মা, ভাইবোন, আত্মীয়-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব, শিক্ষক-শিক্ষিকা, প্রতিবেশীরা সবাই আছেন। তাদের সবার সঙ্গে আমরা মিলেমিশে কাজ করব। তবেই আমরা বাঁচতে পারব। এই জীবন আমাদের।

আর যে জীবনের মূল্য অনেক, তার মূল্য কি আমরা জানি? জানি তো। তাহলে কেন আমরা নিজেদের জীবনে বিপদ ডেকে আনি?

Value of life

তোমরা নিশ্চয়ই অনেক গল্প, কবিতা বা আলোচনা দেখেছ যে, মানুষের জীবনে অনেক বিপদ থাকে। এসব থেকে বাঁচার উপায় কী?

তোমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে নীচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।

  • 1. ধূমপান করলে কী কী ক্ষতি হয়? ....................
  • 2. মদ্যপান করলে কী কী ক্ষতি হয়? ....................
  • 3. ড্রাগস (Drugs) নিলে কী কী ক্ষতি হয়? ....................
  • 4. তামাক (Tobacco) ব্যবহার করলে কী কী ক্ষতি হয়? ....................

এগুলোর কী কী ক্ষতি হয়?

Smoking Drinking

ধূমপান করলে ফুসফুসের ক্যানসার, শ্বাসকষ্ট, রক্তচাপ বৃদ্ধি, হার্টের সমস্যা, ব্রেন স্ট্রোক ইত্যাদি রোগের ঝুঁকি বাড়ে।

মদ্যপান করলে লিভারের ক্ষতি, গ্যাস্ট্রিক, আলসার, হার্টের সমস্যা, ব্রেন স্ট্রোক ইত্যাদি রোগের ঝুঁকি বাড়ে।

ড্রাগস (Drugs) নিলে মানসিক স্বাস্থ্য নষ্ট হয়, শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, হেপাটাইটিস, এইডস ইত্যাদি রোগ হতে পারে।

তামাক (Tobacco) ব্যবহার করলে মুখের ক্যানসার, দাঁতের সমস্যা, হার্টের সমস্যা, স্ট্রোক ইত্যাদি রোগের ঝুঁকি বাড়ে।

এসব কি আমাদের জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যায়?

আমাদের জীবনে এগুলো কি দরকার?

এরকম আরও কিছু বিষয়ের নাম লেখো যা মানুষের জীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

  • 1. ....................
  • 2. ....................
  • 3. ....................

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

পরিবেশ দূষণ ও জনস্বাস্থ্য

গল্প : আজ মশা, মাছি, ইঁদুর, পশুপাখি, রোগজীবাণু ইত্যাদি নানা ধরনের জীব পরিবেশ দূষণ করে। এসব থেকে নানা রোগ ছড়ায়।

Environmental pollution and living beings

তোমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে নীচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।

  • 1. আমাদের আশেপাশে আবর্জনায় কী কী জীবাণু থাকে? ....................
  • 2. মশা, মাছি, ইঁদুর কী কী রোগ ছড়ায়? ....................
  • 3. পশুপাখির মল-মূত্র থেকে কী কী রোগ ছড়ায়? ....................
  • 4. কীভাবে এই রোগগুলো ছড়ায়? ....................
  • 5. এই রোগগুলো থেকে বাঁচতে কী কী করা যায়? ....................

জলবাহিত রোগ

কলেরা, টাইফয়েড, আমাশয়, জন্ডিস, হেপাটাইটিস, পেটের রোগ ইত্যাদি জলবাহিত রোগ। এই রোগগুলো দূষিত জল পান করলে বা দূষিত খাদ্য খেলে ছড়ায়।

জলবাহিত রোগ থেকে বাঁচতে কী কী করা উচিত? ....................।

কীটপতঙ্গবাহিত রোগ

ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, ফাইলেরিয়া, এনসেফ্যালাইটিস ইত্যাদি কীটপতঙ্গবাহিত রোগ। এই রোগগুলো মশা, মাছি, ছারপোকা, ইঁদুর, টিকটিকি ইত্যাদি কীটপতঙ্গের কামড় থেকে ছড়ায়।

কীটপতঙ্গবাহিত রোগ থেকে বাঁচতে কী কী করা উচিত? ....................।

বায়ুদূষণ

যানবাহন, কলকারখানা, ইঁট ভাটা, কাঠ পোড়ানো, আবর্জনা পোড়ানো, আগ্নেয়গিরি থেকে নির্গত ধোঁয়া, ধুলো, গ্যাস ইত্যাদি বায়ু দূষণ করে।

বায়ু দূষণের ফলে কী কী সমস্যা হয়? ....................।

বায়ু দূষণ থেকে বাঁচতে কী কী করা উচিত? ....................।

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য

শব্দ দূষণ

যানবাহন, কলকারখানা, লাউডস্পিকার, মাইক, পটকা, বোমা, মাইক, বাজনা ইত্যাদি থেকে উৎপন্ন শব্দ দূষণ করে।

শব্দ দূষণের ফলে কী কী সমস্যা হয়? ....................।

শব্দ দূষণ থেকে বাঁচতে কী কী করা উচিত? ....................।

জল দূষণ

কলকারখানার বর্জ্য, কৃষি জমির কীটনাশক, সার, বাড়ির আবর্জনা, পশুপাখির মল-মূত্র, পয়ঃপ্রণালীর বর্জ্য ইত্যাদি জল দূষণ করে।

জল দূষণের ফলে কী কী সমস্যা হয়? ....................।

জল দূষণ থেকে বাঁচতে কী কী করা উচিত? ....................।

মাটি দূষণ

প্লাস্টিক, পলিথিন, কীটনাশক, সার, তেজস্ক্রিয় পদার্থ, শিল্প বর্জ্য, হাসপাতালের বর্জ্য ইত্যাদি মাটি দূষণ করে।

মাটি দূষণের ফলে কী কী সমস্যা হয়? ....................।

মাটি দূষণ থেকে বাঁচতে কী কী করা উচিত? ....................।

তেজস্ক্রিয় দূষণ

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পারমাণবিক বোমা পরীক্ষা, তেজস্ক্রিয় বর্জ্য, এক্স-রে, সিটি স্ক্যান ইত্যাদি থেকে তেজস্ক্রিয় রশ্মি নির্গত হয়, যা তেজস্ক্রিয় দূষণ ঘটায়।

তেজস্ক্রিয় দূষণের ফলে কী কী সমস্যা হয়? ....................।

তেজস্ক্রিয় দূষণ থেকে বাঁচতে কী কী করা উচিত? ....................।

প্লাস্টিক দূষণ

পলিথিন, প্লাস্টিকের বোতল, প্লাস্টিকের ব্যাগ, প্লাস্টিকের খেলনা, প্লাস্টিকের বাসনপত্র ইত্যাদি প্লাস্টিক দূষণ করে।

প্লাস্টিক দূষণের ফলে কী কী সমস্যা হয়? ....................।

প্লাস্টিক দূষণ থেকে বাঁচতে কী কী করা উচিত? ....................।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

পরিবেশের ভারসাম্য

পরিবেশের ভারসাম্য বজায় না থাকলে জীবজগতে নানা সমস্যা দেখা যায়। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে কী কী করা উচিত? ....................।

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ

জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ অত্যন্ত জরুরি। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে কী কী করা উচিত? ....................।

বৃক্ষরোপণ ও বনায়ন

পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে বৃক্ষরোপণ ও বনায়ন অত্যন্ত জরুরি। বৃক্ষরোপণ ও বনায়নে কী কী করা উচিত? ....................।

জল সংরক্ষণ

জল হলো জীবনের উৎস। জল সংরক্ষণ অত্যন্ত জরুরি। জল সংরক্ষণ অত্যন্ত জরুরি। জল সংরক্ষণে কী কী করা উচিত? ....................।

জৈব সার ও জৈব কীটনাশক ব্যবহার

কৃষি জমিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের পরিবর্তে জৈব সার ও জৈব কীটনাশক ব্যবহার করলে মাটি ও জলের দূষণ কমে। জৈব সার ও জৈব কীটনাশক ব্যবহারে কী কী করা উচিত? ....................।

পুনর্ব্যবহার ও পুনর্বিক্রয়

বর্জ্য পদার্থের পুনর্ব্যবহার ও পুনর্বিক্রয় করলে পরিবেশ দূষণ কমে। পুনর্ব্যবহার ও পুনর্বিক্রয়ে কী কী করা উচিত? ....................।

পরিবেশ সচেতনতা

পরিবেশ সচেতনতা বাড়ালে পরিবেশ দূষণ কমে। পরিবেশ সচেতনতা বাড়াতে কী কী করা উচিত? ....................।

পরিবেশ শিক্ষা

পরিবেশ শিক্ষা মানুষকে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন করে। পরিবেশ শিক্ষা বাড়াতে কী কী করা উচিত? ....................।

পরিবেশ ও জনসংখ্যা

জনসংখ্যা বৃদ্ধি

পৃথিবীর জনসংখ্যা দ্রুত গতিতে বাড়ছে। এর ফলে নানা সমস্যা তৈরি হচ্ছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে কী কী সমস্যা হয়? ....................।

খাদ্য সংকট

জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে খাদ্যের চাহিদা বাড়ছে। এর ফলে খাদ্য সংকট দেখা দিচ্ছে। খাদ্য সংকট মোকাবিলায় কী কী করা উচিত? ....................।

জলের সংকট

জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে জলের চাহিদা বাড়ছে। এর ফলে জলের সংকট দেখা দিচ্ছে। জলের সংকট মোকাবিলায় কী কী করা উচিত? ....................।

বাসস্থানের সংকট

জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে বাসস্থানের চাহিদা বাড়ছে। এর ফলে বাসস্থানের সংকট দেখা দিচ্ছে। বাসস্থানের সংকট মোকাবিলায় কী কী করা উচিত? ....................।

পরিবেশ দূষণ

জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে পরিবেশ দূষণ বাড়ছে। পরিবেশ দূষণ মোকাবিলায় কী কী করা উচিত? ....................।

স্বাস্থ্য সমস্যা

জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে স্বাস্থ্য সমস্যা বাড়ছে। স্বাস্থ্য সমস্যা মোকাবিলায় কী কী করা উচিত? ....................।

শিক্ষা সমস্যা

জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে শিক্ষার চাহিদা বাড়ছে। এর ফলে শিক্ষা সমস্যা দেখা দিচ্ছে। শিক্ষা সমস্যা মোকাবিলায় কী কী করা উচিত? ....................।

দারিদ্র্য

জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে দারিদ্র্য বাড়ছে। দারিদ্র্য মোকাবিলায় কী কী করা উচিত? ....................।

বেকারত্ব

জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে বেকারত্ব বাড়ছে। বেকারত্ব মোকাবিলায় কী কী করা উচিত? ....................।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

পরিবার পরিকল্পনা

পরিবার পরিকল্পনা জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পরিবার পরিকল্পনার মাধ্যমে কী কী করা উচিত? ....................।

জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সরকারি পদক্ষেপ

জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সরকার নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সরকারি পদক্ষেপগুলো কী কী? ....................।

জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে জনগণের ভূমিকা

জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে জনগণেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। জনগণ কী কী করতে পারে? ....................।

জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও পরিবেশের ওপর প্রভাব

জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে পরিবেশের ওপর নানা ধরনের প্রভাব পড়ে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে পরিবেশের ওপর কী কী প্রভাব পড়ে? ....................।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পরিবেশের ওপর নানা ধরনের প্রভাব পড়ে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পরিবেশের ওপর কী কী প্রভাব পড়ে? ....................।

জীববৈচিত্র্য হ্রাসের কারণ

জীববৈচিত্র্য হ্রাসের নানা কারণ রয়েছে। জীববৈচিত্র্য হ্রাসের কারণগুলো কী কী? ....................।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কী কী করা উচিত? ....................।

পরিবেশ সংরক্ষণ আইন

পরিবেশ সংরক্ষণে নানা আইন রয়েছে। পরিবেশ সংরক্ষণ আইনগুলো কী কী? ....................।

পরিবেশ আন্দোলন

পরিবেশ সংরক্ষণে নানা আন্দোলন চলছে। পরিবেশ আন্দোলনগুলো কী কী? ....................।

পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধি

পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধি করলে পরিবেশ দূষণ কমে। পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধিতে কী কী করা উচিত? ....................।

পরিবেশ দিবস পালন

পরিবেশ দিবস পালনে মানুষ পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হয়। পরিবেশ দিবস পালনে কী কী করা উচিত? ....................।

পরিবেশবান্ধব জীবনযাপন

পরিবেশবান্ধব জীবনযাপন করলে পরিবেশ দূষণ কমে। পরিবেশবান্ধব জীবনযাপনে কী কী করা উচিত? ....................।

বিকল্প শক্তির ব্যবহার

বিকল্প শক্তির ব্যবহার পরিবেশ দূষণ কমাতে সাহায্য করে। বিকল্প শক্তির ব্যবহারে কী কী করা উচিত? ....................।

জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা

জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কী কী করা উচিত? ....................।

জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ

জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে কী কী করা উচিত? ....................।

পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে চলা

পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে চলা মানুষের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে চলতে কী কী করা উচিত? ....................।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা

প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় কী কী করা উচিত? ....................।

টেকসই উন্নয়ন

টেকসই উন্নয়ন পরিবেশ রক্ষা করে। টেকসই উন্নয়নে কী কী করা উচিত? ....................।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

পাঠসূচি ও নমুনা প্রশ্ন

প্রথম অধ্যায় : তাপ

  • উষ্ণতার ধারণা, উষ্ণতা ও তাপের পার্থক্য, উষ্ণতা পরিমাপের স্কেল (সেলসিয়াস ও ফারেনহাইট) ও তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক।
  • তাপের প্রভাবে পদার্থের অবস্থার পরিবর্তন, গলন, কঠিনীভবন, বাষ্পীভবন, ঘনীভবন, লীন তাপের ধারণা ও গুরুত্ব।
  • দৈনন্দিন জীবনে তাপের ব্যবহার ও প্রভাব।

দ্বিতীয় অধ্যায় : আলো

  • আলোর উৎস, স্বপ্রভ ও অপ্রভ বস্তু।
  • স্বচ্ছ, অস্বচ্ছ ও ঈষৎ স্বচ্ছ বস্তু।
  • আলোর সরলরৈখিক গতি, ছায়া (প্রচ্ছায়া ও উপচ্ছায়া) গঠন।
  • পিনহোল ক্যামেরা।
  • আলোর প্রতিফলন, প্রতিফলনের সূত্র, নিয়মিত ও বিচ্ছুরিত প্রতিফলন।
  • আলোর প্রতিসরণ, প্রতিসরণের সূত্র, লঘুতর ও ঘনতর মাধ্যম।
  • প্রতিবিম্ব, আয়নায় প্রতিবিম্ব গঠন।
  • আলোর বিচ্ছুরণ, বর্ণালী, রামধনু।
  • আলোর ক্ষতিকারক প্রভাব (অতিবেগুনি রশ্মি, এক্স রশ্মি)।
  • জীবের শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়ায় আলোর ভূমিকা।

তৃতীয় অধ্যায় : চুম্বক

  • চুম্বক, চুম্বক পদার্থ ও অচুম্বক পদার্থ।
  • চুম্বকের প্রকারভেদ (প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম)।
  • চুম্বকের ধর্মাবলি (আকর্ষণ, দিক-নির্দেশক, সমমেরু বিকর্ষণ, বিপরীত মেরু আকর্ষণ, আবেশ, একক মেরুর অস্তিত্বহীনতা)।
  • চুম্বক মেরু, উদাসীন অঞ্চল, চুম্বক অক্ষ, চুম্বক ক্ষেত্র।
  • তড়িৎ-চুম্বক, তড়িৎ-চুম্বকের ব্যবহার।
  • জীবের শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়ায় চৌম্বক ক্ষেত্রের ভূমিকা।

চতুর্থ অধ্যায় : তড়িৎ

  • তড়িৎ প্রবাহ, সেল, ব্যাটারি।
  • তড়িৎ বর্তনী, মুক্ত ও বদ্ধ বর্তনী।
  • সুইচ, তড়িৎ পরিবাহী ও কুপরিবাহী।
  • তড়িৎ প্রবাহের ফল (চৌম্বক ফল, তাপীয় ফল, আলোক ফল)।
  • তড়িৎ চুম্বক, তড়িৎ চুম্বকের ব্যবহার।
  • সৌরশক্তি থেকে তড়িৎ উৎপাদন।
  • জীবের শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়ায় তড়িৎ শক্তির প্রভাব।

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য

পঞ্চম অধ্যায় : পরিবেশবান্ধব শক্তি

  • প্রচলিত শক্তি ও তার ব্যবহার।
  • শক্তির উৎস (জীবাশ্ম জ্বালানি) ও তার ক্ষতিকারক প্রভাব।
  • পরিবেশবান্ধব শক্তির ধারণা (সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জৈবশক্তি) ও তাদের ব্যবহার।
  • শক্তি সংরক্ষণ ও অপচয় রোধ।

ষষ্ঠ অধ্যায় : সময় ও গতি

  • গতির ধারণা (সরলরৈখিক, বৃত্তাকার, ঘূর্ণন, দোলন, মিশ্র গতি)।
  • দূরত্ব, সরণ, দ্রুতি, বেগ, ত্বরণ, মন্দন।
  • বলের ধারণা, নিউটনের গতিসূত্র (প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়) ও তাদের প্রয়োগ।
  • জড়তা (স্থিতিজড়তা ও গতিজড়তা)।
  • বল পরিমাপের একক।
  • কার্য ও শক্তি, তাদের সম্পর্ক।
  • শক্তির বিভিন্ন রূপ (যান্ত্রিক, তাপ, আলোক, শব্দ, বিদ্যুৎ, রাসায়নিক, পারমাণবিক) ও তাদের রূপান্তর।

সপ্তম অধ্যায় : পরমাণু, অণু ও রাসায়নিক বিক্রিয়া

  • মৌলের চিহ্ন, সংকেত ও যোজ্যতা।
  • পরমাণুর গঠন (প্রোটন, নিউট্রন, ইলেকট্রন) ও বৈশিষ্ট্য।
  • পরমাণু ক্রমাঙ্ক, ভরসংখ্যা, আয়ন (ক্যাটায়ন ও অ্যানায়ন)।
  • রাসায়নিক বিক্রিয়া, বিক্রিয়ক ও বিক্রিয়াজাত পদার্থ।
  • রাসায়নিক সমীকরণ ও তার সমতাবিধান।
  • রাসায়নিক বিক্রিয়ার প্রকারভেদ (প্রত্যক্ষ সংযোগ, বিয়োজন, প্রতিস্থাপন, দ্বি-বিনিময়)।

অষ্টম অধ্যায় : পরিবেশ গঠনে পদার্থের ভূমিকা

  • জীবদেহে অজৈব ও জৈব পদার্থের ভূমিকা।
  • জল, ধাতব আয়ন (সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন) ও তাদের কাজ।
  • জৈব যৌগ (কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, লিপিড, নিউক্লিক অ্যাসিড) ও তাদের কাজ।
  • অ্যাসিড, ক্ষারক ও নির্দেশক।
  • pH স্কেল ও pH এর গুরুত্ব।
  • প্রশমন বিক্রিয়া।
  • সংশ্লেষিত যৌগ (প্লাস্টিক, পলিমার, ফাইবার, সাবান, ডিটারজেন্ট, সার, কীটনাশক, প্রসাধনী, ওষুধ, রং, সিমেন্ট) ও পরিবেশে তাদের প্রভাব।
  • পুনর্ব্যবহার ও পুনর্বিক্রয়।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

নবম অধ্যায় : মানুষের খাদ্য

  • খাদ্য উৎপাদন ও খাদ্য উপাদান (কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, লিপিড, ভিটামিন, খনিজ মৌল, জল, খাদ্যতন্তু, ফাইটোকেমিক্যাল)।
  • বিভিন্ন খাদ্য উপাদানের উৎস ও তাদের কাজ।
  • বিভিন্ন খাদ্য উপাদানের অভাবজনিত রোগ ও তাদের প্রতিকার।
  • অপুষ্টি ও স্থূলতা।
  • খাদ্যতন্তু, ফাইটোকেমিক্যাল।
  • প্রাকৃতিক খাদ্য, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য ও সংশ্লেষিত খাদ্য।

দশম অধ্যায় : পরিবেশের সজীব উপাদানের গঠনগত বৈচিত্র্য ও কার্যগত প্রক্রিয়া

  • উদ্ভিদের বিভিন্ন অংশ (মূল, কাণ্ড, পাতা, ফুল, ফল, বীজ) ও তাদের গঠনগত বৈচিত্র্য।
  • মূলের প্রকারভেদ ও কাজ।
  • কাণ্ডের প্রকারভেদ ও কাজ।
  • পাতার প্রকারভেদ ও কাজ।
  • ফুলের গঠন ও পরাগ মিলন।
  • ফলের প্রকারভেদ ও বীজ গঠন।
  • অঙ্কুরোদগম ও তার শর্ত।
  • ব্যাপন ও অভিস্রবণ।

একাদশ অধ্যায় : পরিবেশ সংকট, উদ্ভিদ ও পরিবেশের সংরক্ষণ

  • জলবায়ু পরিবর্তন ও তার প্রভাব (বিশ্ব উষ্ণায়ন, হিমবাহের গলন, সমুদ্রের জলস্তরের উচ্চতা বৃদ্ধি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ)।
  • জীববৈচিত্র্য (সংজ্ঞা, গুরুত্ব, হটস্পট) ও তার হ্রাস পাওয়ার কারণ (বাসস্থান ধ্বংস, অবৈধ শিকার, নতুন জীবের আগমন, জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ দূষণ, অতিরিক্ত অর্থনৈতিক ব্যবহার)।
  • জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ।
  • বর্জ্য ও মানব স্বাস্থ্যের ঝুঁকি।
  • পরিবেশ দূষণ (বায়ু, শব্দ, জল, মাটি, তেজস্ক্রিয়, প্লাস্টিক) ও তার প্রভাব।
  • পরিবেশ দূষণ রোধের উপায়।

দ্বাদশ অধ্যায় : পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য

  • স্বাস্থ্য (দৈহিক ও মানসিক)।
  • পেশাগত সমস্যা ও রোগ।
  • সংক্রামক রোগ (বায়ুবাহিত, জলবাহিত, কীটপতঙ্গবাহিত) ও তাদের প্রতিকার।
  • অসংক্রামক রোগ (জীবনযাত্রার ত্রুটিজনিত রোগ)।
  • মানসিক স্বাস্থ্য ও জীবনকুশলতা।
  • নেশা ও জীবন মূল্য।

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য

মশার বিভিন্ন মুখ-উপাঙ্গগুলো তাদের বিশেষ খাদ্যাভ্যাসের জন্য পরিবর্তিত হয়ে প্রবোসিস গঠন করে। এসো এভাবে দেখে নিই প্রবোসিস কীভাবে কাজ করে।

জানার চেষ্টা করা যাক আমাদের চেনা মশা কীভাবে রোগ ছড়ায়?

  • মশার দেহে একটা লম্বা, ফাঁপা নলের মতো প্রবোসিস থাকে। স্ত্রী মশার ক্ষেত্রে প্রবোসিসটি হয় সরু আর তীক্ষ্ণ, অনেকটা ইনজেকশনএর সূঁচের মতো। কিন্তু পুরুষ মশার প্রবোসিসটি ভোঁতা।
  • স্ত্রী মশা তার সূঁচের মতো তীক্ষ্ণ প্রবোসিস দিয়ে বিভিন্ন প্রাণীর চামড়া ভেদ করে রক্ত পান করে। পুরুষ মশার প্রবোসিসটি ভোঁতা হওয়ায়, তারা কেবল উদ্ভিদের বিভিন্ন রস যেমন- ফুলের রস, ফলের রস ইত্যাদি পান করে।
  • কোনো প্রাণীর রক্ত পান করার সময় স্ত্রী মশা প্রবোসিসির মধ্য দিয়ে তার লালা গ্রন্থিটা দেহের প্রবেশ করিয়ে দেয়। কারণ আর কিছুই নয় যতো রক্ত পান করার সময় রক্ত জমাট না বাঁধে।
  • এই লালার মধ্যেই স্ত্রী মশার দেহে বাসা বাঁধা রোগের জীবাণু ওই প্রাণীর দেহে প্রবেশ করে।

মশা কীভাবে রোগ ছড়ায়, সেটা তো আমরা জানলাম। এবার এসো আমরা দেখে নিই মশার রকমভেদ। আর জেনে নিই কোন মশা কী রোগ ছড়ায়।

নীচের সারণিতে বিভিন্ন ধরনের মশার বৈশিষ্ট্য (চেনার উপায়) আর মশা থেকে ছড়ায় এমন রোগের নাম লেখা আছে। এই তিন ধরনের ছাড়াও আর অন্য কোনো ধরনের মশা কথা তুমি কি জানো? নীচের সারণিতে তাদের কথা ও লেখো।

মশা ছবি চেনার উপায়/বৈশিষ্ট্য কী রোগ ছড়ায়
1. অ্যানোফিলিসAnopheles mosquito1. ডানায় কালো ছোপ থাকে। 2. বিশ্রামের সময় সমতলের সঙ্গে মুখকোণ করে বসে। 3. উড়বার সময় ডানায় শব্দ হয়। 4. সন্ধ্যার সময় বাইরে বেরোয়। 5. পরিষ্কার জলে ডিম পাড়ে।1. ম্যালেরিয়া
2. কিউলেক্সCulex mosquito1. ডানায় কোনো ছোপ থাকে না। 2. বিশ্রামের সময় সমতলের সঙ্গে সমান্তরালভাবে বসে। 3. উড়বার সময় ডানায় শব্দ হয় না। 4. রাতে বাইরে বের হয়। 5. এরা নোংরা ও ময়লা জলে ডিম পাড়ে।1. গোদ/ফাইলেরিয়া 2. এনসেফালাইটিস

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

মশা ছবি চেনার উপায়/বৈশিষ্ট্য কী রোগ ছড়ায়
3. এডিসAedes mosquito1. পেটে আর পায়ে সাদা-কালো ডোরা থাকে। 2. বিশ্রামের সময় সমতলের সঙ্গে প্রায় সমান্তরালভাবে বসে। 3. উড়বার সময় ডানায় শব্দ হয় না। 4. দিনের বেলায় বাইরে বের হয়। 5. পরিষ্কার জলে ডিম পাড়ে।1. ডেঙ্গু 2. চিকুনগুনিয়া
4.
5.

বিভিন্ন ধরনের মশা আর তারা কী কী রোগ ছড়ায়, সে সম্বন্ধে তোমরা জানলে। মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য কী কী ব্যবস্থা নিতে পারো তা নীচের সারণিতে লিখে ফেলো তো। প্রয়োজনে বড়দের সঙ্গে আলোচনা করো বা শিক্ষক/শিক্ষিকার আর বাড়ির বড়োদের সাহায্য নাও।

মশা নিবারণের উপায়

  • 1. চৌবাচ্চা, বালতি, ফুলদানি ইত্যাদি জায়গায় জল 2-3 দিন অন্তর পাল্টাতে হবে।
  • 2. মশার লার্ভা খায় এমন মাছ (গাপ্পি, তেচোখা, শোল, লাটা, গার্সিয়া ইত্যাদি) জমা জলে ছাড়তে হবে।
  • 3. নর্দমা, সর্বদাই বন্ধ নোংরা জলে পোড়া মবিল, কেরোসিন, ডিজেলে ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে।
  • 4. এমনকি ব্লিচিং পাউডারও ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে।

মশা কীভাবে রোগ ছড়ায়, সেটা তো আমরা জানলাম। এবার এসো আমাদের আরেকটি চেনা প্রাণী, মাছি, কীভাবে রোগ ছড়ায় সেটা জানি। তার আগে জেনে নিই মাছিদের বংশ পরিচয়।

মাছি

মাছিদের রকমফের

এবার এসো দেখা যাক মাছিদের রকমফের।

মাছি ছবি চেনার উপায়/বৈশিষ্ট্য কী রোগ ছড়ায়
1. সাধারণ মাছিCommon housefly1. ধূসর রঙের বুক। 2. পিঠে 4টে লম্বা কালো দাগ। 3. সারা দেহে রোমে ঢাকা। 4. দিনের বেলায় বাইরে বেরোয়। রাতে নিষ্ক্রিয় থাকে।1. টাইফয়েড 2. ডায়রিয়া

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য

মাছি ছবি চেনার উপায়/বৈশিষ্ট্য কী রোগ ছড়ায়
2. বালি মাছিSandfly1. মশার চেয়ে আকারে ছোটো 2. দেহ অত্যন্ত রোমশ। 3. পাগুলো সরু ও লম্বা। 4. সন্ধ্যার পর বাইরে বেরোয়।1. কালাজ্বর 2. বালিমাছি জ্বর
3. কালো মাছিBlackfly1. কালো রঙের মাছি 2. প্রবোসিস আকারে ছোটো পাওঁলালা ফোরকের মতো। 3. দেহ মোটাসোটা। 4. ডানা চওড়া। 5. দিনের বেলায় দল বেঁধে বেরোয়। সবচেয়ে সক্রিয় হয় ভোরে আর সন্ধ্যার একটু আগে।1. অনকোসার্কিয়াসিস

মাছি কীভাবে রোগ ছড়ায়?

  • সাধারণ মাছি যখন মল, মূত্র, পচা ইত্যাদি জিনিসে বসে, তখন ওইসব জিনিসের ছোটো ছোটো কণা মাছির পায়ে, শুঁড়ে লেগে যায়। ওই কণাগুলোর থেকে অসংখ্য রোগজীবাণু। ওই মাছি যখন রান্না করা খাবার, মিষ্টি, কাটা ফল ইত্যাদি ওপর বসে তখন রোগজীবাণু ওই খাবার মিশ্রিত হয়ে আরো রোগ সংক্রমণ ঘটায়।
  • মল, পচা, দূষিত ইত্যাদি জিনিসে থাকা রোগজীবাণুগুলো সাধারণ মাছির লোমকূপ থেকে লোমে আটকে যায়। আমাদের খাবারের ওপর বসলে ওইসব রোগজীবাণু আমাদের খাবার এর মধ্যে মিশে আমাদের শরীরে রোগ সৃষ্টি করে। ফলে খাদ্যের কিছু অংশ অণু প্রবেশ করে। ওই রোগজীবাণুগুলো আমাদের দেহের মধ্যে সংক্রমণ ঘটায়।
  • সাধারণ মাছি সারাদিন ধরে প্রায় 3 কিমি অঞ্চল অন্তর যেখানে বসে, সেখানে মলত্যাগ করে। মাছির মলে অনেক জীবাণু থাকে। আমাদের খাবারের উপরে মলত্যাগ করলে ওইসব রোগজীবাণু আমাদের খাবারে এসে মিশে।

মাছি কীভাবে রোগ ছড়ায়, তার একটা ধারণা তোমার পেল। আর মশা কীভাবে রোগ ছড়ায় সেটা তোমরা জেনেছ। ম্যালেরিয়া পান্টও তো পড়েছে। বলো তো মশা আর সাধারণ মাছির রোগ সংক্রমণের মধ্যে তুমি কি কোনো পার্থক্য খুঁজে পেলে?

মশা সাধারণ মাছি
1. ....................1. সাধারণ মাছির দেহে রোগজীবাণু বংশবৃদ্ধি করে না।
2. ....................2. ....................

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

কী বুঝলে? সাধারণ মাছি তাহলে খালি রোগজীবাণুকে তার শরীরে নিয়ে যাওয়ার কাজ করে। তাই সাধারণ মাছি হলো যান্ত্রিক বাহক (Mechanical vector)।

আর মশা রোগজীবাণুকে তার নিজের দেহে বংশবৃদ্ধি করতে দেয়। তাই মশা হলো – জৈব বাহক (Biological vector)।

দেখো তো এইরকম আরও কিছু জৈব বাহক আর যান্ত্রিক বাহকের নাম মনে করতে পারো কিনা। প্রয়োজনে তোমার শিক্ষক বা শিক্ষিকার সাহায্য নাও।

এবার এসো জৈব বাহক আর যান্ত্রিক বাহকের মধ্যে কয়েকটি পার্থক্য লিখে ফেলো তো।

জৈব বাহক যান্ত্রিক বাহক
1.1.
2.2.
3.3.

বিভিন্ন ধরনের মাছি আর তারা কী কী রোগ ছড়ায় সেটা তো জানলাম। এমনকি এরা কীভাবে রোগ ছড়ায় সেটাও জানলাম। এবার এসো আমরা কীভাবে নিজেদেরকে বিভিন্ন রোগের হাত থেকে বাঁচাতে পারি সেটার জন্য চেষ্টা করি। কয়েকটি উপায় লিখে দেওয়া আছে। তুমি দেখো তো, আরো কয়েকটি উপায় লিখতে পারো কিনা।

মাছি নিয়ন্ত্রণের উপায়

  • 1. যে-কোনো ধরনের খাবার সব সময় ঢাকা রাখা উচিত।
  • 2. ঘরের মেঝে/খাওয়ার জায়গা প্রতিদিন ফিনাইল দিয়ে মোছা।
  • 3.
  • 4.
  • 5.

খাদ্যবাহিত রোগ ও প্রতিকার

Rotten food Rotten banana Moldy bread Rotten orange Rotten eggplant Rotten apple Rotten fruit Rotten fish Rotten sweets Mixed rotten food

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

নষ্ট হওয়া খাবার

Rotten banana 1 Rotten banana 2
  • (a) উপরের ছবিতে দেওয়া ফল দুটোর মধ্যে কোনটা তুমি খাবে? ....................।
  • (b) অন্য ফলটাকে বেছে না নিয়ে কেন এই ফলটাকে তুমি বেছে নিলে? ....................।
  • (c) অন্য ফলটা খেলে তোমার কোনো ক্ষতি হতো কি? কী ক্ষতি হতে পারত বলে তোমার মনে হয়? ....................।
Moldy bread 1 Moldy bread 2
  • (a) উপরের ছবিতে দেখতে পাওয়া পাউরুটিগুলোর মধ্যে কোন পাউরুটি খাবে? ....................।
  • (b) অন্য পাউরুটিটা না বেছে তুমি ওই পাউরুটিটাকে বেছে নিলে কেন? ....................।
  • (c) অন্য পাউরুটিটা খেলে তোমার কোনো ক্ষতি হতো কি? কী ক্ষতি হতে পারত বলে তোমার মনে হয়? ....................।

নানাধরনের খাবার পচে যাওয়া বা নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণ হলো ওইসব খাবারে বিভিন্ন অণুজীবদের আক্রমণ। সাধারণত এইসব অণুজীবেরা হলো ব্যাকটেরিয়া আর ছত্রাক

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য

কী ধরনের খাবার তোমার পেটে যেতে বা না যেতে দেখতেছ, তার একটা তালিকা তৈরি করো।

পচা বা এমন/নষ্ট হয়ে যায় এমন খাবার কীভাবে বুঝবে চেহারা/গন্ধ/বিশেষ স্বাদ
1. ফল(রং বদল/বাহ্যিক চেহারা বদল/বিশেষ গন্ধ/বিশেষ স্বাদ)
2. কাঁচা সবজি
3. মাছ/মাংস/ডিম
4. রান্না খাবার
5. অন্যান্য খাবার

যখন কোনো খাবার বাথা অণুজীবেরা সাহায্যে বাড়ে তখন তারা নিজেদের শরীরে তৈরি উৎসেচক দিয়ে খাবারটাকে খেয়ে দেয়। আর ভেঙে যাওয়া খাবারের সরলতম অণুগুলা নিজেরে শোষণ করে নেয়।

ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ

নানাধরনের ব্যাকটেরিয়া বিভিন্ন ধরনের খাদ্যে নানা ধরনের অ্যাসিডও এবং অন্যান্য পদার্থ তৈরি করে। ধারে উপস্থিত এই সব ব্যাকটেরিয়া সক্রিয় ও ক্ষতিকর হয় না। কিন্তু অন্যান্য তৈরি হওয়া বা বর্জ্য পদার্থগুলো খাদ্যের বা বাতাসের সঙ্গে মিশে যখন অন্য খাবারটা নষ্ট করে দেয়। এমনকি নষ্ট হয়ে যাওয়া খাবার খেলে ওইসব পদার্থের মধ্যে দিয়ে শরীরিকরা অনেক রোগেরও সৃষ্টি করে।

যেসবে খাবার প্রোটিনের পরিমাণ বেশি (যেমন – মাংস, ডিম, মাছ, ডেয়ারি) সেই সব খাবারকে কিছু ব্যাকটেরিয়া সহজে খারাপ করে। আবার কোনো কোনো ব্যাকটেরিয়া কম প্রোটিনযুক্ত খাবারকে (যেমন - ফল, সবজি) জন্মায়, কিন্তু তারা কাজ করে উৎপাদনও করে। ফলে রাসায়নিক খাবারের তাপমাত্রা পেঁয়াজ বা কোনো ফল আর মাছ রেখে দিলে, মাঝেই আগে গরম থাকলে সব নষ্ট। পেয়াজ আগে সবুজ থাকে।

কিন্তু এই সব ব্যাকটেরিয়া খারাপ না। এদেরকে বিনিময়কারী ব্যাকটেরিয়া বলে, যা দেখে আরও অনেক উপকার পায়। এসবের সঙ্গে আমাদের দেখা মিলবে তো। তুমি পাউরুটি খেতে চাইলে, না খেয়ে নষ্ট হয়ে যায়, তার কারণ কী? এও জেনে নিই, তোমরা পাউরুটি খেতে চাইলে, না খেয়ে নষ্ট হয়ে যায়।

ব্যাকটেরিয়া উপকার ও ব্যাস

এই সব বিভিন্ন ক্ষমতা সম্পন্ন খাবারকে আমরা ব্যাকটেরিয়া সালস ব্যাকটেরিয়ার সাহায্যে নিই। এছাড়াও স্টেপটোকক্কাস ব্যাকটেরিয়ার কয়েকটি প্রজাতির থেকে জীবাণুকারী নানারকম ঔষধ আমরা পাই। গবাদি পশুর পাকস্থলীতে কিছু ব্যাকটেরিয়া বাস করে যারা সেলুলোজ জাতীয় খাদ্য পরিপাক করতে সাহায্য করে। এছাড়াও মানুষের শরীরের অন্ত্রে বাস করে কিছু ব্যাকটেরিয়া যারা ভিটামিন B12 তৈরি করতে সাহায্য করে।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

ছত্রাকের আক্রমণ

যে পাউরুটি তোমরা খেতে চাইলে না, ওই পাউরুটি ছত্রাক আক্রমণ করেছিল। এদের রঙও একরকম।

এসব খাবার বা কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্য পরিমাণ বেশি থাকে, ছত্রাকরা সাধারণত সেইসব খাবারেই জন্মায়। বিভিন্ন ধরনের ছত্রাকের আক্রমণের ফলে খাবারের বাহ্যিক চেহারা বা রঙের বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন হয়। এসো চিনে নিই খাবারে বাসা বাঁধা প্রধান কয়েক ধরনের ছত্রাককে।

Fungus 1 Fungus 2 Fungus 3

Rhizopus প্রজাতির ছত্রাক Penicillium প্রজাতির ছত্রাক Neurospora প্রজাতির ছত্রাক

ছত্রাক উপকার ও অপকার

পাউরুটি, ডিউ, আলোজেলি জাতীয় পানীয় – এইসব তৈরি করতে অনেকসময় আমরা ছত্রাকের সাহায্য নিই। এক্ষেত্রে বেশি কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবারের প্রতি আদানুগত ওই সব জিনিস তৈরিতে সাহায্য করে। যেমন করে ছত্রাকরা পেনিসিলিয়ম থেকে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ তৈরি হয়, পাউরুটি তৈরি করতে ইস্ট।

Claviceps fungus

উৎসেচক ক্রিয়া

অণুজীব ছাড়াও অন্য আর একারণেও খাবার নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সেই কারণটা হলো উৎসেচক ক্রিয়া। উদ্ভিজ্জ বা প্রাণীজাত খাবার কোষ দিয়ে তৈরি। আর ওই কোষে থাকে নানাধরনের উৎসেচক। উদ্ভিদজ বা প্রাণীজাত খাবারের অণুগুলো ছোটো ছোটো অংশকে রাখা গেলে সেইসব খাবারের রং বা আকৃতিতে পরিবর্তন হবে না। অর্থাৎ এক্ষেত্রেও উৎসেচকের ক্রিয়ার জন্য খাদ্যগুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

এবার এসো দেখা যাক কী কী করলে এই ধরনের নষ্ট হয়ে যাওয়া খাবার থেকে হওয়া রোগ আমরা এড়াতে পারি।

  • 1. বাহ্যিক চেহারা অস্বাভাবিক বদল এসেছে এমন ফল/সবজি না খাওয়া।
  • 2. খারাপ স্বাদ বা গন্ধযুক্ত খাবার না খাওয়া।
  • 3. কোনো কোনো খাবারকে জল বের করে দিয়ে (অর্থাৎ শুকিয়ে ফেলে) সেই খাবারকে অনেকদিন অবধি খাওয়ার যোগ্য রাখা যায়। যেমন,
  • 4. ....................
  • 5. ....................

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য

খাবারে পরজীবী প্রাণী আর জীবাণুর সংক্রমণ

Meat 1 Meat 2
  • (a) উপরের ছবিতে দেওয়া মাংসগুলোর মধ্যে কোনটা তুমি খাবে? ....................।
  • (b) কেন তুমি ওই মাংসটাকে খাওয়ার জন্য বেছে নিলে? ....................।
  • (c) অন্য মাংসটাকে বেছে নিলে তোমার কি কোনো ক্ষতি হতো? ক্ষতি হলে কী কী হতে পারত? ....................।

পরজীবী থেকে রোগ

বিভিন্ন পশুর শরীরে অনেকসময় বাসা বাঁধে কৃমি জাতীয় কিছু প্রাণী। পশুর শরীর থেকে আশ্রয় নেওয়া এই কৃমিরা হলো পরজীবী। পরজীবী আশ্রয় নিয়েছে এমন পশুর কাঁচা মাংস বা সঠিক তাপমাত্রায় রান্না না করা মাংস খেলে ওইসব পরজীবী মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। আর মানুষের শরীরে নানারকম রোগের ঝুঁকি করে।

এসো এভাবে মানুষের শরীরে এইরকম কয়েকটি পরজীবী সংক্রমণ সম্বন্ধে জেনে নিই।

পশুর নাম পরজীবীর প্রকৃতি সংক্রামিত মাংস খেলে যে যে রোগ লক্ষণ দেখা যেতে পারে
1. গোরুফিতাকৃমিপেটে ব্যথা, ডায়রিয়া, গা-বমিভাব, খাবারে অনীহা হতে পারে।
2. শুয়োরফিতাকৃমিমানুষের শরীরের বিভিন্ন অংশে পৌঁছায়। পেটে ব্যথা, গা-বমিভাব, ডায়রিয়া, মাথা ঘোরা, এমনকি মাঝে মাঝে কাঁপুনিও (seizure) হতে পারে।
গোলকৃমিমানুষের অন্ত্রে এই পরজীবীর সংখ্যা বেশি হলে গা-বমিভাব, ডায়রিয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য

মশা: বিভিন্ন মুখ-উপাঙ্গগুলো তাদের বিশেষ খাদ্যাভ্যাসের জন্য পরিবর্তিত হয়ে প্রবোসিস গঠন করে। এসো এভাবে দেখে নিই প্রবোসিস কীভাবে কাজ করে।

জানার চেষ্টা করা যাক আমাদের চেনা মশা কীভাবে রোগ ছড়ায়?

  • মশার দেহে একটা লম্বা, ফাঁপা নলের মতো প্রবোসিস থাকে। স্ত্রী মশার ক্ষেত্রে প্রবোসিসটি হয় সরু আর তীক্ষ্ণ, অনেকটা ইনজেকশনএর সূঁচের মতো। কিন্তু পুরুষ মশার প্রবোসিসটি ভোঁতা।
  • স্ত্রী মশা তার সূঁচের মতো তীক্ষ্ণ প্রবোসিস দিয়ে বিভিন্ন প্রাণীর চামড়া ভেদ করে রক্ত পান করে। পুরুষ মশার প্রবোসিসটি ভোঁতা হওয়ায়, তারা কেবল উদ্ভিদের বিভিন্ন রস যেমন- ফুলের রস, ফলের রস ইত্যাদি পান করে।
  • কোনো প্রাণীর রক্ত পান করার সময় স্ত্রী মশা প্রবোসিসির মধ্য দিয়ে তার লালা গ্রন্থিটা দেহের প্রবেশ করিয়ে দেয়। কারণ আর কিছুই নয় যতো রক্ত পান করার সময় রক্ত জমাট না বাঁধে।
  • এই লালার মধ্যেই স্ত্রী মশার দেহে বাসা বাঁধা রোগের জীবাণু ওই প্রাণীর দেহে প্রবেশ করে।

মশা কীভাবে রোগ ছড়ায়, সেটা তো আমরা জানলাম। এবার এসো আমরা দেখে নিই মশার রকমভেদ। আর জেনে নিই কোন মশা কী রোগ ছড়ায়।

নীচের সারণিতে বিভিন্ন ধরনের মশার বৈশিষ্ট্য (চেনার উপায়) আর মশা থেকে ছড়ায় এমন রোগের নাম লেখা আছে। এই তিন ধরনের ছাড়াও আর অন্য কোনো ধরনের মশা কথা তুমি কি জানো? নীচের সারণিতে তাদের কথা ও লেখো।

মশা ছবি চেনার উপায়/বৈশিষ্ট্য কী রোগ ছড়ায়
1. অ্যানোফিলিসAnopheles mosquito1. ডানায় কালো ছোপ থাকে। 2. বিশ্রামের সময় সমতলের সঙ্গে মুখকোণ করে বসে। 3. উড়বার সময় ডানায় শব্দ হয়। 4. সন্ধ্যার সময় বাইরে বেরোয়। 5. পরিষ্কার জলে ডিম পাড়ে।1. ম্যালেরিয়া
2. কিউলেক্সCulex mosquito1. ডানায় কোনো ছোপ থাকে না। 2. বিশ্রামের সময় সমতলের সঙ্গে সমান্তরালভাবে বসে। 3. উড়বার সময় ডানায় শব্দ হয় না। 4. রাতে বাইরে বের হয়। 5. এরা নোংরা ও ময়লা জলে ডিম পাড়ে।1. গোদ/ফাইলেরিয়া 2. এনসেফালাইটিস

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

মশা ছবি চেনার উপায়/বৈশিষ্ট্য কী রোগ ছড়ায়
3. এডিসAedes mosquito1. পেটে আর পায়ে সাদা-কালো ডোরা থাকে। 2. বিশ্রামের সময় সমতলের সঙ্গে প্রায় সমান্তরালভাবে বসে। 3. উড়বার সময় ডানায় শব্দ হয় না। 4. দিনের বেলায় বাইরে বের হয়। 5. পরিষ্কার জলে ডিম পাড়ে।1. ডেঙ্গু 2. চিকুনগুনিয়া
4.
5.

বিভিন্ন ধরনের মশা আর তারা কী কী রোগ ছড়ায়, সে সম্বন্ধে তোমরা জানলে। মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য কী কী ব্যবস্থা নিতে পারো তা নীচের সারণিতে লিখে ফেলো তো। প্রয়োজনে বড়দের সঙ্গে আলোচনা করো বা শিক্ষক/শিক্ষিকার আর বাড়ির বড়োদের সাহায্য নাও।

মশা নিবারণের উপায়

  • 1. চৌবাচ্চা, বালতি, ফুলদানি ইত্যাদি জায়গায় জল 2-3 দিন অন্তর পাল্টাতে হবে।
  • 2. মশার লার্ভা খায় এমন মাছ (গাপ্পি, তেচোখা, শোল, লাটা, গার্সিয়া ইত্যাদি) জমা জলে ছাড়তে হবে।
  • 3. নর্দমা, সর্বদাই বন্ধ নোংরা জলে পোড়া মবিল, কেরোসিন, ডিজেলে ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে।
  • 4. এমনকি ব্লিচিং পাউডারও ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে।

মশা কীভাবে রোগ ছড়ায়, সেটা তো আমরা জানলাম। এবার এসো আমাদের আরেকটি চেনা প্রাণী, মাছি, কীভাবে রোগ ছড়ায় সেটা জানি। তার আগে জেনে নিই মাছিদের বংশ পরিচয়।

মাছি

মাছিদের রকমফের

এবার এসো দেখা যাক মাছিদের রকমফের।

মাছি ছবি চেনার উপায়/বৈশিষ্ট্য কী রোগ ছড়ায়
1. সাধারণ মাছিCommon housefly1. ধূসর রঙের বুক। 2. পিঠে 4টে লম্বা কালো দাগ। 3. সারা দেহে রোমে ঢাকা। 4. দিনের বেলায় বাইরে বেরোয়। রাতে নিষ্ক্রিয় থাকে।1. টাইফয়েড 2. ডায়রিয়া

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য

মাছি ছবি চেনার উপায়/বৈশিষ্ট্য কী রোগ ছড়ায়
2. বালি মাছিSandfly1. মশার চেয়ে আকারে ছোটো 2. দেহ অত্যন্ত রোমশ। 3. পাগুলো সরু ও লম্বা। 4. সন্ধ্যার পর বাইরে বেরোয়।1. কালাজ্বর 2. বালিমাছি জ্বর
3. কালো মাছিBlackfly1. কালো রঙের মাছি 2. প্রবোসিস আকারে ছোটো পাওঁলালা ফোরকের মতো। 3. দেহ মোটাসোটা। 4. ডানা চওড়া। 5. দিনের বেলায় দল বেঁধে বেরোয়। সবচেয়ে সক্রিয় হয় ভোরে আর সন্ধ্যার একটু আগে।1. অনকোসার্কিয়াসিস

মাছি কীভাবে রোগ ছড়ায়?

  • সাধারণ মাছি যখন মল, মূত্র, পচা ইত্যাদি জিনিসে বসে, তখন ওইসব জিনিসের ছোটো ছোটো কণা মাছির পায়ে, শুঁড়ে লেগে যায়। ওই কণাগুলোর থেকে অসংখ্য রোগজীবাণু। ওই মাছি যখন রান্না করা খাবার, মিষ্টি, কাটা ফল ইত্যাদি ওপর বসে তখন রোগজীবাণু ওই খাবার মিশ্রিত হয়ে আরো রোগ সংক্রমণ ঘটায়।
  • মল, পচা, দূষিত ইত্যাদি জিনিসে থাকা রোগজীবাণুগুলো সাধারণ মাছির লোমকূপ থেকে লোমে আটকে যায়। আমাদের খাবারের ওপর বসলে ওইসব রোগজীবাণু আমাদের খাবার এর মধ্যে মিশে আমাদের শরীরে রোগ সৃষ্টি করে। ফলে খাদ্যের কিছু অংশ অণু প্রবেশ করে। ওই রোগজীবাণুগুলো আমাদের দেহের মধ্যে সংক্রমণ ঘটায়।
  • সাধারণ মাছি সারাদিন ধরে প্রায় 3 কিমি অঞ্চল অন্তর যেখানে বসে, সেখানে মলত্যাগ করে। মাছির মলে অনেক জীবাণু থাকে। আমাদের খাবারের উপরে মলত্যাগ করলে ওইসব রোগজীবাণু আমাদের খাবারে এসে মিশে।

মাছি কীভাবে রোগ ছড়ায়, তার একটা ধারণা তোমার পেল। আর মশা কীভাবে রোগ ছড়ায় সেটা তোমরা জেনেছ। ম্যালেরিয়া পান্টও তো পড়েছে। বলো তো মশা আর সাধারণ মাছির রোগ সংক্রমণের মধ্যে তুমি কি কোনো পার্থক্য খুঁজে পেলে?

মশা সাধারণ মাছি
1. ....................1. সাধারণ মাছির দেহে রোগজীবাণু বংশবৃদ্ধি করে না।
2. ....................2. ....................

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

কী বুঝলে? সাধারণ মাছি তাহলে খালি রোগজীবাণুকে তার শরীরে নিয়ে যাওয়ার কাজ করে। তাই সাধারণ মাছি হলো যান্ত্রিক বাহক (Mechanical vector)।

আর মশা রোগজীবাণুকে তার নিজের দেহে বংশবৃদ্ধি করতে দেয়। তাই মশা হলো – জৈব বাহক (Biological vector)।

দেখো তো এইরকম আরও কিছু জৈব বাহক আর যান্ত্রিক বাহকের নাম মনে করতে পারো কিনা। প্রয়োজনে তোমার শিক্ষক বা শিক্ষিকার সাহায্য নাও।

এবার এসো জৈব বাহক আর যান্ত্রিক বাহকের মধ্যে কয়েকটি পার্থক্য লিখে ফেলো তো।

জৈব বাহক যান্ত্রিক বাহক
1.1.
2.2.
3.3.

বিভিন্ন ধরনের মাছি আর তারা কী কী রোগ ছড়ায় সেটা তো জানলাম। এমনকি এরা কীভাবে রোগ ছড়ায় সেটাও জানলাম। এবার এসো আমরা কীভাবে নিজেদেরকে বিভিন্ন রোগের হাত থেকে বাঁচাতে পারি সেটার জন্য চেষ্টা করি। কয়েকটি উপায় লিখে দেওয়া আছে। তুমি দেখো তো, আরো কয়েকটি উপায় লিখতে পারো কিনা।

মাছি নিয়ন্ত্রণের উপায়

  • 1. যে-কোনো ধরনের খাবার সব সময় ঢাকা রাখা উচিত।
  • 2. ঘরের মেঝে/খাওয়ার জায়গা প্রতিদিন ফিনাইল দিয়ে মোছা।
  • 3.
  • 4.
  • 5.

খাদ্যবাহিত রোগ ও প্রতিকার

Rotten food Rotten banana Moldy bread Rotten orange Rotten eggplant Rotten apple Rotten fruit Rotten fish Rotten sweets Mixed rotten food

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

নষ্ট হওয়া খাবার

Rotten banana 1 Rotten banana 2
  • (a) উপরের ছবিতে দেওয়া ফল দুটোর মধ্যে কোনটা তুমি খাবে? ....................।
  • (b) অন্য ফলটাকে বেছে না নিয়ে কেন এই ফলটাকে তুমি বেছে নিলে? ....................।
  • (c) অন্য ফলটা খেলে তোমার কোনো ক্ষতি হতো কি? কী ক্ষতি হতে পারত বলে তোমার মনে হয়? ....................।
Moldy bread 1 Moldy bread 2
  • (a) উপরের ছবিতে দেখতে পাওয়া পাউরুটিগুলোর মধ্যে কোন পাউরুটি খাবে? ....................।
  • (b) অন্য পাউরুটিটা না বেছে তুমি ওই পাউরুটিটাকে বেছে নিলে কেন? ....................।
  • (c) অন্য পাউরুটিটা খেলে তোমার কোনো ক্ষতি হতো কি? কী ক্ষতি হতে পারত বলে তোমার মনে হয়? ....................।

নানাধরনের খাবার পচে যাওয়া বা নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণ হলো ওইসব খাবারে বিভিন্ন অণুজীবদের আক্রমণ। সাধারণত এইসব অণুজীবেরা হলো ব্যাকটেরিয়া আর ছত্রাক

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য

কী ধরনের খাবার তোমার পেটে যেতে বা না যেতে দেখতেছ, তার একটা তালিকা তৈরি করো।

পচা বা এমন/নষ্ট হয়ে যায় এমন খাবার কীভাবে বুঝবে চেহারা/গন্ধ/বিশেষ স্বাদ
1. ফল(রং বদল/বাহ্যিক চেহারা বদল/বিশেষ গন্ধ/বিশেষ স্বাদ)
2. কাঁচা সবজি
3. মাছ/মাংস/ডিম
4. রান্না খাবার
5. অন্যান্য খাবার

যখন কোনো খাবার বাথা অণুজীবেরা সাহায্যে বাড়ে তখন তারা নিজেদের শরীরে তৈরি উৎসেচক দিয়ে খাবারটাকে খেয়ে দেয়। আর ভেঙে যাওয়া খাবারের সরলতম অণুগুলা নিজেরে শোষণ করে নেয়।

ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ

নানাধরনের ব্যাকটেরিয়া বিভিন্ন ধরনের খাদ্যে নানা ধরনের অ্যাসিডও এবং অন্যান্য পদার্থ তৈরি করে। ধারে উপস্থিত এই সব ব্যাকটেরিয়া সক্রিয় ও ক্ষতিকর হয় না। কিন্তু অন্যান্য তৈরি হওয়া বা বর্জ্য পদার্থগুলো খাদ্যের বা বাতাসের সঙ্গে মিশে যখন অন্য খাবারটা নষ্ট করে দেয়। এমনকি নষ্ট হয়ে যাওয়া খাবার খেলে ওইসব পদার্থের মধ্যে দিয়ে শরীরিকরা অনেক রোগেরও সৃষ্টি করে।

যেসবে খাবার প্রোটিনের পরিমাণ বেশি (যেমন – মাংস, ডিম, মাছ, ডেয়ারি) সেই সব খাবারকে কিছু ব্যাকটেরিয়া সহজে খারাপ করে। আবার কোনো কোনো ব্যাকটেরিয়া কম প্রোটিনযুক্ত খাবারকে (যেমন - ফল, সবজি) জন্মায়, কিন্তু তারা কাজ করে উৎপাদনও করে। ফলে রাসায়নিক খাবারের তাপমাত্রা পেঁয়াজ বা কোনো ফল আর মাছ রেখে দিলে, মাঝেই আগে গরম থাকলে সব নষ্ট। পেয়াজ আগে সবুজ থাকে।

কিন্তু এই সব ব্যাকটেরিয়া খারাপ না। এদেরকে বিনিময়কারী ব্যাকটেরিয়া বলে, যা দেখে আরও অনেক উপকার পায়। এসবের সঙ্গে আমাদের দেখা মিলবে তো। তুমি পাউরুটি খেতে চাইলে, না খেয়ে নষ্ট হয়ে যায়, তার কারণ কী? এও জেনে নিই, তোমরা পাউরুটি খেতে চাইলে, না খেয়ে নষ্ট হয়ে যায়।

ব্যাকটেরিয়া উপকার ও ব্যাস

এই সব বিভিন্ন ক্ষমতা সম্পন্ন খাবারকে আমরা ব্যাকটেরিয়া সালস ব্যাকটেরিয়ার সাহায্যে নিই। এছাড়াও স্টেপটোকক্কাস ব্যাকটেরিয়ার কয়েকটি প্রজাতির থেকে জীবাণুকারী নানারকম ঔষধ আমরা পাই। গবাদি পশুর পাকস্থলীতে কিছু ব্যাকটেরিয়া বাস করে যারা সেলুলোজ জাতীয় খাদ্য পরিপাক করতে সাহায্য করে। এছাড়াও মানুষের শরীরের অন্ত্রে বাস করে কিছু ব্যাকটেরিয়া যারা ভিটামিন B12 তৈরি করতে সাহায্য করে।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

ছত্রাকের আক্রমণ

যে পাউরুটি তোমরা খেতে চাইলে না, ওই পাউরুটি ছত্রাক আক্রমণ করেছিল। এদের রঙও একরকম।

এসব খাবার বা কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্য পরিমাণ বেশি থাকে, ছত্রাকরা সাধারণত সেইসব খাবারেই জন্মায়। বিভিন্ন ধরনের ছত্রাকের আক্রমণের ফলে খাবারের বাহ্যিক চেহারা বা রঙের বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন হয়। এসো চিনে নিই খাবারে বাসা বাঁধা প্রধান কয়েক ধরনের ছত্রাককে।

Fungus 1 Fungus 2 Fungus 3

Rhizopus প্রজাতির ছত্রাক Penicillium প্রজাতির ছত্রাক Neurospora প্রজাতির ছত্রাক

ছত্রাক উপকার ও অপকার

পাউরুটি, ডিউ, আলোজেলি জাতীয় পানীয় – এইসব তৈরি করতে অনেকসময় আমরা ছত্রাকের সাহায্য নিই। এক্ষেত্রে বেশি কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবারের প্রতি আদানুগত ওই সব জিনিস তৈরিতে সাহায্য করে। যেমন করে ছত্রাকরা পেনিসিলিয়ম থেকে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ তৈরি হয়, পাউরুটি তৈরি করতে ইস্ট।

Claviceps fungus

উৎসেচক ক্রিয়া

অণুজীব ছাড়াও অন্য আর একারণেও খাবার নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সেই কারণটা হলো উৎসেচক ক্রিয়া। উদ্ভিজ্জ বা প্রাণীজাত খাবার কোষ দিয়ে তৈরি। আর ওই কোষে থাকে নানাধরনের উৎসেচক। উদ্ভিদজ বা প্রাণীজাত খাবারের অণুগুলো ছোটো ছোটো অংশকে রাখা গেলে সেইসব খাবারের রং বা আকৃতিতে পরিবর্তন হবে না। অর্থাৎ এক্ষেত্রেও উৎসেচকের ক্রিয়ার জন্য খাদ্যগুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

এবার এসো দেখা যাক কী কী করলে এই ধরনের নষ্ট হয়ে যাওয়া খাবার থেকে হওয়া রোগ আমরা এড়াতে পারি।

  • 1. বাহ্যিক চেহারা অস্বাভাবিক বদল এসেছে এমন ফল/সবজি না খাওয়া।
  • 2. খারাপ স্বাদ বা গন্ধযুক্ত খাবার না খাওয়া।
  • 3. কোনো কোনো খাবারকে জল বের করে দিয়ে (অর্থাৎ শুকিয়ে ফেলে) সেই খাবারকে অনেকদিন অবধি খাওয়ার যোগ্য রাখা যায়। যেমন,
  • 4. ....................
  • 5. ....................

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য

খাবারে পরজীবী প্রাণী আর জীবাণুর সংক্রমণ

Meat 1 Meat 2
  • (a) উপরের ছবিতে দেওয়া মাংসগুলোর মধ্যে কোনটা তুমি খাবে? ....................।
  • (b) কেন তুমি ওই মাংসটাকে খাওয়ার জন্য বেছে নিলে? ....................।
  • (c) অন্য মাংসটাকে বেছে নিলে তোমার কি কোনো ক্ষতি হতো? ক্ষতি হলে কী কী হতে পারত? ....................।

পরজীবী থেকে রোগ

বিভিন্ন পশুর শরীরে অনেকসময় বাসা বাঁধে কৃমি জাতীয় কিছু প্রাণী। পশুর শরীর থেকে আশ্রয় নেওয়া এই কৃমিরা হলো পরজীবী। পরজীবী আশ্রয় নিয়েছে এমন পশুর কাঁচা মাংস বা সঠিক তাপমাত্রায় রান্না না করা মাংস খেলে ওইসব পরজীবী মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। আর মানুষের শরীরে নানারকম রোগের ঝুঁকি করে।

এসো এভাবে মানুষের শরীরে এইরকম কয়েকটি পরজীবী সংক্রমণ সম্বন্ধে জেনে নিই।

পশুর নাম পরজীবীর প্রকৃতি সংক্রামিত মাংস খেলে যে যে রোগ লক্ষণ দেখা যেতে পারে
1. গোরুফিতাকৃমিপেটে ব্যথা, ডায়রিয়া, গা-বমিভাব, খাবারে অনীহা হতে পারে।
2. শুয়োরফিতাকৃমিমানুষের শরীরের বিভিন্ন অংশে পৌঁছায়। পেটে ব্যথা, গা-বমিভাব, ডায়রিয়া, মাথা ঘোরা, এমনকি মাঝে মাঝে কাঁপুনিও (seizure) হতে পারে।
গোলকৃমিমানুষের অন্ত্রে এই পরজীবীর সংখ্যা বেশি হলে গা-বমিভাব, ডায়রিয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

বার্ড ফ্লু

পাখিদের একধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস (H5N1) আক্রমণে অনেকসময় পোলট্রির মুরগিরা আক্রান্ত হয়। এই বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত মুরগিদের গলারস, সর্দি বা মলের সংস্পর্শে এলে অন্য মুরগিরাও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়।

এই ভাইরাসে আক্রান্ত মুরগির চামড়া, মলমূত্র বা রক্তের সংস্পর্শে এলে মানুষেরও বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত মুরগির কাঁচা মাংস খেলে বা ঠিক তাপমাত্রায় (70°C তাপমাত্রায় 30 মিনিট) রান্না না করা মাংস খেলেও বার্ড ফ্লু হতে পারে।

বার্ড ফ্লু হলে প্রধান দিকে জ্বর, গলা ধূষ্যন, চোখে সংক্রমণ, শ্বাসকষ্ট সহ নানা ধরনের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। অবশেষে নিউমোনিয়া আর শ্বাসকষ্টে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

খাবারে জীবাণুর সংক্রমণ

পোলট্রিতে খাবার (যেমন-ডিম, মাংস), কাঁচা সবজি, পাউরুটিজ না করা দুধ অনেকসময় জীবাণুর সংক্রমণে ঘটে। এইসব খাবার কাঁচা বা সঠিকভাবে রান্না না করলে শরীরে নানারকম রোগজীবাণুর সংক্রমণ ঘটতে পারে।

এসো এরকম কয়েকটি রোগজীবাণু আর তাদের আদর্শ সুস্থ রোগ সম্বন্ধে জানি।

রোগের নাম জীবাণুর প্রকৃতি কীভাবে সংক্রমণ ঘটে
সালমোনেলোসিসব্যাকটেরিয়াকাঁচা বা সঠিকভাবে রান্না না করা পোলট্রির খাবার থেকে; বর্জ্য বস্তুর সাহায্যে ফলানো সবজি থেকে
ক্যাম্পাইলোব্যাকটেরিওসিসব্যাকটেরিয়াঠিকমতো তাপমাত্রায় রান্না না করা পোলট্রির খাবার পাস্তুরাইজ না করা দুধ থেকে
খাবারে বিষক্রিয়াব্যাকটেরিয়াকাঁচা বা বাসি মাংস (বা অন্য পোলট্রির খাবার) বা ফ্রিজ থেকে বার করা মাংস সম্পূর্ণ না ফুটিয়ে, হালকা গরম করে খেলে; এমনকি কাঁচা মাংস বা পোলট্রির খাবার মাসে

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য

  • (vii) চক্ষুকেন্দ্র স্নায়ু পরীক্ষা – সুস্থ ও স্বাভাবিক চক্ষুকেন্দ্র স্নায়ু পরীক্ষা।
  • (viii) উচ্চ রক্তচাপ পরীক্ষা – উচ্চ রক্তচাপের রোগীর পরীক্ষা।
  • (ix) অতিরিক্ত শক্তি বৃদ্ধির কারণ – (a) শব্দ আবর্জনা – (b) শব্দ দূষণ – (c) শব্দ দূষণ – (d) শব্দ দূষণ
  • (x) অতিরিক্ত শব্দ দূষণ – (a) শব্দ দূষণ – (b) শব্দ দূষণ – (c) শব্দ দূষণ – (d) শব্দ দূষণ
  • (xi) কোনো বকুলপুর গাছ শব্দগুলো শোষন করে?

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

2. (i) কী শিল্প কেবলমাত্র প্রাকৃতিক আলো ব্যবহার করে। (ii) কী শিল্প প্রাকৃতিক নয়।

উপরের শিল্প দুটোর সম্পর্কে জানতে চাইলে শিক্ষক/শিক্ষিকার সাহায্য নাও।

শিল্প হলো একটি সিস্টেম যার দ্বারা প্রাকৃতিক সম্পদ থেকে উৎপাদিত পণ্যগুলির উৎপাদন করা হয়। এটি জীবিকাসমূহ থেকে প্রাপ্ত হয়। শিল্প জীবিকা এবং পরিবেশের সাথে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত।

শিল্পগুলি পরিবেশকে কীভাবে প্রভাবিত করে? ....................।

পরিবেশ রক্ষা করতে শিল্পগুলো কী কী করতে পারে?

  • 1. ....................
  • 2. ....................
  • 3. ....................

নমুনা প্রশ্ন

  • 1. নিচের ঠিক উত্তর নির্বাচন করো: (প্রতি প্রশ্নের নম্বর 1)
  • (i) জ্বর হওয়া কোনো রোগীর শরীরের উষ্ণতা পাওয়া গেল 104°F। এই উষ্ণতা সেলসিয়াস থার্মোমিটারে মাপলে সেই মান হবে— (a) 40.1 (b) 40.6 (c) 40 (d) 42
  • (ii) একটি থার্মোমিটার দিয়ে সবচেয়ে কম উষ্ণতা (-1°) ও সবচেয়ে বেশি উষ্ণতা (99°) মাপা যায়। ওই থার্মোমিটারে 1° করে কটি ঘর পাওয়া যায়? (a) 100 (b) 99 (c) 101 (d) 98
  • (iii) সমতল আয়নার সামনে কোনো আলোক রশ্মি ও এর আয়নার ওপর আপতিত হলো, প্রতিফলন কোণের মান হবে— (a) 90° (b) 0° (c) 180° (d) 45°
  • (iv) দূষণ সৃষ্টির কারণ— (a) আলোর নিয়মিত প্রতিফলন (b) আলোর বিচ্ছুরণ (c) আলোর বিক্ষিপ্ত প্রতিফলন (d) আলোর রাসায়নিক পরিবর্তন।
  • (v) সূর্যের আলো 12 ঘন্টা কম স্থায়ী হলে নীচের কোন উদ্ভিদের বৃদ্ধি ভালো হয়?— (a) পটল (b) পালং (c) কিশে (d) চাঁপা
  • (vi) নিচের চিত্রটির জন্য নিচের কোন বর্তনী ঠিক?
Circuit diagram example

(a) a

(b) b

(c) c

(d) d

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য

  • 5. শূন্যস্থান পূরণ করো : (প্রতি প্রশ্নের নম্বর 1)
  • (i) পদার্থের পরিমাণ নির্দিষ্ট রাখা পরিবেশের সম্পর্ক পদার্থ। অবিদ্যুৎ দিয়ে তৈরি হয়।
  • (ii) আলোকরশ্মি 1m দূরে থেকে 1m দূরে সরানো হলে আলোক রশ্মিগুচ্ছের গতি পরিবর্তন হয়। 2cm করে একটি ছিদ্রযুক্ত বাক্সের মধ্যে দিয়ে আলো প্রবেশ করে।
  • (iii) কোনো পদার্থ গরম করলে তার উষ্ণতা বাড়লে তাকে .................... বলে।
  • (iv) কোহিনুর হলো একটি রাসায়নিক বিক্রিয়া যার দ্বারা প্রাকৃতিক গ্যাস এবং রাসায়নিক দ্রব্য উৎপন্ন হয়।
  • (v) পদার্থের মধ্যে থাকা অণুজীব (যেমন - ব্যাকটেরিয়া) মানুষের শরীরের মধ্যে বিভিন্ন অঙ্গ (ফুসফুস, হৃদপিণ্ড, বৃক্ক) থাকে।
  • (vi) উদ্ভিদের কাণ্ড হলো পরিবর্তিত কাণ্ড।
  • (vii) ....................
  • (viii) শব্দ দূষণের ফলে শব্দগুলি শোষিত হয়।
  • (ix) ....................
  • (x) ....................

6. উপযুক্ত মিলিয়ে লেখো :

'A' স্তম্ভ 'B' স্তম্ভ 'C' স্তম্ভ
1. পটাসিয়াম পরমাণুa) অ্যাসিডের অভাব1) ক্যালসিয়াম।
2. Zn2+ ও Cl- আয়নb) ক্ষতিকার2) বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করে।
3. থাইরয়েড গ্রন্থিc) প্রাকৃতিক পলিমার3) তীব্র আকর্ষণ।
4. মিউরিয়েটিক অ্যাসিডd) ইতরপরাগী উদ্ভিদ4) সাবান
5. লঘু HCl দ্রবণe) 1 : 2 অনুপাতে যুক্ত হয়ে5) বায়োডিগ্রেডেবল
6. নাইলনf) ডিম্বকরন্ধ্র6) গয়টার
7. শাঁস বা শ্বেতসারg) কৃত্রিম পলিমার7) নন-বায়োডিগ্রেডেবল
8. পাকস্থলীতে রসh) pH প্রায় 18) লাল

II. ঢিলে ঢালা

'A' স্তম্ভ 'B' স্তম্ভ
i) চৌম্বক ক্ষেত্রa) তড়িৎ শক্তির আলোক ও তাপশক্তির রূপান্তর
ii) সূর্যের তাপের প্রভাবb) তড়িৎ চুম্বকের শক্তি বৃদ্ধি
iii) প্রাকৃতিক বর্ণালীc) সমানে সমান কিন্তু বিপরীতমুখী দুটি বল
iv) তড়িৎ চুম্বকের শক্তি বৃদ্ধিd) উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহের মধ্যে বৈচিত্র্য দেখা
v) LEDe) নিচের দেয়াল বরাবর গাছের ছায়া দেখতে পাবে।
vi) ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়াf) রামধনু

III.

'A' স্তম্ভ 'B' স্তম্ভ
i) প্রোটিন ও শক্তির অভাবa) নিরোগিয়া
ii) মাটিতে জল ও খনিজ শোষণb) রেসারপিন
iii) কোয়ালা ভালুকc) কার্বন ডাইঅক্সাইড
iv) বায়ুদূষণের ফলে শব্দে দূষণ কমে যাওয়াd) যক্ষ্মা
v) মশার বা চাল কষনওয়ালা মতোe) মূগনাভি
vi) ফণীমনসাf) বাষ্পমোচন
vii) সর্পগন্ধাg) ম্যারাসমাস
viii) খাবার থেকে উৎপন্ন উপাদানh) ইউক্যালিপটাস গাছের পাতা
ix) মানসিক স্বাস্থ্যi) মানসিক অবসাদ
x) ধূমপানj) ক্যানসার

6. সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন :

(I) কোনো বস্তু ওপর 'ক' 10 N ও 'খ' এই দুই বস্তু ওপর 7 N বল প্রয়োগ করলে উষ্ণতা ফেটে ফেটে কণার পরিমাণ একই হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে এই একই ঘটনা? এই ঘটনার উদাহরণ দাও। যেভাবে রাসায়নিক পরিবর্তন হয়েছে। সে ক্ষেত্রে কোনো বস্তু 'মুছে' যায়? একটি ছত্রাক থেকে একটি ঔষধ আমরা আবিষ্কার করেছি।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

সংক্রামক ছত্রাক মনের মধ্যে বিভিন্ন রোগের বিস্তার ঘটায়। এটি ছত্রাক রোগ। এই ছত্রাক রোগ P.A.C.O.M.T.S. ইত্যাদি। একটি ছত্রাক থেকে এই রোগ ছড়ায়। এই রোগ মানবদেহের কোন অংশকে প্রভাবিত করে? এই রোগ থেকে বাঁচতে কী কী করা উচিত?

(VI) বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে বৃষ্টিপাত কেমন হচ্ছে? এই উষ্ণতা বৃদ্ধি ও বৃষ্টিপাত কমার মধ্যে সম্পর্ক কী? (VII) Plasmodium vivax কী? ম্যালেরিয়া রোগ কিভাবে ছড়ায়? (VIII) বিভিন্ন ছত্রাকের নাম বলো। (IX) খাদ্যবাহিতা রোগ ও তার লক্ষণ। (X) পরজীবী রোগ ও তার লক্ষণ। (XI) ধূমপান ও মদ্যপানের ক্ষতিকর প্রভাব। (XII) জীবনের মূল্য। (XIII) সংশ্লেষিত দ্রব্যের ব্যবহার। (XIV) সিমেন্টের ব্যবহার। (XV) কাঁচের ব্যবহার। (XVI) দৈনন্দিন জীবনে খাবার লবণের ব্যবহার। (XVII) আয়োডিনএর গুরুত্ব। (XVIII) ফ্লুওরাইডআর্সেনিক দূষণ ও তার প্রভাব। (XIX) জীবনকুশলতা কাকে বলে? (XX) মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব। (XXI) অটিজম। (XXII) ডিসলেক্সিয়া। (XXIII) মনোযোগহীনতা। (XXIV) মানসিক উদ্বেগ। (XXV) জীবনের মূল্য।

7. দুটি বা দুটি উত্তর দাও :

  • (I) আমার তো নতুন বন্ধু পেলাম না। এবার তার সঙ্গে খেলা শুরু করি। তার সঙ্গে খেলা শুরু করি।
  • (II) উষ্ণতার তারতম্যের জন্য কুলবকুলুর গাছে তাপমাত্রা বাড়ার গতি কেমন হয়? (III) বাগানে তুমি কি কুমড়ো গাছের পাতায় অনেক মশা দেখতে পাও?
  • (IV) একটি ট্রলির গতিপথ 400 km। এই ট্রলিটির বেগ কত? (যদি গতিপথ সরলরৈখিক হয়) 20 km/h বেগে চলে। (v) একটি মোলার গয়টার গলিত লবণ আর তার সঙ্গে 20 N বল প্রয়োগ করা হলো। এই বলের প্রভাবে লবণের গতি কত হবে?
  • (VI) তুমি কেন বাড়িতে থাকবে না? (VII) সংশ্লেষিত পদার্থের ব্যবহার কেন কমাতে হবে? (VIII) কিসের প্রভাবে কাঁচের বিভেদতল পরিবর্তন হয়? (IX) সোডিয়াম ক্লোরাইড (NaCl) + HCL \\rightarrow NaCl + H2O + Cl2 (X) তুমি কি গ্লুকোজ ও কার্বোহাইড্রেট দুটোকে মিলিয়েছ? (XI) মানুষের জীবনকে বিভিন্ন প্রভাবে কেমন?
  • (XII) ম্যালেরিয়া জীবাণুর একটা ছবি আঁকো। (XIII) ম্যালেরিয়া জীবাণুর একটা ছায়া তৈরি করতে পারে। (XIV) কীটনাশক ব্যবহারের ফলে পরিবেশের উপর কী প্রভাব পড়ে? (XV) অতিরিক্ত বাষ্পমোচন বন্ধ করে এমন একটি পাতার নাম লেখো। (XVI) অতিরিক্ত বাষ্পমোচন কীভাবে মানুষের ক্ষতি করে? (XVII) অরণ্যের ভূমিকা। (XVIII) অরণ্যের জীববৈচিত্র্য। (XIX) জলবায়ু পরিবর্তন। (XX) পরিবেশ দূষণ। (XXI) পরিবেশ সংরক্ষণ। (XXII) পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য। (XXIII) সুস্থ জীবন। (XXIV) পরিবারের ভূমিকা। (XXV) সমাজ। (XXVI) জীবনকুশলতা। (XXVII) মানসিক স্বাস্থ্য। (XXVIII) নেশা। (XXIX) জীবনের মূল্য। (XXX) পরিবেশজনস্বাস্থ্য

8. তিন-চারটি বাক্যে উত্তর দাও : (প্রতি প্রশ্নের নম্বর 3)

  • (I) একটি কণা যদি মাটির খুব গভীরে থাকে। তাহলে সেল দিয়ে তৈরি ব্যাটারি, প্রয়োজন মতো তার ও একটি সুইচের ব্যবস্থা করো। (সহযোগাযোগ)।
  • (II) কাঁচের গাছের ডাল তৈরি করতে গাছটা কি করে? (III) খাদ্য-খাদক সম্পর্ক কি? (IV) অণুজীবদের নানা রোগ। (V) জীবাণু ও ভাইরাসএর পার্থক্য। (VI) কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব। (VII) পরিবেশ দূষণ। (VIII) পরিবেশ সংরক্ষণ। (IX) পরিবার পরিকল্পনা। (X) জনসংখ্যা বৃদ্ধি। (XI) স্বাস্থ্য সমস্যা। (XII) শিক্ষা সমস্যা। (XIII) দারিদ্র্য। (XIV) বেকারত্ব। (XV) জীবনের মূল্য। (XVI) পরিবেশজনস্বাস্থ্য
  • (XVII) অণুবীক্ষণ যন্ত্র কী?

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য

নমুনা প্রশ্ন

9. 'আমি কে' লেখো :

  • (a) আমার সারা দেহ রোমে ঢাকা।
  • (b) আমি সারাদিন তোমার চারপাশে আছি।
  • (c) আমি অতি ক্ষুদ্র রক্তবিন্দু।
  • (d) আমি নানা রং ছড়াই।
  • (e) আমি এমন একটা উপাদান যা থেকে শক্তি পাওয়া যায় না, ভিটামিন, প্রোটিন, লিপিড ইত্যাদি।

.................... $\rightarrow$ .................... $\rightarrow$ .................... $\rightarrow$ .................... $\rightarrow$ ....................

10. সূত্রের সাহায্যে শব্দছক পূরণ করো :

সূত্র

পাশাপাশি:

  • 1. যে প্রক্রিয়ায় চিনির দ্রব্য কপার সালফেট থেকে তাপশক্তির রূপে পায়।
  • 2. জলীয় হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড।
  • 3. জলের অণুর সংখ্যা।
  • 4. জলীয় দ্রবণে H2S গ্যাস।
  • 5. ভূগর্ভস্থ জল।
  • 6. জৈব বাহক।
  • 7. চুম্বক মুক্ত অণু।
  • 8. একটা তাপশক্তি উৎপন্ন হয়।

উপর ও নীচ:

  • 2. একটি মৃতদেহ থেকে পচন ধরে।
  • 6. তেজস্ক্রিয় দূষণ।
  • 8. চামচ আকৃতির নখ।
  • 9. জন্ডিস।
  • 10. জলাভূমি।
  • 11. (3 + 1/2 $\times$ 4) = 5।

11. একটি ফুলের স্থানিক মূল থেকে বহিঃত্বক, অন্তঃত্বক ও বীজের অবস্থান দেখাও।

Flower structure

(i)

(ii)

(iii)

12. গাছের গড়ন, ঘনত্ব ও গঠনগত বৈশিষ্ট্য দেখাও।

(ছবিতে দেওয়া জন্য)।

পরিবেশ ও বিজ্ঞান

প্রধান শিক্ষক

এই বইটিতে পরিবেশের সঙ্গে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও জীববিজ্ঞানের ধারণার সমন্বয় সাধনের চেষ্টা করা হয়েছে। পঠন-পাঠনের প্রয়োজনে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও জীববিজ্ঞানের উপযুক্ত এককগুলি নির্বাচনে শিক্ষক/শিক্ষিকা মনোনীত হতে পারেন। এই বইতে অধ্যায়ে অধ্যায়ে 'অ্যাকাডেমি জ্ঞান অভিযান' অনুসরণ করা হয়েছে।

প্রথম অধ্যায়: তাপ, আলো, চুম্বক ও তড়িৎশক্তি আলোচনায় ধারণাগুলো সহজভাবে বোঝানোর মধ্য দিয়ে সহায়ক হয়েছে। দৈনন্দিন জীবনে প্রাসঙ্গিকতা অণুভাবে উদাহরণের সাহায্যে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ছাত্রছাত্রীদের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্র্যাকটিক্যালগুলি সম্পন্ন করতে, প্রাপ্ত ফলাফলের আলোচনা করতে ও বিশ্লেষণ করতে শিক্ষক/শিক্ষিকারা সাহায্য করবেন। 36, 37, 48 এবং 62 পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু থেকে প্রশ্ন করা হয়নি।

দ্বিতীয় অধ্যায়: নিউটনের সূত্রগুলি থেকে ছাত্রছাত্রীরা সাধারণত সূত্রগুলোই বা মুখস্থ করে। শিক্ষকের মনের সূত্রগুলো মুখস্থ করে মনে হবে। তবে অনেকসময়ই এই রোগের আক্রমণ থেকে বাঁচা সম্ভব। বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে এর সমাধান করা হচ্ছে। নিউটনের জ্ঞান (76 পৃষ্ঠা) থেকে প্রশ্ন করা হয়নি।

তৃতীয় অধ্যায়: এই অধ্যায়ে রাসায়নের জগতে প্রবেশ করতে পরমাণু, অণু ও রাসায়নিক বিক্রিয়া সম্পর্কে অতি প্রয়োজনীয় ধারণাগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। চিহ্ন, সংকেত ও সমীকরণের সাহায্যে বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ার কিছু উদাহরণ এই বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। রাসায়নিক সমীকরণের সমতাবিধান করতে শিক্ষার্থীরাও শিক্ষকের ও শিক্ষিকার বিষয়বস্তুর ওপর বিষয় জ্ঞান দরকার।

চতুর্থ অধ্যায়: 'পরিবেশ গঠনে পদার্থের ভূমিকা' অধ্যায়ে জীবদেহে গঠন বিভিন্ন অজৈব ও জৈব পদার্থের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। প্র্যাকটিক্যাল জীবদেহে ব্যবহৃত বিভিন্ন খনিজ ও প্রসাধনী দ্রব্য শনাক্তকরণে শিক্ষার্থীরা হাতেকলমে পরীক্ষা করবে। এর মানবদেহ অণু-ফ্যাটের ভারসাম্য নষ্ট হলে কী কী সমস্যা হতে পারে তার এবং আলোক প্রভাব করা হয়েছে। বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যের ব্যবহার, সংশ্লেষিত পণ্য উৎপাদনে ও পরিবেশে তাদের প্রভাব সম্পর্কে পরিচিতি করানো হয়। 119 পৃষ্ঠার 'টুকরো কথা', 128 ও 129 পৃষ্ঠার 'জেনে রাখো', 136 পৃষ্ঠার 'টুকরো কথা', 139 পৃষ্ঠার 'জানো কি?' থেকে প্রশ্ন করা হয়নি।

পঞ্চম অধ্যায়: এই অধ্যায়ে পরিচিত নানা খাদ্য ও তার অভাবে কী কী সমস্যা হতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। অপুষ্টি ও স্থুলতার মতো বিষয়গুলো যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন সমস্যার সমাধান সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। জনগণের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো চিহ্নিত করা হয়েছে।

খাদ্য তৈরিতে জল ও আলোর ভূমিকা বাড়ানো হয়েছে। 154 পৃষ্ঠার ভিটামিনএর ইতিহাস ও 172 পৃষ্ঠার পৃথিবীর মিষ্টি জলের হিসাব থেকে প্রশ্ন করা হয়নি।

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য

ষষ্ঠ অধ্যায়: এই অধ্যায়ে উদ্ভিদের দেহের বিভিন্ন অংশের বৈচিত্র্য সম্পর্কে নানা তথ্য উপস্থাপিত হয়েছে। এখানেও হাতেকলমে কাজের কথা বলা হয়েছে। পরিবেশে জীবেরা কীভাবে নিজেদের মানিয়ে নেয় তা বোঝানোর জন্য ব্যাপন ও অভিস্রবণ প্রক্রিয়ার নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে।

সপ্তম অধ্যায়: পরিবেশ দূষণ ও দূষণজনিত ক্ষতি আজ পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো সমস্যা। পরিবেশের ক্ষতির নানান দিক সম্পর্কে শিক্ষার্থীকে সচেতন করতে জীববৈচিত্র্যের হ্রাস, জলবায়ুর পরিবর্তন এবং বর্জ্য ও মানবস্বাস্থ্যের ঝুঁকি একটি অংশ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে পরিবেশ রক্ষায় নানা গাছের ভূমিকা উপলব্ধি করবে। 231 ও 232 দেওয়া বিভিন্ন পরিসংখ্যান ও 249 পৃষ্ঠার 'টুকরো কথা' থেকে প্রশ্ন করা হয়নি।

অষ্টম অধ্যায়: আর্সেনিক ও ফ্লুওরাইড দূষণ, পেশা ও সমস্যা এবং সমাজে ক্রমবর্ধমান মানসিক রোগের সমস্যা সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সচেতন করার চেষ্টা হয়েছে। পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য স্বাস্থ্যগতভাবে জড়িত দুটি বিষয়। কীভাবে দূষিত পরিবেশ জনস্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে সেই বিষয়ে শিক্ষার্থীরা অবগত হবে এই অধ্যায়ে। 256 পৃষ্ঠার 'টুকরো কথা', 265 পৃষ্ঠার WHO এবং UNICEF সম্বন্ধীয় বিষয় ও 281 পৃষ্ঠায় 'কলেরা রোগের ইতিহাস' থেকে প্রশ্ন করা হয়নি।

বিভিন্ন অধ্যায়ের উপরোক্ত পৃষ্ঠাগুলো ছাড়াও বইয়ের অন্যান্য শিক্ষণীয় বিষয় শিক্ষার্থীকে অনুষঙ্গিতা জাগিয়ে তুলতে বিভিন্ন ঐতিহাসিক প্রসঙ্গ আনা হয়েছে। এইসব অংশ থেকে জ্ঞানমূলক প্রশ্ন করা হয়নি।

আমার পাতা

এই বই তোমার কেমন লেগেছে লেখো।